কম্পিউটার জনিত রোগ, সিভিএস কি?

দিনের একটা বড় সময় আমরা কম্পিউটারের সামনে বসে কাজ বা গেমিং করে থাকি। চোখের দৃষ্টি তখন আটকে থাকে চারকোণা ফ্রেম করা একটি মনিটরের সামনে। দিনশেষে চোখের ব্যাপারে কি কেউ ভেবেছেন?

কম্পিউটার ভিশন সিনড্রোম বা সিভিএস নামক একটি চোখজনিত সমস্যা আছে যেটি আসলে শুধুমাত্র একটি সমস্যাই নয়। চোখ লাল হওয়া,ঝাপসা দেখা, চোখ শুষ্ক হওয়া, দুইবার দেখা, চোখ জ্বালা করা, মাথা বা ঘাড় অথবা কোমড়ে ব্যাথা এর মধ্যে যে কোন সমস্যাই হতে পারে।
গবেষণা অনুযায়ী ৫০ থেকে ৯০ শতাংশ ব্যক্তি যারা কম্পিউটারের সামনে কাজ করেন তাদের উপরোক্ত যে কোন সমস্যা হতে পারে।
এই সমস্যাগুলো সাধারনত কম্পিউটারের সামনে আপনার বসে থাকার ধরন, আপনি যে মনিটরে কাজ করছেন সেই মনিটর আপনার চোখের জন্য সহনশীল কিনা এসবের উপরে নির্ভরশীল।

কাজ কিংবা গেমিং যেটাই করেন না কেন সুস্থতা বজায় রাখতে না পারলে এক্ষেত্রে ক্ষতিটা আপনারই। সিভিএস রোগের জন্য মূলত কম্পিউটার মনিটরই দায়ী। কারন বেশিরভাগ চোখজনিত সমস্যা এই মনিটরের কারনেই হয়ে থাকে। সস্তা এবং কম দামী মনিটরগুলোর প্যানেলে চোখের সুবিধার জন্য ব্লু লাইট ফিল্টারেশন এবং ফ্লিকার ফ্রী টেকনলজি ব্যবহার করা হয় না।

মনিটরের ব্লু লাইট চোখের অন্যতম ক্ষতির মূল কারন। হাই এনার্জি ব্লু-ভায়োলেট লাইট চোখের জন্য ব্যাপকভাবে ক্ষতিকর। এই আলো চোখের রেটিনাতে সরাসরি প্রবেশ করে ফলে চোখের লেন্স এবং রেটিনার ক্ষতিসাধন করে।মনিটরের এই ব্লু লাইট চোখের সমস্যা ছাড়াও ঘুমের সমস্যা করতে পারে।

অন্যদিকে মনিটর ফ্লিকারও চোখের সমস্যার জন্য দায়ী। মনিটরের ফ্লিকার বলতে মনিটরের পিছনে এলইডি লাইটের অন এবং অফ হওয়াতে চোখের উপর ব্রাইটনেসের একটি চাপ পড়ে। আলোর পরিবর্তন হওয়াতে চোখের উপরে চাপ পড়ে যাতে মাথা ব্যাথা, চোখ জ্বালা সমস্যা হতে পারে।

তবে এখানে আশার কথা হল ভাল মানের ব্র্যান্ডগুলো যেমন- আসুস, ডেল, ফিলিপস, এলজি,এইচপি ইত্যাদি মনিটর ব্র্যান্ড চোখের সুবিধার জন্য ব্লু লাইট ফিল্টার এবং ফ্লিকার ফ্রী মনিটর প্রস্তুত করে থাকে। যেটি আই স্ট্রেইন এবং মাথাব্যাথা সমস্যা দূর করতে সক্ষম।

এক্ষেত্রে আসুসের মনিটরগুলো একধাপ এগিয়ে। আসুস তাদের মনিটরগুলো আই কেয়ার টেকনলজিতে প্রস্তুত করে থাকে যাতে ব্লু লাইট ফিল্টার এবং ফ্লিকার ফ্রি ফিচার থেকে থাকে। এই আই কেয়ার সুবিধাটি TÜV Rheinland সার্টিফাইড। TÜV Rheinland সাধারনত ইন্সপেকশন এবং প্রোডাক্ট কোয়ালিটি সারটিফিকেশন দিয়ে থাকে।  

সমাধানঃ
রোগ হবার আগেই তার প্রতিকার করাটা জরুরী। মনিটর কিনার আগে মনিটর সাইজ, প্যানেল টাইপ এবং অন্যান্য স্পেসিফিকেশন্স ছাড়াও মনিটরটি ব্লু লাইট ফিল্টার এবং ফ্লিকার ফ্রী এসব ফিচার আছে কিনা তা দেখে নেয়া উচিত।
এই দুটি সুবিধা মনিটরে না থাকলে এসব সুবিধা যুক্ত  মডেলের মনিটর কিনার পরামর্শ রইল।

এছাড়াও কম্পিউটারের সামনে বসার কিছু ধরন রয়েছে যাতে ঘাড় কিংবা কোমড় ব্যাথাজনিত সমস্যা হতে নিজেকে রক্ষা করা সম্ভব। কম্পিউটার ডেস্কে বসার জন্য ভাল মানের চেয়ার ব্যবহার করা উচিত যাতে মেরুদণ্ড সোজা করে বসা যায়। ডেস্ক বা টেবিলের উচ্চতা এমন হওয়া উচিত যেন হাত রাখার মত সুবিধা হয়। চোখ এবং মনিটর যেন এক হাতের বেশি দূরত্বে থাকে। একটানা বসে না থেকে বিরতি নেয়া এবং কিছুক্ষন হেটে এসে আবার কাজে বসা।

চোখের জন্য মনিটর সুবিধামত হাইট এডযাস্ট করে রাখা, অতিরিক্ত ব্রাইটনেস এবং কন্ট্রাস্টে কাজ না করা দরকার পড়লে কমিয়ে রাখা, চোখের পলক ফেলা এবং রুমে পর্যাপ্ত পরিমাণ আলো প্রবেশের সুবিধা রাখা। এছাড়া বেশি অসুবিধা মনে হলে ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া।

অবিভাবকদের প্রতি পরামর্শ রইল তারা যেন বাচ্চাদের মনিটরের সামনে বেশি সময় বসতে যেন না দেন।

কম্পিউটার ভিশন সিন্ড্রোম একটি সাময়িক অসুবিধা। চাইলেই এটি প্রতিরোধ করা সম্ভব।

ধন্যবাদ।

Share This Article

Search
kampungbet kampungbet kampungbet toto slot link gacor kampungbet kampungbet kampungbet toto slot kampungbet link slot kampungbet kampungbet kampungbet situs toto situs togel situs slot rtp slot situs judi bola situs slot gacor link slot resmi slot gacor hari ini
toto togel monperatoto situs toto toto togel slot resmi toto togel bandar togel togel online bandar togel slot 4d toto slot toto slot