টাইটেল দেখেই বুঝতে পারছেন আজকে কি ব্যাপারে আলোচনা করা হবে! আজকে ইউটিউবের স্ট্রাইক সিস্টেম নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। যারা নতুন ইউটিউবার রয়েছেন বা যারা ইউটিউবের কপিরাইট স্ট্রাইক এবং অনান্য স্ট্রাইক সিস্টেমের ব্যাপারে জানেন না তাদের জন্যই আমার আজকের এই পোষ্ট। তো চলুন সরাসরি চলে যাই মূল পোষ্টে:
আপনার ইউটিউব চ্যানেল রয়েছে এবং হঠ্যাৎ করে দেখলেন যে আপনার চ্যানেলে স্ট্রাইক এসেছে, এটা গাইডলাইন স্ট্রাইক হতে পারে কিংবা কপিরাইট স্ট্রাইকও হতে পারে। এই দুটি স্ট্রাইক নিয়ে নিচে আলাদা ভাবে আলোচনা করা হবে। উল্লেখ্য যে, ২০১৮ সালের শেষের দিকে ইউটিউব তাদের স্ট্রাইক সিস্টেমে কিছুটা পরিবর্তন এনেছে। আর তা নিয়েই আজকে আলোচনা করা হবে।
প্রথমে কথা বলছি গাইডলাইন স্ট্রাইক সম্পর্কে। আপনার কোনো ভিডিওতে যদি গাইডলাইন স্ট্রাইক চলে আসে তাহলে কি করবেন? গাইডলাইন স্ট্রাইক খেলে সেটার বিরুদ্ধে আপিল করে স্ট্রাইক উঠানো যায় তবে সেটায় জয়ী হবার চান্স খুব কম থাকে। তাই আমি রেকোমেন্ড করবো গাইডলাইন স্ট্রাইক আসলে সেটা বিরুদ্ধে না গিয়ে বা সেটায় বেশি ঘাঁটাঘাঁটি না করে যে ট্যাগ লাইনের জন্য স্ট্রাইক আসছে বা যে কারে স্ট্রাইক এসেছে (যেমন কিওর্য়াড, থাম্বনেইল, টাইটেল ওর্য়াড ইত্যাদি) সেই টপিকের উপর আপনার টোটালি ভিডিও বানানো বন্ধ করে দিতে হবে। কারণ গাইডলাইন স্ট্রাইক নিয়ে যত বেশি ঘাঁটতে যাবেন, আপনার চ্যানেলটি ইউটিউবের কমিনিটির নজরে বেশি করে পড়তে থাকবে এবং শেষ পর্যন্ত চ্যানেলটিকে আপনি হারাতে পারেন।
আর একবার ইউটিউব টিমের কাছে কালার হয়ে গেলে তখন দেখবেন যে অহরহ আপনার চ্যানেলের ভিডিওতে স্ট্রাইক পড়া শুরু হবে। যে টপিকের ভিডিওর উপর গাইডলাইন স্ট্রাইক এসেছে সেই টপিকের উপর ভিডিও বানানো বন্ধ করে দিন এবং চ্যানেলে ওই জাতীয় টপিকের ভিডিও থাকলে সেগুলোকে প্রাইভেট করে দেওয়াই উত্তম।
গাইনলাইন স্ট্রাইক বিভিন্ন কারণে এসে থাকে। সাধারণত বাচ্চাদের ভিডিওতে যদি Child Abuse জাতীয় কোনো জিনিস থাকলে গাইডনলাইন স্ট্রাইক আসবে। স্প্যামিং, সেক্সুয়াল জাতীয় কোনো টপিকে ভিডিও বানালে নিশ্চিত স্ট্রাইক খাবেন।
এবার কপিরাইট স্ট্রাইক। কপিরাইট স্ট্রাইক সাধারণত Indivisual User দের কাছে বেশি আসে। কপিরাইট স্ট্রাইক যদি আপনার চ্যানেলে ৩ মাসের মধ্যে পর পর ৩ বার আসে তাহলে আপনার চ্যানেলটি ব্যান হয়ে যাবে। আর এর মধ্যে যদি ২টা বা ১টা স্ট্রাইক উঠিয়ে নিতে পারেন তাহলে চ্যানেলটি বেঁচে যাবে। কপিরাইট স্ট্রাইক আসলে যে ব্যাক্তি আপনার বিরুদ্ধে কপিরাইট স্ট্রাইক করেছে তার ইমেইল এড্রেস আপনি পেয়ে যাবেন। আপনি আপিল করলে আপনার বিরুদ্ধে কপিরাইট স্ট্রাইকারীদের সাথে যদি আপনি কোনো সমঝোতায় আসলে আপনি স্ট্রাইক উঠিয়ে নিতে পারবেন।
আর স্ট্রাইক থেকে বেঁচে থাকলে চাইলে Fair Usage রুলস ভালো করে পড়ে নিয়ে তারপর নিষিদ্ধ জিনিসগুলোর থেকে দুরে থাকুন।
মনে রাখবেন গাইডলাইন স্ট্রাইকটি আপনাকে ইউটিউব থেকে দেওয়া হবে, কোনো তৃতীয় পক্ষ আপনাকে গাইডলাইট স্ট্রাইক দিবে না। ইউটিউব কমিউনিটি থেকে গাইডলাইন স্ট্রাইক আসবে। মনে রাখবেন গাইডলাইট স্ট্রাইক হচ্ছে বেশ সিরিয়াস, তাই গাইডলাইন স্ট্রাইক খেলে এটা নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি না করাই উত্তম। চাইল্ড এবইউজ টপিক যদি ভিডিওতে থাকে তাহলে নিশ্চিত গাইডলাইন স্ট্রাইক খাবেন। তারপর কোনো সেক্স জাতীয় কনটেন্ট যদি আপনি Age Restricted না করে আপলোড করে তাহলে গাইনলাইড স্ট্রাইক খাবেন।
কপিরাইট স্ট্রাইক আসে অন্যের কনটেন্ট যদি (অডিও বা ভিডিও) আপনি ব্যবহার করেন এবং যার অডিও বা ভিডিও থাকে সে যদি আপনার ভিডিও তে দেখে তাহলে আপনি কপিরাইট স্ট্রাইক খাবেন। গাইডলাইন স্ট্রাইক পেলে আপনি সরি টরি বলে পার পেয়ে যেতে পারেন কিন্তু কপিরাইট স্ট্রাইক আসলে আপনি সহজেই আপিল করতে পারবেন। আর আপিলের মেসেজের রিপ্লে যদি তারা ৩০ দিনের মধ্যে না দেয় তাহলে ইউটিউব থেকে আপনার চ্যানেল থেকে কপিরাইট স্ট্রাইকটি উঠে যাবে এবং যে কপিরাইট স্ট্রাইক দিয়ে ছিলো উল্টে তাদের চ্যানেলে স্ট্রাইক চলে যাবে। গাইডস্ট্রাইক আসলে আপনি কোনো টাকা পয়সার মাধ্যমে বা ফিজিক্যালি ইউটিউব টিমের সাথে আলোচনায় বসতে পারবেন না কিন্তু কপিরাইট স্ট্রাইকে আপনি স্ট্রাইককারীদের সাথে বিস্তারিত ভাবে আলোচনায় বসে সমঝোতায় আসতে পারবেন।
গাইডলাইন স্ট্রাইক থেকে বাঁচতে হলে নতুন নতুন ফ্রেশ ভিডিও বানান এবং ইউটিউবের গাইডলাইন মেনে চলুন। আর কপিরাইট স্ট্রাইক থেকে বাঁচলে হলে নিজের কনটেন্ট ব্যবহার করুন। যেমন ফুটেজ এবং অডিও অন্যের উপর নির্ভর না থেকে নিজের মতো করে ব্যবহার করুন। ইউটিউবে NCS বা No Copyright Sound নামে একটি চ্যানেল রয়েছে যেখানে আপনি অনেক সাউন্ড বা অডিও পাবেন সেগুলো আপনার ভিডিওতে ব্যাকগ্রাউন্ড হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন এতে কোনো কপিরাইট স্ট্রাইক খাবেন না।