আমাদের দেশে উইন্ডোজ এক্সপির পর উইন্ডোজ ৭ বহুল ব্যবহৃত একটি অপারেটিং সিস্টেম হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে এবং মজার ব্যাপার হচ্ছে এখনো অনেকেই উইন্ডোজ ৭ ব্যবহার করে থাকেন। বিশেষ করে অফিস আদালত, স্কুল কলেজ যেখানে WAN/LAN এর ব্যাপার থাকে সেখানে উইন্ডোজ ৭ ব্যবহার করাটা আমাদের দেশে সহজ বলে মনে করা হয়। কিংবা পাড়ার কম্পিউটার কম্পোজের দোকানগুলোতেও আপনি এখনো ২০২১ সালে এসে উইন্ডোজ ৭ চালাতে দেখবেন। কারণ অফিস আদালাতে যারা কম্পিউটার চালান তারা যখন কম্পিউটার চালানো শিখেছেন তখন উইন্ডোজ ৭ এর চলক ছিল ব্যাপক। এখন সময়ের বিবর্তনে উইন্ডোজ আপডেট হলেও তারা আর আপডেট হন নি!
এখন কথা হচ্ছে বিশ্বের অধিকাংশ অঞ্চলে উইন্ডোজ ৭ এর সার্পোট ইতিমধ্যেই মাইক্রোসফট বন্ধ করে দিয়েছে।ক্ষেত্র বিশেষে ২০২৪ সাল পর্যন্ত উইন্ডোজ ৭ এর সিকুরিটি আপডেট পাওয়া যাবে। কিন্তু এখনো যারা উইন্ডোজ ৭ ব্যবহার করেন বা নতুন করে পিসি / ল্যাপটপে উইন্ডোজ ৭ ইন্সটল দিতে যান তখন বিভিন্ন ধরণের সমস্যায় পড়ে থাকেন। বিশেষ করে মর্ডান ল্যাপটপ এবং SSD যুক্ত কম্পিউটারগুলোতে উইন্ডোজ ৭ ইন্সটল দিতে গেলে প্রচুর সমস্যা। আজকের এই পোষ্টে মর্ডান পিসিগুলোতে উইন্ডোজ ৭ ইন্সটল দিতে গেলে যেসকল সমস্যার উদ্ভব হয় সেগুলোর সমাধান নিয়ে আলোচনা করার চেষ্টা করবো।
বি:দ্র: উইন্ডোজ ৭ একটি আউটডেটেড অপারেটিং সিস্টেম। এখনকার সময়ে উইন্ডোজ ৭ ব্যবহার করা আপনার কম্পিউটারের জন্য সিকুরিটি রিস্ক বয়ে আনতে পারে। এছাড়াও মর্ডান পিসিতে উইন্ডোজ ৭ এর ড্রাইভার পাওয়া যায় না (যেমন নতুন নতুন GPU এর)। তাই অন্তত উইন্ডোজ ৮ য়ে শিফট হবার জন্য অনুরোধ থাকলো।
উইন্ডোজ ৭ ইন্সটলেশন : সমস্যা ১ – বুটেবল পেনড্রাইভ
উইন্ডোজ ৭ এর আমলে উইন্ডোজ সেটআপ দেবার জন্য ডিভিডি বা সিডির ব্যবহার হত। আজকাল আমরা সেটআপ দেবার জন্য যেমন বুটেবল পেনড্রাইভ ব্যবহার করি তখন এটার প্রচলন তেমন ছিল না। তবে ২০২১ সালে এসে ডিভিডি ড্রাইভ কে ব্যবহার করে?
আপনি উইন্ডোজ ৭ এর ISO সেটআপ ফাইলকে ডাউনলোড করতে পারবেন। পেনড্রাইভে বুটেবলও করতে পারবেন। কিন্তু পেনড্রাইভ দিয়ে যখন উইন্ডোজ ৭ সেটআপ দিতে যাবেন তখন সেটআপ উইন্ডোতে নিচের মতো ম্যাসেজ আসবে:
কিন্তু একই পিসি/ল্যাপটপে আপনি যখন ডিভিডি দিয়ে উইন্ডোজ ৭ সেটআপ করতে যাবেন তখন উপরের এরর বার্তাটি আসবে না। এর সমাধান নিচে দেখে নিন:
সমাধান
এই সমস্যাটির সমাধানের জন্য আমরা গিগাবাইটের একটি বুটেবল অ্যাপ ব্যবহার করবো। সেটা ব্যবহার করে পেনড্রাইভটি বুটেবল করলে এই বার্তাটি আর আসবে না।
১। প্রথমে আপনার পেনড্রাইভে স্বাভাবিক ভাবে Windows 7 iso ফাইলটি বুটেবল করুন। এখানে আমি Rufus টুলটি দিয়ে পেনড্রাইভকে উইন্ডোজ ৭ সেটআপের জন্য বুটেবল করছি।
২। এরপর আপনাকে গিগাবাইট উইন্ডোজ ইন্সটলেশন টুলটি ডাউনলোড করতে হবে। ডাউনলোড করতে নিচের লিংকে ক্লিক করুন:
টুুলটি চালু করুন। উল্লেখ্য যে প্রথমে পেনড্রাইভকে Rufus দিয়ে স্বাভাবিকভাবে বুটেবল করে নিন তারপর এই টুলটি চালু করবেন। টুলটি চালু করে ডেস্টিনেশন পাথ ঘরে আপনার পেনড্রাইভকে সিলেক্ট করে নিবেন।
পেনড্রাইভ সিলেক্ট করে নিয়ে নিচের তিনটি বক্সেই টিক দিয়ে Start বাটনে ক্লিক করবেন।
প্রসেসটি কমপ্লিট হতে ১০ থেকে ১৫ মিনিট সময় লাগবে।
কমপ্লিট হলে এবার আপনি পেনড্রাইভটি দিয়ে সফলভাবে উইন্ডোজ ৭ সেটআপ দিতে পারবেন।
উইন্ডোজ ৭ ইন্সটলেশন: সমস্যা ২ – SSD
এসএসডিতে উইন্ডোজ ৭ ইন্সটলের ঝামেলা নেই তবে একসাথে SSD আর HDD লাগানো থাকলে তখন SSD তে উইন্ডোজ ৭ ইন্সটল দিতে গেলে এই রকম পার্টিশন এরর খাবেন:
সমাধান:
অনেকেই এটাকে উইন্ডোজ বিট ভার্সনের এরর বলে মনে করেন। মানে ৩২ বিটের উইন্ডোজ ৭ SSD তে দেওয়া যাবে না এই ধারণা পোষণ করে থাকেন কিন্তু এই ধারণাটা ভুল। এই সমস্যার সমাধানের জন্য আপনাকে মাদারবোর্ড থেকে HDD কে খুলে নিতে হবে, শুধুমাত্র SSD লাগানো অবস্থায় উইন্ডোজ ৭ সেটআপ দিতে হবে। সেটআপ কমপ্লিট হবার পর কম্পিউটার চালু করে নিয়ে তারপর HDD লাগিয়ে নিবেন।
SSD তে উইন্ডোজ ৭ এক্টিভেশন সমস্যা
SSD তে উইন্ডোজ ৭ ইন্সটল দেবার পর আপনি যখন এটাকে ক্রাক টুল দিয়ে এক্টিভেশন করতে যাবেন তখন যে ক্রাক টুলই ব্যবহার করেন না কেন এই এররটি পাবেন।
সমাধান
শুধুমাত্র উপরের চিত্রে দেখানো টুলটি দিয়েই আপনি SSD তে উইন্ডোজ ৭ একটিভেট করতে পারবেন। আপনাকে গুগলে উপরের চিত্রে দেখানো টুলটির নাম সার্চ দিয়ে খুঁজে বের করে নিতে হবে। কারণ পিসিবিল্ডার সাইটের একটি রুলস হচ্ছে এখানে আমরা পাইরেসিকে সার্পোট করি না, তাই এই টুলটির লিংক আমি দিতে পারলাম না।
তবে নেট থেকে টুলটি নামানোর সময় এক্সট্রা সর্তক থাকবেন, কারণ এভাবে টুল নামালে পিসি ভাইরাসের দ্বারা আক্রান্ত হবার প্রবল চান্স থাকবে ।