vivo ও vivo’র সাব ব্র্যান্ড iQOO এর ভিভাইস গুলোর সাথে আউট অফ দ্য বক্স যে Android বেইসড ওএস এতদিন ধরে আসত সকলেই জানেন সেটি হচ্ছে FuntouchOS। কিছু গত বছরের নভেম্বরে vivo এনাউন্স করে তাঁদের নতুন ওএস vivo OriginOS । FuntouchOS এর সাকসের এই কাস্টম স্কিন কিছু দিক থেকে তার প্রিডেসেসর এমনকি অন্যান্য জনপ্রিয় কাস্টম স্কিন থেকেও ভিন্ন। ইউজার ইন্টারফেস থেকে শুরু করে অনেক বিষয়ে এসেছে বড় থেকে ছোট পরিবর্তন। সো, আজকের আর্টিকেলে নতুন ওএস এর নতুনত্ব ও ইলিজেবল ডিভাইস নিয়ে বিস্তারিত থাকছে-
Grid Based UI
এটিই মূলত সবচেয়ে ইউনিক একটি ফিচার নতুন এই ওএসে। OriginOs এ দুইটি লঞ্চার রয়েছে একটি হচ্ছে ট্র্যাডিশনাল লঞ্চার যেটি আমরা কম বেশি সব এন্ড্রয়েড বেইসড কাস্টম স্কিনেই দেখতে পায়। অন্যটি হচ্ছে Klotski Grid বেইসড। এটি একটি জাপানিজ পাজল গেইম সেটি থেকে অনুপ্রেরনা নেওয়া হয়েছে। রেক্টেঙ্গুলার বা স্কয়ার শেইপের অনেকগুলো Widget ও অ্যাপ আইকন গ্রিডে সাজানো থাকে। যেখানে Widget ও অ্যাপ আইকন গুলোর শেইপ গুলো নিজের ইচ্চামত পরিবর্তন করে সাজিয়ে নেওয়া যাবে। একদম ক্লিন রাখার জন্য দৃশ্যত Widget বা অ্যাপ আইকনগুলোর নামও হাইড করে রাখা হয়েছে। যদিও প্রেস হোল্ড করে রাখলে অ্যাপের মধ্যেই নামের দেখা মিলে এবং রিলিজ করে দিলে আবার মিলিয়ে যায়। রেক্টেঙ্গুলার বা বড় Widget গুলো বেশ কাজের। কেননা এই Widget গুলো দিয়ে অ্যাপ অনেক বেটার নেভিগেশন করা যায়। যেমনঃ ক্যামেরা অ্যাপের আইকনের ডান পাশে ক্লিক করলে ডিরেক্ট ক্যামেরা অ্যাপ ওপেন হবে কিন্তু ডানে ক্লিক করলে প্রোট্রেট , নাইড মোড অথবা ভিডিও ইত্যাদির এর অপশান পাওয়া যাবে যা দিয়ে অ্যাপে প্রবেশ করা ছাড়াই সরাসরি হোম স্ক্রিন থেকেই যাওয়া যাবে। যদি কারো Grid বেইসড এই ইউজার ইন্টারফেইসটি ভাল না লাগে তাহলে ওয়ান ক্লিকেই ট্র্যাডিশনাল লঞ্চারে ফেরত যাওয় যাবে।
Nano Alert
Nano Alert হচ্ছে Widget এ ছোট ছোট লাইভ আপডেট শো করবে। এই ফিচারটা একদম নতুন কিছু না ব্যাসিক্যালি। ইতিমধ্যই আমরা Widget এ লাইভ আপডেট দেখতে পাওয়া যায় অনেক অ্যাপেই। কিন্তু OriginOs এর পরিধি বাড়ানো হয়েছে। যেমনঃ ফ্লাইট ইনফোরমেশন, স্ক্রিন অন টাইম, ওয়েদার আপডেট ও কুরিয়ার স্ট্যাটাস ইত্যাদি।অ্যাপ ড্রয়ারের সাথেই Core Compenents নামক সেকশান রয়েছে যেখানে অনেক Nano Alert ওয়ালা Widget রয়েছে। চাইলে এইসব Widget ড্র্যাগ করে হোম স্ক্রিনেও নিয়ে আসা যাবে। Always On Display তেও Nano Alert সেটাপ করা যাবে।
Live Wallpaper
Live Wallpaper নিয়ে গতবছর সব মেইনস্ট্রিমে ফোনে কারসাজি দেখা গিয়েছে। কিন্তু OriginOs এর লাইভ ওয়ালপেপার দেখতে কিছুটা ভিন্ন। কেননা আমরা অন্যান্য ফোনে লাইভ ওয়াল প্যাপার বলতে দেখছি বিভিন্ন প্লানেট এর সারফেস যেগুলো হোম স্ক্রিন সুইপের সাথে সাথে পরিবর্তন হত। কিন্তু vivo এইখানে একটা ভিন্ন এপ্রোচ নিয়েছে। ব্যাসিক্যালি তাঁরা পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানের বিভিন্ন সময় ওয়েদার ডাটা যেমনঃ ক্লাউড সাইজ, শেইপ, স্কাই ব্যাক গ্রাউন্ড, উইন্ড ইত্যাদি কালেক্ট করেছে সেই অনুযায়ী ওয়ালপেপার বানিয়েছে। তাই বিভিন্ন রিজিয়নের জন্য অটোম্যাটিক্যালি ওয়ালপেপার চেইঞ্জ হবে।
বেহেভিয়ারাল ওয়ালপেপার নামে আরো একটি সেকশনা রয়েছে যেটি আরো ইন্টারেস্টিং। ফোনের ব্রাইটনেস যদি বাড়িয়ে দেওয়া হয় তাহলে ওয়ালপেপার ইন্টারফেসটিও চেঞ্জ হবে। আবার কমালে অন্যভাবে চেঞ্জ হবে। বিষয়টি ভালভাবে বোঝার জন্য নিচের স্কিনশট গুলো লক্ষ্য করুন। ফোনের ব্রাইটনেস ছাড়াও মিডিয়া ভলিউম, ফুট স্টেপস দিয়েও কন্ট্রোল করা যাবে ওয়ালপেপার। moonlight stamen নামে আরো একটি বেহেভিয়ারাল ওয়ালপেপার রয়েছে যখন ফুট স্টেপস গোল কমপ্লিট হয়ে যাবে তখন এটি সম্পূর্ণ ফুলটি ফুটে যাবে।
Multi Turbo 5.0
vivo OriginOS এ ইউজার ইন্টারফেস চেইঞ্জেস ছাড়াও সিস্টেম অপ্টিমাইজেশনেও কিছু পরিবর্তন এনেছে বলে দাবি করছে vivo। একদম লেটেস্ট Multi-Turbo 5.0 দেওয়া হয়েছে এতে। যেটাতে তিনটি টেকনোলজি রয়েছে যাদের নাম যথাক্রমে- memory fusion, process optimization, and application preloading। memory fusion যেভাবে কাজ করবে তা হল র্যাম এবং রমকে এলগরিদম এর মাধ্যমে এক করে ফেলবে। রমের কিছু স্পেস থাকে যেগুলো অলস পরে থাকে ঐ জায়গাগুলোকে র্যামের কাজে ব্যবহার করা যাবে। যাতে করে একসাথে অনেক গুলো অ্যাপ ব্যাকগ্রাউন্ডে ফ্রিজ হওয়া ছাড়া চালানো যাবে। উদাহরন স্বরুপ বলা যায়, 8GB + 128GB র্যামের একটি ফোন 11GB র্যামের ফোনের মত এক্সপেরিয়েন্স পাওয়া যাবে। অন্যদিকে যে ফোনের র্যাম 12GB + 256GB সেই ফোনে 15GB র্যামের ফোনের মত এক্সপেরিয়েন্স পাওয়া যাবে।
process optimization এ সিস্টেম অপারেশনে অপটিমাইজেশনে করে 100-200MB মেমোরি ইউজেস কমিয়ে ফেলা হয়েছে। এছাড়া সিস্টেম কনকারেন্সি কনফ্লিক্ট কমানো হয়েছে এবং কনকারেন্সি কনফ্লিক্ট ক্যাপাসিটি ২০% বাড়ানো হয়েছে যাতে সিস্টেম প্রসেসগুলো স্মুথ ও ফ্লোলেসলি চলতে পারে।
থার্ড এবং লাস্ট হচ্ছে application preloading। অনেকগুলো আর্টিফিশিয়াল অলগরিদম ইউস করা হবে যাতে করে বেশি ইউস হয় এমন অ্যাপ গুলো নিজেরাই প্রিলোড হয়ে থাকবে ফলে স্টার্টাপ টাইম অনেক কমে যাবে একটি অ্যাপ ওপেন হওয়ার। স্ট্যাটিস্টিক্যালি ৪০% কমে যাবে কোল্ড স্টার্ট অ্যাপের সংখা। (সোর্সঃ Gizmochina)
Others
কন্টোল সেন্টারটিকেও নতুনভাবে সাজানো হয়েছে। বর্তমানেরটা দেখতে অনেকটা আইওএসের মত এবং পজিশনও বটমে দেওয়া হয়েছে। যদিও OriginOS এ কন্ট্রোল সেন্টারেরও নিজের মত পরিবর্তন করা যাবে। সিস্টেম এনিমেশন স্পিড হোম স্ক্রিন থেকে কন্ট্রোল করা যাবে। ২৬টি নতুন গেসচার ইঙ্কলুড করা হয়েছে। রিসেন্ট স্ক্রিনে অ্যাপ শেইডে একই সাথে ৪টি আবার একটি শুধু একটি অ্যাপ আলদাভাবে এ দুইভাবে সেটিং করা যাবে।
Update Schedule
এনাউন্সমেন্ট থেকে শুধু করে জানুয়ারি ২০২১ এর মধ্যে অনেকগুলো ফোন পাবলিক বেটা আপডেট পেয়ে গিয়েছে। কিন্তু তা শুধু মাত্র চাইনিজ রিজিওয়নে। গ্লোবালি যেহেতু এখনো vivo OriginOS এনাউন্সমেন্ট হয়নি তাই বাংলাদেশে vivo’র ফোনগুলো গুলো কবে এই আপডেট পাবে তা বলা যাচ্ছে না। তবুও চাইনিজ রিজিওনের সিডিউল দেওয়া হল যাতে গ্লোবালি লঞ্চ হলেও কত আগে বা পরে আপডেট পাওয়া যাবে সেটি ধারনা করা যায়।
- Jan 2021: Vivo Nex 3S, Vivo X50 Pro, Vivo X50 Pro+, Vivo X50, Vivo S7, iQOO 5 Pro, iQOO 5, iQOO 3, iQOO, iQOO Pro, iQOO Neo 3
- Feb 2021: Vivo Nex 3, Vivo Nex 3 5G, Vivo X30, Vivo X30 Pro, iQOO Neo, iQOO Neo Snapdragon 855 Edition
- Q2 2021: Vivo X27 Pro, Vivo X27, Vivo S6, Vivo Z6, Vivo Z5i, Vivo S1, Vivo Z5x, Vivo Z5, Vivo Nex Dual Display Edition, Vivo Nex S, Vivo Nex, iQOO Z1X, iQOO Z1 (সোর্সঃ AndroidAuthority)
এছাড়া Android 11 বেইসড আরো তিনটি ওএস MIUI 12.5, OxyzenOS11 ও OneUI 3.1 নিয়ে বিস্তারিত আর্টিকেল রয়েছে আমাদের ওয়েবে। পড়তে চাইলে-
আসছে MIUI 12.5: নতুন ফিচার ও সাপোর্টেড ডিভাইস নিয়ে বিস্তারিত
শুরু হয়েছে OxygenOS 11 আপডেট, ইলিজেবল ডিভাইস ও নতুন ফিচারগুলো জেনে নিন
Samsung OneUI 3.1: ৭টি গুরুত্বপূর্ন ফিচার নিয়ে বিস্তারিত
এছাড়া Android 11 নিয়ে পড়তে চাইলে