২০২১ থেকে আনঅফিসিয়াল স্মার্টফোন কি বন্ধ হয়ে যাবে?? এই মুহূর্তে আনঅফিসিয়াল ডিভাইস কেনা কি বুদ্ধিমানের কাজ??

বেশ কিছু দিন ধরেই আপনার হয়তো শুনছেন যে, বাংলাদেশ সরকার নতুন আইন আনতে যাচ্ছে বা আইন না বলে একে নতুন রুলস বা টেকনিক বলা যেতে পারে যার মাধ্যমে দেশের যত আনঅফিসিয়াল স্মার্টফোন রয়েছে সেগুলোকে ট্রাক ডাউন করে বন্ধ করে দেওয়া যাবে এরকম হস্তক্ষেপ ২০২১ সাল থেকে শুরু হবে বলে জানা গিয়েছে। চলুন প্রথমে এই নতুন নিয়ম সম্পর্কে একটু ক্লিয়ার হওয়া যাক।

Bangladesh Telecommunication Regulatory Commision কিংবা যাকে আমরা সবাই BTRC হিসেবে চিনি তারা নতুন একটি টেকনোলজি আনতে যাচ্ছে যার মাধ্যমে অবৈধ্য এবং আনঅফিসিয়াল স্মার্টফোন হ্যান্ডসেটকে সিম কার্ড চালানোর অনুপযুক্ত করে তোলা যাবে। অর্থ্যাৎ আনঅফিসিয়াল ডিভাইসে আর সিম কার্ড ব্যবহার করা যাবে না।

অবাক করার মতো বিষয় হচ্ছে BTRC এই পদ্ধতিতে সেই ২০১২ সাল থেকে টেস্টিংয়ের আন্ডারে এত রেখেছিল এবং জানা গিয়েছে যে ২০২১ সাল থেকে এই পদ্ধতিকে কার্যকর ভাবে প্রয়োগ করা হবে।
BTRC চেয়ারম্যান জহিরুল হক বলেন,“ National Equipment Identity Register (NEIR) এর মাধ্যমে অবৈধ্য মোবাইল ফোনের ব্যবহার পূর্ণাঙ্গভাবে বন্ধ করা যাবে, ইতিমধ্যেই NEIR এর জন্য টেন্ডার এবং কাঁচামাল সাপ্লাই ম্যানেজমেন্ট শুরু হয়ে গিয়েছে।” (অক্টোবর ২৫, ২০২০)
BTRC চেয়ারম্যান আরো জানান ইতিমধ্যেই প্রায় ১১৮.২২ মিলিয়ন (১১ কোটি ৮২ লাখ ২০ হাজারের অধিক) IMEI নাম্বার তাদের সার্ভারে বিগত ৩ বছর ধরে যোগ করার কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এগুলো করার জন্য স্মার্টফোন ইম্পোর্টারস, অপারেটরস এবং বাংলাদেশী মোবাইল ম্যানুফ্যাকচারের সহায়তা নেওয়া হয়েছে বলে জানান।
তবে ২০১৮ সালের আগে বিক্রি করা স্মার্টফোন এর কোনটাই ডাটাবেসে এখনো যুক্ত করা হয় নি এবং এই অবস্থায় কিভাবে NEIR চালু করা হবে এই প্রশ্নের উত্তরে চেয়ারম্যান বলেন যে,“যারা ২০১৯ সালের আগস্ট মাসের পূর্বে কোনো অবৈধ, আনঅফিসিয়াল স্মার্টফোন কিনে ব্যবহার করছেন তাদেরকে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ডিভাইস রেজিস্ট্রেশনের সুযোগ প্রদান করা হবে।”

কিন্তু যারা বিদেশ থেকে বৈধ্য উপায়ে স্মার্টফোন কিনে এনে দেশে চালাচ্ছেন তাদের কি হবে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলে যে,“এই ক্ষেত্রে ফোন কেনার রশিদ এবং এ যাবতীয় ডকুমেন্টস অবশ্যই নিজের কাছে সংগ্রহ করে রাখতে হবে, এই সকল কাগজপাতি দিয়েই NEIR চালু হলে ডিভাইসটি রেজিস্ট্রি করতে হবে”

NEIR সম্পর্কে আরো যা জানা গিয়েছে তা হলো, এই পদ্ধতি চালুর প্রথম দিকে একটি অবৈধ ডিভাইসে একটি মাত্র সিম কার্ড ব্যবহার করা যাবে দুটির পরিবর্তে। তবে নিদির্ষ্ট সময়ের মধ্যে রেজিস্ট্রি না করলে দুটি সিম কার্ডই বন্ধ করে দেওয়া হবে। এই নিদির্ষ্ট সময় বলতে ছয় মাস বুঝানো হয়েছে। BTRC দেশে কতগুলো অবৈধ্য স্মার্টফোন রয়েছে সেটা সম্পর্কে অফিসিয়াল ভাবে কোনো তথ্য দেওয়া হয় নি তবে ট্রেডাররা দেশে প্রায় ৩ কোটির মতো অবৈধ আনঅফিসিয়াল স্মার্টফোন রয়েছে বলে ধারণা করছেন।
IMEI হচ্ছে একটি ১৫ ডিজিটের একটি ইউনিক নাম্বার যেটা স্মার্টফোনে ইউনিকভাবে দেওয়া থাকে, একটি স্মার্টফোনের IMEI নাম্বার আগেরটি ফোনের নাম্বারের সাথে মিলবে না। আপনি IMEI চেক করতে *06# ডায়াল করুন।
এখন যে সকল ডিভাইসের IMEI ওই ডাটাবেসে থাকবে না সেগুলো কেই অবৈধ্য ডিভাইস হিসেবে গণ্য করা হবে।
দেশের সকল মোবাইল অপারেটররাও এই পদ্ধতিতে কাজ করার জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত বলে জানাগিয়েছে।

নতুন ডিভাইস কেনার পর গ্রাহকদেরকে ডিভাইসের মেসেজ অপশনে গিয়ে KYD [IMEI Number] লিখে 16002 নাম্বারে সেন্ড করার জন্য বলা হয়েছে।

অফিসিয়াল আর আনঅফিসিয়াল ডিভাইস কি কেন এবং কিভাবে কিনবেন সেটা নিয়ে আমার আগেই একটি বিস্তারিত পোষ্ট করা রয়েছে। এবার সে পোষ্ট পড়ে আসুন তাহলে অফিসিয়াল , আনঅফিসিয়াল ক্লোন রিফ্রার্বিশ ইত্যাদি ডিভাইস সম্পর্কে আপনার ধারণা হবে:

কম দামে আনঅফিসিয়াল ফোন! রিস্ক ও সুবিধা

সংক্ষেপে বলতে গেলে:
ক) Official ফোন হচ্ছে ,যে ফোনটা বাংলাদেশ সরকারকে Tax (কর) দিয়ে আনা হয় , Official ভাবে আসে সেটাই হচ্ছে Official ফোন । অফিসিয়াল শো রুম / ডিলারদের কাছ থেকে যে ফোন বিক্রি করা হয় সেগুলোই হচ্ছে অফিসিয়াল স্মার্টফোন।

খ) Unofficial ফোন হচ্ছে ,যে ফোনগুলো বাংলাদেশ সরকারকে না জানিয়ে অবৈধভাবে Tax না দিয়ে ,চোরাই পথে আনা হয় সেগুলোই হচ্ছে Unofficial ফোন । এই দুটি ফোনের মধ্যে manufacturing কোন পরিবর্তন নেই , এই দুটি ফোন একই রকম ,দুটিকে পাশাপাশি রাখলে কোন পাথর্ক্য খুঁজে পাবেন না । শুধু একটি Taxদিয়ে এসেছে আরেকটি , Tax না দিয়ে এসেছে । এই দুটি ফোনের মধ্যে এটাই পার্থক্য।

আনঅফিসিয়াল ডিভাইস কেনার মূল কারণ:

সরকারকে কোন প্রকার কর দেওয়া লাগে না বিধায় আনঅফিসিয়াল ডিভাইসগুলো অফিসিয়ালের থেকে দামে সস্তা হয়ে থাকে আর এটাই আনঅফিসিয়াল ডিভাইস ক্রয় করা মূল কারণ। আবার অনেক সময় দেখা যায় যে কিছ কিছু ডিভাইস রয়েছে সেগুলো অফিসিয়াল ভাবে কখনোই বাংলাদেশে আসে না সেগুলোকেও আনঅফিসিয়াল ভাবেই কিনে নিয়ে ব্যবহার করতে হয়।

বসুন্ধরা শপিং কমপ্লেক্সের সুমাশ টেকের প্রাইজ লিস্ট দেখলেই বুঝতে পারবেন:

updated price list (16/12/2020)
❝Xiaomi All Price List❞
————————————————–
Poco x2 [6/128] ⇝⇝⇝⇝ 21500TK
Poco x3 nfc [6/64] ⇝⇝⇝⇝22000TK #out
Poco x3 nfc [6/128] ⇝⇝⇝⇝24000TK
Poco x3 [6/128] ⇝⇝⇝⇝ 22500TK ind global
Poco m2 [6/64] ⇝⇝⇝⇝14000TK
Poco m2 [6/128] ⇝⇝⇝⇝15000TK
Poco m3 [4/128] ⇝⇝⇝⇝17500TK
Poco m2 pro [4/64] ⇝⇝⇝⇝TK #out
Poco m2 pro [6/64] ⇝⇝⇝⇝18500TK
Poco c3 [4/64] ⇝⇝⇝⇝11500TK
Poco f2 pro [6/128] ⇝⇝⇝⇝37000TK int global #out
Note 9 [4/128] ⇝⇝⇝⇝ 17500TK int global #out
Note 9 [4/64] ⇝⇝⇝⇝ 14500TK ind global
Note 9 [4/128] ⇝⇝⇝⇝17000TK ind global
Note 9 pro [4/64] ⇝⇝⇝⇝17000TK ind global
Note 9 pro [4/128] ⇝⇝⇝⇝18000TK ind global
Note 9 pro [6/128] ⇝⇝⇝⇝ 23000TK int global
Note 9 pro [6/128] ⇝⇝⇝⇝ 21500TK ind global #out
Note 9s [6/128] ⇝⇝⇝⇝ 21000TK int global
Redmi 10x [4/128] ⇝⇝⇝⇝16000TK chinese
Note 9 pro max [6/64] ⇝⇝⇝⇝ 19500TK ind global #out
Note 9 pro max [6/128] ⇝⇝⇝⇝22500TK ind global
Redmi note 8 [4/64] ⇝⇝⇝⇝14000TK cn
Redmi note 8 [4/64] ⇝⇝⇝⇝15500TK int global
Redmi note 8 [4/64] ⇝⇝⇝⇝14500TK ind global
Redmi 9 [4/64] ⇝⇝⇝⇝12000TK ind global
Redmi 9 prime [4/128] ⇝⇝⇝⇝14000TK ind global
Redmi 9 [4/64] ⇝⇝⇝⇝12500TK chinese
Redmi 9 [4/64] ⇝⇝⇝⇝13500TK global
Redmi 9 [3/32] ⇝⇝⇝⇝12500TK global #out
Redmi k30i 5G [6/128] ⇝⇝⇝⇝23000TK cn #out
Redmi k30 [6/128] ⇝⇝⇝⇝20000TK cn
Redmi k30 ultra [6/128] ⇝⇝⇝⇝32000TK cn
Redmi k30 ultra [8/128] ⇝⇝⇝⇝34000TK cn
Mi Note 10 [6/128] ⇝⇝⇝ 39000TK global #out
Mi Note 10 lite [6/128] ⇝⇝⇝⇝30000TK global (coming)
Mi Note 10 lite [6/64] ⇝⇝⇝⇝27500TK global
Mi 10 lite 5G [6/128] ⇝⇝⇝⇝26000TK global
10 days replacement, 30 days parts (without mother board ic) & 2 years service warranty (without parts)
এগুলো হচ্ছে শাওমি ডিভাইসের আনঅফিসিয়াল প্রাইস এখন নিচে অফিসিয়াল শাওমি ডিভাইসের প্রাইস লিস্ট দেখুন:
❝Xiaomi Official Price List❞
————————————————–
Mi A3 (4/64) — 21000Tk
Redmi Note 8 (4/64) — 19000 Tk
Redmi Note 8 Pro (6/64) — 25000 Tk #out
Redmi Note 8 Pro (6/128) — 28000 Tk #out
Redmi 9 [4/64] ⇝⇝⇝⇝ 14999TK #out
Redmi note 9 (4/128) ⇝⇝⇝⇝19999TK
Redmi note 9s (6/128) ⇝⇝⇝⇝24999TK
Redmi note 9 pro (6/128) ⇝⇝⇝⇝27999TK
poco c3 [3/32] ⇝⇝⇝⇝11999TK
poco c3 [4/64] ⇝⇝⇝⇝12999TK
poco m2 [6/64] ⇝⇝⇝⇝15999TK
poco x3 nfc [6/128] ⇝⇝⇝⇝27999TK
এখন কি বুঝলেন? প্রথমত অফিসিয়াল ডিভাইসে দাম একটু বেশি, এবং অফিসিয়াল ভাবে কম মডেলের ডিভাইস রয়েছে আনঅফিসিয়ালের থেকে।

আমার মতে আনঅফিসিয়াল ডিভাইস কেনা বন্ধ করে দেওয়ার মতো কোনো কারণ নেই, কারণ পরবর্তীতে আপনি ফি দিয়ে রেজিস্ট্রি করে অফিসিয়াল ডিভাইস করে নিতে পারবেন! তবে এখানে দেখার বিষয় হচ্ছে কতটুকু ফি দিয়ে রেজিস্ট্রি করতে হয় সেটা!
২৫ হাজার টাকার ডিভাইস আপনি আনঅফিসিয়াল ভাবে কিনতে গেলে ৩/৪ হাজার টাকা কমে কিনতে পারবেন, সেখানে পরবর্তীতে যদি আপনাকে ১২০০ কিংবা ১৫০০ টাকা দিয়ে রেজিস্ট্রি করে নিতে হয় তাহলেও আপনি ২৫০০ টাকা জিতে গেলেন!

২০২১ সাল থেকে আনঅফিসিয়াল ডিভাইস বন্ধের ইংরেজি নিউজ সোর্স:

https://bdnews24.com/bangladesh/2020/10/25/bangladesh-to-shut-illegal-fake-mobile-phones-from-2021

> কভার ইমেজটি সুমাশ টেক এর ফেসবুক গ্রুপ থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে।

Share This Article

Search