ইন্টারনেটের মাধ্যমে বড় ফাইলস (2GB+) পাঠানোর সেরা উপায়গুলো!

বর্তমান আমাদের অনেকেই বাসাতেই ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগ ব্যবহার করে থাকেন। আর ব্রডব্যান্ড না থাকলেও মোবাইলে আমরা বেশ হাই স্পিড নেট উপভোগ করতে পারি। আর ডাটা ক্রয়ে এখন খরচও বেশ কমে গিয়েছে।
এখন ফাইল শেয়ারিংয়ের জন্য আমরা ইন্টারনেটকেই পেনড্রাইভের থেকে বেশি প্রাধান্য দিয়ে থাকি। কিন্তু সেটা ছোটখাট ফাইলের জন্যই প্রযোজ্য। দেখা যায় যে বড় ফাইল শেয়ারিংয়ের ক্ষেত্রে আমরা সেই আগের মতো পেনড্রাইভ কিংবা মেমোরি কার্ডের ব্যবহার করে থাকি। কারণ বড় ফাইল ইন্টারনেটের মাধ্যমে শেয়ারিংয়ের সবথেকে বড় সমস্যা হচ্ছে ইউজারের ইন্টারনেট স্পিড। আপনার তুমুল গতির ইন্টারনেট সংযোগ থাকলে ২/৩ জিবির ফাইল ইন্টারনেটে আপলোড করতে ২/৩ মিনিটের বেশি লাগার কথা না। অপর দিকে যার সাথে ফাইলটি শেয়ার করেছেন তার কাছে কিন্তু হাই স্পিড নেট সংযোগ না থাকলে এই ফাইল ডাউনলোড করতে বেশ সময় লেগে যেতে পারে।

বাইরের দেশগুলো অ্যাপলের ইকোসিস্টেমে বেশি থাকায় তারা (অ্যাপল ইউজার) AirDrop ব্যবহার করে থাকে। অন্যদিকে অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইস ইউজাররাও আস্তে আস্তে Nearby Sharing এর সাথে খাপ খাইয়ে নিতে শুরু করেছে।
তো বড় বড় ফাইল ইন্টারনেটে শেয়ারিংয়ের সমস্যা নিয়ে আজ কথা বলতে আসিনি। আজ এসেছি ইন্টারনেটে বড় বড় ফাইলস শেয়ারিংয়ের সঠিক পদ্ধতিগুলোকে নিয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করতে।

১) ক্লাউড স্টোরেজ

আপনার যদি বেশ ভালো ইন্টারনেট সংযোগ থাকে তাহলে আপনার জন্য সবথেকে সিম্পল পদ্ধতিতে বড় ফাইল শেয়ারিংয়ের মাধ্যম হচ্ছে ক্লাউড স্টোরেজ ব্যবহার করে। এখন আমাদের কাছে অনেকগুলোই ক্লাউড স্টোরেজ সার্ভিস রয়েছে যেমন গুগল ড্রাইভ, মাইক্রোসফটের ওয়ান ড্রাইভ কিংবা ড্রপবক্স।

ক্লাউড স্টোরেজ ব্যবহারের আরেকটি সুবিধা হলো এখানে ফাইল শেয়রিংয়ের সাথে সাথে আপনার ব্যাকআপ এর সুবিধাও উপভোগ করতে পারবেন। আপনি ক্লাউড স্টোরেজে ফাইল আপলোড করলে সেটাকে ব্যাকআপ হিসেবেও রেখে দিতে পারেন।
তবে এখানে সমস্যা হচ্ছে অধিকাংশ ক্লাউড স্টোরেজ সার্ভিসগুলো লিমিটেড পরিমাণের স্টোরেজ ফ্রিতে ব্যবহার করার জন্য দিয়ে থাকে। যেমন গুগল ড্রাইভে ফ্রিতে একটি একাউন্টে আপনি ১৫ গিগাবাইট স্টোরেজ ব্যবহার করার সুযোগ পাবেন যেটা সকল গুগল সার্ভিস যেমন গুগল ফটোস, জিমেইল, ড্রাইভ ইত্যাদির সবগুলোতেই এই ১৫জিবিই থাকবে, OneDrive এর ফ্রি লিমিট হচ্ছে ৫ গিগাবাইট আর ড্রপবক্সে মাত্র ২ জিবির স্টোরেজ রয়েছে।
তবে যদি শুধুমাত্র শেয়ারিংয়ের জন্য ব্যবহার করলে গুগল ড্রাইভের ১৫ জিবিই যথেষ্ট। তবে ক্রেডিট কার্ড বা পেপাল থাকলে আপনি ড্রাইভের ১০০ জিবির প্ল্যান নিয়ে নিতে পারেন মাত্র ১.৯৯ মার্কিন ডলারে।

২) pCloud Transfer

কোনো প্রকার সাইন ইন করা ছাড়াই আপনি pCloud Transfer ব্যবহার করে সর্বোচ্চ ৫ গিগাবাইট পর্যন্ত সাইজের ফাইল সেন্ড করতে পারবেন। অনেকেই রয়েছেন যে শেয়ারিংয়ের সময় সেন্ড করার পর সেটাকে আর ক্লাউডে ব্যাকআপ হিসেবে রাখতে চান না, তাদের জন্য এই pCloud Transfer সেরা হবে।

এখানে কোনো প্রকার সাইন আপের ঝামেলা ছাড়াই আপনি ৫ গিগাবাইট পর্যন্ত সাইজের ফাইলস পাঠাতে পারবেন। শুধু ফাইলটি সেন্ডার এবং রিসিভারের ইমেইল আইডি আপনাকে এখানে দিতে হবে। এছাড়াও ফাইলটির সাথে আপনি ছোট আকারের মেসেজও এখান থেকে সেন্ড করতে পারবেন। অন্যদিকে ফাইলকে পাসওয়ার্ড দিয়ে এনক্রিপ্ট করারও ফিচার ফ্রিতেই আপনি ব্যবহার করতে পারবেন।

৩) Resilio Sync (Peer to Peer)

আগের দুটি মেথডে ফাইল সেন্ড করতে হলে লক্ষ্য করে দেখবেন যে আপনাকে আপনার ডাটা একটি থার্ড পার্টি সার্ভারে সেন্ড করতে হতো। সেন্টিটিভ কিংবা গোপনীয় ফাইল আদান প্রদানের ক্ষেত্রে এই জিনিস টি আপনাকে অবশ্যই প্যাড়া দিবে। আর সেটার জন্য আমাদের আজকের এই শেষ পদ্ধতি।
এক্ষেত্রে আপনি Resilo Sync সার্ভিসটি ব্যবহার করতে পারেন। এটা একটি peer to peer ফাইল Sync অ্যাপ যেটা টান্সফারের ক্ষেত্রে BitTorrent প্রটোকল ব্যবহার করে থাকে।
আর যেহেতু সকল ডাটা ক্লাউডের পরিবর্তে ইউজারের ডিভাইসে ডাটা স্টোর করা হয়, তাই এই পদ্ধতিতে কাজ করতে হলে একই সাথে দুজন ইউজারকে প্রয়োজন হয়। সিকুরিটি হিসেবে এখানে পাচ্ছেন AES-128 এনক্রিপ্টশন ফিচার।

এই অ্যাপটি ব্যবহার করতে হলে জাস্ট ডাউনলোড করে ইন্সটল করুন আর ওপেন করুন। উপরের + সাইনে ক্লিক করে ফাইল কিংবা ফোল্ডার সিলেক্ট করে দিন।এবার শেয়ার করার জন্য লিংক কিংবা ইমেইলের মধ্যে একটিকে বেছে নিন। এছাড়াও আপনি expiration date এবং লিংকে একসেস লিমিটও সেট করে দিতে পারেন।
অন্যদিকে রিসিভারকেও এই অ্যাপটিতে ইন্সটল করে ওপেন করে লিংকে ক্লিক করতে হবে, তাহলেই রিসিভারের অ্যাপে ফাইলটি ডাউনলোড হওয়া শুরু হবে।

এখানে দুটি বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে। আপনার এবং রিসিভারের দুজনেরই হাই স্পিড নেট কানেক্টশন থাকতে হবে, একজনের রয়েছে তাহলে কিন্তু হবে না। আর ফ্রি ভার্সনে পারমিশন ম্যানেজ এবং selective file sync ফিচারটি আপনি পাবেন না। তবে ৬০ মার্কিন ডলারে এককালিন লাইসেন্স কিনে নিলেই অ্যাপটি চিরদিনের জন্য আপনার হয়ে যাবে।

Share This Article

Search