OnePlus ফোনের কাস্টম ইউআই OxygenOS বেশ জনপ্রিয়। স্টক এন্ড্রয়েডের মত মিনিমাল ডিজাইন ও পারফরমেন্স দিতে অপ্রতিদ্বন্দ্বী এই কাস্টম ইউয়াই। বলা হয়ে থাকে সর্বোপরি OnePlus এর গ্রহনযোগ্যতার এত বেশি হওয়ার পিছনে অন্যতম কি-ফ্যাক্টর হিসেবে কাজ করেছে এই Oxygen OS। কিন্তু আমরা সর্বশেষ OnePlus এর ফ্ল্যাগশিপ সিরিজ OnePlus 9 series লঞ্চের সময় দেখেছি চাইনিজ মার্কেটের জন্য লঞ্চ হওয়া ফোনগুলোতে Oxygen OS এর বদলে আসবে OPPO এর ColorOS। এরপর নতুন সংবাদ হচ্ছে একীভূত হয়ে যাচ্ছে OxygenOS ও ColorOS। OxygenOS এর এত হাইপ থাকা শ্বর্তেও কেন ColorOS এর সাথে মার্জ করা হল? OxygenOS এর ভবিষ্যত কি হতে পারে? ছোটখাট কিছু বিষয় নিয়ে সাজানো হয়েছে আজকের আর্টিকেল-
চাইনিজ টেক জায়ান্ট BKK Electronics এর আন্ডারে অনেকগুলো স্মার্টফোন ম্যানুফেকচারার আছে। যাদের মধ্যে OPPO, OnePlus, realme, & vivo অন্যতম। এইসব স্মার্টফোন ব্র্যান্ডগুলো অনেকভাবেই তাঁদের বিভিন্ন রিসোর্স শেয়ার করে থাকে। কিন্তু কিছুদিন আগ পর্যন্তও তাঁরা এটি সরাসরি স্বীকার করত না। কিন্তু এইবছরের শুরুতে OnePlus শোরগোল বাধিয়ে দেয় যখন তাঁরা জানায়, তাঁদের রিসার্চ ও ডেভেলপমেন্ট ইউনিট OPPO এর সাথে একীভূত করে ফেলেছে। মজার ব্যাপার হচ্ছে কিছুদিন আগে OnePlus এর সিইও Pete Lau জানায়, OnePlus এর পুরো টিম OPPO এর সাথে মার্জড হয়ে যাবে যেখানে সে নিজে OPPO এর Chief Product Officer হিসেবে কাজ করবে। অর্থাৎ OnePlus এতদিন স্বাধীন ব্র্যান্ড হিসেবে কাজ করলেও এখন মেইনলি OPPO এর সাব-ব্র্যান্ড হিসেবে কাজ করবে।
OxygenOS এর ভবিষ্যত?
এইখানেই শেষ না মাত্র কয়েকদিন আগের সংবাদ হচ্ছে OxygenOS ও ColorOS আলাদাভাবে ডেভেলপমেন্ট করা হবে না। অর্থাৎ OxygenOS ও ColorOS উভয়েই একটি কমন কোড বেইসের উপর থাকবে। এই ঘোষনাটি মোটামুটি সারপ্রাইজ ছিল না। কারণ ইতিমধ্যে OnePlus 9 series যখন চায়নাতে ColorOS দিয়ে লঞ্চ হয়েছে অন্যদিকে OnePlus মোটামুটি OPPO’র সাব-ব্র্যান্ডে পরিণত হয়েছে। OnePlus বলছে এই মার্জিং এর ফলে সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট আরো ভাল হবে। অন্যদিকে সিকিউরিটি প্যাচসহ মেজর আপডেটগুলো তাড়াতাড়ি পেতে সাহায্য করবে। যদিও মার্জিং এর কারণে গ্লোবালি OnePlus এর OxygenOS ইউজারদের কোনো প্রকার ঝামেলার সম্মুখিন হতে হবে না। এছাড়া OnePlus তাঁদের ফোনগুলোর জন্য সফটওয়্যার আপডেট টাইমলাইন জানিয়েছে। যেখানে, ফ্ল্যাগশিপ সিরিজের ফোনেরগুলো ৩টি মেজর এন্ড্রয়েড আপডেট ও ৪ বছর ব্যাপী সিকিউরিটি, CE লাইনআপের ফোনগুলোতে ২টি মেজর ৩ বছর ব্যাপী সিকিউরিটি এবং N সিরিজের ফোনগুলোতে ১টি মেজর এন্ড্রয়েড আপডেট ও ৩ বছর ব্যাপী সিকিউরিটি আপডেট দেওয়া হবে। তাই আপত দৃষ্টিতে দেখা যাচ্ছে, খুব সহসায় গ্লোবালি OxygenOS বাদ দেওয়া হচ্ছে না।
OxygenOS-ColorOS মার্জ করার কারণ?
OnePlus দিয়ে মূলত ইউরোপ এবং আমেরিকার মার্কেটগুলোতে আধিপত্য বিস্তার শুরু BKK Electronics। যার আগে তা একচেটিয়ে দখলে ছিল Huawei এবং বাদবাকিদের। অন্যদিকে OPPO এর ফোনগুলো বিশেষত সফটওয়্যার দিকে তখন অনেক পিছিয়ে ছিল। ColorOs তখন আনঅপটিমাইজড ও বাগ দিয়ে ভর্তি ছিল। কিন্তু ধীরে ধীরে তা সমাধান করে ফেলে OPPO। তাই ColorOS 11 মোটামুটি স্ট্যাবল বলা যায়। এছাড়া জনপ্রিয় লিকস্টার ডিজিটাল চ্যাট স্টেশন জানিয়েছে আপকামিং ColorOS 12 এ অন্যান্য রমের অনেকগুলো ফিচার ইনক্লুড করা হচ্ছে। আবার OxygenOS 11 এর মাধ্যমে ট্র্যাডিশনাল স্টক এন্ড্রয়েডের লুক থেকে কিছুটা সরে গিয়েছে। এইসব দিক বিবেচনায় নিয়ে বলা যাচ্ছে, OPPO অথবা OnePlus এর প্যারেন্ট কোম্পানি হয়ত দুইটা আলাদা আলাদা সফটওয়্যার উইং চালিয়ে যেতে আগ্রহী নয়। আপাতত গ্লোবাল ফোনগুলোতে OxygenOS রাখা হলেও ভবিষ্যতে হয়ত ধীরে ধীরে বন্ধ অথবা শুধুমাত্র ফ্ল্যাগশিপ সিরিজের জন্য সীমাবদ্ধ করে দিতে পারে। তবে প্রকৃতপক্ষে কি হয় সেটা দেখার জন্য আমাদের অপেক্ষা করতে হবে আরো কিছুদিন।