নতুন স্মার্টফোনে আপগ্রেড হওয়ার সঠিক সময়! অর্থ অপচয় করছেন না তো?

বর্তমান যুগ স্মার্টফোনের যুগ! চায়নিজ ব্র্যান্ডগুলোর আধিপত্যের কারণে আমাদের উপমহাদেশে প্রতি মাসেই নতুন নতুন অনেক স্মার্টফোন বাজারে চলে আসছে, এই সকল অবস্থা দেখে আপনি হয়তো মনে করছেন আপনার মোবাইল ফোন পুরানো হয়ে গেছে বা ফোনটি ভালো না তাই ফোনটি বদলানো উচিত । দুই/তিন মাস আগে মোবাইল ফোন কিনেছেন আর এখন নতুন ফোন চলে এসেছে একই দামে; যার পারফোরমেন্স এ আরো ভালো কিছু নিয়ে আসা হয়েছে ,নতুন নতুন ফিচার নিয়ে আসা হয়েছে; ডিজাইনটি আরেকটু ভালো নজরকারা ইত্যাদি কারণে আপনার মনে হতেই পারে স্মার্টফোনটি আপডেট করা দরকার! এই ফোনটি কেনা উচিত ? নাকি শুধু টাকা নষ্ট হবে সে বিষয়টি নিয়ে আজকের পোষ্টে সংক্ষিপ্ত আলোচনা হবে। তবে যাদের ২/৩ মাস পর পর স্মার্টফোন বদলানো পছন্দ করেন, এটা যাদের প্যাশন / সখ, যাদের বাজেটের কোনো সমস্যা নেই তাদের জন্য আজকেই পোষ্টটি নয়! পোষ্টটি আপনারা স্কিপ করে যেতে পারেন। 😉

ভূমিকা:

বিশ্বের অনান্য সকল বিষয়ের মতোই স্মার্টফোন জগতে যতো কোম্পানীর মোবাইল ফোন রয়েছে তার কোন মোবাইলই পারফেক্ট না । অর্থাৎ কোন কোম্পানীই আপনাকে সবদিক থেকে ১০০% পারফেক্ট মোবাইল ফোন দিতে পারবে না। তাই আপনি অনেক টাকা খরচ করলেও পারফেক্ট মোবাইল ফোন পাবেন না । লাখখানেক টাকা দিয়ে ফ্ল্যাগশীপ স্মার্টফোন কিনলেও সেটা ১০০% পারফেক্ট নয়! ৩/৪ মাস পর সেটার নতুন আপডেট সংষ্করণ আসলেই বুঝতে পারবেন বর্তমানে কি কি খাটতি রয়েছে। পুরো বিষয়টি নির্ভর করে আপনার ব্যবহারের উপরে ,তাই ব্যবহারের চাহিদা অনুযায়ী আপনি আপনার স্মার্টফোন ভালোভাবে খুজে নিতে পারবেন । আপনি কোন জিনিসটি বেশী ব্যবহার করেন , বেশী পছন্দ করেন সেটা আপনি ভালো জানেন এবং সেই বিষয়টির উপর ফোকস দিয়ে আপনার স্মার্টফোনের চয়েজটি নির্ধারিত হয়ে থাকে। যেমন- আপনি যদি ক্যামেরা পছন্দ করেন এর প্রতি বেশী আকৃষ্ট হয়ে থাকেন, তাহলে অবশ্যই যে স্মার্টফোনে ক্যামেরা ভালো আছে এমন ফোন নেয়া উচিত ,আবার যদি গেমার হন অথবা পারফরমেন্স অনেক বেশী চান তাহলে বাজেটের মধ্যে ভালো প্রসেসরযুক্ত ফোন কেনা উচিত; গেম খেলার ভালো অপটিমাইজেশন রয়েছে সেরকম মোবাইল ফোন কেনা উচিত ।

আপনি ১৫০০০ টাকা দিয়ে যে মোবাইল কিনলেন কয়েকমাস পর দেখলেন সেই দামেই আরো ভালো কিছু দিয়ে একই ব্রান্ডের নতুন ফোন এসেছে । আর তখনই আপনার মনে হবে আমি ঠকে গেলাম ,কয়েক মাস পরে কিনলে হয়তো আরো ভালো কিছু কেনা যেত । আমার নিজের বেলাও একই ঘটনা ঘটেছে। ২০২০ অক্টোবরে ২০ হাজার দিয়ে একটি স্মার্টফোন নিলাম, আর ডিসেম্বরের নতুন বছরের অফার হিসেবে সেই ২০ হাজার মূল্যের উপর ২ হাজারের ক্যাশব্যাক অফার চলে এলো (অফিসিয়াল ফোন)। এই সকল ক্ষেত্রে আপনার কিছু জিনিস তুলনা করতে হবে,আপনার মোবাইল আর নতুন আসা মোবাইলের মধ্যে পার্থক্য কি । আপনার ফোনের পিছনে ছিল ফিঙ্গার প্রিন্ট সেন্সর আর নতুন ফোনে ইন-ডিসপ্লে তে এসেছে । আপনার মোবাইলের প্রসেসর একটু কম, নতুন ফোনে একটু বেশী ,এসব পার্থক্যই সাধারণত নতুন ডিভাইসগুলোর সাথে রয়ে থাকে।

বি:দ্র: আপনার বর্তমান স্মার্টফোনটি যদি হারিয়ে যায়, চুরি হয়ে যায়, নস্ট হয়ে যায় কিংবা হেভি ডেমেজ হয় তাহলে সেটার সাথে এই পোষ্ট মিলাতে যাবেন না । প্রয়োজনে অবশ্যই নতুন ফোন নেওয়া উচিত! 

নতুন স্মার্টফোন কেনার সঠিক সময়

১) উৎসব সময়ে

বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে অফিসিয়াল-আনঅফিসিয়াল সকল ধরণের স্মার্টফোন কেনার সবথেকে উত্তম সময় হচ্ছে বিভিন্ন উৎসবের সময়। যেমন ঈদ, পুঁজা, বিজয় দিবস, ১৪ ফেব্রুয়ারী 😉 ইত্যাদি সময়ে সকল ধরণের স্টোরেই স্মার্টফোনের উপর কিছু না কিছু ছাড়, ডিসকাউন্ট, ক্যাশব্যাক, উপহার ইত্যাদি দেওয়া হয়ে থাকে। আর নতুন বছরের আগের এবং নতুন বছর শুরু হবার সময়েও বেশ ছাড়ের দেখা পাওয়া যায়। তাই নতুন স্মার্টফোন কেনার কথা ভাবলে এই সকল উৎসব ফেস্টিভাল সময়ের জন্য অপেক্ষা করা উত্তম।

২) Operating System এর আপডেট না আসলে

অ্যান্ড্রয়েডের অপারেটিং সিস্টেম বছরে এক বার করে নতুন ভার্সনে আপডেট করে, ঠিক তেমনি ভাবে অ্যাপলের iOS ও বছরে একবার করে ভার্সন আপডেট পেয়ে থাকে। অ্যাপলের আইফোনগুলোতে প্রায় ৪/৫ বছর পর্যন্ত এই অপারেটিং সিস্টেমের আপডেটগুলো পাওয়া যায়। আর অন্য দিকে অ্যান্ড্রয়েডের বেলার এই আপডেট একটু তুলনামূলক কম দেওয়া থাকে। যেমন আপনি ২০১৯ সালের ডিভাইসে এখন অ্যান্ড্রয়েড ১১ / ১০ চালালেও হয়তো বা সামনের অ্যান্ড্রয়েড ১২ আপনার ডিভাইসে আসতেও পারে, নাও আসতে পারে।
আউটডেটের অপারেটিং সিস্টেমযুক্ত স্মার্টফোন যেমন সিকুরিটির দিক থেকে বিপদজনক, পুরোনো অপারেটিং সিস্টেমে নতুন নতুন অ্যাপের আপডেটেড সংষ্করণগুলো চলাতে গেলেও বেশ সমস্যা সম্মুখিন হতে হয়। অনেক সময় দেখা যায় কিছু কিছু দরকারী অ্যাপসগুলো পুরোনো অপারেটিং সিস্টেম ভার্সনে চলেই না। তাই আপনার ডিভাইসটি যদি পুরোনো সংস্করণের অপারেটিং সিস্টেমে চলে থাকে এবং এটায় যদি নতুন আপডেট আর না আসে তাহলে আপনি নতুন স্মার্টফোন কিনতে পারেন। তবে সেটার ক্ষেত্রেও আপনার কাজগুলো করা যাচ্ছে কিনা সেটা খতিয়ে দেখে নিবেন।

৩) অ্যাপস কাজ না করলে

এটা অপারেটিং সিস্টেমের মতোই। আপনার স্মার্টফোনের কাজগুলো মূলত বিভিন্ন অ্যাপসের মাধ্যমে পরিচালিত হয়ে থাকে। পুরোনো ডিভাইসে নতুন নতুন আপডেটেড অ্যাপসগুলো সঠিক ভাবে কম্পাবেটেবল হতে পারে না। বিশেষ করে আপনার প্রতিদিনের চলানো অ্যাপসগুলো যখন আপনার ডিভাইসে চলবে না কিংবা বিভিন্ন সমস্যার মাধ্যমে খুতিয়ে খুতিয়ে চলা শুরু করবে তখন আপনি নতুন স্মার্টফোনে আপগ্রেড হতে পারেন।
ফেসবুক অ্যাপের কথাই বলুন, প্রতিনিয়ত বিভিন্ন আপডেটের মাধ্যমে ফেসবুক অ্যাপটি বেশ ভারী হতে থাকছে। এখন ৩ জিবি র‌্যামের ডিভাইসে ফেসবুকের মূল অ্যাপটি চালাতে গেলে বেশ ল্যাগের দেখা দেয়! বেশি পুরোনো হলে দেখবেন যে ফোন কলের অ্যাপেও ল্যাগ হচ্ছে!

৪) বর্তমান ফোনটি নিতান্তই স্লো হয়ে পড়লে

নতুন ফোন কেনার সময় সাধারণ ইউজাররা প্রসেসরের উপর তেমন গুরুর্ত্ব দিয়ে থাকেন না। কিন্তু পিসির মতো ই বর্তমানের স্মার্টফোনগুলোর স্পিড এবং পারফরমেন্সের ৮০% নির্ভর করে এর প্রসেসরের উপর। প্রসেসর ভালো না থাকলে নতুন ফোন কেনার পরেও ৪/৫ মাস পর আপনার মনে হবে যে সেট ধীরে ধীরে স্লো হতেই থাকছে! বিশেষ করে মিডিয়াটেকের প্রসেসরওয়ালা ফোনগুলোতো ভুলেও কিনবেন না!
আপনার বর্তমান ফোনটির পারফরমেন্স লক্ষ্যনীয় ভাবে ড্রপ করতে থাকলে তখন আপনার নতুন স্মার্টফোনে আপগ্রেড হওয়া উচিত। কিন্তু ফ্ল্যাগশীপ স্মার্টফোনে এই কথা বলা যায় না। ফ্ল্যাগশীপ স্মার্টফোনগুলোর পারফরমেন্স আগামী দেড় / দুই বছর পর্যন্ত স্ট্যাবল থাকবে।

) বর্তমান ডিভাইসের ক্যামেরা কোয়ালিটি খারাপ হলে

বর্তমান যুগে মোবাইল ফোনে ক্যামেরার গুরুর্ত্ব কত সেটা নতুন করে আপনাদেরকে বুঝাতে হবে না। ফেসবুক, স্ন্যাপচ্যাট, টিকটক সহ সকল ধরণের সোশাল মিডিয়াতে আপনার শেয়ারিংয়ের প্রধান উৎস হচ্ছে আপনার স্মার্টফোনের ক্যামেরা। আপনি ছবি তুলেন কিংবা না তুলেন আপনার ডিভাইসে ক্যামেরাটি কোন না কোন সময়ে আপনার দরকারে আসবেই। তখন যদি দেখেন বর্তমানের স্মার্টফোনের ক্যামেরাটি ভালো কাজ করছে না, ভালো রেজাল্ট দিচ্ছে না তাহলে নতুন স্মার্টফোনের কথা আপনি ভাবতে পারেন। তবে আমার মতো যদি বছরে দুই ঈদে দুখানা ছবি তোলা পাবলিক হলে এই বিষয়ে পাস নিয়ে যেতে পারেন। 😉

৬) বর্তমান ফোনের ব্যাটারি ব্যাকআপ ভালো না হলে

স্মার্টফোনের সব ধরণের চালিকাশক্তি আসে এর ব্যাটারি থেকে। আপনার বর্তমান ফোনের ব্যাটারি ব্যাকআপ যদি খারাপ হয়ে থাকে তাহলে চোখ বন্ধ করে নতুন স্মার্টফোনে আপগ্রেড হতে পারেন। দেখা গেল অফিস আওয়ারে অফিস করছেন কিন্তু আপনার ফোনটিতে ৪/৫ ঘন্টা পর পর চার্জ ফুরিয়ে যাচ্ছে; এই অবস্থায় অফিস করে দিনে ৩ বার চার্জ দেওয়া কারো পক্ষেই সুবিধা জনক হয়ে উঠে না। এছাড়া বিকল্প পদ্ধতি হিসেবে পকেটে পাওয়ারব্যাংক নিয়ে ঘোরাটাও একটি প্যাড়াদায়ক বিষয়! তাই ব্যাটারি সমস্যা থাকলে নতুন ফোনে চলে আসুন। কারণ আজকালের ফোনে ব্যাটারি সহজেই পাল্টানো যায় না!

৭) বর্তমান স্মার্টফোন নিয়ে হ্যাপি না থাকলে…

এটা একটু কঠিন ধাপ। বর্তমান ফোনটি নিয়ে যদি খুশি না থাকেন তাহলে নতুন ফোনে চলে আসতে পারেন। স্মার্টফোনটি যদি আপনার প্রয়োজনমতো সঠিকভাবে স্পিড, ফিচার, ফটো রেজাল্ট ইত্যাদি দিতে না পারে তাহলে অভারঅল ফোনটির উপর আপনার বিরক্তি চলে আসতে পারে। তবে ফোন কেনার আগে আপনার Needs এবং Wants এর উপর ফোকস দিয়ে কিনবেন।

পরিশিষ্ট

তো এখন আপনি আপনাকে নিজে নিজে প্রশ্ন করুন ঘন ঘন ফোন বদলানো কি খুব দরকার ? আমাদের অনেকেই যেটি করি; নতুন কিছু ফিচার নিয়ে কয়েকমাস পরে নতুন একটা মোবাইল চলে এসেছে তখন নিজের ফোনটির সাথে ওটাকে তুলনা করি আর ফোনটি বিক্রি করে দেই । তাহলে কি হয়? যে ফোন ১৫০০০ টাকা দিয়ে কিনেছিলেন এখন বিক্রি করছেন ১০,০০০/১২,০০০ টাকা দিয়ে। আর মাঝখান দিয়ে ৪/৫ হাজার টাকার লা হালুয়া ক্ষতি হয়ে গেল । আবার নতুন ফোন কেনার সময় ১৫০০০ বা আরো বেশী টাকা দিয়ে কিনলেন এতে আপনার কিন্তু ৪/৫ হাজার টাকার এক্সট্রা ক্ষতি হয়ে গেল । এই যে টাকাগুলো নষ্ট হচ্ছে সারা বছর বা ২ বছরের যদি হিসেব করেন দেখবেন আপনি আপনার ফোনের পিছনে অনেক বাড়তি টাকা খরচ করে ফেলেছেন । আপনি সবসময় যখন একটি ফোন ব্যবহার করবেন, আপনার দৈন্দদিন জীবনের সকল কাজ যখন ওই স্মার্টফোন দিয়ে করতে থাকবেন তখন ওই স্মার্টফোনকেই আপনার পারফেক্ট মনে হবে। নতুন স্মার্টফোন এলে সেখানে বিদ্যমান ছোট ছোট যে আপডেটেড ফিচার রয়েছে সেগুলোকে তখন আপনার জন্য অতটা প্রয়োজনীয় মনে হবে না। যেমন সাইড মাউন্টেড বা পেছনে ফিজিক্যাল ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর কিন্তু In-Display ফিঙ্গারপ্রিন্ট এর থেকে বেশি দ্রুত গতির হয়ে থাকে। কিংবা আপনার বর্তমান স্মার্টফোনে ৪০০০ mAh ব্যাটারি রয়েছে আর নতুন আসা স্মাটফোনে ১০০০ বেশি রয়ে ৫০০০ mAh ব্যাটারি রয়েছে, দিন শেষে দেখা গেল ৪০% চার্জে আসার আগেই চার্জে লাগিয়ে রাখলেন! একটি কথা মনে রাখা উচিত যে , কোম্পানীগুলো নতুন স্মার্টফোনের বিজ্ঞাপনগুলোতে এই আপগ্রেড জিনিসগুলো দেখানোর জন্য করে ,আমরা মনে করি অনেক ভালো কিছু পাচ্ছি ,অনেক আপগ্রেডবল জিনিসগুলো পাচ্ছি , নতুন ফোন কেনার জন্য এগুলো কিন্তু বেশী গুরুত্বপূর্ণ নয় । দেখতে হবে আপনি কোন জিনিসটি চাচ্ছেন ফোনের মধ্যে , কোন জিনিসটি আপনার দরকার সেটি আপনার ফোনটি থেকে সেটি পাচ্ছেন কিনা । সেটি দেখেই ফোন কেনা উচিত । সবারই ফোন কেনার জন্য বাজেট একেক রকম থাকে , সীমিত বাজেটের মোবাইল ফোনগুলো ১/২ বছর ,কিছু ফোন ২ বছর চালানো যায় ,যদি আপনি যত্ন সহকারে ফোনটি ব্যবহার করতে পারে । একটু বেশী বাজেটের ফ্ল্যাগশীপ ফোনগুলো আরামসে ২ বছর ব্যবহার করতে পারবেন । অনেক সময় ৩ বছর বা তারও বেশী সময় ব্যবহার করতে পারবেন । আর এই সময়ের মধ্যে কিন্তু এই ফোনগুলোতে এই সমস্যাগুলো হবার কথা নয় ,তাহলে কেন এই সময়ের মাঝে নতুন ফোন কিনবেন ?

 

সোর্স লিংকসমুহ:
১) অ্যান্ড্রয়েড অথোরিটি
২) বাই মোবাইলস
৩) টমস গাইড
৪) রিপাবলিক ওয়্যারলেস

কভার ইমেজগুলো: Jack N Gadget ফেসবুক গ্রুপ থেকে সংগ্রহ করে এডিট করা হয়েছে। 

Share This Article

Search