বর্তমানে আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশে বসবাস করছি এবং ধীরে ধীরে স্মার্ট বাংলাদেশের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। ডিজিটাল বাংলাদেশে আপনি চারিদিকে লক্ষ্য করলে দেখবেন যে সরকারি বেসরকারি সব ক্ষেত্রেই বিভিন্ন সার্ভিসগুলো এখন সব সম্পূর্ণভাবে অনলাইন ভিক্তিক হয়ে গেছে / যাচ্ছে।
আর ডিজিটাল বাংলাদেশে আপনাকে ট্রেন্ডের সাথে তাল মিলিয়ে থাকার জন্য চাই বেসিক কম্পিউটার নলেজ। আর কম্পিউটার নলেজের একটি বড় অংশ জুড়ে রয়েছে টাইপিং। কম্পিউটার কিংবা স্মার্টফোন যে প্লাটফর্মেই আপনি ডিজিটাল জগতের সাথে ইন্টারএক্ট করতে যান না কেন আপনাকে টাইপিংয়ের মাধ্যমে মনের ভাব প্রকাশ করতে হবে।
কম্পিউটার জগতে বাংলা টাইপিংয়ের জন্য আমাদের হাতে ইংরেজির মত অত বেশি অপশন রাখা নেই। ছোটবেলায় আমরা বিজয় কিবোর্ডের মাধ্যমে কম্পিউটারে বাংলা টাইপিং শিখেছি এবং ব্যবহার করেছি। দেশে ইন্টারনেট বিপ্লব হবার পর আমাদের অধিকাংশই অভ্রতে সহজ ভাবে বাংলায় ইউনিকোডে টাইপিং করতে অভস্ত হয়ে পড়ি এবং বর্তমানে ইন্টারনেটে কিংবা অফলাইনে বাংলা টাইপিংয়ের জন্য আমাদের দেশে এই বিজয় এবং অভ্র এই দুটি মেজর কিবোর্ড টুল ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
এই মেজর দুটি বড় এন্টারপ্রাইজের সাথে সাথে Indie মহলে বাংলা টাইপিং নিয়ে আমরা তরুণ ডেভেলপারদের থেকে চমৎকার অনেক টুলের দেখা পাচ্ছি। তারই ধারাবাহিকতায় আজ আমি আপনাদের সাথে পরিচয় করি দিচ্ছি নতুন বাংলা টাইপিং টুল “কণ্ঠ” এর সাথে।
বিশেষ ভাবে উল্লেখ্য যে, এটা কোনো স্পন্সরকৃত আর্টিকেল নয়। এটি আমি (ফাহাদ) ব্যক্তিগতভাবে টুলটি ইউজের পর টুলটি আসলেই কাজের কিনা সেটার রিভিউ নিয়ে আপনাদের সামনে চলে এলাম। তো অফিসিয়াল ভাষায় রিভিউ না দিয়ে আমি আমার মতো করে টুলটি সম্পর্কে আপনাদের কিছু ধরণা দেওয়া চেষ্টা করছি:
টুলটি ডাউনলোড করতে এখানে ক্লিক করুন।
ডাউনলোড করার পর একটি জিপ ফাইল পাবেন। একে 7Zip দিয়ে আনজিপ করুন (কেন জানি winrar দিয়ে আনজিপ করতে গেলে এরর দেখাচ্ছিল।) আনজিপ করার পর আবারো একটি জিপ ফাইল এবং ৩টি ফন্ট ফাইল পাবেন। ফন্টগুলো যদি আপনার পিসিতে ইন্সটল করা না থাকে তাহলে এখান থেকে ফন্ট সিলেক্ট করে রাইট বাটন মেন্যুতে গিয়ে ফন্টগুলো ইন্সটল করে নিতে পারবেন।
এটি একটি পোর্টেবল টুল বিধায় এখানে ইন্সটলের কোনো ঝামেলা নেই। সরাসরি ফাইলটি আনজিপ করে টুলটি ব্যবহার করা শুরু করে দিতে পারেন।
চালু করার পর টুলটি স্ক্রিণের উপরে চলে আসবে। এখান থেকে বাই ডিফল্ট ইংরেজি অপশন দেওয়া থাকবে, আপনাকে ইংরেজি লেখার উপর ক্লিক করে বাংলা মোডে নিয়ে আসতে হবে।
এবার টাইপ করা শুরু করতে পারেন। বাংলায় টাইপ শুরু করার আগে সেটিংস থেকে কিছু টুইকস করে নিতে হবে।
সেটিংয়ে গিয়ে বাংলা আউটপুট অপশন থেকে আপনি কি মোডে টাইপ করতে চান সেটা সিলেক্ট করে নিন। ইন্টারনেটে টাইপ করতে চাইলে Unicode এবং বিজয় ফন্টে টাইপ করতে চাইলে ANSI অপশনে সিলেক্ট করুন।
তারপর কিবোর্ড লেআউটে গিয়ে যদি অভ্রের মত টাইপ করতে চান তাহলে Banglish অপশনটি সিলেক্ট করুন, আর বিজয় লেআউটে টাইপ করতে চাইলে বিজয় সিলেক্ট করুন।!
মানে আপনি এখন চাইলে SutonnyMJ ফন্টে অভ্র লেআউট মানে বাংলিশ টাইপ করে লেখতে পারবেন! বাহ!
টাইপ করার সময় বাংলায় এটা আপনাকে ওর্য়াড সাজেশন দেখাবে যেটা অফিস-আদালতে গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্ট টাইপ করার সময় আপনাকে বেশ সাহায্য করবে।
SutonnyMJ ফন্টে বিজয় লেআউট সিলেক্ট করে কিছু কথা টাইপ করার সময় “তোমায়” এর ক্ষেত্রে আমি কোনো ভাবেই “য়” অক্ষরটি টাইপ করে আনতে পারছিলাম না।
টুলটির অন্য ফিচারের কথা বলতে গেলে এতে রয়েছে ভয়েস টাইপিংয়ের চমৎকার ফিচার। এজন্য আপনার ডিভাইসে ইন্টারনেট সংযোগ এবং মাইক্রোফোন কানেক্টশন থাকা লাগবে।
তবে এখানে সমস্যা হচ্ছে যে আপনার এয়ারফোন দিয়ে ভয়েস-টু-টেক্স ফিচারটি ব্যবহার করতে পারবেন না। মাইক্রোফোন বা কম্পিউটারের হেডফোন যেখানে দুটি কানেক্টশন ক্যাবল থাকে এরকম হেডফোন থাকলেই আপনি এই ফিচারটি ব্যবহার করতে পারবেন।
এছাড়াও Bluetooth হেডফোন থাকলেও আপনি এই ফিচার ব্যবহার করতে পারবেন।
ভয়েস টাইপিংয়ের ক্ষেত্রে দাড়ি কমা চিহ্নগুলো ব্যবহার করা বেশ কষ্টকর বিষয়!
পরিশিষ্ট
কণ্ঠ একটি বেশ চমৎকার একটি অ্যাপ। কিন্তু এর প্রধান ফিচার ভয়েস টাইপিংটি আমাদের সকলের ক্ষেত্রে সমান ভাবে ব্যবহারযোগ্য হবে না। এছাড়াও স্কুল-কলেজ বা অফিসের কাজে বিজয় লেআউটে ANSI মোডে টাইপ করার সময় অক্ষর না আসাটাও একটি সমস্যা। তাই অফিসের দৈনন্দিন কাজে Bijoy অ্যাপে বিকল্প হিসেবে এটাকে আমি রেকোমেন্ড করতে পারছি না।
তবে ইন্টারনেটে টাইপিংয়ের জন্য অভ্র কিংবা বিজয় লেআউটে ইন্টারনেটে লেখার বিজয়৫২ এর বিকল্প হিসেবে আমি কণ্ঠ করে রেকোমেন্ড করতে পারি। যেহেতু বিজয়৫২ একটি পেইড টুল এবং এই কণ্ঠ একটি ফ্রি-টু-ইউজ অ্যাপ তাই আপনি কণ্ঠ ব্যবহার করে বিজয়৫২ এর ফিচারগুলো উপভোগ করতে পারবেন।