গত বছরে GaN বা Gallium Nitride চার্জার নিয়ে বেশ শোরগোল ছিল টেক ওয়ার্ল্ডে বিশেষ করে CES2020 এর পর থেকে। যখন Xiaomi তাঁদের লেটেস্ট ফ্ল্যাগশিপ মোবাইল Mi 11 এর সাথে চার্জার হিসেবে আউট অফ্য বক্স 55W GaN চার্জার প্রোভাইড করা শুরু করে তখন অনেকের কাছে একদম নতুন হিসেবে আবির্ভার ঘটে। নরমাল চার্জারের সাথে এটির তফাৎ কোন জায়গায়? মূলত এই ‘তফাৎ’ ব্যাখা করার জন্যই আরো একটি “Explained” আর্টিকেল নিয়ে হাজির আপনাদের সামনে পিসি বিল্ডার বাংলাদেশ।
ইলেকট্রিক্যাল সার্কিটে আমরা জানি যে, বিভিন্ন ধরনের ডায়োড, ট্রান্সজিস্টর, এমপ্লিফায়ার ব্যবহার করা হয়। এইসব সার্কিটে কারেন্টও খুবই কম লাগে তাই আমরা ঐসব সার্কিট তৈরিতে পরিবাহী ধাতু ব্যবহার করা হয় না বরঞ্চ অর্ধবাহী ধাতু ব্যবহার করা হয়। সিলিকনের অত্যাধিক প্রাপ্যতা ও আরো বহুবিধ কারণে খুব বেশি পরিমাণে সবধরনের সার্কিট তৈরিতে সিলিকন ব্যবহার হয়। প্রতি দুইবছরে একটা সার্কিটে সিলিকন ট্রান্সজিস্টর ব্যবহারের সংখ্যা দ্বিগুন হয়ে যাবে যেটি ১৯৬৫ সালের দিকে মোর নামের একজন সাইন্টিস্ট প্রেডিক্ট করেছিল যেটি মোর’স ল নাম পরিচিত। যেটি মোটামুটি ৫০ বছরের বেশি সময় ধরে ফলো হয়ে আসছিল। কিন্তু আরো আগে থেকে মোরসহ আরো অনেকে এটিও প্রেডিক্ট করেছিল যে ২০২৫ সালের মধ্যেই ঐ ল মোটামুটি বাতিল হয়ে যাবে। ফলত ২০১০ সাল থেকে এটি মোটামুটি স্লো হয়ে যায় নানাবিধ সীমাবদ্ধতার কারণে। তাই আরো অনেক আগে থেকে সিলিকনের বিকল্প খুঁজতে শুরু বিজ্ঞানিরা। ফলে সিলিকনের চেয়ে আরো বেশি ইফিশিয়েন্ট গ্যালিয়াম নাইট্রাইডের সন্ধান পায়। ১৯৯০ সালে প্রথম গ্যালিয়াম নাইট্রাইডের এলইডি বাজারে আসে।
Why Gallium Nitride over Silicon?
একটি পদার্থের ব্যান্ডগ্যাপ উপর নির্ভর করে পদার্থটি অপরিবাহী, অর্ধপরিবাহী হবে নাকি সুপরিবাহী হবে। মেটাল বা সুপরিবাহীতে এই ব্যান্ডগ্যাপ থাকেই না বলে চলে আবার অপরিবাহীতে অনেকবেশি। অন্যদিকে অর্ধপরিবাহী মৌলগুলোতে এই ব্যান্ডগ্যাপ অপরিবাহী ও সুপরিবাহীর মাঝামাঝিতে থাকে। এখন এই ব্যান্ডগ্যাপ যতকম থাকে তত বেশি ইলেকট্রন বেশি বা ফ্লো ভাল করে হতে পারে। এখন সিলিকনের ব্যান্ডগ্যাপ হচ্ছে 1.12eV অন্যদিকে গ্যালিয়াম নাইট্রাইডের 3.4eV। সিলিকনের ব্যান্ডগ্যাপ কম হওয়ার কারণে সিলিকনের কন্ডাকটিভিটি বেশি কারেন্টের। ঠিক এই কারণেই সিলিকন বেইসড সার্কিট অনেক বেশি এনার্জি লস হয়ে যায় হিটের মাধ্যমে। অর্থাৎ হিট ডিসিপিয়েশন অনেক বেশি সিলিকনের।
কিন্তু অন্যদিকে গ্যালিয়াম নাইট্রাইডের ব্যান্ডগ্যাপ বেশি হওয়ার কারণে হিট ডিসিপিয়েশন কম। তাই এটি বেশি ভোল্টেজ ও বেশি টেম্পারাচারেও কাজ করতে পারে। হাইয়ার ভোল্টেজ অনেক বেশি ক্রুশিয়াল একটি ফ্যাক্টর কারণ ফাস্ট চার্জিং এর জন্য বেশি ভোল্টেজ পাস করতে হয়। এখন বেশি ভোল্টেজ পাস করতে গিয়ে দেখা যায় চার্জিং ব্রিকগুলো অনেক গরম হয়ে যায় কারণ বর্তমানে চার্জারগুলো সিলিকনের মেটেরিয়ালের তৈরি। এই প্রবলেম সল্ভ হয়ে যায় GaN চার্জার দিয়ে। কারণ GaN চার্জার কম হিট প্রোডিউস করে। আবার অন্যদিকে যেহেতু গ্যালিয়াম নাইট্রাইডের হিট ডিসিপিয়েশন কম তাই একটা সার্কিট বানানোর সময় ইলিমেন্টগুলোকে খুব কাছাকাছি রাখা যায় হিট ডিসিপিয়েশন কম হওয়ার কারনে। এই কারণেই GaN চার্জারগুলোকে আমরা নরমাল চার্জার গুলোর চেয়ে সিগনিফিক্যান্টলি ছোট দেখতে পাই। তাছাড়া GaN ১০০০ গুন বেশি ইফিশিয়েন্টলি বেশি ইলেকট্রন ট্রান্সপোর্ট করে পারে। ওভারঅল ম্যানুফেকচারিং কস্টও সিলিকনের চেয়ে কম এবং সিলিকন বেইসড ফ্যাসেলিটিতেও সহজেও GaN বেইসড প্রোডাক্ট বানানো যায়।
এটির সাথে ফিলামেন্ট বাল্বের থেকে এলইডি বাল্বের মধ্যে টেকনোলজির ট্রাঞ্জিশন তুলনা করতে পারেন।
ফাস্ট চার্জিং আসলে কিভাবে কাজ করে তা বিশদভাবে জানতে পড়তে পারেন আমাদের ওয়েবেরই আর্টিকেল এইখান থেকে