GAMING এ BOTTLENECK কিভাবে কাজ করে?

আচ্ছা, আপনাকে যদি বলা হয়  , ryzen 5 1600x ও ryzen 5 5600x এর পারফর্মেন্স সমান? কিংবা মনে করেন ryzen 5 5600x, ryzen 9 5950x এর পারফর্মেন্স সমান? বা আই ফাইভ ১৩৪০০, ১২৪০০ ও সমান পারফর্মেন্স দেয়? আবার যদি বলি RTX ,3060 ARC A770, 3060 Ti, 4060 Ti এরাও সমান ?উত্তেজিত হওয়ার একেবারেই কারণ নেই, কারণ আমরা আমাদের দাবীর স্বপক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করবো অচিরেই।

বাস্তব জীবনে, বিশেষ করে গেমিং এ  বটলনেক আসলে কিভাবে কাজ করে,সেটাই আজ আমরা দেখার চেষ্টা করবো। বেঞ্চমার্ক বিশ্লেষণ এর সাহায্যে।  আজকের লেখাটা মুলত গেমারদের জন্য, তবে প্রোডাক্টিভিটি,ভিডিও এডিটিং বা অন্যান্য কাজের জন্য যারা পিসি বিল্ড করেন ,তাদের জন্য ও কমবেশি প্রাসঙ্গিক বা উপকারী হতে পারে।

বটলনেক শব্দটা আমরা আমাদের গ্রুপে, বিভিন্ন কমিউনিটিতে, বিভিন্ন জায়গায় হরহামেশাই শুনে থাকি, যে বটলনেক করবে,বটলনেক করবে, আসলে বটলনেকটা বাস্তবে কিভাবে হয়?? একটা কম্পোনেন্ট যখন সিস্টেমের  অন্য কম্পোনেন্ট এর জন্য তার ক্ষমতার সর্বোচ্চটা দিয়ে পারফর্ম করতে পারে না সেটাই বটলনেক।

বটলনেক এর কোনো % হয় না, একক হয় না, সংখ্যা দ্বারা বিশ্লেষণ করা যায় না। এই সংক্রান্ত যতগুলো ওয়েবসাইট,টুল আছে সবগুলোই মিথ্যা তথ্য দেয়। পৃথিবীর সমস্ত পিসিতেই বটলনেক আছে, কিন্ত সেটা কাজের ধরন,গেমের রেজুলুশন,সেটিংস, গেমের ধরন ইত্যাদি বিষয়ের উপর নির্ভর করে ও এর প্রভাব পরিবর্তিত হয় পরিস্থিতি,রেজুলুশন,সেটিংস ইত্যাদি ভেদে।

বটলনেক শুধুমাত্র প্রসেসর-গ্রাফিক্স কার্ডেরই হয় না, এটা র‍্যাম এর ও হতে পারে। এমনকি 60 Hz মনিটরে ১৫০-২০০ এফপিএস এর আউটপুট যদি গ্রাফিক্স কার্ড পাঠায়, সেক্ষেত্রেও বটলনেক সৃষ্টি হতে পারে (যদিও এটা এফপিএস কমায় না বা পারফর্মেন্স এর পার্থক্য হয় না)।

বোঝানোর সুবিধার্থে বলা যেতে পারে, একটি জেনারেশনের কোর আই ফাইভ প্রসেসর ও আই সেভেন প্রসেসর যে ফ্যাক্টরের জন্য একই রকমের পারফর্মেন্স দেবে, অর্থাৎ শক্তিশালী প্রসেসরটি দুর্বল প্রসেসরের সমান পারফর্মেন্স দেবে যে কারণে, সেটিই বটলনেক। দুইটি গ্রাফিক্স কার্ড এর বে পারফর্মেন্স ও স্পেসিফিকেশনের দিক দিয়ে অনেক পার্থক্য থাকার পরেও তারা  একই রকমের পারফর্মেন্স দেয়, এটার পেছনে থাকে বটলনেক।

এখন আপনাদের দেখাবো, বটলনেকের কারণে বিভিন্ন কোয়ালিটি,জেনারেশন এর হার্ডওয়্যার একই রকম পারফর্ম করতে পারে, কিভাবে, চলুন দেখে নেওয়া যাক।

বটলনেক  রেজুলুশনের জন্য কার্যকর থাকে, রেজুলুশন বাড়ালে কিছু ক্ষেত্রে বটলনেক কেটে যেতে পারে, আবার কিছু ক্ষেত্রে হাই রেজুলুশনেই বটলনেক সৃষ্টি হয়। রেজুলুশন বাড়ালে সিপিইউ বটলনেক কাটে, প্রেশারটা জিপিইউ এর দিকে চলে যায় হয় এটাই মৌলিক ধারণা।

***আলোচনার সুবিধার্থে রেফারেন্স হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে 1. Hardware Unboxed, 2. Techtesters , 3.TECH DEALS এর ভিডিও***

দৃশ্যপট একঃ

 

উপরের স্ক্রিনশটে দেখা যাচ্ছে যে Ryzen 5 5600,5500,13100 ও 12100 এর পারফর্মেন্স এর পার্থক্য একদমই সামান্য হবে যদি RX 6650 XT বা এর থেকেও কম পাওয়ারফুল গ্রাফিক্স কার্ড দিয়ে ব্যবহার করা হয়। Ryzen 5 5600 এর প্রকৃত পারফর্মেন্স ও অন্যান্য প্রসেসরের সাথে এর পার্থক্য এর সর্বোচ্চটা অনুধাবন করতে হলে আমাদের নুন্যতম RX 6950XT ও সর্বোচ্চ RTX 4090 এর সাহায্য নিতে হবে।

আমরা এখান থেকে কি বুঝলাম, এরকম ঘটনা ঘটার কারণ কি? সোজা ভাষায় বলতে গেলে RX 6650 XT চারটি প্রসেসরকেই বটলনেক করছে 1080p তে; জ্বি। কিভাবে বুঝলাম? কারণ 6950XT ব্যবহার করলে যে শুধু 5600 এর পারফর্মেন্স ও পার্থক্য পরিবর্তন হচ্ছে তাই নয়, বরং ৪টি প্রসেসরই ২৮ থেকে ৪১ এফপিএস এর বুস্ট পেয়েছে পারফর্মেন্স এ,শুধুমাত্র গ্রাফিক্স কার্ড এর পরিবর্তনের কারণে।

কিন্ত, 6950 XT আর 4090 এর ক্ষেত্রে কিন্ত পারফর্মেন্স এর পার্থক্য আর কম বেশি হয়নি! এখান থেকে কি বোঝা যাচ্ছে, এখন বটলনেকটা অন্যদিকে, RTX 4090 এর জন্য এই চারটি প্রসেসরই অনেক অনেক দুর্বল। অর্থাৎ 4090,6950XT থেকে ৩০-৪০-৫০ এফপিএস বেশি দেওয়ার কথা থাকলেও দিতে পারছে না, কারণ এই চারটি প্রসেসর ৪০৯০ কে আটকে রাখছে,তাদের দুর্বলতার কারণে 4090 Bottleneck এর শিকার হচ্ছে।  অর্থাৎ আমরা যদি আরো শক্তিশালী প্রসেসর ব্যবহার করতে পারি, তাহলে 4090 তে বেশ বড় ধরনের একটা পার্ফর্মেন্স এর পরিবর্তন লক্ষ করা যাবে ( বেশ কিছুটা পরিবর্তন ৬৯৫০ এক্সটিতেও দেখা যাবে)  ও 6950XT এর সাথে 4090 এর পারফর্মেন্স এর পার্থক্য লক্ষ করা যাবে।

দৃশ্যপট ২

১০৮০পি তে মিডরেঞ্জের 13400,12400,5600x ,5700x একই রকম পারফর্মেন্স দেয় মিডরেঞ্জের জিপিইউ RX 6650 XT এর সাথে। এরই ধারাবাহিকতায় একই ফলাফল আমরা  RTX 3060,6600 XT, ARC A750 এর জন্য ও পাব তাও বলে দেওয়া যায়।

অর্থাৎ আপনার জিপিইউ যদি হয় RTX 3060, ARC A770 বা RX 6600XT/6650XT ,রেজুলুশন যদি হয় 1080p, তাহলে এই প্রসেসরগুলোর মধ্যে যেকোনো একটা নিলেই হচ্ছে, ফিউচার আপগ্রেড,মাদারবোর্ড প্রাইস এগুলো বিবেচনায় নিয়ে সিদ্ধান্ত নিন, দুই চার এফপিএস এর জন্য প্রসেসরের দিকে খরচ না করে সেই টাকা টা গ্রাফিক্স কার্ডে খরচ করতে পারেন।
দৃশ্যপট এক এর মত এখানেও 6950XT তে গিয়ে আমরা এই প্রসেসরগুলোর মধ্যে পারফর্মেন্স এর পার্থক্য দেখতে পাচ্ছি। অর্থাৎ গ্রাফিক্স কার্ড আমাদের চারটি প্রসেসরকেই ধরে রেখেছিল, সেই বটলনেক 6950XT তে গিয়ে দূরীভূত হয়েছে। কিন্ত 4090 এর জন্য আবার এই চারটি প্রসেসরই বটলনেক এর কারণ। শক্তিশালী প্রসেসর ব্যবহার করলে 6950XT ও কিছুটা এফপিএস বাড়তি পাবে।

দৃশ্যপট ৩ঃ

 

টার্গেট রেজুলুশন ১০৮০পি হোক বা ২কে, রাইজেন ৫০০০ সিরিজে প্রসেসরগুলোর পারফর্মেন্স এর পার্থক্য অতি সামান্য, এই স্ক্রিনশটে দেখা যাচ্ছে যে সিপিইউ গুলো প্রকৃতপক্ষে মোটেও বটলনেকড না, ১০৮০পি হোক বা ১৪৪০পি ,গ্রাফিক্স কার্ড এর পাওয়ার বাড়ালেও সিপিইউ গুলোর মধ্যে পারফর্মেন্স গ্যাপ একদমই জিরো, অর্থাৎ প্রতি ক্ষেত্রে আমরা যে ৩০,৪০ বা ৫০ এফপিএস এর আপলিফট দেখছি, তার সম্পুর্ণটাই আপগ্রেডেড জিপিইউ থেকেই আসছে।। এই ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত স্পষ্ট, ৫৬০০এক্স এর সাথে একটা ৫৫০ বোর্ড নিয়ে নিন, জিপিইউ তেই বেশি টাকা খরচ করুন।কারণ একটা 5700XT/ RTX 4060/3060/ARC A770 এর সাথে আপনি 5700X নিলেও যে ফ্রেমরেট পাবেন, 5600X/5800X/5900X নিলেও একই ফ্রেমরেট পাবেন।

 

দৃশ্যপট চারঃ

এখানে একটু বাস্তব জীবনের অভিজ্ঞতা টেনে আনা যাক, আমাদের হেল্পলাইন গ্রুপের কোনো একটি পোস্টে একজন কমেন্ট করেছে যে 12400 তো 5600 থেকে “হিউজ মার্জিনে” এগিয়ে। উনি যদি বটলনেক এর ব্যাপারটা জানতেন,তাহলে এই কমেন্ট করতেন না। নিচের স্ক্রিনশট দুটো দেখতে পারেন।

 

লক্ষ করুন, একমাত্র ৩০৯০ টি আই ,৩০৮০ তে গিয়েই কেবল দুইটি প্রসেসর এর পারফর্মেন্সে পার্থক্য পাওয়া গিয়েছে, এবং ৩০৮০ থেকে ৩০৯০ টি আই এর রেজাল্টে আরেকটু ভালোভাবে লক্ষ করলে দেখা যাবে ১৪৪০পিতেও এখানে এসে প্রসেসর দুইটা বটলনেক করছে, কেননা পারফর্মেন্স আপলিফট মাত্র ১০-১২।

তবে ১০৮০পিতে তে ঠিকই ৩০৭০, ৩০৮০ ও ৩০৯০ টি আই, ৩টাই বটলনেক এর শিকার, কিভাবে বুঝলেন??? কারণ ৩টা জিপিইউই একই রকম পারফর্ম করছে, প্রসেসরের পরিবর্তনে তাদের কোনো এফপিএস বুস্ট আসছে না। সিদ্ধান্ত? ১০৮০পিতে এই প্রসেসরগুলো দিয়ে সর্বোচ্চ ৩০৭০ বা আরটিএক্স ৪০৬০ টি আই/4060/RX 7600XT/7600 ই চালানো উচিত।

 

দৃশ্যপট ৫ঃ

রাইজেন ৭০০০ সিরিজের ৭৬০০ বা ৭৬০০এক্স এর সাথে ১০৮০পি তে আরটিএক্স ৩০৬০ টি আই,আর এক্স ৬৬৫০এক্সটি, আর্ক এ৭৭০, এগুলো সবই বটলনেক করবে, স্ক্রিনে আইথ্রি আর ৫৬০০ এর মতই ৭৬০০ পারফর্ম করছে দেখতে পাচ্ছেন আপনারা, এর থেকেই বিষয়টা স্পষ্ট।যদিও ১০৮০পি তেও ৮-১০ এফপিএস এর পার্থক্য রয়েছে। তবে বটলনেক যে হচ্ছে সেটার প্রমাণ 6950XT এর পারফর্মেন্স, এখানে ৭৬০০ এর সাথে বাকি দুটো প্রসেসরের পার্থক্য বিশাল। 6950XT-4090 এর সাথে এই প্রসেসরগুলো আবার বটলনেক করছে তা তো আগেই আলোচনা করা হয়েছে।

সিদ্ধান্তঃ আর এক্স ৬৬৫০ বা  এর মত গ্রাফিক্স কার্ড গুলো রাইজেন ৭৬০০,৭৬০০এক্স এর জন্য একটা বটলনেক, ১০৮০পিতেও। এর থেকে অপ্টিমাল পারফর্মেন্স বের করে আনার জন্য আপনার আরটিএক্স ৪০৭০, আর এক্স ৬৯৫০ এক্সটি এর মত গ্রাফিক্স কার্ড লাগবে, না হলে পারফর্মেন্স ওই ৫৬০০ এর মতই পাবেন। অন্তত ১০৮০পিতে।

এই কথাটা ১৩৫০০,১৩৬০০কে এর জন্য ও নিশ্চিত ভাবে বলে দেওয়া যায়্‌ ১৩৫০০ এর পারফর্মেন্স রাইজেন ৫০০০ সিরিজের ফ্লাগশিপ লেভেলের,,  এর সাথে আরটিএক্স ৪০৭০ ও ভালোভাবে যাবে।

আর ১৩৬০০কে এর পারফর্মেন্স 7000 series  এর ফ্লাগশিপ ক্যাটাগরির, ১৩৬০০কে এর জন্য মিনিমাম ই হচ্ছে আরটিএক্স ৪০৭০ সুপার বা ৪০৭০ টি আই।

 

দৃশ্যপট ৬ঃ

এখানে চারটা জেনারেশন এর রাইজেন প্রসেসরের কম্প্যারিজন দেখতে পাচ্ছি। সহজেই যেটা বলে দেওয়া যায়, সেটা হচ্ছে RTX 3070 বা এর সমতুল্য  জিপিইউ ছাড়া প্রসেসর গুলো ১০৮০পিতে একই রকমের পারফর্মেন্স দেবে, এখানকার 5700 XT কে আমরা ৩০৬০, আর্ক ৭৫০ , আর এক্স ৬৬৫০ এক্সটি এর সমান বা কাছাকাছি ধরলে বলা যায় ওসব জিপিইউ তেও এরকমই পারফর্ম করবে এই প্রসেসরগুলো।।

 

তবে এখানে রাইজেন ৫ ১৬০০এক্স কে লক্ষ করুন, আর এক্স ৫৭০০এক্সটি থেকে ৩০৭০ থেকে ৩০৯০, এটার পারফর্মেন্স আর বাড়েনি। ৭৪ এর পর ৯৫ হওয়ার পর আরো দুইটি জিপিইউ আপগ্রেড হওয়ার পরেও ফ্রেমরেট বেড়ে দাড়িয়েছে ৯৭,৯৯। কারণ এটা সম্পুর্ণ ১০০% ইউজড হচ্ছে, জিপিইউ কে ইউটিলাইজ করার আর ক্ষমতা এর নেই। একই ভাবে ২৬০০এক্স এর ক্ষেত্রে দেখুন, এখানে ৩০৭০ এর সাথে 5700xt এর একটা আংশিক বটলনেক তৈরী হচ্ছে এই প্রসেসরটার জন্য।  ৫৭০০এক্সটি থেকে ৩০৭০ তে পারফর্মেন্স এর পার্থক্য মাত্র দশ, আবার ৩০৭০ থেকে ৩০৯০ তে পার্থক্য প্রায় ১/২% মাত্র। অর্থাৎ এখানে ১০৮০পিতে বড় ধরনের বটল্নেক করছে এই প্রসেসরগুলো।

বটলনেক এর ব্যাখাটা আরো একবারঃ

অর্থাৎ x সিপিইউ এর সাথে ওয়াই জিপিইউ যে এফপিএস দিচ্ছে, তার থেকে পাওয়ারফুল y সিইপিইউ ও একই এফপিএস দেওয়ার মানেই হচ্ছে ঐ প্রসেসরটা একটা বটলনেক। আমরা পাওয়ারফুল ডিভাইস লাগিয়েও বেটার পারফর্মেন্স পাচ্ছি না। এখানে আমাদের রেজুলুশন পরিবর্তন করা লাগবে অথবা প্রসেসর পরিবর্তন করা লাগবে।।

আবার চারটা প্রজন্মের  সিপিইউ একই রকম পারফর্ম করছে একটা জিপিইউ তে,এক্ষেত্রে আমরা বলতে পারি  তাদের পারফর্মেন্স এখানে ওই জিপিইউ দ্বারা বটলনেকড। এদের মধ্যে পার্থক্য বুঝতে আমাদের আরো পাওয়ারফুল জিপিইউ লাগবে।।

আরো কিছু GPU Comparisons:

এবার পারফর্মেন্স এর গ্যাপ অতি সামান্য  আছে এরকম কিছু জিপিইউ এর ব্যাপারে কথা বলতে চাই

এই স্ক্রিনশটে যেসব কম্প্যারিজন আমরা দেখতে পাচ্ছি, যেমন 4060 VS 3060 TI,4060 vs 3060 ti ,RTX 4060 Ti vs 3060 Ti, এসব ক্ষেত্রে পার্থক্য ৫%-১০-১২% এর মধ্যেই রয়েছে। এখানে আবার সেই টেস্ট সিস্টেম ও বটলনেক এর বিষয়টা চলে আসে, আর এতক্ষণ ধরে যে বটলনেক এর আলোচনা করলাম , সেখান থেকেও আপনাদের মোটামুটি একটা আইডিয়া করতে পারার কথা যে মিডরেঞ্জের প্রসেসর, আমাদের দেশের বাজারে যেগুলো এভেইলেবল, সেসব প্রসেসরের সাথে ,বিশেষ করে র‍্যাম ও যদি DDR4 হয়, তাহলে এই গ্রাফিক্স কার্ড গুলো শতভাগ না হলেও প্রায় একইরকম পারফর্ম করবে, সেক্ষেত্রে এসব সিস্টেমে পারফর্মেন্স এর পার্থক্য ২-৩-৪% এর আশেপাশেই থাকবে  অধিকাংশ ক্ষেত্রেই।।  এমনকি যে ৩০৬০ টি আই ৩০৬০ থেকে বেশিরভাগ ক্রিয়েটরের বেঞ্চমার্কেই ২৫-২৬% ফাস্ট, আমাদের দেশের পিসি ব্যবহারকারীদের সিস্টেম গুলোতে সেই ডিফারেন্স কখনোই অত বেশি হবে না, ১০-১৫% হতে পারে  বেশিরভাগ ক্ষেত্রে।।

 

লেটেস্ট জেনারেশন এর মিডরেঞ্জ সিপিইউ গুলোর সাথে ফ্লাগশিপ জিপিইউ চালানোটাই বেশি বুদ্ধিমানের কাজঃ

 

স্ক্রিনের এই স্ক্রিনশটগুলোতে আরটিএক্স ৩০ সিরিজের ফ্লাগশিপ ৩০৯০ টিআই এর সাথে আমরা ৫ জেনারেশন এর রাইজেন ৫ প্রসেসর ও ১৩থ জেন ইন্টেল কোর আই ফাইভ প্রসেসর পেয়ারড আপ দেখতে পাচ্ছি। এতে মোটামুটি এটা স্পষ্ট যে কালের বিবর্তনে একই টিয়ারের প্রসেসর গুলো কি পরিমাণ শক্তিশালী হয়েছে জেনারেশন থেকে জেনারেশন। ৩০৯০ টি আই এর সাথে ৫০০০ সিরিজ পর্যন্ত সবগুলো প্রসেসরই বটলনেক করলেও রাইজেন ৫ ৭৬০০এক্স কিংবা আই ফাইভ ১৩৬০০কে এর সাথে বলতে গেলে সর্বোচ্চ পটেনশিয়ালেই পারফর্ম করছে। এখান থেকে এই লেটেস্ট জেনারেশন প্রসেসরগুলোর শক্তি সম্পর্কে একটা পরিষ্কার ধারণা পাওয়া যায়।

উপসংহারঃ

এতক্ষণ এই বিস্তারিত আলোচনার সারমর্ম কি? সারমর্ম হচ্ছে, আমরা যে অনলাইনে একই বাজেটের বিভিন্ন জিপিইউ নিয়ে মারামারি কাটাকাটি, ব্যক্তিগত আক্রমণ, গালিগালাজ করে অস্থির করে ফেলি, আসলে প্রকৃতপক্ষে সেগুলো ভিত্তিহীন, বাস্তব জীবনে,  সাধারণ পিসি গুলোতে ওগুলো একই রকম  পারফর্ম করে। বটলনেক বাস্তবে কিভাবে হয় তার একটা পরিষ্কার ধারণা ও আমরা পেয়ে গেলাম এতক্ষণে। একই সাথে বেশ অনেকগুলো প্রসেসর নিয়ে আলোচনা হয়েছে , কোন রেজুলুশনে কোন কোন জিপিইউ সেগুলোর সাথে বেশি মানানসই, কোন জিপিইউ তেই বা সেগুলো একই রকম পারফর্ম করে তার ও একটা ধারণা আমরা দিতে পেরেছি।।

কম পারফর্মেন্সের পার্থক্য আছে এমন  জিপিইউ গুলোর ক্ষেত্রে মেমোরি স্পেকস, মেমোরি ক্যাপাসিটির দিকে নজর দেওয়াটা বুদ্ধিমানের কাজ হবে, ১২জিবি ভির‍্যাম ওয়ালা জিপিইউটা আপাতদৃষ্টিতে এখন স্লো হলেও পরবর্তীতে তা আপনাকে ভালো সাপোর্ট দিতে পারে।

আর দুই তিন হাজার টাকার  দামের পার্থক্যে পারফর্মেন্স গ্যাপ ও সামান্য  হলে কমদামী জিপিইউটা নিয়ে বাকি টাকা অন্য কম্পোনেন্টে খরচ করলে খুব বেশি গুরুতর  অপরাধ হবে না, কারণ টা এতক্ষণে আপনাদের জেনে যাওয়ার কথা। আবার প্রসেসর বাছাইয়ের ক্ষেত্রে দুই চার হাজার বা পাচ হাজার টাকা কম খরচ করে সেই টাকা টা জিপিইউ তে দিলে ভালো  আউটপুট পাওয়া যেতে পারে।

আর বাজেট যদি খুবই কম হয়, কষ্ট করে দুই তিন পাঁচ হাজার বাড়ানোর থেকে সাধারণ যে কম্পোনেন্ট বাজারে পাওয়া যাবে ,সেটা নিয়ে নিলেও খুব বেশি ক্ষতি হবে না কারণ একই বাজেটে পারফরম্যান্স গ্যাপ যে কতটা কম সেটা আশা করি এই এতক্ষণে আমরা বুঝাতে পেরেছি।

Share This Article

Search