কম্পিউটার বেসিকস ১০১ঃ সিপিউ কুলার

আমারা যারা সাধারন ব্যবহারের জন্য কম্পিউটার কিনে থাকি, তাদের মধ্যে খুবই কম সংখ্যক ব্যক্তি কম্পিউটারের থার্মাল অবস্থা এবং টেম্পারেচার নিয়ে জ্ঞান রেখে থাকেন। কিন্তু এই বিষয়টা সকলের জানা দরকার কম্পিউটারের মূল ব্রেইন বা প্রসেসর বেশি গরম হলে সিপিইউ(বা প্রসেসর)-এর কাজ করার ক্ষমতা কমতে থাকে। কারন মাদারবোর্ড থেকেই সিপিইউ এর ক্ষমতা কমিয়ে দেয়া হয় যাতে করে প্রসেসরের তাপমাত্রা কমে আসে। ইংরেজি ভাষায় একে থার্মাল থ্রটোলিং(Thermal Throttling) বলে থাকে। থার্মাল থ্রটোলিং সুবিধা না থাকলে সিপিউ পুড়ে যাবার সম্ভাবনা থাকে। থার্মাল থ্রটোলিং সমস্যার কারনে অনেকক্ষেত্রে অনেকেই এ সমস্যা সমাধানে কেসে একাধিক ফ্যান লাগিয়ে নেন কিন্তু সিপিউতে যথাযথ মানের থার্মাল পেস্ট এবং ভালো মানের কুলার না থাকে তাহলে থার্মাল থ্রটোলিং হবেই।

আজকের বিষয়বস্তু সিপিউ কুলার নিয়ে। কম্পিউটারের যন্ত্রাংশ ঠান্ডা করার জন্য ২ ধরনের সমাধান আছে। তা হলঃ এয়ার কুলিং, ওয়াটারকুলিং। আবার ওয়াটারকুলিং এর ক্ষেত্রে ২ ধরনের পদ্ধতি আছে তার মধ্যে একটি হলঃ অল ইন ওয়ান সলিউশন এবং কাস্টম ওয়াটার লুপ।
দুটির মধ্যে সহজ এবং বহুল ব্যবহৃত অল ইন ওয়ান সলিউশন এবং এয়ার কুলিং নিয়ে আজ কথা হবে।

সাধারন প্রসেসরের সাথে যেসব ফ্যান দেয়া থাকে তা সবই এয়ার কুলিং ফ্যান। এয়ার কুলিং ফ্যানগুলো ফ্যানের মাধ্যমে বাতাসের সাহায্যে প্রসেসর ঠান্ডা করে থাকে।
এয়ারকুলার আকারের ভিত্তিতে কয়েক ধরনের হয়ে থাকে যেওন টপ ডাউন, সিংগেল টাওয়ার, ডুয়াল টাওয়ার বা ইউ শেপড।
সাধারনত প্রসেসরের সাথে যেসব কুলার এসে থাকে সেগুলো টপ ডাউন হয়ে থাকে। আর যেসব কুলার কিনতে পাওয়া যায় সেসব কুলারের মধ্যে অপেক্ষাকৃত দামী কুলারগুলো টাওয়ার শেপড হয়ে থাকে।

এছাড়া মিনি আইটিএক্স কেসের জন্য কিছু টপ ডাউন কুলার আছে তা যদিও বাংলাদেশের বাজারে তেমন একটা জনপ্রিয় নয়।

প্রায় প্রতিটা থার্ড পার্টি সিপিউ কুলারের সাথে একটি অথবা দুটি ভালো মানের ফ্যান থাকতে পারে।

এবার আসা যাক অল ইন ওয়ান সলিউশনে। অল ইন ওয়ান সলিউশান সাধারনত ওয়াটার লুপের একটি রেডিমেড ভার্শন যা সহজ ভাষায় বললে ওয়াটারকুলার বলা যায়। অল ইন ওয়ান কুলারগুলোর ওয়াটার ব্লক বা পাম্প অংশ এবং বাকিটা পাইপের মাধ্যমে সংযুক্ত থাকে বড় রেডিয়েটরের সাথে। ভিতরে একটি লিকুইড কুল্যান্ট থাকে যার কাজ তাপ পরিবহন করে প্রসেসরকে ঠান্ডা রাখা। অল ইন ওয়ান ওয়াটারকুলার সাধারনত গাড়ির কুলিং সিস্টেমের মতই কাজ করে থাকে।

রেডিয়েটরের আকারের উপরে ভিত্তি করে এই কুলারগুলো ১২০,২৪০,৩৬০ মিলিমিটার পর্যন্ত হয়ে থাকে। তবে এই ধরনের কুলারের ৪৮০ মিলিমিটার ভার্শনও রয়েছে যদিও ৪৮০ মিলিমিটার কুলারগুলো তেমন একটা দেখা যায় না।  
রেডিয়েটর যত বড় হবে তত বেশি কুলিং পার্ফামেন্স দিতে পারে এই ধরনের কুলারগুলো।

এখন প্রশ্ন হল আপনার কোন ধরনের কুলার দরকার?
যদি আপনার কুলিং নিয়ে তেমন কোন ধারণা না থেকে থাকে এবং আপনার প্রসেসর যদি ওভারক্লক না করা যায় এয়ার কুলার আপনার জন্য ভাল হবে।
তবে যদি ভেবে থাকেন প্রসেসর ওভারক্লকিং করবে তাহলে অল ইন ওয়ান(AIO) কুলার নিতে হবে।

অনেকেই অল ইন ওয়ান কুলার নিয়ে থাকেন শুধুমাত্র সুন্দর দেখানোর জন্য কারন অল ইন ওয়ান কুলারগুলো সিস্টেম কিনে থাকেন।

তবে এটা সত্য যে, ভালো মানের অল ইন ওয়ান কুলার সাধারন এয়ার কুলার থেকে বেশি এফেক্টিভ এবং ভালো মানের কুলিং পার্ফামেন্স দিতে সক্ষম। 

কি কি অল ইন ওয়ান এবং এয়ার কুলার আছে?
দামের ভিত্তিতে হিসেব করলে এয়ার কুলার ভালো মানের কুলিং দিয়ে থাকবে। যদিও কিছু কিছু ক্ষেত্রে এয়ার কুলার এবং কমদামী আরজিবিওয়ালা অল ইন ওয়ান কুলারের মধ্যে পার্ফামেন্সের পার্থক্য খুব কম হতে পারে। এটা অস্বাভাবিক কিছু নয়।

বাজারে NZXT, Cooler Master, ASUS, Noctua, Antec, Cryorig, Gamdias, Xigmatek ইত্যাদি ব্র্যান্ডের কুলার পাওয়া যায়।

দামের ভিত্তিতে ভালো ব্র্যান্ডের এয়ার কুলার ১৩০০ টাকা থেকে ৯০০০ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে।
অন্যদিকে ব্র্যান্ডেড অল ইন ওয়ান কুলারের দাম ৫৫০০ টাকা থেকে ৩০,০০০ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে।

ROG RYUO 240mm CPU COOLER

কিছু টিপসঃ  
১। এয়ার কুলার কেনার আগে দেখে নিন প্রসেসরের সকেট(ইন্টেল/এএমডি) সাপোর্ট করে কিনা, কী ধরনের মেটাল ব্যবহার করা হয়েছে বা বিল্ড কোয়ালিটি কেমন। রিভিউ দেখে কিনুন কেমন ধরনের কুলিং দিতে পারে।

২। কম্পিউটার কেসের আকার বুঝে সিপিউ কুলার কিনুন। এছাড়া র‍্যামের সাথে সিপিউ কুলারের জায়গা নিয়ে যাতে ঝামেলা না হয় তা দেখে কুলার কেনা উচিত। 

৩। ভালো মানের থার্মাল পেস্ট ব্যবহার করুন। যদিও সিপিউ কুলারের সাথে দেয়া থেকে থাকে। কিন্তু পরবর্তিতে পরিবর্তন করলে ভালো মানের থার্মাল পেস্ট ব্যবহার করা উত্তম। 

৪। থার্মাল পেস্ট বছরে একবার করে পরিবর্তন করা ভাল। এতে করে সিস্টেমের থার্মাল পার্ফামেন্স ভাল থাকবে। থার্মাল পেস্ট শুকিয়ে গেলে কুলিং পার্ফামেন্স কমে যায়।

৫। কুলিং ফ্যানের উপরেও অনেক কিছু নির্ভর করে থাকে। ভালো মানের ফ্যান ব্যবহার করার পরামর্শ রইল।  
  

Share This Article

Search
kampungbet kampungbet kampungbet toto slot link gacor kampungbet kampungbet kampungbet toto slot kampungbet link slot kampungbet kampungbet kampungbet situs toto situs togel situs slot rtp slot situs judi bola situs slot gacor link slot resmi slot gacor hari ini
toto togel monperatoto situs toto toto togel slot resmi toto togel bandar togel togel online bandar togel slot 4d toto slot toto slot