হ্যাকিং নিয়ে মানুষের না জানা সব তথ্য

টেকনোলজি বোঝেন কিংবা না বোঝেন, আজকাল প্রায় সবাই হ্যাক বা হ্যাকিং কথাটি শুনে থাকবেন। কথাটার মাঝে কিছুটা বেআইনী বা খারাপ একটা আঁচ রয়েছে। আর হ্যাকিং নিয়েই আমি আজ কিছু তথ্য নিয়ে এসেছি যা শুনে হয়তো আপনি অবাক হয়ে যাবেন! হ্যাক আসলে কি? একটি কম্পিউটার সিস্টেমে বা কম্পিউটার নেটওর্য়াকের দুর্বল স্থানগুলোকে খুঁজে বের করে যে ব্যক্তি সেখানে ভার্চুয়ালভাবে হামলা চালিয়ে নিজের অবস্থান করে নেয় তাকে সিকুরিটি হ্যাকার বা হ্যাকার বলা হয়, আর সে যে কাজটা করেছে সেটাই হ্যাকিং। হ্যাকিং সাধারণ বিভিন্ন উদ্দেশ্যে করা হয়ে থাকে যেমন অবৈধ্য মুনাফা অর্জন, কোনো কিছুর ডিজিটাল প্রতিবাদ, তথ্য চুরি, অর্থ চুরি, চ্যালেঞ্জ দেওয়া বা নেওয়া ইত্যাদি।

  1. ইংরেজিতে হ্যাকিং কথাটি সর্বপ্রথম ১২০০ শতাব্দিতে ব্যবহৃত হয়। তখন হ্যাকিং এর মানে ছিলো কুড়াল দিয়ে জোরে কাঠ কর্তন করা।
  2. হ্যাকিংকে খারাপ মানতে নারাজ বিশ্বের অধিকাংশ টেক পন্ডিতরা। তারা হ্যাকিংকে “স্কিল” হিসেবে দেখেন এবং একে তথ্য বা ইনফরমেশনের রূপে মানেন যাকে ব্যক্তিগতভাব ভালো এবং খারাপ উভয় উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা যায়।
  3. প্রধানত ৪ ধরণের হ্যাকার শ্রেনী রয়েছে। Black Hat Hacker যারা হ্যাকিংকে খারাপ এবং বেআইনী কাজে ব্যবহার করে থাকে। White Hat Hacker এরা হ্যাকিংকে শিক্ষনীয় এবং ভালো কাজে ব্যবহার করে, এদেরকে সিকুরিটি এক্সপার্ট হিসেবেও বড় বড় টেক কোম্পানিতে জবে নিয়ে নেওয়া হয়। গ) Grey Hat Hacker এরা ভালো ও না আবার খারাপ না। এই জাতীয় হ্যাকাররা নিজেদের ইচ্ছেমত চলে, তবে এরা সাধারণত খারাপ উদ্দেশ্যে হ্যাকিং করে থাকে না। এবং সর্বশেষে রয়েছে ঘ) Script Kiddie এরা হচ্ছে আনপ্রফেশনাল হ্যাকার। এরা অন্য হ্যাকারের স্ক্রিপট চুরি করে বা কিনে নিয়ে তারপর নিজেদের কাজে হ্যাকিংয়ে লাগায়।
  4. অবাক করার মতো বিষয় হলো মর্ডান কম্পিউটার আবিস্কারের প্রথম দিকে হ্যাকিং কথাটি কম্পিউটারের সমস্যাকে দ্রুত সমাধানের জন্য ব্যবহার করা হতো!
  5. ৫) কম্পিউটার সিস্টেমে সর্বপ্রথম হ্যাক কথাটি প্রচলিত করা শুরু হয় ১৯৬৩ সাল থেকে।
  6. ২০০৮ সালে নির্মিত Conficker নামের একটি ওর্য়ামকে বিশ্বের অমর হ্যাক বা ভাইরাস হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। ভাইরাসটি এখনো নিজে নিজেই বিশ্বের কোটি কোটি পিসিতে অটো হ্যাক হয়ে যাচ্ছে। বিশ্বের বর্তমানে সকল সাইবার এ্যাটাকের ২০% এই Conficker এর জন্য হচ্ছে বলে বলা হয়ে থাকে।
  7. বিশ্বের সকল হ্যাকের মধ্যে প্রায় ৬০% হ্যাকিং করা হয়ে থাকে পর্ণ সাইটের মাধ্যমে!
  8. বিশ্বের অন্যতম বিখ্যাত হ্যাকার Kevin Mitnick জেলে থাকার সময় জেলের আইটি ক্লাসে ভর্তি হয়ে কম্পিউটারের সাহায্যে নিজের সাজার পরিধি কমিয়ে ফেলেছিলেন!
  9. চীনের তৈরিকৃত কম্পিউটারগুলোকে আগে থেকেই একটি গোপন ব্যাকডোর একসেস রাখা হয় স্পাই করার জন্য। তাই Lenovo Computers কোম্পানির পিসিগুলো MI6, CIA এবং অন্যান্য বড় বড় গোয়েন্দা সংস্থা এই সব চাইনিজ প্রতিষ্ঠানের পিসি ব্যবহার করে না।
  10. সিঙ্গেল হ্যাকিংয়ের জন্য বিশ্বের সব থেকে বড় আর্থিক ক্ষতি হয়েছিলো ১৯৯৬ সালে। OMEGA প্রতিষ্ঠানের ১১ বছরের পুরোনো কর্মকর্তা Timothy Lloyd বহিস্কারের পর প্রতিষ্ঠানের মূল অপারেটিং সিস্টেমে একটি টাইম বোম হ্যাকিং চালান। তিনি বহিস্কার হবার ১৪ দিন পর এই হ্যাকটি একটিভ হয় এবং এর কারণে প্রতিষ্ঠানটিকে ১০ মিলিয়নের বেশি মার্কিন ডলারের ক্ষতি হয় এবং ৮০ জন কর্মকর্তাকে চাকুরি হারাতে হয়।
  11. কথিত আছে যে হ্যাকিংয়ের জন্য গ্রেফতার হওয়া প্রথম ব্যক্তির কোনো জেল জরিমানা বা সাজা হয়নি কারণ তখন এই বিষয়ের বিরুদ্ধে কোনো আইন প্রচলিত ছিলো না।
  12. Matrix ছায়াছবিতে দেখানো হ্যাকিংগুলোকে সত্যিকারের হ্যাকিং টুলসের মাধ্যমে করা হয়েছিলো!
  13. বিশ্বের সর্বকালের সবথেকে ভয়াবহ হ্যাকিং গ্রুপ ৯০ এর দশকে একটিভ ছিলো। তারা ৩০ মিনিটের মধ্যে বিশ্বের পুরো ইন্টারনেট ব্যবস্থাকে বন্ধ করে দেবার ক্ষমতা রাখতো। পরবর্তীতে গ্রুপটি নিজের ইচ্ছাতেই আমেরিকার আদালতে আত্মসমপর্ণ করে এবং তাদের এই কাজের জন্য তাদেরকে লোকজনের সামনে এক্সপোজ করা হয়নি। আজও কেউ এই গ্রুপের নাম বা তাদের সদস্যদের পরিচয় জানেন না।
  14. বিশ্বের সবথেকে বড় ব্যাংক ডাকাতি হয়েছিলো ডিজিটাল হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে! ২০১৫ সালে সাইবার হ্যাকাররা প্রায় ১০০টির বেশি ব্যাংকে হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে একদম ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার হাতিয়ে নেয়।
  15. গুগল তার সকল গ্রাহদের ইমেইলে FBI দের একসেস দিয়ে রেখেছে! (সোর্স)
  16. অ্যাপল এর কো ফাউন্ডার Steve Wozniak কে তার স্কুলের কম্পিউটার সিস্টেমে হ্যাকিংয়ের জন্য University of Colorado থেকে বহিস্কার করে দেওয়া হয়েছিলো।
  17. ইন্ডিয়ার Kurukshetra অঞ্চলের Virender Raika কে মাইক্রোসফট তাদের কোম্পানিতে ৭৬৩,৩৮০ মার্কিন ডলারের (বার্ষিক) অফার করেছিলো তার মারাত্বক এন্টি-হ্যাকিং স্কিলের জন্য। (সোর্স)
  18. এই Virender Raika শৈশবে পড়ালেখা করতেন ল্যাম্পপোষ্টের আলোতে। আর বর্তমানে তিনি স্থানীয় পুলিশদের সকল সাইবার ক্রাইমে একমাত্র ভরসা হয়ে উঠেছেন!
  19. এখন পর্যন্ত হ্যাকিংয়ের জন্য সবথেকে বড় আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ হচ্ছে ৩৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ইমেইল ওর্য়ামস হ্যাকিং MyDoom ২০০৪ সালে ছড়িয়ে পড়ার পর এই ক্ষতি হয়। এই ভাইরাস বা হ্যাককে সবর্শেষ ২০০৯ সালে সাউথ কোরিয়ায় দেখা গিয়েছিলো।
  20. হলিউডের ছায়াছবিতে সর্বপ্রথম হ্যাকিং বিষয়টি ব্যবহার করা হয় ১৯৮৩ সালের মুভি WarGames তে।
  21. মাত্র ১০ সেকেন্ডের মধ্যে Safari ব্রাউজারের সিকুরিটি ব্রেক করে সিকুরিটি রির্সাচাজার Charlie Miller ম্যাক OS হ্যাক করতে সক্ষম হন ২০১৮ সালে।
  22. বিশ্বের সবথেকে বড় হ্যাকিংয়ের কাজ বর্তমানে অনুমোদনের জন্য অপেক্ষা করছে। University of Arizona এর Roger Angel সম্প্রতি স্পেসে একটি বড় সড় sunscreen তৈরি করার প্রস্তাব করেছেন। এর মাধ্যমে পৃথিবীর জলবায়ু মানুষেরাই নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে!

Share This Article

Search
kampungbet kampungbet kampungbet toto slot link gacor kampungbet kampungbet kampungbet toto slot kampungbet link slot kampungbet kampungbet kampungbet situs toto situs togel situs slot rtp slot situs judi bola situs slot gacor link slot resmi slot gacor hari ini
toto togel monperatoto situs toto toto togel slot resmi toto togel bandar togel togel online bandar togel slot 4d toto slot toto slot