নতুন বিকাশ অ্যাপের A to Z

যারা বিকাশ অ্যাপ আগে কখনো ব্যবহার করেন নাই বা বিকাশ একাউন্ট আছে কিন্তু বিকাশ অ্যাপ এখনো সেটআপ করেন নি তাদের জন্য পোষ্টের প্রথমেই রয়েছে একটি সুখবর! নতুন এই বিকাশ অ্যাপ দিয়ে যদি আপনি বিকাশ একাউন্ট তৈরি করেন বা খুলেন তাহলে আপনি পাবেন ১০০ টাকার বিকাশ বোনাস, আর প্রথমবার যদি ২৫ টাকা বিকাশে যোগ করেন তাহলে আরো ৫০ টাকা বোনাস আপনি পাবেন। মানে নতুন একাউন্ট তৈরি করে ২৫ টাকা ভরলেই ১৫০ টাকার বোনাস পাবেন। অন্যদিকে Send Money সার্ভিসে আপনার থেকে বিকাশ কোনো ফি কেটে নেবে না। আর ক্যাশ আউটের ক্ষেত্রে ১.৫% চার্জ কাটবে যেটা অনান্যদের থেকে খুবেই কম!

আজকে কথা বলবো নতুন বিকাশের অ্যাপের সব কিছু নিয়ে। বিকাশ অ্যাপ ৪/৫ দিন আগে আপডেট হয়েছে। আর যারা আপডেট করে নিয়েছেন তারা অবশ্যই দেখবেন যে সিম্পল বিকাশ অ্যাপকে এখন আরো বেশ বিস্তৃত করে সাজানো হয়েছে।

বি:দ্র: যারা রুটেট ডিভাইসে বিকাশ অ্যাপ চালাতে পারছেন না তারা আমার কিছুদিনের আগের এই পোষ্টটি একবার দেখে নিন:

রুট করা ফোনে বিকাশ এপ খুব সহজেই!

এই পদ্ধতি এই নতুন বিকাশ অ্যাপেও কাজ করবে!

নতুন ফিচার

এই নতুন বিকাশ অ্যাপের একদমই নতুন আর খুবই কাজের একটি ফিচার হচ্ছে এখন আপনি নিজে নিজেই এই নতুন বিকাশ অ্যাপ দিয়ে নতুন বিকাশ একাউন্ট খুলে নিতে পারবেন। মানে এখন আর আপনাকে কস্ট করে বাইরের কোনো বিকাশ এজেন্ট বা বিকাশ আউটলেটে যেতে হবে না। আপনার নিজের NID কপি দিয়ে আপনি নিজেই নতুন বিকাশ আইডি খুলে নিতে পারেন। তো চলুন প্রথমে এই নতুন ফিচারটি কিভাবে কাজ করবে সেটা দেখে নেই:

১) প্রথমে আপনি প্লেস্টোর থেকে বিকাশ অ্যাপটি ডাউনলোড করে নিন, কিংবা আগে থেকেই বিকাশ অ্যাপ থাকলে সেটাকে আপডেট করে নিন।

২) নতুন অ্যাপটি চালু করুন। প্রথমবার অ্যাপটি চালু করলে প্রথমে অ্যাপটি আপনার ডিভাইসের ৩টি পারমিশন চাইবে, এগুলো দিয়ে দিন। তাহলে নতুন অ্যাপের হোম পেজে চলে আসবেন। উপরে দেখবেন Log In/Registration লেখা রয়েছে সেখানে ট্যাপ করুন নিচের দিকে লগ ইন এবং নতুন একাউন্ট রেজিস্ট্রেশন এই দুটি আলাদা অপশন পাবেন।

৩) আপনার যদি অলরেডি একাউন্ট তৈরি করা থাকে তাহলে Log In করতে পারেন, আপনার মোবাইল নাম্বার আর পিন কোড দিয়ে লগ ইন করতে পারবেন। তা না হলে নতুন একাউন্ট রেজিস্ট্রেশন অপশনে ট্যাপ করুন। নতুন একাউন্ট রেজিস্ট্রেশনের প্রথম ধাপে আপনাকে আপনার মোবাইল নাম্বার টাইপ করতে হবে। এই নাম্বার দিয়ে আগে কোনো বিকাশ একাউন্ট (পারসোনাল বা এজেন্ট) খোলা হয়ে থাকে তাহলে কিন্তু হবে না।

৪) এবার সে নাম্বারটা দিলে সেটা কোন অপারেটরের নাম্বার সেটা সিলেক্ট করুন। তারপর Confirm এ ক্লিক করুন।

৫) এবার আপনার ওই নাম্বারে একটি ভেরিফিকেশন কোড যাবে, আর ওই সিমটি যদি মোবাইলে লাগানো থাকে তাহলে অটোমেটিক্যালি ভেরিফিকেশন কোড টাইপ হয়ে যাবে, তারপর বিকাশ অ্যাপটি আপনি বাংলায় চালাতে চান নাকি ইংরেজিতে সেটা সিলেক্ট করুন। মনে রাখবেন আপনার একাউন্টের পিন নাম্বারের মতোই এই ভেরিফিকেশন কোড বেশ সেন্সিটিভ ও গুরুত্বপূর্ণ তাই ভেরিফিকেশন কোড কারো সাথে শেয়ার করবেন না।

৬) টার্ম এবং কন্ডিশন পেজ আসবে, চাইলে পড়ে নিতে পারেন, I agree অপশনে ট্যাপ করুন।

৭) এবার আপনাকে NID এর একটি ফটো তুলতে হবে । আর বলা বাহুল্য যে এটা বেশ সিকিউর স্টেপ তাই এই স্টেপ এর স্ক্রিণশট তোলা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে এই অ্যাপ থেকে। Take NID Photo অপশনে ট্যাপ করুন। NID BD এ যদি কোন তথ্য ভুল থাকে, তাহলে সেটা সমাধান করার পদ্ধতি দেখে নিতে পারেন এই লিঙ্কে

৮) এবার Front of NID ক্যামেরা ফ্রেমের মধ্যে আপনার জাতীয় পরিচয় পত্রের সামনের সাইডের একটি ছবি তুলতে হবে। আর মনে রাখবে জাতীয় পরিচয়পত্রের অরিজিনাল কপি লাগবে, ফটোকপি হলে চলবে না।

৯) NID কার্ডের সামনে অংশের ছবি তোলার পর যদি ছবি ক্লিয়ার না হয় তাহলে রিটেক অপশনে ট্যাপ করে পুনরায় তুলতে পারবেন, তা নাহলে Submit বাটনে ট্যাপ করুন।

১০) এবার একই ভাবে জাতীয় পরিচয়পত্রের পেছনের সাইডের ছবি তুলুন এবং সাবমিট দিন।

১১) মজার ব্যাপার হলো অ্যাপটি নিজে থেকেই আপনার জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্যের ভিক্তিতে ফর্মের জেনারেল ইনফরমেশন, ঠিকানা, আপনার জন্ম তারিখ ইত্যাদি অটো দিয়ে দিবে। এখন শুধুমাত্র আপনি দেখবেন যে এইগুলো বানান ঠিক আছে কিনা।

১২) এবার অতিরিক্ত কিছু তথ্য আপনাকে নিজে থেকে এন্টার করতে হবে, যেমন আপনার লিঙ্গ, টাকার উৎস, মাসিক ইনকাম এবং পেশা।

১৩) এবার মুখ ধুয়ে ফ্রেশ হয়ে নিন! কারণ আপনাকে এবার সেলফি তুলতে হবে!

১৪) সব তথ্য সঠিক ভাবে দেওয়া হয়ে গেলে এই পেজে চলে আসবেন। এবার Confirm বাটনে ট্যাপ করলে আপনার তথ্যগুলো বিকাশ সার্ভারে চলে যাবে। বিকাশ কর্তপক্ষ আপনার তথ্যগুলো যাচাই করে ৪৮ ঘন্টার মধ্যে আপনার একাউন্ট একটিভ করে দেবে। তাই অপেক্ষা করুন।

১৫) একাউন্ট একটিভ হয়ে গেলেই আপনি আপনার বিকাশ আইডিতে দেখবেন ১০০ টাকার বোনাস পেয়ে গিয়েছেন। আমার একাউন্ট অনেক আগের তাই আমি পাই নি 🙂

১৬) এবার Send Money, Cash Out ইত্যাদি সকল নরমাল সার্ভিসগুলো অ্যাপের উপরের সারির দিকে পাবেন।

১৭) আবার উপরের মেন্যুকে ডান দিকে সোয়াইপ করলে Add Money, Pay Bill, Movie Ticket এই এক্সট্রা অপশনগুলো পাবেন।

১৮) Add Money অপশনে ক্লিক করে আপনি বিকাশে আপনার ব্যাংক থেকে কিংবা ডেবিট/ক্রেডিট কার্ড থেকে টাকা টান্সফার করতে পারবেন।

১৯) আর বিভিন্ন সার্ভিসের বিল পে আপনি এই Pay Bill অপশনের মাধ্যমেও করে নিতে পারবেন, সরাসরি যাওয়ার ঝামেলা ছাড়াই।

২০) আর মুভি টিকেটস অপশনে বর্তমানে শুধুমাত্র ব্লকবাস্টার সিনেমার বিভিন্ন শো এর টিকেট আপনি বিকাশ অ্যাপের মাধ্যমেই কাটতে পারবেন, আর সেখানে (ব্লকবাস্টার সিনেমায়) বিকাশ পেমেন্টের জন্য আপনি আলাদা কাউন্টারও পেয়ে যাবেন।

২১) সাজেশন বক্সে আপনি বিকাশের আন্ডারের বিভিন্ন বিজ্ঞাপনগুলো দেখতে পারবেন। যেমন এখানে Amber IT নেট সার্ভিসের বিলগুলোও এখন আপনি বিকাশে দিতে পারবেন ইত্যাদি।

২২) অন্যদিকে অ্যাপটি চালু করার সময় যদি লোকেশন পারমিশন দিয়ে থাকেন তাহলে আপনার লোকেশনের মধ্যে বিকাশ-স্পন্সরড কোনো সার্ভিসে যদি কোনো অফার থাকে তাহলে সেগুলোকে Offers সেকশনে দেখতে পারবেন।

২৩) একদম শেষের মাঝখানে রয়েছে Scan QR কোড। এটায় চাপ দিয়ে আপনি যেকোনো এজেন্ট এর কাছে থাকা কোডটি স্ক্যান করে নিয়ে ক্যাশ আউট করতে পারবেন কিংবা একই ভাবে বিভিন্ন আউটলেট থেকে পেমেন্টও সেরে ফেলতে পারবেন।

২৪) এর পাশের ঘরটি হলো Inbox আর সেখান থেকে Transactions বক্সে চলে আসলে আপনার এ পর্যন্ত যাবতীয় লেনদেনের বিস্তারিত তথ্যাবলি আপনি দেখতে পারবেন।

২৫) সর্বশেষে উপরের ডান দিকের আইকনে ক্লিক করলে একটি পপ আপ মেন্যু আসবে। এখানে স্টেটমেন্টস এ ট্যাপ করলে আগের মতো যত লেনদেন রয়েছে সেগুলোর বিস্তারিত দেখতে পারবেন, লিমিটস এ ট্যাপ করলে আপনার দিন এবং মাসের লিমিট কত রয়েছে সেটা জানতে পারবেন, বন্ধুকে অ্যাপ রেফার করতে পারবেন, অ্যাপ সেটিংস রয়েছে এবং অ্যাপ থেকে আপনার আইডিকে লগ আউট করার অপশন রয়েছে।

এই ছিলো নতুন বিকাশ অ্যাপ। আশা করবো পোষ্টটি আপনার বিকাশ অ্যাপ সম্পর্কে ধারণাকে বেশ বাড়িয়ে নেবে। আর মনে রাখবেন নতুন ফিচার বা নতুন ভিজুয়্যালের পাশাপাশি অ্যাপ কোডিং, এবং সিকুরিটি ক্ষেত্রেও এই ভার্সনে বেশ কিছু নতুনত্ব রয়েছে। আর রুট ডিভাইসে কিভাবে বিকাশ অ্যাপ ব্যবহার করবেন সেটা পোষ্টের উপরের লিংকে দেওয়া রয়েছে। পোষ্টটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

Share This Article

Search