ইউটিউব মানেই কি টাকা?
আপনি যদি লক্ষ্য করে থাকেন তাহলে দেখবেন যে ইদানিং সময়ে বাংলাদেশের অনেকেই ইউটিউবিং করে থাকেন । মানে ভিডিও শেয়ারিং প্লাটফর্ম Youtube য়ে বিভিন্ন প্রকার ভিডিও শেয়ার করে থাকেন বা ভিডিও বানিয়ে থাকেন। অনেকের কাছেই এই জিনিসটি অর্থ এবং সময়ের অপচয় মনে হয়। কিন্তু যখন আপনি জানবেন যে ইউটিউব থেকে ইনকাম বা অর্থ উপার্জন করা যায় তখন যেকেউই ইউটিউবে চলে আসতে চাইবে। কিন্তু পরবর্তীতে দেখা যায় ইউটিউব থেকে কিভাবে ইনকাম হয় সে ব্যাপারে কোনো বেসিক ধারণা না থাকায় তিনি হতাশ হয়ে পড়েন এবং পরবর্তীতে ইউটিউব থেকে চলে যান। আমার আজকের এই পোষ্টে আমি ইউটিউব থেকে কিভাবে ইনকাম হয়ে থাকে এবং বাংলাদেশের ইউটিউবাররা কিভাবে টাকা হাতে পেয়ে থাকেন এ ব্যাপারে বেসিক জিনিসগুলো নিয়ে আলোচনা করবো। আশা করবো আজকের পোষ্টটি পড়ে আপনারা কিভাবে ইউটিউব থেকে ইনকাম হয়ে থাকে এবং টাকা কিভাবে হাতে পাওয়া যায় এ ব্যাপারে বেসিক ধারণাগুলো পাবেন। আর যারা ইতিমধ্যেই এই ব্যাপারগুলো জানেন তাদেরকে বলবো এখানেই পোষ্টটি কেটে দিন, কারণ এখানে আপনার সময় নস্ট হবে।
ইউটিউবের নতুন নিয়ম
তো প্রথম থেকেই আসি। আপনি যখন ইউটিউবে প্রথমে কোনো চ্যানেল তৈরি করবেন এবং ভিডিও আপলোড করলেন তখন থেকে শুরু করে নিয়মিত ভিডিও আপলোড করতে থাকলেন। আপনার ভিডিওগুলো মানুষ দেখতে থাকলো এবং ১ বছরের মাথায় আপনার চ্যানেলে ৪ হাজার ঘন্টা Watch Time হলো। ধরুণ আপনি চ্যানেল খুলেছেন ২০১৪ সালে, কিন্তু সেখানে এখনো ৪ হাজার ঘন্টা Watch Time হয় নি; তাহলে এক্ষেত্রে এটা কাজ করবে না। ইউটিউব চ্যানেল থেকে আয় করার জন্য প্রথমেই আপনার যে লক্ষ্যমাত্রা রাখতে হবে সেটা হলো আপনার চ্যানেলে ৪ হাজার ঘন্টা ওয়াচ টাইম আনতে হবে। এখন অনেকেই আপনাকে ভূল ধারণা দিতে পারে যে, আপনি ২০১২ সালে চ্যানেল খুলেছেন এখনো চ্যানেলের হাজার সাবস্ক্রাইবার হয়নি আর ভিউ টাইমও আসেনি তাহলে এই চ্যানেল থেকে আপনি কিছুই করতে পারবেন না। এই কথাটি সত্য নয়। প্রথমত আপনাকে মনে রাখতে হবে যে, ইউটিউবে মনিটাইজেশনের আবেদন করার জন্য প্রথম শর্ত হচ্ছে চ্যানেলে গত এক বছরে মানে বিগত ৩৬৫ দিনে ওয়াচ টাইম ৪ হাজার ঘন্টার বেশি থাকবে হবে। অর্থাৎ আপনি ২০১৭ সালে চ্যানেল খুলে ৬ মাসের মাথায় ৪ হাজার ঘন্টার বেশি ওয়াচ টাইম পেয়ে গেলেন সেটাও হবে আবার আপনার চ্যানেল ২০১৩ সালে খোলা হলেও বিগত ১ বছরের মধ্যে ৪ হাজার ঘন্টার ওয়াচ টাইম হলেও আপনি ইউটিউব মনিটাইজেশনের জন্য আবেদন করতে পারবেন এবং আপনার আবেদন রিভিউ করা হবে। এই গেল ওয়াচ টাইম এর ব্যাপার। এবার পরবর্তী শর্ত হলো এই চার হাজার ওয়াচ টাইমের পাশাপাশি আপনার চ্যানেলে এক হাজারের বেশি সাবস্ক্রাইবার থাকতে হবে। এই দুটি শর্ত পূরণ করতে পারলেই আপনি ইউটিউব মনিটাইজেশনের জন্য আবেদন করতে পারবেন এবং আপনার আবেদনটি রিভিউ করা হবে।
তাহলে সহজ ভাষায় বলতে গেলে ইউটিউব থেকে ইনকাম করার প্রথম দুটি ধাপ হচ্ছে চ্যানেলে ৪ হাজার ঘন্টা ভিউ টাইম বা ওয়াচ টাইম আনা, দ্বিতীয়টি হচ্ছে চ্যানেলে ১০০০ বা তার বেশি সাবস্ক্রাইবার আনা। এখন যারা ওয়াচ টাইম বোঝেন না তাদের জন্য বলছি। ওয়াচ টাইম হলো ইউটিউবের একটি সিস্টেম যার মাধ্যমে আপনার চ্যানেলে ভিউয়ারদের ভিডিও ভিউকে কাউন্ট করা হয়। ৪ হাজার ঘন্টা ওয়াচ টাইম মানে এই না যে আপনার চ্যানেলে ৪ হাজার ঘন্টার বেশি দৈর্ঘে্যর ভিডিও থাকতে হবে। ধরুণ আপনার চ্যানেলে ১২টি ভিডিও রয়েছে প্রতিটি ভিডিওর দৈর্ঘ্য ৫ মিনিট করে। এখন আপনার এই ১২টি ভিডিও প্রতিটির ৪০০০ হাজারের বেশি ভিউ আসলেই আপনি 12 x 5 = 60 minutes. Times 4000 equals 4000 view-hours হয়ে যাবে। এছাড়াও আপনার চ্যানেলের সেটিংয়ে ওয়াচ টাইম নিয়ে একটি পরিসংখ্যান দেওয়া থাকবে যেখান থেকে আপনি আপনার চ্যানেলের ওয়াচ টাইমকে ক্যালকুলেট করতে পারবেন। আর এই ১০০০ হাজার সাবস্ক্রাইবার ও ৪ হাজার ঘন্টা ভিউ টাইম অর্জন করার জন্য ইউটিউব আপনাকে ১ বছরের সময় দিয়েছে, মানে বোঝা যাচ্ছে এই টাস্কগুলো বেশ সময়সাপেক্ষ। আপনাকে ধৈর্য্য এবং লক্ষ্যমাত্রা ঠিক রাখতে হবে।
মনেটাইজেশন
এবার মনিটাইজেশনের পালা। আপনার এডসেন্সের কথা নিশ্চয় শুনে থাকবেন। এডসেন্স কিন্তু শুধুমাত্র ব্লগ বা ওয়েবসাইটের ক্ষেত্রেই সীমাবদ্ধ নয়, এডসেন্স ইউটিউবেও রয়েছে। কারণ গুগল এডসেন্স আর ইউটিউব কিন্তু একই কোম্পানি মানে গুগলের আন্ডারে থাকে। অর্থাৎ এডসেন্স হচ্ছে গুগলের একটি প্রোডাক্ট আর ইউটিউবও হচ্ছে গুগলের একটি প্রোডাক্ট। এবার এডসেন্স এর ওয়েবসাইটে গিয়ে আপনার ইউটিউব চ্যানেলের মনিটাইজেশনের জন্য আপনাকে আবেদন করতে হবে। ৪ হাজার ঘন্টা ভিউ টাইম এবং হাজার সাবস্ক্রাইবার না থাকলে আপনার এই আবেদন গ্রহনযোগ্য হবে না। অন্যথায় আপনার আবেদন গ্রহণ করা হবে এবং রিভিউ করা হবে। মনিটাইজেশন কি? মনিটাইজেশন হচ্ছে বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করা। ওয়েবসাইটে গুগল এডসেন্স যেমন বিভিন্ন ধরণের বিজ্ঞাপন দেখিয়ে থাকে ঠিক তেমনি ভাবে আপনি লক্ষ্য করলে দেখবেন যে বিভিন্ন জনপ্রিয় ইউটিউবারদের ভিডিওতে পপআপ আকারে বিভিন্ন বিজ্ঞাপন থাকে। এই বিজ্ঞাপন দেওয়া থেকেই গুগল আপনার ইউটিউব ভিডিও থেকে আয় করবে এবং একই সাথে আপনিও গুগল থেকে মানে ইউটিউব থেকে টাকা আয় করতে পারবেন।
কিন্তু কিছু কিছু ভিডিওতে দেখবেন যে “ভিডিও বিজ্ঞাপন” দেওয়া হয়, সেগুলো স্পন্সর ভিডিও বিজ্ঞাপন সেগুলোর কাহিনী আলাদা। খুব জনপ্রিয় চ্যানেল ছাড়া অনান্য চ্যানেলের ভিডিওতে “ভিডিও বিজ্ঞাপন” দেখানো হয় না।
তো সহজ ভাষায় আপনার ইউটিউব ভিডিওতে গুগল থেকে বিজ্ঞাপন দেবার ব্যবস্থাকেই মনিটাইজেশন বলা হয়ে থাকে। আর এই মনিটাইজেশন যদি আপনার চ্যানেলে এপ্রুভ হয়ে যায় বা চালু হয়ে যায় তখন আপনি দেখবেন যে আপনার চ্যানেলে Monetization বাটনটি চলে এসেছে, আর Monetization বাটনটি চালু করে দিলেই দেখবেন যে আপনার চ্যানেলের ভিডিওগুলোর নিচে, সাইডে বিভিন্ন ধরণের বিজ্ঞাপন প্রদশর্ন করা শুরু হবে। এই বিজ্ঞাপনগুলোর প্রতিটিতে আলাদা করে রেটিং থাকে। যেমন একটি বিজ্ঞাপনে বিজ্ঞাপন দাতা কোম্পানি ৬০ সেন্ট দিয়েছে। এখন এই 60 cents এর মধ্য থেকে আপনি পাবেন ৬০% এবং বাকি ৪০% ইউটিউব রেখে দিবে। অর্থাৎ বিজ্ঞাপনের আয়ের ৪০% (চল্লিশ) ইউটিউব রেখে দিবে এবং বাকি ৬০% টাকা আপনি এডসেন্সের মাধ্যমে পেয়ে যাবেন।
এখন আপনার কাছে যদি মনে হয় এত কস্ট করে ভিডিও বানলাম 60 Cents কামানোর জন্য? তখন আপনার মনে স্বাভাবিক ভাবেই ধারণা আসতে পারে যে ইউটিউব থেকে বেশি টাকা ইনকাম করা যায় না। আপনার এই ধারণাটি ভূল। ইউটিউবের সব থেকে বেশি সাবস্ক্রাইবকৃত চ্যানেল Pewdiepie এর যেসকল ভিডিওগুলোতে ৫০ মিলিয়নের বেশি ভিউ হয়েছে তিনি সেই প্রতিটি ভিডিওর থেকে ১২০০ মার্কিন ডলার আয় করেছেন। মানে ভিডিওতে ৫ মিলিয়নের বেশি ভিউ = ১২০০ মার্কিন ডলার যা বাংলাদেশি টাকায় ১ লাখ টাকার বেশি। এখন দেখুন গত মাসে মানে নভেম্বর (২০১৮) মাসে Pewdiepie এর ১৮টি ভিডিওতে ৫০ মিলিয়নের বেশি ভিউ হয়েছে। তাহলে গত মাসেই তিনি ১৯/২০ লাখ টাকা কামিয়েছেন!
একবার মনিটাইজেশন চালু হয়ে গেলে তারপর থেকে আপনাকে আর ভিউ টাইম বা ওয়াচ টাইম নিয়ে ভাবতে হবে না। জাস্ট আপনাকে কোয়ালিটি সম্পন্ন জনপ্রিয় ভিডিও বানাতে হবে এটাই। আর হ্যাঁ আপনার চ্যানেলের বিরুদ্ধে রির্পোট দিয়ে কিন্তু এই মনিটাইজেশন সিস্টেমটি ব্লক করানো যায় আর একবার মনিটাইজেশন গুগল ব্লক করে দিলে সেটা ফিরে পাবার সম্ভাবনা ১০% থাকে, তাই মনিটাইজেশন পাবার পর সেটা রক্ষা করার দিকেও আপনাকে খেয়াল রাখতে হবে, এমন কোনো কনটেন্টের ভিডিও ছাড়বেন না যে কারণে আপনার চ্যানেলের বিরুদ্ধে রিপোর্ট পড়ে।
টাকা যেভাবে পাবেন
এবার কথা হচ্ছে কিভাবে টাকা হাতে পাবেন। আপনি যখন মনিটাইজেশনের জন্য আবেদন করবেন সেখানে আপনার এড্রেস দিতে হবে এবং একই সাথে আপনার ব্যাংকের এড্রেস এবং তথ্যাদি দিতে হবে। সঠিক ভাবে ব্যাংকের এড্রেস না দিলে টাকা আসবে না। আর ইউটিউবের মনিটাইজেশনের টাকা দিনের টা দিনে আসে না। অর্থাৎ আপনি প্রতিদিন ভিডিও আপলোড করলেও প্রতি মাসের হিসেবে আপনার এডসেন্স একাউন্টে টাকা জমা হবে। আরো বিস্তারিতভাবে বললে আপনার ইউটিউব চ্যানেলে পুরো মাসের মনিটাইজেশনের টাকা পরবর্তী মাসের ১১ তারিখ রাতে এডসেন্স একাউন্টে জমা হবে। এডসেন্স একাউন্টে প্রথমবার যখন ১০ মার্কিন ডলার জমা হবে তখন ইউটিউব আপনার এড্রেসে একটি মেইল ইস্যু করবে। আপনি মনিটাইজেশন করার সময় আপনার যেই এড্রেস দিয়েছিলেন সেই এড্রেসে ইউটিউব একটি মেইল ইস্যু করবে। ওই মেইলে একটি গোপন পিন দেওয়া থাকবে যা আপনাকে এডসেন্স ওয়েবসাইটে আপনারা একাউন্টে লিখতে হবে। অর্থাৎ আপনার এড্রেসে টাকা পাঠানো যাবে কিনা সেটা যাচাই করার জন্যই ইউটিউব এই মেইলটি দিয়ে থাকে, এটাকে একপ্রকার এড্রেস ভেরিফাইল প্রসেস হিসেবেও বলতে পারেন। এই এড্রেস ভেরিফাই হবার পর এখন কোন ব্যাংকে আপনি টাকাটা নিবেন সেটা আপনাকে দেখিয়ে দিতে হবে।
এই মেইল (ইমেইল নয়) থেকে প্রাপ্ত গোপন পিনটি ওয়েবসাইটে বাসানোর পর এবার আপনাকে ১০০ মার্কিন ডলার জমা হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। মানে আগে তো ১০ ডলার হয়েই রয়েছে এখন আপনাকে আরো ৯০ ডলার জমা হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। ১০০ ডলার হয়ে যাবার পর আপনি যে ব্যাংক এড্রেস দিয়েছিলেন সে এড্রেসে মাসের ২১ তারিখে এডসেন্স ডলারটি সেন্ড করে দিবে। এবার আপনার ব্যাংকটি এই টান্সফারকে প্রসেস করবে, এতে কিছুদিন সময় লাগবে। সাধারণত ২৬ বা ২৭ তারিখেই ব্যাংকে ডলারগুলো টাকা হিসেবে জমা হয়ে যায়। আর তারপর আপনি ব্যাংক থেকে কিংবা বুথ থেকে টাকা তুলে নিতে পারবেন।
এবার আসি এড্রেস ভেরিফাই না হলে কি করবেন। অনেক সময় দেখা যায় যে আমরা বাংলাদেশের বেশ প্রত্যন্ত অঞ্চলে থাকি। তাই এডসেন্স এড্রেস ভেরিফাই করার জন্য যে চিঠি বা মেইলটি পাঠিয়ে থাকে তা বাংলাদেশের পোষ্টাল সার্ভিসের মাধ্যমে এসে থাকে। অনেক সময় দেখা যায় যে অনেকেই অভিযোগ করেন যে আমার এড্রেসে এডসেন্স থেকে পিন নম্বর যুক্ত মেইলটি আসে না। তখন কি করবেন?
এড্রেসে কোনো মেইল যদি না আসে তাহলে আপনি আরো দুই বার এড্রেস ভেরিফাই করার জন্য আবেদন করতে পারবেন। তখন কারণ হিসেবে ঠিকানায় মেইল আসে না এটা দেখিয়ে দিলে সেখানে আপনাকে আপনার ভোটার আইডি কার্ড, ড্রাইভিং লাইসেন্স, পাসপোর্ট ইত্যাদি ভেরিফাই করার কাগজপত্রগুলোকে স্ক্যান করে আপলোড করতে হবে, তাহলেও আপনার এড্রেসটি ভেরিফাই হয়ে যাবে কোনো পিন বসাতে হবে না।
এভাবেই ইউটিউবয়ে আপনার চ্যানেলটি ভেরিফাই করে নিয়ে আপনি ঘরে বসেই টাকা ইনকাম করতে পারবেন। তবে এর জন্য চাই ধৈর্য্য এবং কঠোর অনুশীলন। তার সাথে কোয়ালিটি ভিডিও বানাতে তো হবেই। একবার ব্যাংকের মাধ্যমে টাকা এসে পড়লেই আপনি এই অনলাইন থেকে টাকা কামানোর স্বাদটি পেয়ে যাবেন আর ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে বলছি; অনলাইনে টাকা ইনকাম করার স্বাদ একদমই অন্যরকম। আগেরকার দিনে তরুণরা হাত খরচ চালানোর জন্য টিউশনি করতো (এখনো অনেকেই করে থাকেন), আর বর্তমানে স্মার্ট তরুণরা হাত খরচ চালানোর জন্য অনলাইনে এইসব কাজ করে থাকেন। ভাগ্য ভালো থাকলে হাত খরচ থেকে এই সোর্স থেকে আপনি প্রিমিয়াম চাকরির মতো পেমেন্ট তুলে নিতে পারবেন।