Huawei Y9 (2018)! The New Mid Budget King?

একটি নয়, দুটি নয়, তিনটিও নয় একেবারে চারটি ক্যামেরা নিয়ে হুয়াওয়ে রিলিজ করেছে তাদের মিড লেভেল বাজেট স্মার্টফোন Y9 2018 এডিশন। যারা সেলফ ফটোগ্রাফি অর্থাৎ সেলফি তুলতে পছন্দ করেন তাদের কথা বিবেচনা করে হুয়াওয়ে সামনের ক্যামেরা পেছনে আর পেছনের ক্যামেরা সামনে নিয়ে এসেছে।

নিজের সেলফিকে প্রফেশনাল গ্রেডিং দিতে এখন কারো কোন সমস্যা হবে না। মাত্র ১৯ হাজার ৫৯০ টাকা খরচ করে আপনিও এসে যেতে পারেন প্রফেশনাল সেলফি এক্সপার্ট হওয়ার রাস্তায়। কিন্তু শুধু ক্যামেরা দিয়ে তো আর স্মার্টফোন তৈরি করা হয় না। আর ফুল রিভিউ দেখা ছাড়া অনেকেই ফোন কিনতে চায় না। তাই ট্রেন্ড ফলো করতে গিয়ে Huawei Y9 2018 এডিশনের ওভারঅল ফিচার নিয়ে বেশ কিছুদিন যাবত নাড়াচাড়া করার পর পিসি বিল্ডার বাংলাদেশ রিভিউ নিয়ে এল।

Display

ফোনটি হাতে নিলেই বরাবরের মত আপনার নজরে আসবে ৫.৯৩ ইঞ্চির ডিসপ্লেটি। তবে মাত্র ০.০৭ ইঞ্চি বাদ রেখে ৬ ইঞ্চি স্ক্রিন না করার কার্পণ্য হুয়াওয়ে কেন দেখাল তা এখনো মাথায় ঢুকছে না।

ট্রেন্ডের সাথে মিল রেখে হুয়াওয়ে ফোনের ডিসপ্লেতে দিয়েছে ১৮ঃ৯ এস্পেক্ট রেশিও আর এতে রেজোল্যুশন পাবেন 1080*2160 যা সাধারণত আমরা ফুল এইচ ডি আলট্রাওয়াইড মনিটরে দেখে থাকি। ডিসপ্লের ফিলটাও ছিল ভাল কিন্তু ব্রাইটনেস এখানে আমরা বলব অনেকটা এভারেজ।

Body

এখন নজর দেয়া যাক ফোনের বডির দিকে। আমাদের রিভিউ কপির কালার ছিল আকাশী নীল যা দেখতে খুবই সুন্দর লাগে। এছাড়াও ফোনটিকে আপনারা ব্ল্যাক এবং গোল্ড কালারেও পাবেন। পুরো বডিকে তৈরি করা হয়েছে এলুমিনিয়াম দিয়ে। আর ব্যাক কভারকে দেয়া হয়েছে ম্যাট ফিনিশ। যার কারণে ফোনটির ব্যাক হয়ে গেছে আঙ্গুল ছাপ চুম্বক। সফট কাপড় দিয়ে বার বার মোছার ঝামেলা যদি করতে না চান তাহলে রেকমেন্ড করব একটি ক্লিয়ার প্রটেক্টিভ কভার ব্যাবহার করার জন্য যাতে সৌন্দর্য এবং নিরাপত্তা দুটোই বজায় থাকে।

Huawei Y9 এর ফ্রন্টে ডিসপ্লের উপরে আপনারা দেখতে পাবেন দুটি ক্যামেরা, স্পীকার, সেন্সর ও নোটিফিকেশন লাইট বার। তবে ফ্রন্টে কোন ফ্ল্যাশ দেয়া হয় নি তাই যারা গভীর অন্ধকারে সেলফি তুলতে চান তাদেরকে সামান্য হতাশ হতে হবে।

পাওয়ার ও ভলিউম আপ ডাউন বাটন আগের মতই রয়ে গেছে ফোনের ডান দিকে আর পেছনে খুজে পাবেন বাকি দুটি রিয়ার ক্যামেরা, ফ্ল্যাশ লাইট এবং মাঝের অংশে খুজে পাবেন ফিঙ্গারপ্রিন্ট রিডার। ফিঙ্গারপ্রিন্ট রিডার ছিল খুবই রেস্পন্সিভ। তেমন কোন ডিলে বা ল্যাগ অনুভব করা যায় নি।

OS, CPU & GPU Performance

এবার আসা যাক ফোনের মূল পারফর্মেন্সের দিকে। প্রসেসর হিসেবে Huwei Y9 এ দিয়েছে তাদের নিজস্ব কিরিন 659 অক্টাকোর প্রসেসর যাতে স্পীড পাবেন পুরো 2.3 গিগাহার্টজ। কিন্তু তাদের প্রসেসর কেবল মালি গ্রাফিক্স চিপের সাথে কম্প্যাটিবল হওয়ায় এতে আপনারা পাচ্ছেন Mali T830 MP2 জিপিউ। প্রসেসর ও জিপিউর পারফর্মেন্স নিয়ে একটু পরেই আসছি।

২০ হাজার টাকার রেঞ্জের প্রায় সব মোবাইলেই অপারেটিং সিস্টেম হিসেবে এন্ড্রয়েড 7.0 দেয়া হলেও হুয়াওয়ে আপডেটেড 8.0 ওরিও ওএস দিতে কার্পণ্য করে নি।

এছাড়া বরাবরের মতই ফোনটির মধ্যে আপনি পাবেন ইমোশন ইউ আই যা ফোনটি ব্যাবহারের অভিজ্ঞতা খুব সুন্দর করে তোলে। সাধারণ ইউজে পুরো ল্যাগ ফ্রি অভিজ্ঞতা পাওয়া গিয়েছে। রেসপন্স ছিল স্মুথ, ডিলে একদমই লক্ষ্য করা যায় নি। Check here for more smartphone reviews in Bangla.

Gaming Performance

গেমিং পারফর্মেন্স আমাদের হতাশ করে নি। বেশির ভাগ গেম স্মুথলি চালানো গিয়েছে। তবে একদম বেশি গ্রাফিক্স ইন্টেন্সিভ গেম যেমন পাবজি, এশফাল্ট এর মত গেমে সামান্য কিন্তু ইগ্নোরেবল ল্যাগ লক্ষ্য করা গিয়েছে।

RAM & ROM

ফোনের মধ্যে দেয়া হয়েছে ৩২ জিবি রম এবং ৩ জিবি র‍্যাম। র‍্যাম ৩ জিবি দেয়া হলেও একেবারে টরচারাস ইউজার না হলে ডে টু ডে ইউজের জন্য যথেষ্ট হবে। আর মডেলটিতে থাকা প্রসেসরটি কিছুটা শক্তিশালী হবার কারণে বেশির ভাগ এপ ও গেম একসাথে সাইমুল্টেনিয়াস্লি চালাতে পারবেন কোন স্লো ডাউন ছাড়াই। স্টোরেজ নিয়ে এই বাজেটের ফোনে কোন কমপ্লেইন্ট নেই। তবে যদি হেভি গেমিং, ভ্লগিং বা ফটোগ্রাফির ইচ্ছে থাকে তাহলে আলাদা করে এস ডি কার্ড কিনতে রেকমেন্ড করব।

Battery Efficiency

যেখানে সাধারণত আমরা ৩৫০০/৩৬০০ এম এ এইচ এর ব্যাটারি অন্যান্য মডেলের স্মার্টফোনে পেয়ে থাকি সেখানে হুয়াওয়ে দিয়েছে পুরো ৪ হাজার মিলি এম্প আওয়ার ব্যাটারি। বোঝাই যাচ্ছে ফোনটি তৈরি করার সময় যারা নিজেদের ফোনকে ইচ্ছেমত টর্চার করতে পছন্দ করেন তাদের কথা চিন্তা করেই বানিয়েছিল। তবে ব্যাটারি তারা করে ফেলেছে নন রিমুভাল। টেস্ট ভেদে কনজুমারের কাছে ভাল লাগতেও পারে আবার নাও লাগতে পারে।

তবে ব্যাটারি এফিসিয়েন্সি এক কথায় অসাধারণ। টানা আধা ঘন্টা গেমিঙের পরেও ব্যাটারি ৫% এর নীচে নামে নি।

Camera Performance

এবার আসা যাক ফোনটির মূল ফোকাস পয়েন্টে, যা হল এর ক্যামেরা। শুরুতেই আপনাদের ইঙ্গিত দিয়েছিলাম ফোনটি হচ্ছে সেলফি কেন্দ্রিক ক্যামেরা ফোন। আমরা সাধারণত রিয়ার ক্যামেরায় ফ্রন্ট ক্যামেরার তুলনায় বেশি মেগাপিক্সেল পেয়ে থাকি কিন্তু বাংলাদেশে এলোকেট করা মডেলে করা হয়েছে সম্পূর্ণ উল্টো। পেছনে দেয়া হয়েছে ১৩ মেগাপিক্সেল বাই ২ মেগাপিক্সেলের ডুয়াল ক্যামেরা যাতে এপারচার নিয়ে আসা হয়েছে 2.2 তে। আর ফ্রন্টে আপনারা পাচ্ছেন পুরো ১৬ মেগাপিক্সেল বাই ২ মেগাপিক্সেলের ডুয়াল ক্যামেরা। আমাদের ভাগ্য অনেকটা ভালই এক্ষেত্রে কারণ অন্যান্য রিজিওনে কেবল ৮ মেগাপিক্সেল বাই ২ মেগাপিক্সেলের ফ্রন্ট ক্যামেরা রয়েছে। যদি পিকচার কোয়ালিটি দেখতে চান ঘুরে আসুন ভিডিও থেকে।

Huawei Y9 এ আপনি ভিডিও রেকর্ড করতে পারবেন 1080p ফুল এইচ ডি রেজোল্যুশনে ৩০ ফ্রেমস পার সেকেন্ডে। এছাড়াও এতে দেয়া হয়েছে টাইমল্যাপ্স ফিচার। ভিডিও কোয়ালিটিও অনেক অসাধারণ। কালার ডিস্টরশন বা স্যাচুরেশন তেমন একটা লক্ষ্য করা যায় নি।

Cons Of Y9

Huawei Y9 এর বডি হচ্ছে অনেক স্লিপারি। যাদের হাত থেকে মাঝে মধ্যে ফোন ফস্কে পরে যাওয়ার ইতিহাস রয়েছে অথবা টেবিল বা বিছানার কর্নারে ফোন রেখে যাদের অভ্যাস তাদের বলব একটু সাবধানেই ফোনটি ব্যাবহার করার জন্য। আর ফোনের ফ্রন্টে ফ্ল্যাশ না দেয়া আমি বলব একটি মাইনাস পয়েন্ট Y9 এর জন্য।

Overall Opinion

এখন আসা যাক ফোনটির ওভারঅল পারফর্মেন্স নিয়ে আমার মতামত। ২০ হাজার টাকার প্রাইস রেঞ্জে বাংলাদেশের স্মার্টফোন মার্কেটে অনেক কম্পিটিশন দেখতে পাবেন। অনেক ব্র্যান্ড খুব ভাল মানের ফিচার সমৃদ্ধ ফোন অফার করছে এই রেঞ্জে। তবে ফিচার ও পারফর্মেন্স বিবেচনা করলে আমি বলব Huawei Y9 2018 হতে পারে ২০১৮ সালে বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি সেল হওয়া স্মার্টফোন।

Share This Article

Search