দীর্ঘ অপেক্ষার পালা যেন ফুরালো। বাংলাদেশে শাওমি অফিশিয়ালি কার্যক্রম শুরু করার আগে থেকেই শাওমির বাজেট লেভেল মিড বাজেট থেকে শুরু করে এমনকি ফ্ল্যাগশিপ ফোনগুলো পর্যন্ত ব্যাপক চাহিদা ছিল আনঅফিশিয়ালি। কিন্তু শাওমি বাংলাদেশে আসার পর থেকেই সীমিত সংখ্যক ফোন এনাউন্সমনেট দেখে যতটা গ্রাহকদের হতাশ করেছিল তার চেয়েও বেশি হতাশ করেছিল অনেকদিন অতিবাহিত হওয়ার পরও স্থানীয় ভাবে উৎপাদন শুরু না করাতে। কিন্তু নানান জটিলতা শেষে অবশেষে সব গুঞ্জন করে সত্য করে দিয়ে গতকাল ২১ অক্টোবর অফিশিয়ালি উদ্বোধন করা হয় শাওমি বাংলাদেশের স্মার্টফোন প্ল্যান্ট। এই প্ল্যান্টের খুঁটিনাটি এবং বিস্তারিত নিয়েই আজকের আর্টিকেল-
সরকারের নীতিমালার কারণে স্থানীয়ভাবে ম্যানুফেকচারিং অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। যদি তাও সম্ভব না হয় সেমি নকডাউন পদ্ধতিতে(প্রয়োজনীয় সব যন্ত্রাংশ আমদানি করে সংযোজন করে ) হলেও উৎপাদন করা অনেক জরুরী হয়ে পড়ে। কারণ এই দুইটির একটি হলেও অনেক বড় মার্জিনে ট্যাক্স দিতে হয় না অর্থাৎ মাত্র ১৮% ট্যাক্স দিতে হয়। সেইখানে শাওমির প্রতিদ্বন্দ্বী সব কোম্পানিই বেশ আগে থেকেই নিজস্ব প্ন্যান্টে উৎপাদন করে যাচ্ছিল। কিন্তু বাহিরে থেকে শাওমি ফোন আনলে ঐগুলোতে ৫৭% ট্যাক্স দিয়ে একটি কম্পিটিটিভ প্রাইস সেট করতে বেশ হিমশিম খেতে হচ্ছিল।
জানা গিয়েছে, শতভাগ বিদেশী বিনিয়োগে দেশের প্রথম কোনো স্মার্টফোন এসেম্বলিং প্ল্যান্ট এটি। হয়ত এটিই অন্যতম কারণ শাওমির বাংলাদেশের ফোন এসেম্বলি শুরু করে দেরি হওয়ার কারণ। কেননা আগের নীতিমালা অনুযায়ী কোনো বিদেশি কোম্পানি এককভাবে বিনিয়োগ করতে পারত না। অব্যশই দেশীয় কোনো কোম্পানির সাথে পার্টনারশীপে বিনিয়োগ করত হত। গাজীপুরে প্রায় চারতলা ভবনে ৫৫ হাজার স্কয়ার ফুট জায়গার উপরে এটি বানানো হয়েছে। হংকং স্টক এক্সচেঞ্জের তালিকাভুক্ত কোম্পানি ডিবিজি টেকনোলজি শাওমির ফোনগুলো বাংলাদেশে এসেন্বলি করে দিবে। এই কোম্পানির সাথে শাওমির চুক্তি রয়েছে স্মার্টফোন এসেম্বলিং এর জন্য। এই কোম্পানিটি ইতিমধ্যে ভারত, চীন ও ভিয়েতনামে ফ্যাক্টরি রয়েছে। তাই শাওমি বাংলাদেশ গ্রাহকদের আশ্বস্ত করেছে যে, যথাযথ কোয়ালিটি বজায় থাকবে দেশেই উৎপাদিত শাওমির ফোনগুলোতে। বর্তমানে ২৬০ কর্মী নিয়ে কাজ শুরু করলেও ভবিষ্যতে ১০০০ জনে উন্নীত করার পরিকল্পনা রয়েছে তাদের। সুখবর হচ্ছে যার ৯৯%ই হবে আমাদের দেশের জনবল। এছাড়া ধাপে ধাপে এক কোটি মার্কিন ডলার বা ৮৫ কোটি টাকা বিদেশি বিনিয়োগের পরিকল্পনা রয়েছে শাওমির।
শুরুতে বছরে ৩০ লাখ স্মার্টফোন তৈরির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে শাওমি। যেখানে প্রতিদিন ৮ ঘন্টার শিফটিং করে দৈনিক ২ হাজার ইউনিট স্মার্টফোন তৈরি করছে যা মাসে ৫০ হাজার ইউনিট পর্যন্ত সর্বোচ্চ তৈরি করতে পারবে। জানুযারিতে নতুন লাইন তৈরি হয়ে গেলে তা আরও বাড়তে পারবে বলে আশা করছে কোম্পানিটি। বর্তমানে এই প্ল্যান্টে Redmi 9A স্মার্টফোনটির তৈরি কথা হচ্ছে। যা সামনের মাসেই ‘Made in Bangladesh’ ট্যাগ সহকারে মার্কেটে আসতে যাচ্ছে।