পুরোনো যন্ত্রাংশ থেকেই সম্পূর্ণ আইফোন বানাবে এপল

আমেরিকান বেইসড এই টেক জায়ান্ট সবসময়ই আলোচনায় থাকে পরিবেশ বান্ধব পদক্ষেপের জন্য। গত বছর তাঁরা ২০৩০ সালের মধ্যে সম্পূর্ণরুপে কার্বন নিউট্রাল কোম্পানিতে পরিণত হওয়ার জন্য লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করেছিল। তাছাড়া এই বছর তাঁদের নতুন আইফোন সিরিজ অর্থাৎ iPhone 12 সিরিজে তাঁরা পরিবেশের প্রতি দায়বদ্ধতা থেকে ই-বর্জ্য কমানো পদক্ষেপ হিসেবে বক্সের সাথে চার্জিং এডাপ্টর দেওয়া হয়নি যা বর্তমানে ট্রেন্ডে পরিণত হয়েছে। এইবার এপলের সিইও জানালো তাঁরা ভবিষ্যতের আইফোনগুলো পুরোনো যন্ত্রাংশ থেকে প্রাপ্ত উপকরণ দিয়েই সম্পূর্ণ আইফোন নিয়ে আসার পরিকল্পনা রয়েছে তাঁদের।

গত কিছুদিন আগে অনুষ্ঠিত হওয়া Vivatech ভার্চুয়াল সামিটে ব্রুট মিডিয়ার সিইও এর সাথে সাক্ষাৎকারে আসেন টিম কুক, সিইও, এপল। সেইখানে কুককে এপলের এনভারোমেন্টাল কমিন্টমেন্ট সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চাওয়া হয়। সেইখানে টিম কুক গর্ব জানায় কোম্পানি হিসেবে এপল ইতিমধ্যে কার্বন নিউট্রাল। তাঁদের কোম্পানির ইন্টার্নাল কাজের জন্য যাবতীয় পাওয়ার(বিদ্যুৎ) তাঁরা রিনিউওয়েবল সোর্স থেকে সংগ্রহ করে। কিন্তু এই তাঁরা কার্বন নিউট্রালিটিকে আরো বৃহৎ আকারে বাস্তবায়িত করতে চায়। যার কারনে তাঁরা গত বছর ২০৩০ সালের মধ্যে তাঁদের সাপ্লাই চেইন এবং এন্ড ইউজার সবাইকে কার্বন নিউট্রালিটির মধ্যে নিয়ে আসার পরিকল্পনা রয়েছে। অর্থাৎ গ্লোবালি যারা এপলের বিভিন্ন পার্টস সেল করে তাদেরকেও কার্বন নিউট্রালিটির মধ্যে নিয়ে আসতে চায়। ইতিমধ্যে এপলের অনেক সাপ্লাইয়ার রিনিউওয়েবল এনার্জিতে চলে গিয়েছে। অন্যদিকে গ্রাহক প্রান্তেও তাঁরা পরিবেশ বান্ধব পন্য তুলে দিতে চায়। এরই অংশ হিসেবে টিম কুক জানিয়েছে সামনের আইফোনগুলো বানানোর জন্য মাটির নিজ থেকে নতুন উত্তোলনকৃত কোনো আকরিক(বিশেষ করে ধাতু) ব্যবহার করবে না। অর্থাৎ আগের আইফোনের পার্টস থেকে সংগ্রহ করা উপরকন দিয়েই নতুন আইফোন বানাবে। প্রসঙ্গত, প্রতিটি ফোন বানাতে অনেক ধরনের মেটালের প্রয়োজন হয় যা সাধারণত খনি থেকে সংগ্রহ করতে হয় যা কিনা লিমিটেড রিসোর্স।

এছাড়া টিম কুক জানিয়েছে, MAC এ ব্যবহৃত ৪০% অ্যালুমিনিয়ামই রিসাইকেল করা। অন্যদিকে iPhone 12 সিরিজে ৯৮% রেয়ার আর্থ ম্যাটেরিয়ালস ব্যবহার করা হয়েছে রিসাইকেল্ড। এইখানে রেয়ার আর্থ ম্যাটেরিয়ালস বলতে পর্যায় সারণির ১৭টি মৌলকে বুঝানো হয় যা প্রকৃতিতে তুলনামূলক কম পাওয়া যায় এবং খনি থেকে উত্তোলন প্রসেসটি বেশ জটিল। এই রেয়ায় আর্থ ম্যাটেরিয়ালস দিয়ে এপল স্পিকার, ক্যামেরা ও বিশেষ করে হ্যাপ্টিক ফিডব্যাক ইঞ্জিন বানিয়ে থাকে। এপলের কাছে নিজস্ব রিসার্চ ও ডেভেলপমন্টে ডিপার্টমেন্টে বানানো বিশেষ রোবট রয়েছে যারা সতকর্তার সাথে আইফোন থেকে প্রয়োজনীয় ম্যাটেরিয়াল আলাদা করতে পারে। রিসাইকেলড পার্টস থেকে বানানোর কারনে একদিকে যেমন পরিবেশগত ঝুঁকি কমে যাবে অন্যদিকে ভবিষ্যতের আইফোনগুলোর দামও কমতে পারে বলে ধারনা করা হচ্ছে

নিত্যনতুন টেকনোলজির ক্ষেত্রে দেখা যায় অনেক স্মার্টফোন নির্মাতারা এপলকে অনুসরন করতে দেখা যায়। আশা করা যায় এপলের মত করে বাদবাকি কোম্পানিগুলো ধীরে ধীরে পরিবেশ বান্ধব পদক্ষেপ নিয়ে কার্বন ফুটফ্রিন্ট কমানোর জন্য এগিয়ে আসবে।

Share This Article

Search