গত বছর RX 7600 8GB ২৭০ ডলারে লঞ্চ করে মিশ্র প্রতিক্রিয়া পেয়েছিল AMD। তবে আমাদের দেশে বেশ কিছুদিন তুলনামুলক আকর্ষণীয় প্রাইস এর জন্য মুড়ি-মুড়কির মত বিক্রি হয়েছিল এই গ্রাফিক্স কার্ডটি। আজ CES 2024 এ এএমডি লঞ্চ করেছে NAVI 33 based এই জিপিইউটির Ti বা XT ভ্যারিয়েন্ট। বলা বাহুল্য, যে প্রাইসে লঞ্চ করা হয়েছে, তাতে অনেকদিন পর দেশের বাজার গরম হয়ে যেতে পারে।
RX 7600 XT এর সবথেকে হাইলাইটস এর জায়গাটা হচ্ছে এর ভিডিও মেমোরি। ১৬ গিগাবাইট এর GDDR6 মেমোরি দেওয়া হয়েছে এতে । যেসব গেমার হাই রেজুলুশনে গেম খেলার জন্য একটু বড় মেমোরির কার্ড খুজছেন ,অনেকদিন পর তাদের জন্য একটা “প্রায়-পারফেক্ট” জিপিইউ আসলো এ কথা বলাই যায়।
দ্বিতীয় আলোচনার বিষয় হচ্ছে এই গ্রাফিক্স কার্ডটার লঞ্চ প্রাইস। ৩২৯ ডলারে লঞ্চ হয়েছে RX 7600 XT। এই দামে ১৬ গিগাবাইট জিপিইউ বলতে গেলে আর কোনো ব্রান্ডই দিতে পারছে না, ARC A770 16GB থাকলেও ড্রাইভার অপ্টিমাইজেশন,বাগস এর জন্য এখনো বিভিন্নভাবে পিছিয়ে আছে এটি। আর অনেক কনজিউমারের জন্যই পরিচিত ব্রান্ডের অভাব রয়েছে ইন্টেলে, একটু বেশি বিশ্বাসযোগ্য ব্রান্ড, অর্থাৎ MSI, Gigabyte,Asus, Sapphire ইত্যাদি যারা খুজে থাকেন তাদের জন্য অবশ্যই জাতীয় গ্রাফিক্স কার্ড হতে যাচ্ছে Radeon RX 7600 XT।আর সাম্প্রতিক সময়ে ড্রাইভার এর দিক দিয়েও বেশ স্থিরতা অর্জন করেছে লাল দল। সব মিলিয়ে শুধু গেমিং যারা করবেন,তাদের জন্য বেশ ভালো কিছু দিতে যাচ্ছে এই গ্রাফিক্স কার্ডটি।। হাই রেজুলুশন ও মেমোরি বিবেচনা করলে ৭৬০০ এক্সটি হবে এই বাজেটে অপ্রতিদ্বন্দ্বী।
দাম ৩২৯ ডলার
স্পেকস বিচারে মোটেও আকর্ষণীয় নয় এই ৩৩০ ডলার দাম কারণ ক্লক স্পিড বাদে বাকি সব কিছুই অভিন্ন রেখে 8 জিবি মেমোরির জন্য অতিরিক্ত ৬০ ডলার চার্জ করা হয়েছে, তার পরেও বাংলাদেশ এর বাজারে এই জিপিইউটি বেশ আলোড়ন ই তুলবে কারণ এই বাজেটে অন্যান্য জিপিইউ গুলোর অবস্থা খুব বেশি ভালো নয়।। 330 ডলারে লঞ্চ হওয়া RTX 4060 এর মডেল গুলো 38,39 হাজার থেকে পাওয়া যায় যেগুলোতে আছে ৮ গিগাবাইট মেমোরি, সেক্ষেত্রে দুই গুণ মেমোরি নিয়ে এই নতুন জিপিইউ টি নিঃসন্দেহে ই জায়গা দখল করবে। চাপে পরবে অপটিমাইজেশন সমস্যায় ভোগা Intel Arc ও।
৩৩০ ডলার প্রাইসিং নিয়ে বিভিন্ন ভাবে আলোচনা সমালোচনা করার সুযোগ রয়েছে,তবে এএমডির অভ্যাস রয়েছে দাম কমিয়ে ফেলার। সেক্ষেত্রে কিছুদিন পর 7600 এর দাম ২৫০/২৪০ ডলারে নামিয়ে এই নতুন গ্রাফিক্স কার্ডটির দাম ৩০০/২৯০/৩১০ ডলার নির্ধারণ করলেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। অনেকের মতে অবশ্য ৩০০/২৯০/৩১০ ডলার ই হওয়া উচিত এই গ্রাফিক্স কার্ডটির প্রকৃত মূল্য।
পারফর্মেন্সঃ
একই দামে ৮ গিগাবাইট মেমোরির সাথে আসা RTX 4060 এর সাথে 1080p ও 1440p উভয় রেজুলুশনেই ফ্রেম জেনারেশন, ডিএলএসএস এর পাশাপাশি raw rasterization performance এর কম্প্যারিজন চার্ট দেখিয়েছে AMD, সেখানে অন্তত তাদের বেঞ্চমার্ক অনুসারে আপস্কেলিং বন্ধ অবস্থায় বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দুটো জিপিইউ প্রায় একই রকম পারফর্মেন্স দেখিয়েছে, কোনো ক্ষেত্রে অল্প ব্যবধানে ৭৬০০ এক্সটি ও অন্য ক্ষেত্রে ৪০৬০ এগিয়ে ছিল। তবে আপস্কেলিং ও ফ্রেম জেনারেশন চালু অবস্থায় AMD এর দেখানো চার্টে বেশ বড় ব্যবধানে এগিয়ে আছে RX 7600।
রে ট্রেসিং এর ক্ষেত্রে 1080p তে 7600 non xt ও RTX 2060 এর সাথে কম্প্যারিজন করেছে তারা। সেখানে বেশিরভাগ টাইটেলে ৭৬০০ এর সাথে বেশ বড় ব্যবধান ই ধরে রাখতে দেখা যাচ্ছে এই নতুন জিপিইউটিকে । তবে NVIDIA কে খোচা দেওয়ার জন্য হয়তো 1440p তে আর RTX 2060 কে রাখেনি তারা। এখানেও RX 7600 থেকে সর্বনিম্ন ৭ এফপিএস ও সর্বোচ্চ ২৫ এফপিএস ব্যবধানে এগিয়ে আছে RX 7600 XT 16GB।
specs
অন্যান্য স্পেসিফিকেশন গুলো ও এক নজর দেখে নেওয়া যাকঃ
- একই NAVI 33 GPU হওয়ায় ৭৬০০ এর মত একই পরিমাণ compute units, Stream Processors। এখানে এসে সমালোচনার মুখে পরতে হচ্ছে AMD কে, কারণ এনভিডিয়ার মত তারাও একই জিপিইউ তে শুধু মেমোরি ক্যাপাসিটিতেই পরিবর্তন আনছে।Navi 32 এর কোনো ভ্যারিয়েন্ট ব্যবহার করলে স্ট্রিম প্রসেসর,কম্পিউট ইউনিট এর পরিমাণ,আরটি কোর এর পরিমাণ ও বেশি হতো+হয়তো পারফর্মেন্সে অনেক বেশি পার্থক্য পাওয়া যেত।
- তবে একেবারেই যে কোনো পরিবর্তন নেই তা ও নয়, বরং ক্লক স্পিডে আপগ্রেড এসেছে এক্সটি ভ্যারিয়েন্টটিতে। বেস ক্লক একই থাকলেও এক লাফে গেম ক্লক বেড়েছে ২২০ মেগাহার্জ ও বুস্ট ক্লক ও ১৫০ মেগাহার্জ মত বৃদ্ধি পেয়েছে । অর্থাৎ ক্লক স্পিড এর দিক দিয়ে এটি শুধুমাত্র একটি ওভারক্লকড সংস্করণ ছাড়া আর কিছুই নয়। তবে AIB কার্ডগুলোতে আরো অল্প কিছু মেগাহার্জ অতিরিক্ত স্পিড হয়তো আমরা দেখতে পাব।
- মেমোরি সেকশনে এসে হুবহ এনভিডিয়ার 4060 Ti ঘটনা বা দুর্ঘটনারই পুনরাবৃত্তি ঘটিয়েছে AMD। মেমোরি ক্লক, মেমোরি ইন্টারফেস ও মেমোরি bandwidth, কোনোটাতেই একটুও পরিবর্তন আসেনি।একই সাথে PCIe 4×8 এর সমস্যাটিও এখানে রয়ে গিয়েছে।
- মেমোরি বৃদ্ধি পাওয়ায় ও ক্লক স্পিড বৃদ্ধি পাওয়ায় অবধারিতভাবেই টিডিপি বৃদ্ধি পেয়েছে,এটাকে অবশ্য আপগ্রেড বলাটা ঠিক হবে না। ১৬৫ ওয়াট থেকে টিডিপি বেড়ে দাড়িয়েছে ১৯০ ওয়াটে।