LG 34wk95u Ultrawide Nano IPS Professional Monitor

আমাদের চ্যানেলের বেশ কিছু ভিডিওতে এই মনিটর টা দেখা গেছে। কয়েক হাজার কমেন্ট রয়েছে শুধুমাত্র এই মনিটর টার মডেল কি জানার জন্য। যারা মনে মনে এটার প্রতি একটা ফ্যাসিনেশনে ভুগছেন তাদের প্রথমেই একটা রিয়েলিটি চেক দিয়ে রাখি, এই মনিটরটার মুল্য বাংলাদেশে ১ লাখ আশি হাজার টাকার মত। এটা যখন প্রথম বাংলাদেশে আনা হয়েছিল শুনেছিলাম মাত্র ৮ টা ইউনিট এসেছে। রিভিউ করার অজুহাতে এটাকে বেশ কিছুদিন ব্যবহার করার সুযোগ হয়েছে আমার। শুধু এটা নয় ডেল এর আল্ট্রাশার্প সিরিজ আমি নিজে ব্যবহার করি, নতুন আল্ট্রাশার্প গুলোও দেখার সুযোগ হয়েছে য়াবার আসুসের প্রো আর্ট সিরিজের মনিটর গুলোও অসাধারন কালার আউটপুট দিতে পারে। কিন্ত যেহেতু ভিডিও এডিটিং মাঝে মাঝেই করতে হয় আমাকে, এই এলজি ৫কে২কে মনিটরটা আমার ফেভারিট লিস্টে টপে থাকবে। বলে রাখা ভালো, স্যামসাং জি৯ আমাদের জাহিদ ভাই নিজেই ব্যবহার করেন, আর এটা নিয়ে একটা কন্টেন্ট বানানোর কারনে সেটাও ঘেটে দেখার সুযোগ আমার হয়েছে। জি৯ গেমিং মনিটর হিসেবে একদম টপ লেভেলের, তবে একজন কন্টেন্ট ক্রিয়েটরের পয়েন্ট অফ ভিউ থেকে আমার কাছে এই 34wk95u মোর ফেভারিট। কেন, কথা বলবো তা নিয়ে। 

স্পেসিফিকেশন

LG 34wk95u এর স্ক্রিন সাইজ 34 ইঞ্চ। 21:9 এসপেক্ট রেশিওর এই ডিসপ্লে এর রেজুলেশন 5K2K বা 5120 x 2160। মনিটরের প্যানেলটি একটি Nano-IPS প্যানেল যেটিকে display resolution ডট কম AH-IPS বলে অভিহিত করেছে দেখলাম।মনিটরটির টিপিক্যাল ব্রাইটনেস 450 cd/m2, minimum 360/m2 ও পিক ব্রাইটনেস 700cd/m2। মনিটরটির আরেকটি আকর্ষণীয় ফিচার হচ্ছে এটি VESA DisplayHDR 600 স্ট্যান্ডার্ড সার্টিফাইড। যার জন্য ম্যাক্সিমাম 600-nits luminance পাওয়া সম্ভব এই প্যানেলে।

Key Features:

উল্লেখযোগ্য ফিচারের মধ্যে সবার আগেই বলতে হয় এর 5k2k রেজুলুশন এর কথা।কথা।কনজিউমার এর কাছে সুপারফাস্ট Thunderbolt 3 সাপোর্টেড ডিভাইস থাকলে তার সেরা ইউটিলাইজেশন এই মনিটরটি দিয়েই করা সম্ভব।এই ন্যানো আইপিএস প্যানেলটি VESA DisplayHDR 600 স্ট্যান্ডার্ড সার্টিফাইড। সেজন্য HDR কন্টেন্ট ওয়াচিং ও গেম খেলার জন্য সুইটেবল হবে।মনিটরটির OSD বা ON Screen Display টিও ফিচারে ঠাসা।

OSD and App

advanced 6-axis কন্ট্রোল এবং gamma (four profiles) adjustments সহ আরো অনেকগুলো অপশন রয়েছে OSD তে। HDR ও SDR এর জন্য রয়েছে আলাদা আলাদা পিকচার প্রিসেটস যেমন cinema, Custom,vivid।

OSD এর পাশাপাশি একটি আলাদা On-Screen Control software নামের ডেস্কটপ App এর ও ব্যবস্থা রয়েছে যেটি দিয়ে OSD এর বেশিরভাগ অপশনই ডেস্কটপ থেকে সহজেই এক্সেস, ভিউ ও চেঞ্জ করা যাবে। এছাড়াও রয়েছে HDCP 2.2, সুপারপ্লাস রেজুলুশন, স্মার্ট এনারজি সেভিং,রিডার মোড, ডিএএস মোড, রেসপন্স টাইম কন্ট্রোল, ফ্যাক্টরি ক্যালিব্রেশন এর মত ফিচারস।

Problems and limitations:

ছোট বড় ত্রুটি বা ফিচারের কমতি সব প্রোডাক্টেই থাকে , একই কথা তাই LG 34wk95u এর জন্য ও প্রযোজ্য। ১ লাখ ৮০ হাজার টাকার এই মনিটরটিতে নেই কোনো variable refresh রেট ফিচার ,অর্থাৎ G-sync,Freesync এর মত ফিচার এখানে অনুপস্থিত ।

Display ninza এর মতে এই মনিটরটির ব্যাপারে অনেক ইউজারই burn in issue এর কমপ্লেইন করেছেন, এমনকি LG এর ওয়েবসাইটের রিভিউ সেকশনেও পেয়ে গেলাম এরকম কয়েকটি ইউজার রিপোর্ট।

একজনের অভিযোগ দেখলাম তার thunderbolt পোর্টটি ৮ মাসে ও অন্য একজনের ক্ষেত্রে এক বছর পর display পোর্টটি কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছে। অভিযোগ রয়েছে LG এর Firmware update এর ব্যাপারেও।

কেনার আগে এটাও মাথায় রাখতে হবে যে মনিটরটি ফ্লিকার ফ্রি নয় । থাকছে না কোনো swivel or rotate এর সুযোগ। এজন্য এডজাস্টমেন্টের ক্ষেত্রে অনেকেরই সমস্যা হতে পারে।

আর মনিটরটির বিল্ড ম্যাটেরিয়ালস বেশিরভাগটাই plastic, এটাও জানিয়ে রাখার মত একটি বিষয়।

সর্বশেষ একটি বিষয় উল্লেখ করতে চাই সেটি হচ্ছে, বেশ অনেকগুলো কানেক্টিভিটি অপশন থাকলেও মনিটরটির Max Resolution অর্থাৎ 5k উপভোগ করতে হলে অবশ্যই Displayport 1.4 অথবা Thunderbolt 3 পোর্টের মাধ্যমেই কানেক্ট করতে হবে মনিটরটি।

কাদের জন্যঃ

তাহলে কাদের জন্য বেস্ট হবে এই মনিটরটি, যারা MacBook Pro or MacBook Air এর জন্য একটি পারফেক্ট ভালো কোয়ালিটির ডিসপ্লে খুজছেন, তাদের জন্য ভালো অপশন হতে পারে এটি।

অসাধারণ কালার একুরেসি , ইমেজ কোয়ালিটি ও wider ফিল্ড অফ ভিউ, vibrant colors,crisp details এর জন্য কন্টেন্ট মেকারস,কন্টেন্ট ক্রিয়েটরস দের জন্য , কাজের জন্য যাদের বিশাল screen space এর দরকার হয় তাদের জন্য নিঃসন্দেহে ভালো একটি পিক এই মনিটরটি।

এবং আরো একটি কথা না বললেই না, যেহেতু ডিসপ্লেটি VESA DisplayHDR 600 স্ট্যান্ডার্ড সার্টিফাইড ,তাই HDR Content consuming বা HDR গেমিং করতে চান যারা, এটি হতে পারে একটি অসাধারণ অপশন।

ধরেন, আপনার একটা প্রোডাকশন হাউজ রয়েছে বা ডিজিটাল কন্টেন্ট ক্রিয়েশন আপনার প্রফেশন এবং আপনি খুজছেন এবসুলুট বেস্ট সল্যশন, তাহলে এই মনিটরটা আপনার টপ চয়েস হতে পারে।

বিশেষ করে যদি আইম্যাক এর সাথে পেয়ার আপ করতে চান।

শেষ কথা

এই মনিটরের দুটো প্রবলেম বেশ জটিল, একটা হচ্ছে এর প্রাইস। এক, এটার দাম ইন্টারন্যাশনাল মার্কেটে ১৫০০ ডলারের মত হলেও বাংলাদেশে এর দাম ধরা হয়েছে ১ লাখ আশি হাজার টাকার মত, এলজির প্রোডাক্ট ম্যানেজার বড় ভাইকে এব্যপারে হালকা খোচা দেয়ায় উনি দোষটা কাস্টমস আর ট্যাক্স এর উপর চাপিয়ে দেন। দ্বিতীয় যে প্রবলেমটা আরো জটিল সেটা হচ্ছে এর এভেইলিবিলিটি, বাংলাদেশে যে আটটা ইউনিট বছর খানেক আগে ঢুকেছিল তার মধ্যে হয়ত আর একটা এখনো এভেলেবল, আর পুনরায় কয়েকটা ইউনিট রিকোয়েস্ট করা হলেও এলজি সাপ্লাই দিতে পারছে না বলে জানা গেছে। তো যার কাজে লাগবে তার জন্য গোল্ড আর আমার মত যার পকেট ফাঁকা তার জন্য টিন।

Share This Article

Search