সম্প্রতি বাংলাদেশের বাজারে Vibe Gaming জনপ্রিয় মেকানিক্যাল কিবোর্ড নির্মাতা প্রতিষ্ঠান Keychron এর অফিশিয়াল ডিস্ট্রিবিউটর হওয়ার পর নিয়ে এসেছে বিভিন্ন বাজেটের ও বিভিন্ন স্পেসিফিকেশনের বেশ কয়েকটি Mechanical Keyboard। আজ আমরা রিভিউ করবো Keychron C2 Full Size Mechanical Keyboard টি।
Unboxing: ভেতরে যা যা থাকছে
একটি শক্ত পোক্ত কালো বক্সে মোড়ানো অবস্থায় এসেছিল কিবোর্ডটি। বক্সটি যথেষ্ট প্রিমিয়াম কোয়ালিটির লেগেছে আমার কাছে। উপরের দিকে বেশ বড় করে সাদা রঙে লেখা Keychron C2 ,তার নিচেই কালো outline দিয়ে কিবোর্ডটির structure draw করা। (লেখাটিতে Rainbow effect লক্ষ করা যাচ্ছিল বিভিন্ন এঙ্গেল থেকে লক্ষ করলে)।পেছনের দিকে এক পাশে কিবোর্ড এর ছবি ও আরেকপাশে উল্লেখযোগ্য ফিচারস/highlights লেখা ছিল।
বক্স খুলতেই ছবির মত অবস্থায় পাওয়া গেল ভেতরের সব জিনিসপত্রগুলো।একদম উপরে দেওয়া ছিল একটি কার্বন ফোম ফিল্টার শিট। তার নিচে একটি সেমি ট্রান্সপারেন্ট ফয়েল পেপারে মোড়ানো আমাদের কাঙ্ক্ষিত কিবোর্ডটির উপরে ছিল সুইচ পরিবর্তনের ইন্সট্রাকশন সম্বলিত একটি ছোট কার্ড ও বাটন ফাংশন সংক্রান্ত ইন্সট্রাকশন সম্বলিত একটি বড় কার্ড। বক্সের ভেতরে চারদিকে যে ফোম শিল্ড দেওয়া ছিল সেটি ২টি কম্পার্টমেন্ট এ বিভক্ত ছিল উপরের ছোট কম্পার্টমেন্টে রাখা ছিল বেশ কিছু এক্সেসরিস-
- কিছু এক্সট্রা Keycaps(৭টি কিক্যাপস, Escape,alter,windows সহ মোট ৭টি Key)
- যথেষ্ট শক্তপোক্ত এবং প্রিমিয়াম কোয়ালিটির একটি ব্রেইডেড নাইলন Type-C to Type-C Cable(এক প্রান্তে USB Type-A output কানেক্টেড অবস্থায় ছিল)
- একটি switch puller ও keycap puller
ডিজাইন ও First Impression:
রিভিউ ইউনিটটি রিসিভ করেই আমার First impression ছিল অনেকটা এরকমঃ “আচ্ছা এত ভারী কেন প্যাকেজটা, কি এমন আছে ভেতরে”। সম্পুর্ণ আনবক্স করার পরে শুধু কিবোর্ডটি হাতে নিয়েও আমার বেশ অনেকটাই ভারী মনে হয়েছে। যদিও অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে ভর লেখা ছিল মাত্র ৮২৯ গ্রাম। সাইট এর কথা যেহেতু চলেই আসলো, একটি অদ্ভুত বা মজার ঘটনা বলে রাখি, কি কারণে জানি না,অফিশিয়াল ওয়েবসাইটটিতে একাধিকবার ভিন্ন ভিন্ন সময়ে চেষ্টা করেও ভিপিএন ছাড়া প্রবেশ করতে পারিনি আমি।যদিও খোজ নিয়ে দেখেছি VPN ছাড়া প্রবেশ করা যাচ্ছিল এই সাইটটিতে অন্যন্য ISP থেকে।
যাই হোক, কিবোর্ডটির ডিজাইন অত্যন্ত মিনিমালিস্টিক বা সিম্পল, অতিরিক্ত চাকচিক্য,হাই-ফাই ভাব নেই। সাইজ এর কথা যদি বলি,TKL না হওয়া সত্বেও বেশ ছোটখাট,কম্প্যাক্ট একটা সাইজ দেওয়ার চেষ্টা করেছে কিক্রন যা সেই মিনিমালিস্টিক/সিম্পল থিমকে আরেকটু বাড়িয়ে দিয়েছে বলে মনে হয়েছে আমার কাছে।কেননা কর্নারগুলোতে অতিরিক্ত ১/০.৫ ইঞ্চির বেজেল/চিন থাকলে মিনিমালিস্টিক/সিম্পল ভাবটা কিছুটা নষ্ট হতো। কিবোর্ডটির কোনো কর্নারেই অতিরিক্ত chin , bezel না থাকার কারণেই মুলত এই compactness টি এসেছে, সেজন্য ট্রাভেল করা/ক্যারি করা সোজা। কর্নারের এজগুলো খুবই সামান্য রাউন্ড করা,চোখা নয়।
Gallery:Sweep left/right (in FB Browser) to change pictures
কিবোর্ড এর নিচে দুই দিকে দুটি Leg/feet রয়েছে যেটি অনেকেরই কাজে আসবে (সাইট এর তথ্য অনুসারে যেটি কিবোর্ডটিকে ৯ ডিগ্রী পর্যন্ত আপলিফট করতে সক্ষম)। ব্যক্তিগতভাবে আমি সবসময়ই কিবোর্ড কিছুটা উঠিয়ে ,অর্থাৎ এর লেগ/ফিট এক্সটেন্ড করেই চালাই।
F1,F2 বাটন বরাবর নিচের দিকে রয়েছে Type-C পোর্ট এবং তার পাশেই রয়েছে Windows-mac switch বাটন (যেটি নিয়ে একটু পরেই বিস্তারিত আলোচনা করবো)।
আরো একটি বিষয়, কিবোর্ড এর উপরের দিকে বা সামনের দিকে ছিল না কোনো ধরণের ব্রান্ডিং ,ছোট বড় কোনো অক্ষরেই C2 বা Keychron এর কোনো পরিচয় ছিল না।
*** নেই কোনো Wrist rest।একটানা দীর্ঘক্ষণ টাইপিং এর ক্ষেত্রে সমস্যা ফেস করতে পারেন অনেকেই। যেটি অনেকের জন্যই অনেক গুরুত্বপুর্ণ একটি বিষয় ও অনেকের জন্যই dealbreaker হতে পারে। আমার মতে wrist rest থাকা উচিত ছিল ***
***আরো একটি কথা বলে রাখা ভালো, প্রথম প্রথম মানিয়ে নেওয়া,ফিঙ্গার প্লেসমেন্ট ইত্যাদি বিষয়ে এই ছোট ফর্ম ফ্যাক্টর,smallness বা কম্প্যাক্ট সাইজ অনেকের জন্যই সমস্যার কারণ হতে পারে, cons হিসেবে বিবেচিত হতে পারে, বিরক্তির কারণ ও হতে পারে***
বিল্ড কোয়ালিটিঃ
বিল্ড কোয়ালিটির কথা বলতে গেলে আমার কাছে অত্যন্ত সলিড মনে হয়েছে কিবোর্ডটির বিল্ড। আরো একটি বিষয় আমার নজর কেড়েছে এবং গুরুত্বপুর্ণও মনে হয়েছে সেটি হচ্ছে, Switch ও Keys গুলো যেই জায়গা থেকে শুরু হয়েছে, অর্থাৎ F1-F4 একটি এলাকা বা সম্পুর্ণ NumPad এর সিরিজটি, এই জায়গাগুলো নিচের switch গুলো উপরের দিকে Open অবস্থায় রেখে keys বসানো হয়নি, বরং এই এলাকাগুলোতে ভেতরের দিকে বেশ অনেকখানি নামানো (অনেকটা আলাদা কম্পার্টমেন্ট এর মত),(বোঝার সুবিধার্থে ছবি দিয়ে দেওয়া হলো) অর্থাৎ এক কথায় floating design এর পরিবর্তে non-floating design দেখতে পাওয়া যাবে এখানে। Keys গুলো এভাবে non floating ডিজাইনে সাজানোর সবথেকে বড় যে সুবিধাটা পাওয়া যাবে সেটি হচ্ছে সহজেই ময়লা প্রবেশ করবে না Keys গুলোর অভ্যন্তরে বা switch এর মধ্য দিয়ে। ময়লা যত কম প্রবেশ করবে ততই ভালো কিবোর্ড ওভারল health এর জন্য, এর ফলে ঘন ঘন পরিষ্কার করার ঝামেলা থেকেও রেহাই পাওয়া যাবে।
Keys design, colors:
কম্প্যাক্ট সাইজের সাথে সিম্পল মিনিমালিস্টিক ডিজাইন। কিবোর্ডটির Color Theme কে অনেকটা Panda Theme বলা যেতে পারে, Black ও White কালারের Keycaps। Numeric ও Alphabet key এর সাথে স্পেসবার, এই গুলো সাদা রঙের Doubleshot ABS Key. সাইডের Tilde থেকে শুরু করে caps, shift, ctrl, windows ইত্যাদি কি গুলো আবার কালো রঙ এর। আবার F1 থেকে F12 পর্যন্ত চারটি করে সাদা,কালো মিক্স করে ভারিয়েশন তৈরী করা হয়েছে।ওদিকে নাম্বারপ্যাড সম্পুর্ণটাই white keys সম্বলিত।জুভেন্টাস বলি, ব্লাক এন্ড হোয়াইট বলি আর পান্ডা থিম বলি, এই কালার কম্বিনেশন আমাকে মুগ্ধ করেছে, অত্যন্ত প্রিমিয়াম একটি ফিল দেয় এটি।ডিজাইনের দিকে লক্ষ করলে মেকানিক্যাল কিবোর্ড সম্পর্কে খোজ খবর রাখেন বা Keychron সম্পর্কে জানেন তারা বুঝতে পারবেন যে বেশ মিল রয়েছে অন্যন্য মডেলগুলোর সাথে। বিশেষ করে ব্ল্যাক এন্ড হোয়াইট/পান্ডা থিমের বোর্ডে কমলা রঙ এর imposter এস্কেপ কি টি চোখে পড়ে সহজেই।(এটি যেন Keychron এর ট্রেডমার্ক বহন করে) কালো প্লাস্টিক বেজ এর উপরে সবগুলো বাটন সাদা হলেও অনেকে আরো হয়তো বেশি পছন্দ করতেন ও সেক্ষেত্রে খুবই old school retro, typewritter theme টি ফুটে উঠতো ভালোভাবে। তবে আমার কাছে এটিই ভালো লেগেছে ওভারল।
নিচে দুটি ছবি দেখতে পাচ্ছেন, ছবি দুটি Keychron এর ফেসবুক পেজ থেকে নেওয়া। এই ধরণের মিনিমাল,সিম্পল সাদাসিধা বিল্ড ,সাধাসিধা সাজানো গোছানো টেবিল রয়েছে এই টাইপের সেটাপ যারা করতে চান, পছন্দ করেন, তাদের ক্ষেত্রে খুবই ভালো মানাবে এই ডিজাইনটি।
Keycaps,fonts , switch, sound: আমার ওভারল এক্সপেরিয়েন্স:
Keycaps:
Doubleshot ABS Keycaps গুলো ডিসেন্ট ছিল।সাইজে কিবোর্ডটি ছোটখাট দেখতে হলেও Key গুলোর সাইজ স্বাভাবিকই ছিল মনে হয়েছে। আমার কিবোর্ডটির Keys গুলোর সাথে তুলনা করে দেখেছি যে পার্থক্য নেই বললেই চলে,Enter,Backspace,Shift এই বাটনগুলোর সাইজ সামান্য উনিশ বিশ মনে হলো। দুটি কিবোর্ডের দুটি Alt বাটন পাশাপাশি রেখেছিলাম, ছবিতেই দেখে নিন।
এখানে আমি বড় রকমের একটি পার্থক্য ফিল করতে পেরেছি যে একটি ৩ হাজার টাকার floating key design এর চিপ মেকানিক্যাল কিবোর্ড এর বিল্ড এর সাথে একটি দামী প্রিমিয়াম বোর্ড এর তফাৎ কি। আমার ব্যবহ্বত Marvo Scorpion KG935 Outemu Blue তে মনে হতো যে Key গুলো Loosely bound, যেন খুলে যাবে, খুলে বের হয়ে আসবে। rattling দেখতে পেতাম, নড়বড়ে একটি ভাব থাকতো যেটি কি না একদমই পাইনি Keychron C2 তে ।যথেষ্ট স্টেবল ও Sturdy ছিল কিক্যাপগুলো। কিছু ছবি নিচে দিয়ে দিলাম।
Keycaps গুলোর কোয়ালিটি যথেষ্ট ভালো ছিল।কোনো Key কে loosely bound মনে হয়নি, খুলে আসবে এরকম মনে হয়নি।যথেষ্ট স্টেবল লেগেছে, rattling ছিল না। সাদা কিক্যাপস গুলোর রঙ ছবিতে দেখতে ফ্যাকাশে লাগতে পারে image optimization এর কারণে, প্রকৃতপক্ষে Keycaps গুলো উজ্জ্বল সাদা। লং টার্মে তা কতটুকু সাদা থাকবে সেই প্রশ্ন থেকেই যায়। তবে shine through হওয়া সত্বেও secondary printed keys গুলোর মধ্যে দিয়ে ভালোভাবে RGB পাস হচ্ছিল না যেটি আমি নিচে উল্লেখ করেছি। বরং দূর থেকে দেখে মনে হতে পারে Keys গুলোতে কিছু প্রিন্ট করা নেই।
Fonts:
এখানে ফন্ট নিয়ে কথা বলার আছে। Keycaps এ প্রিন্টেড Alphabets/numbers/legend গুলোর ফন্টেও আমি লক্ষ করলাম Keychron সেই মিনিমাল/সিম্পল ভাবটা বজায় রাখার চেষ্টা করেছে। ফন্ট সাইজ ডিসেন্ট,খুব বেশি বড় নয়,সবগুলো অক্ষর ই lowercase এ লেখা। তবে Function Key গুলোতে লক্ষ করলাম যে সেখানে হাইলাইট করা হয়েছে Function Legends গুলোকেই। বরং নিচে অপেক্ষাকৃত ছোট করে F1,F2 লেখা ছিল। সেই লেখাগুলো কম আলোতে, দূর থেকে দেখতে অনেক অসুবিধা হয় ও বোঝা যায় না।। এবং RGB চালু থাকলেও নিচের অংশে লাইট সেভাবে পাস হয় না,সেজন্য RGB চালু থাকলেও নিচের ওই F1,F2 লেখাগুলো বোঝা যায়না সেভাবে। F5-F8 পর্যন্ত কালো কিক্যাপগুলোর ক্ষেত্রে এই সমস্যাটি আরো বেশি।
About the Gateron Brown Switches
আমার ভার্সনটি ছিল Gateron Brown switch version। এই সুইচ নিয়ে আমার মোস্টলি এক্সপেরিয়েন্স ছিল পজিটিভ। টাইপ করার সময় যথেষ্ট কমফোর্ট ফিল করেছি। খুব বেশি প্রেশারের দরকার হচ্ছিল না প্রেসিং এ।যথেষ্ট সফট মনে হয়েছে আমার কাছে। Trademark Tactile ফিলিং টা ছিল ভালোভাবেই। Tactile feedback টা ফিল করেছি বেশ।আমার কাছে মনে হয়েছে required activation force একেবারেই কম। হালকা প্রেসিং ই যথেষ্ট ছিল অপারেট করার জন্য।
আমার ইউজিং এ সাধারণ ট্যাপ,প্রেস বা একটানা Tapping এর সময় lag time,depress time কেমন ছিল তা নিচের ভিডিওগুলো থেকে বুঝতে পারবেন আশা করি। একটানা Tapping এর সময় Lag Time ছিল 60-80ms এর মধ্যে। বড় কি গুলোর জন্য তা 80-100ms এর মধ্যেই বেশি ঘোরাফেরা করেছে। দুটি প্রেস/ট্যাপের মাঝে ল্যাগ টাইম ছিল 150ms এর আশেপাশে।
Switch Specs:
এবার এই Gateron Brown Key সম্পর্কে কিছু অফিশিয়াল তথ্য জেনে নেওয়া যাক। 4mm এর আশেপাশে Travel distance এই সুইচগুলোর (2mm actuation, 4mm bottom)। Actuation force 45-55 এর আশেপাশে। স্ক্রিনশট দুটি নেওয়া যথাক্রমে Novelkey ও Keychon C2 এর অফিশিয়াল সাইট এর পেজ থেকে। একদম হুবহ না মিললেও এরকম রেঞ্জেই actuation force, travel এর পরিমাণ থাকবে।
সাউন্ডঃ
How does a mechanical keyboard sound! এটা অনেক গুরুত্বপুর্ণ একটি ফ্যাক্টর অনেক মেকানিক্যাল ইউজারদের জন্যই। এক্ষেত্রে বলতে হয় আমি সম্পুর্ণ স্যাটিসফায়েড। সাউন্ড কখনোই আমার কাছে লাউড মনে হয়নি,noisy,hursh বা high pitch এর মনে হয়নি। কিছু ক্ষেত্রে স্পেস বা এন্টার এর মত বড় Key গুলোর সাউন্ড একটু লাউড ছিল একটু হাই ইন্টেন্সিটির ছিল কিন্ত ওভারল মনে হয়েছে এই সাউন্ড বিরক্তির উদ্রেক ঘটাবে না একেবারেই। বিশেষ করে যদি কোনো ব্লু সুইচের কিবোর্ড এর সাথে তুলনা করা হয়, সেই তুলনায় একেবারেই লো নয়েজ। Blue switch এর ক্যাটক্যাটে লাউড সাউন্ড থেকে অপেক্ষাকৃত অনেক Quiet এই কিবোর্ড এর সাউন্ড। তবে আমার কেন জানি মনে হয়েছে বিভিন্ন Key তে বিভিন্ন রকমের sound পেয়েছি আমি এই কিবোর্ডটি থেকে। alphabets বা numerical এ বিভিন্ন রিজিয়নে সাউন্ড ভিন্ন রকমের পেয়েছি। তবে সবগুলোর লেভেলই ছিল অনেক ডিসেন্ট ও সহনীয় মাত্রার। মোটকথা আমার মতে যারা সাউন্ড নিয়ে কনসার্ন, বেশি লাউড, হার্ড/হার্শ সাউন্ডে বিরক্ত ফিল করেন তাদের ক্ষেত্রে সমস্যা হবে না।
যখন কেও ডেডিকেটেড সাউন্ড টেস্ট এর জন্য র্যান্ডম জোরে জোরে বাটন প্রেস করবেন বাটনগুলো তখন এক রকমের ফিল দিবে, যখন রেগুলার চ্যাটিং, টাইপিং, অফিস ওয়ার্ক বা প্রোগ্রামিং করবেন তখন একরকমের সাউন্ড পাওয়া যাবে। সুতরাং এটিও মাথায় রাখার বিষয়।
এখানে এই রিভিউ ইউনিট এর পাশাপশি আমার outemu blue swtich এর Marvo Scorpion KG935 এর সাউন্ড টেস্ট ও A4tech bloody b820r এর সাউন্ড টেস্ট ও এড করে দিচ্ছি যাতে একটা ধারণা পেতে পারেন যে কিরকম পার্থক্য হয় switch to switch এ।
আর সাউন্ড টেস্ট করতে গিয়ে আরেকটা বিষয় আমার মনে খটকা লেগেছে সেটি হচ্ছে রেকর্ডিং এর পর প্লেব্যাক করলে মনে হয়েছে যে অনেক বেশি লাউড সাউন্ড,হার্শ সাউন্ড। অথচ বাস্তবে যখন আমি টাইপ করছি তখন সেই পরিমাণ লাউড সাউন্ড কখনোই produce হয়নি। অর্থাৎ কোন ধরণের ডিভাইস দিয়ে ,কোন ধরণের সফটওয়্যার দিয়ে রেকর্ড করা হচ্ছে, কতদুর থেকে করা হচ্ছে রেকর্ড, কতটুকু accuracy সেই ডিভাইস বা সফটওয়্যারটির রয়েছে এই ব্যাপারগুলো প্রভাব ফেলে বলে মনে হলো সুতরাং ইউটিউব ভিডিও বা কোনো রিভিউতে অনেকসময়ই ইউজার এর অরিজিনাল এক্সপেরিয়েন্স বোঝা সম্ভব হয়ে উঠে না এই রেকর্ডিং গুলো থেকে।
My experience with the keycaps and switches
এই Doubleshot ABS Keycaps গুলো দিয়ে টাইপিং করে আমি বেশ মজাই পেয়েছি। Key to Key ডিসটেন্স ডিসেন্ট ছিল, এমন ছিল না যে দুটি Key এর মাঝে আঙুল চলে যায়।। আমার কাছে রিভিউ ইউনিটটি থাকা কালীন আমি বেশ কিছু আর্টিকেল লিখেছি এটি দিয়ে, রেগুলার কাজ,মেসেজিং তো ছিলই।। আমার ওভারল এক্সপেরিয়েন্স ছিল পজিটিভ। তবে একটি বড় সাইজের Outemu blue switch এর কিবোর্ড থেকে শিফট হওয়ার কারণে প্রথম থেকেই আমার বেশ বাটন পজিশন নিয়ে সমস্যা হচ্ছিল, typo হচ্ছিল ভালোই।। oএর স্থলে p বা w এর স্থলে e প্রেস হয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে বেশ অনেকবার। মাঝেমধ্যে উপরের বা কি গুলোতেও প্রেস করে ফেলছিলাম (যেমন w এর জায়গায় 3 প্রেস হয়ে যাওয়ার ব্যাপারটিও হয়েছে বেশ অনেকবার)। তবে আমার মনে হয় এটা শুধুমাত্র দীর্ঘদিন একটি ডিফারেন্ট সাইজের কিবোর্ড থেকে হঠাত এটিতে শিফট হওয়ার কারণেই মানিয়ে নিতে সমস্যা হয়েছে এবং এই ব্যাপারটি person to person আলাদা হতে পারে।প্রত্যেকেরই কয়েক দিন পর এই ধরণের সমস্যা কমে আসবে।বরং দিন যত গিয়েছে, এই কিবোর্ডটি নিয়ে আমার অভিজ্ঞতা ততই ইতিবাচক হয়েছে।
তবে প্রথম দিন থেকে বেশ কয়েকবার ভালোমত লক্ষ করে মনে হয়েছে যে বেশ কিছু key তে travel distance এক এক সময় এক এক রকমের ছিল। অর্থাৎ কিছু ক্ষেত্রে মনে হয়েছে যে ট্রাভেল ডিসটেন্স অনেকটাই বেশি ,অর্থাৎ আমাকে অনেকটা সময়ই প্রেস করা লাগছে বাটন এক্টিভেশন এর জন্য। তবে খুবই ডিপলি লক্ষ না করলে রেগুলার টাইপ/গেমিং এ এটি ধরতে পারার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।
আরো একটা বিষয় না বললেই না যে প্রথম দিনই আমি যখন individually key গুলো প্রেস করছিলাম ঘন ঘন বারবার, তখন ১০ বার এ ১/২ বার মনে হয়েছে যে প্রেস করেও কোনো কাজ হয়নি দুই একটা বাটন (ঘটনাটা randomly ঘটেছে)। এটি আমার illusion কি না, নাকি সত্যিই এই ইউনিট এর ইস্যু নাকি আমার প্রেসিং এর ফোর্স সময় সময়ে নিতান্তই কম ছিল বিধায় ওই কয়েকটি কেসে এক্টিভেট হয় নি তা নিয়ে আমি সন্দিহান। তবে ব্যাপারটা ঘটেছে ও আমি জানিয়ে রাখার প্রয়োজন মনে করেছি।একই ভাবে এই ব্যাপারটি রেগুলার ইউসেজে চোখে পড়ার কথা নয়।
গেমিং এ কেমন?
সত্য বলতে আমি খুব বেশি মজা পাইনি গেমিং করে এই কিবোর্ডটি দিয়ে। আমার এক্সপেরিয়েন্স ছিল মোটামুটি,ভালোই টাইপের। টাইপিং এর জন্য অনেক ভালো হলেও গেমিং এর জন্য এটিকে সর্বোচ্চ ডিসেন্ট বলা যেতে পারে, অনেক ভালো বা খুব ভালো বলার সুযোগ নেই।। টাইপিং এর অনেক এডভান্টেজ এর ব্যাপারগুলো আমার কাছে গেমিং এ কিছু কিছু ক্ষেত্রে drawbacks মনে হয়েছে।তবে game এর catagory থেকে catagory ও বিষয়টি vary করে ও অনেকের জন্য suitable ও হয়ে যেতে পারে।
বরং Tactile ফিডব্যাক চাইলে Blue Switch এর বেশ কিছু কিবোর্ড রয়েছে, বা গেমিং এর জন্য Red Switch এর বোর্ডগুলো আরো বেটার অপশন হতে পারে। (তবে Keychron এর C1,C2 সহ বেশ কিছু মডেলেরই রয়েছে ভিন্ন ভিন্ন সুইচ ভ্যারিয়েন্ট, সাথে Hot Swappable function এর জন্য সহজেই যখন ইচ্ছা সুইচ চেঞ্জ ও করা যাবে)।
RGB:
কিবোর্ডটিতে রয়েছে RGB।১৮ টি ইফেক্ট রয়েছে Keychron C2 এর RGB Lighting এ। ফুল ব্রাইটনেস এও রেগুলার লাইটিং এ আমার কাছে RGB এর লাইট এর ইন্টেনসিটি/কনট্রাস্ট/স্যাচুরেশন খুব বেশি মনে হয়নি।বরং একটি Dim ভাব লক্ষ করেছি। এগ্রেসিভ অনেক হাই ইন্টেন্সিটি বা অনেক বেশি কন্ট্রাস্টি লাইট ছিল না। অর্থাৎ অনেকগুলো Color প্রেজেন্ট থাকলেও সেই হাই ফাই বিয়ে বাড়ির ভাইব এর থেকে এই কিবোর্ড এর যে ট্রেডমার্ক অর্থাৎ মিনিমাল,সিম্পল ভাবটা, সেটাই আরজিবি থেকে পেয়েছি মনে হয়েছে। তবে লাইট অফ করে দেখলে তখন মোটামুটি ভালোই নরমাল মনে হয়েছে। Function Keys গুলো থেকে ব্রাইটনেস কন্ট্রোল করা যাবে। RGB এর ইফেক্ট চেঞ্জ এর জন্য রয়েছে ডেডিকেটেড একটি বাটন।তবে যেকোনো কালার প্রোফাইল/ ম্যাক্স ব্রাইটনেস/যেকোনো ইফেক্টেই Function Keys গুলোর Legends (f1-f12) খুবই কম ভিজিবল ছিল ।দূর থেকে দেখলে মনে হয় যেন F1-F12 প্রিন্টেড নেই। যারা হাইফাই ভাব পছন্দ করেন না তারা অবশ্য স্টাটিক হোয়াইট দিয়ে চালালে দেখতে অনেক সিম্পল লাগবে।৪টি ইন্ডিকেটর LED রয়েছে। এগুলোও Simple ও Dim।
Gallery:Sweep to change pictures (on Facebook Browser)
Hot swappable:
এই কিবোর্ড এর সবথেকে আকর্ষনীয় ফিচার বা USP গুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে যে এটি Hotswappable।অর্থাৎ কোনো ধরণের সোল্ডারিং এর ঝামেলা ছাড়াই Swiitch চেঞ্জ করতে পারবেন।Keychron এর মতে তাদের কিবোর্ডটি বাজারের প্রায় সবগুলো MX Style 3-Pin,5-Pin মেকানিক্যাল সুইচের সাথে কম্পাটিবল। অনেকেই আছেন যে তার কাজের জন্য সুইটেবল হবে না হয়তো সুইচগুলো কিন্ত তারপরেও তারা লুক,ডিজাইন পছন্দ হওয়ায় কিবোর্ডটি নিয়ে সুইচ চেঞ্জ করে নিতে পারবেন সহজেই। Compatibility ভালো হওয়ায় হাতে অপশন ও থাকবে প্রচুর।যেহেতু এক এক জনের Switch প্রিফারেন্স এক এক রকম, বা কিছুদিন পর নতুন কিছু ট্রাই করা, এক্সপেরিমেন্ট করার অভ্যাস অনেকেরই থাকে, অফিস ওয়ার্ক/প্রোগ্রামিং ,কনটেন্ট ক্রিয়েশন বা গেমিং, কাজ অনুযায়ী ভিন্ন ভিন্ন সুইচ ব্যবহার এর পরিকল্পনা বা দরকার পড়লেও হবে না সমস্যা।
A lot of customization options:
প্রথমত Hot swappable, এর জন্য তো এনথুসিয়াস্টরা সহজেই এটির switch নিয়ে নানান রকমের experiment, নাড়াচাড়া করার সুযোগ পাচ্ছেনই। এছাড়া কাস্টম কিক্যাপস এর মত common customization তো থাকছেই। এই কিবোর্ডটি Foam Mod করতেও পারেন চাইলে। নিচে কিছু রেডিট থ্রেড ও ইউটিউব ভিডিও আমি add করে দিচ্ছি Foam mod, ghetto lubing, disassembly,silicon dampener ইত্যাদির উপর। এতে করে কিরকম modification করা যেতে পারে, এতে কি কি improvement দেখা যেতে পারে তার ও আইডিয়া পাওয়া যাবে।
Keychron Official discussion page:reddit
C1 Foam mod on Bangladesh Mechanical Keyboard Community(Samiul Alam)
Programmable Keys, Cortana, Siri Key, Function keys, Software:
নেই কোনো Macro Programmable Keys। অনেকের জন্যই হতে পারে একটি dealbreaker। নেই কোনো কম্প্যানিয়ন সফটওয়্যার ,যেটিও অনেকের জন্য অনেক গুরুত্বপুর্ণ একটি বিষয়। Key Remapping এর জন্য ও নেই কোনো অফিশিয়াল সফটওয়্যার তবে Keychron সাজেস্ট করেছে Sharpkeys সফটওয়্যারটি।যদিও এটি দিয়ে কাস্টোমাইজেশন এর কোনো সুযোগ থাকছে না। একটি অফিশিয়াল সফটওয়্যার থাকলে তা দিয়ে ইচ্ছামত Keys,RGB কাস্টোমাইজ করে নেওয়া যেত। আমার মনে হয়েছে প্রোগ্রামেবল Keys,Companion Suite/Software থাকা উচিত ছিল।
তবে রয়েছে ডেডিকেটেড Cortana/Siri Key। F1-F12 পর্যন্ত ভলিউম আপ ডাউন,মিউট ফাস্ট ফরোয়ার্ড/ব্যাকওয়ার্ড,Next/previous,আরজিবি লাইট এর ব্রাইটনেস কন্ট্রোলার সহ বেশ কিছু হ্যান্ডি ফাংশন সেট করা রয়েছে।
কিবোর্ড এর সাইজ ছোট করতে কি না বা অন্য কোনো কারণে বাদ দেওয়া হয়েছে Scroll Lock,Pause Break,Menu এই ৩টি Key।
Complete Mac Compatibility, Android:
কিবোর্ডটি Mac OS ও Windows উভয় অপারেটিং সিস্টেমেই Fully Compatible। ম্যাক ইউজার যারা আছেন তাদের জন্য এটি ভালো একটি অপশন। রয়েছে one click OS Slider type switch।যেটি দিয়ে এক ক্লিকেই Window-Mac বা Mac-Windows সুইচ করা যাবে। কিবোর্ডটির Type-C Connectivity সহজেই এন্ড্রয়েড স্মার্টফোন বা স্মার্ট টিভিতে কানেক্ট করা যাবে। তবে খুব সম্ভবত Fully Android Compatible না কিবোর্ডটি। লিনাক্স এর ক্ষেত্রেও রয়েছে পার্শিয়াল Compatibility যতটুকু সার্চ দিয়ে জেনেছি।
Discussion about price:
আমাদের কে রিভিউ ইউনিটটি প্রোভাইড করেছে অফিশিয়াল ডিসট্রিবিউটর Vibe Gaming। তাদেরকে ধন্যবাদ এজন্য ও শুভকামনা। কিবোর্ডটির দাম ৭২৫০ টাকা,বর্তমানে তারা ৬৯০০ টাকায় বিক্রি করছে অফারে। দামটি অবশ্যই প্রকৃত প্রাইস থেকে অনেকটাই বেশি, অফিশিয়াল সাইটে ৫৪ ডলারে লিস্টেড রয়েছে এটি। তবে দাম বেশি হওয়ার কারণ এটি অফিশিয়ালি নিয়ে আসছে তারা এজন্য বেশ কিছু টাকা কাস্টম ট্যাক্স, শিপিং কস্ট, ওয়ারেন্টি ইত্যাদিতে অতিরিক্ত ব্যয় হওয়ায় কিবোর্ডটির দাম বেড়ে গিয়েছে। আমরা সকলেই কমবেশি আন অফিশিয়াল ফোন ও অফিশিয়াল ফোনের দাম এর পার্থক্যের কথা জানি,সাথে গ্রাফিক্স কার্ড সহ অন্যন্য পিসি কম্পোনেন্ট ও আমরা জানি শুরু থেকেই কনভার্টেড প্রাইস থেকে যথেষ্ট হাই প্রাইসেই আমাদের কিনতে হয়।
এর পরেও আমার মনে হয়েছে এর দাম আরো সামান্য কিছুটা কম হলে আরো কম্পিটিটিভ প্রাইসিং হতো, কিবোর্ডটি আরো unbeatable হতো ভ্যালু ফর মানির দিক দিয়ে।আশা করবো পরবর্তীতে অফারে হোক বা রেগুলার প্রাইসে হোক দামটা আরো কিছুটা কমিয়ে আনবে Vibe Gaming।
Keychron এর এভেইলেবল কিবোর্ডগুলোর দাম ও ফিচার জানতে Vibe Gaming পেজের এই পোস্টটি দেখুন।
Final verdict with pros and cons
অসাধারণ মিনিমাল,সিম্পল কিন্ত প্রিমিয়াম ডিজাইন ও লুক, যথেষ্ট ভালো বিল্ড কোয়ালিটি, ফুল সাইজ হওয়া সত্বেও বেশ কমপ্যাক্ট, Hot Swappable সহ আরো প্রচুর কাস্টোমাইজেশন এর সুযোগ, RGB, Full Windows-Mac Compatibility অসাধারণ টাইপিং এক্সপেরিয়েন্স, ডিসেন্ট সাউন্ড, ভালো কিক্যাপ,সুইচ,ডিসেন্ট key travel, low actuation force, ভালো রেস্পন্সিভনেস এই হচ্ছে ভালো দিকগুলো যা এই কিবোর্ড কেনার অন্যতম বড় কারণগুলোর মধ্যে একটা হতে পারে।
সাথে তুলনামুলক একটু বেশি দামে এসেও কোনো programmable keys না থাকা, কোনো ধরণের RGB ও অন্যন্য কাস্টোমাইজেশন এর জন্য অফিশিয়াল Software support না থাকা,wrist rest না থাকা এগুলো হলো এই কিবোর্ডটির কিছু drawback,কিছু ক্ষেত্রে big keys এর weird sound, ছোট সাইজ কম্প্যাক্টনেস ও অনেকের কাছেই drawback হতে পারে, এটা গেমারদের জন্য সেরকম সুই
ওভারলঃ One of the best Office-productivity Keyboard, recommended