আজকে আমাদের  স্টুডিওতে চলে এসেছে কুখ্যাত বিখ্যাত পালাদিন/পেলাদিন “ব্রান্ড” এর আর এক্স ৫৮০ গেমিং জিডিডিআর ফাইভ গ্রাফিক্স কার্ডটি। এই জিপিইউটি, এই ব্রান্ডটিকে নিয়ে আপনাদের অনেকের মনেই আছে নানান প্রশ্ন, নানান কৌতুহল, আজকে আমরা নেড়েচেড়ে দেখবো এই জিপিইউটি, চেষ্টা করবো আপনাদের প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার, এই জিপিউটিইর পারফর্মেন্স,স্টেবিলিটি ও টেম্পারেচার এর অবস্থা ও পরখ করে দেখবো,সেই সাথে কথা হবে জিপিইউ মার্কেটে লো বাজেট রেঞ্জের হালচাল ও পেলাদিন এর এই জিপিইউটি কি অবস্থানে আছে সেসব নিয়ে।।

ব্যাকগ্রাউন্ড

সময়টা গত বছরের শেষদিকে অথবা এই বছরের একদম শুরুতে হবে, আমাদের গ্রুপে একজন একটি জিপিইউ এর ছবি দিয়ে এটার সম্পর্কে জানতে চেয়েছিলেন, সৌভাগ্যবান ভদ্রলোক সম্ভবত দারাজের মিস্ট্রি বক্সে একটি সাদা রঙের RTX 3060 কিংবা RTX 3060 Ti জিপিইউ জিতে নিয়েছিলেন, ওই জিপিইউটি ছিল পেলাদিন বা পালাদিনের, মোটামুটি ওই পোস্টটি থেকে বেশ হৈচৈ শুরু হয় ও পেলাদিন এর নামটা চলে আসে, কমেন্ট সেকশনে সবাই মোটামুটি জিপিইউ টি রিয়েল নাকি ফেক ,নিউ নাকি রিফারবিশড এ নিয়ে একটা ডিবেট চালু করে দেয় ।। সেটা একটা লেজিট রিয়েল ৩০৬০ বা ৩০৬০ টিআই ছিল পরবর্তীতে প্রুভ হয়, অনেকেই ফার্স্ট টাইম পেলাদিন এর নাম বা অস্তিত্ব এর মাধ্যমেই জানে।।

About peladn

এরপর বেশ কিছুদিন বিভিন্ন পেজে পেলাদিন এর বিভিন্ন জিপিইউ বেশ লোভনীয় প্রাইসে বিক্রির পোস্ট দেখা যেতে থাকে ও জনমনে আরো নানা রকম গুঞ্জন, প্রশ্ন শুরু হয়।।

মোটামুটি এইই বছরের মাঝামাঝি ব্লিসস্টাইল পেলাদিনের অফিশিয়াল এক্সক্লুসিভ ইম্পোর্ট  ও ডিস্ট্রিবিউশন শিপ লাভ করে ও ৩ বছরের ওয়ারেন্টি সহ বেশ কিছু মডেলের জিপিইউ দেশে লঞ্চ করে।

পালাদিন মুলত একটি চাইনিজ জিপিইউ ম্যানুফ্যাকচারার যারা মুলত এনভিডিয়া এবং এএমডি এইই দুটি ব্রান্ডের গ্রাফিক্স কার্ড ম্যানুফ্যাকচার করে থাকে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে পেলাদিনের জিপিইউ গুলো কতটুকু সেইফ, তারা কি নিউ জিপিইউ সেল করে থাকে, ইউজড জিপিইউ সেল করে থাকে নাকি তাদের জিপিইউ গুলো রিফারবিশড?  আমাদের পার্টিকুলার ইউনিটটি কতটা সেফ, কতটা আপ টু দা মার্ক পারফর্ম করছে বা কত টা স্টেবল তা তো আমরা পারফর্মেন্স সেকশনে ডিটেইলসে দেখবোই, তার আগে পেলাদিন সম্পর্কিত কিছু বার্নিং কোয়েশ্চন্স এর এন্সার জেনে নেওয়া যাক;

সবথেকে বেশি যে প্রশ্নটা করা হয় যে পেলাদিন ইউজড জিপিইউ  বা রিফারবিশড জিপিইউ ম্যানুফ্যাকচার করে কি না,বিশেষ করে তাদের জিপিইউ গুলো মাইন্ড কি না বা মাইন্ড কার্ড থেকে জিপিইউ নিয়ে রিফার্ব করা কি না এই প্রশ্নটাও প্রচুর দেখা যায়,ম
এর উত্তর হচ্ছে, এই জিপিইউ গুলো মুলত তারা সোর্সিং করে বিভিন্ন ওইএম থেকে,  পেলাদিন এর এই জিপিইউ গুলোর দাম অপেক্ষাকৃত কম হওয়ার কারণ ও এটা।।

আর এক্স ৫৭০, ৫৮০ এর মত জিপিইউ,, যেগুলো অনেক পুরাতন, প্রোডাকশনে এক্টিভ থাকার কথা না,  গুলো তারা এখন কিভাবে পাচ্ছে, কই থেকে পাচ্ছে, এগুলো কি মাইন্ড করা, এবং সেগুলো থেকে নতুন কার্ড বানিয়ে ৩ বছরের ওয়ারেন্টিই বা কিভাবে দিচ্ছে,  এর উত্তর ও আগের প্রশ্নের উত্তরেই আছে, ওইএম দের স্টকে পরে  থাকা  আনইউজড জিপিইউ গুলোই মুলত কম দামে তারা সোর্সিং করে ও পরে জিপিইউ মেইক করে।।

https://peladn.com/pages/about-us

আর as a brand পেলাদিন এর ব্যাপারে আমরা যতটুকু তথ্য জানতে পেরেছি, চায়না বেজড এই ম্যানুফ্যাকচারাররা RTX 30,40 ,RX 6000 সিরিজের গ্রাফিক্স কার্ড মেইক করে থাকে, তাদের যে সব গ্রাফিক্স কার্ডই ওইএম থেকে নেওয়া জিপিইউ দিয়ে করা এরকম ও নয়, বরং রেজিস্টার্ড ম্যানুফ্যাকচারার হিসেবে তারা সরাসরি এএমডির থেকেও চিপ নিয়ে থাকে, আরএক্স ৬০০০ সিরিজ, আরটিএক্স ৩০,৪০ সিরিজের বেশ অনেক গুলো গ্রাফিক্স কার্ড তাদের স্টকে রয়েছে।

আরো একটি বিষয়, অফিশিয়াল ইম্পোর্টার বর্তমানে আরটিএক্স ২০,৩০ এর জিপিইউ গুলো নিয়ে আসছে বলেই এখন বাজারে এগুলো পাওয়া যাচ্ছে, এর মানে এই নয় যে রিফার্বিশ করে নতুন করে এগুলো বানানো, বরং দেশের বাজারে আসছে দেরিতে।

জিপিইউ এর পাশাপাশি মিনি পিসি , এক্সটার্নাল জিপিইউ ডক ইত্যাদি ম্যানুফ্যাকচার করে থাকে তারা।

 Peladn RX 580 design, Specs,Variants, comparison against 570 

Peladn আরএক্স ৫৮০ এর দুটি মডেল রয়েছে, একটি ২০৪৮ এসপি গেমিং, ,আরেকটি  গেমিং। যদিও দুটি মডেল এর স্পেকস গত কোনো পার্থক্য নেই, ক্লক স্পিড দুটিরই সমান, শুধুমাত্র আউটলুক ও ডিজাইনেই পার্থক্য রয়েছে , ২০৪৮ এ কোনো ব্যাকপ্লেট নেই, দুটি ডিস্প্লেপোর্ট ও একটি HDMI রয়েছে, অন্যদিকে গেমিং এ ব্যাকপ্লেট রয়েছে, ৩টি ডিস্প্লেপোর্ট ও একটি HDMI দেওয়া আছে।।

২০৪৮ কিছুটা বক্সি ডিজাইন, অন্যদিকে গেমিং মডেল এর  এর শেইপটা অনেক  রাউন্ড,বেন্ড,ব্লাক+ ইয়োলো কালার থিম ফিচার করছে এটি।। দুটিই ডুয়াল ফ্যানের কার্ড, ফ্যানের ঠিক মাঝে পেলাদিন এর লোগো রয়েছে সাদা কালারে।

Specs: 

Rx 580 নতুন কোনো জিপিইউ নয়, পোলারিস আর্কিটেকচারের ২০১৭ সালে এএমডির  রিলিজ করা অন্যতম ভ্যালু ফর মানি এন্ড সাক্সেসফুল গ্রাফিক্স কার্ড গুলোর মধ্যে একটি। ১৪ ন্যানোমিটার প্রসেসের Polaris 20 XTX জিপিইউ ফিচার করতো আর এক্স ৫৮০।।

তবে, আমাদের টেস্ট করা পেলাদিন এর ৫৮০ কিন্ত ভ্যানিলা ৫৮০ নয়, বরং ভ্যানিলা ৫৮০ লঞ্চের আরো দেড় বছর পর আরো একটি আরএক্স ৫৮০ লঞ্চ করে এএমডি, যেটিতে মুলত আরএক্স ৫৭০ এর Polaris 20 XL ডাই ব্যবহার করা হয়েছিল ও এর মধ্যে অরিজিনাল ৫৮০ এর 2304 শেডিং ইউনিট বা স্ট্রিমিং প্রসেসরের বদলে ২০৪৮টি স্ট্রিমিং প্রসেসর ছিল, এই কুডা কোর বা স্ট্রিমিং প্রসেসরের নামের আদলেই নতুন ভ্যারিয়েন্ট এর নাম দেওয়া হয় ৫৮০ টু জিরো ফোর জিরো এসপি। এই নতুন ভ্যারিয়েন্ট এর এই ৫৮০ গুলো মুলত ৫৭০ লেভেলেরই পারফর্মেন্স ডেলিভার করে, ৫৭০ এর স্লাইটলি ওভারক্লকড ভার্সন বলা যেতে পারে এগুলোকে। শুধু পেলাদিন নয়, শ্যাফায়ার বা এমএসআই এর ও ২০৪৮ ৫৮০ কার্ডস রয়েছে…

এক কথায় ৫৮০ ২০৪৮ এসপি কে ভ্যানিলা ৫৭০ ও ৫৮০ এর মাঝামাঝি অবস্থানে কল্পনা করা যায় যার বুস্ট ক্লক স্পিড ৫৭০ থেকে বেশি কিন্ত ৫৮০ থেকে কম।

https://www.techpowerup.com/gpu-specs/radeon-rx-570.c2939

https://www.techpowerup.com/gpu-specs/radeon-rx-580-2048sp.c3321

https://www.techpowerup.com/gpu-specs/radeon-rx-580.c2938

2 models of peladn

https://peladn.com/products/rx-580-gaming-graphics-card

https://peladn.com/products/rx-580-graphics-card 

Stability and performance test

এবার পারফর্মেন্স নিয়ে কথা বলার পালা, আর এক্স ৫৮০ কে টেস্ট করার জন্য ব্যবহার করা হয়েছে Core i9 9900KS , ৩২ জিবি ৩২০০ মেগাহার্জ DDR4 ram, 650W পিএসইউ ,সিস্টেম ড্রাইভ হিসেবে কিংস্টন এনভি২ ও গেম ড্রাইভ হিসেবে স্যামসাং ৮৬০ ইভো প্লাস।

মোট ১২টি গেম ১০৮০পি রেজুলুশনে ম্যাক্সড সেটিংসে টেস্ট করা হয়েছে ফার ক্রাই সিক্স, স্পাইডারম্যান ও এফওয়ান ২০২২ টেস্ট করা হয়েছে এফএসআর অন করে।।

প্রথমেই জিটিএ ফাইভ, বেশ পুরাতন গেম হওয়ায় এই গেমটি ১০৮০পিতেও ৫৮০ এর জন্য একদমই ইজি টু হ্যান্ডেল টাইপ একটা টাইটেল।

১০৮০পিতে গেমপ্লে বেঞ্চমার্কে ম্যাক্সড সেটিংসে এভারেজে ১১৫-১২৫ এফপিএস মত পাওয়া যাচ্ছিল, ফ্রেমড্রপ, ল্যাগ বা সাডেন স্টাটার পাওয়া যায়নি, ১% লো ছিল ১০০ এফপিএস, ম্যাক্স এফপিএস পাওয়া গিয়েছে ১৪৪।

স্পাইডারম্যান রিমাস্টার, রিসেন্ট টাইমের গেম হিসেবে বেশ হেইভি এটা ৫৮০ এর জন্য, ১০৮০পিতে তাই অন্তত ম্যাক্সড আউট সেটিংসে এফএসআর ছাড়া এটাতে প্লেয়েবল এক্সপেরিয়েন্স পাওয়াটা বেশ টাফ।।  আমাদের টেস্টিং এ গড়ে ৫৫-৬০ এফপিএস পাওয়া গিয়েছে এফএসআর কোয়ালিটি সেটিংসে, সর্বোচ্চ এফপিএস পাওয়া গিয়েছে ৮০ ও ১% লো ছিল ৩৪ । এফএসআর সহ ও টুকটাক ফ্রেম ড্রপ, ল্যাগ ফেস করতেই হবে এখানে… তবে তা খুব বেশি নয়।।।

রেড ডেড রেডেম্পশন ২, এটাও অত্যন্ত রিচ,ডিমান্ডিং একটা গেম, ১০৮০পি ম্যাক্সড আউট সেটিংসে তাই অনেকটাই স্ট্রাগল করেছে ৫৮০, এভারেজে ৩০ এফপিএস পাওয়া গিয়েছে, ম্যাক্সিমাম ৩৬, তবে ১% লো ছিল ২৪, অর্থাৎ এভারেজ থেকে ফ্রেমরেট ফ্লাকচুয়েশন খুবই কম ছিল, ৩০ এফপিএস হলেও তা মোটামুটি কন্সট্যান্ট ছিল।।

এই গেমের ক্ষেত্রে বেটার পারফর্মেন্স এর জন্য সেটিংস গুলো একটু এদিক সেদিক করতেই হবে।।

এবার ইতিহাসের অন্যতম আনঅপ্টিমাইজড বাগি ও ডিমান্ডিং গেম ,সাইবার পাংক…  এটাও ম্যাক্সড সেটিংসে ৫৮০ এর জন্য এক প্রকার টর্চারই ছিল, এভারেজে ২৮ এফপিএস, ম্যাক্সিমাম মাত্র ৩২ ও ১% লো মাত্র ২২ পাওয়া গিয়েছে। এর ক্ষেত্রেও একই কথা বলতে হয়, সেটিংসে প্রচুর এলোমেলো করে পারফর্মেন্স ও কোয়ালিটির মধ্যে একটা সুইট স্পট বের করে নিতে হবে।।

ফরজা হোরাইজন , লেটেস্ট AAA টাইটেল হিসেবে ফরজা তে ৫৮০ এর পারফর্মেন্স ছিল বেশ ইম্প্রেসিভ, এভারেজে ৫৫ এফপিএস , ১% লো পাওয়া গিয়েছে ৩৮, অর্থাৎ সামান্য মাইনর ফ্রেমড্রপ ছিল, ম্যাক্সিমাম ফ্রেমরেট ছিল ৬৫।

ফরমুলা ওয়ান ২০২২, এফএসআর কোয়ালিটি মোডে এভারেজ ৭০+ এফপিএস পেয়েছি, ফ্রেমরেট ছিল যথেষ্ট স্টেবল, ১% লো ও তাই ছিল ৫৫, ম্যাক্সিমাম এফপিএস ছিল ৭৮।

ফার ক্রাই সিক্স আমরা টেস্ট করেছি ম্যাক্স সেটিংস ও কোয়ালিটি এফএসআর দিয়ে, তাতে এভারেযে ৭৫ থেকে ৮০ এর মধ্যে ঘোরাফেরা করেছে ফ্রেমরেট, গেমপ্লে ছিল সুপার স্মুদ, ১% লো ছিল ৫৬ ও ম্যাক্স ফ্রেমরেট পেয়েছি ৯৫। এই গেমটি এফএস আর দিয়ে ১৪৪০পি রেজুলুশনেও ভালোমত খেলা সম্ভব।।

রেসিডেন্ট এভিল ৪ এ আমাদের এক্সপেরিয়েন্স ছিল মোটামুটি, আগের দুটি ডিমান্ডিং টাইটেলের তুলনায় এর অপ্টিমাইজেশন বেশ ভালো হওয়ায় এভারেজে ৪৫-৫০ এর মধ্যে ছিল ফ্রেমরেট, ম্যাক্সিমাম ছিল ৫৩, ও ১% লো পেয়েছি ৩৭।

এসাসিন্স ক্রিড ব্লাক ফ্লাগঃ পপুলার ফ্রাঞ্চাইজি এসাসিন্স ক্রিডের এই টাইটেলটিতে এভারেজে ঠিক ঠিক ৬০ এফপিএস পাওয়া গিয়েছে, ১% লো যদিও ৪০ এর নিচে ছিল, অর্থাৎ সামান্য মাইনর ফ্রেমড্রপ পাওয়া যাবে ডিমান্ডিং জায়গাগুলোতে , ম্যাক্সিমাম ফ্রেমরেট ও ছিল ৬২, এভারেজের একদম কাছাকাছি

উইচার থ্রি, বেশ পুরাতন হলেও গ্রাফিক্যালি অত্যন্ত ইন্টেন্সিভ একটি গেম,কিছুটা হতাশ করেছে আর এক্স ৫৮০, আমাদের টেস্টিং এ এভারেজে ৪০ এর নিচে ছিল এর স্কোর, ৩৬ এফপিএস মত পেয়েছি, ম্যাক্সিমাম ফ্রেমরেট ছিল ৫০, ১% লো পেয়েছি ২১।

ভ্যালোরেন্টে ম্যাক্সড আউট সেটিংসে এভারেজে ২৭৭ ও ম্যাক্সিমাম এফপিএস প্রায় ৩৫০ মত পেয়েছি।।কম্পিটিটিভ গেমার রা সেটিংস কমিয়ে খেললে ৩৫০,৪০০ ও পেতে পারেন কনফিগ ও ম্যাপ  ভেদে।

সিএসগো তেও ম্যাক্স সেটিংসে  এভারেজে ২৮৫ ও সর্বোচ্চ এফপিএস ৩৫০ মত পাচ্ছিলাম।।

Performance discussion and suggestions, remarks:

যেটা দেখা যাচ্ছে, গেমের অপ্টিমাইজেশন যদি  অতিরিক্ত বাজে না হয় , তাহলে ২০২৩ সালে এসেও আর এক্স ৫৮০ বেশ ভালো গেমিং এক্সপেরিয়েন্স দিতে সক্ষম। বিশেষ করে ইস্পোর্টস গেম যেমন ভ্যালোরেন্ট, এপেক্স লেজেন্ডস কিংবা কাউন্টার স্ট্রাইক এর মত গেম যারা খেলেন, তারা হাই সেটিংসে হাই রিফ্রেশ রেট মনিটরের ফুল মজা নিতে পারবেন ৫৮০ থেকে…

তবে যেসব গেম অনেক বেশি গ্রাফিক্যালি রিচ, তার থেকেও বড় কথা অপ্তিমাইজেশন বাজে,সেসব ক্ষেত্রে স্বাভাবিকভাবেই বেশ স্ট্রাগল করবে ৫৮০। তবে আমরা এটাও দেখেছি যে FSR দিয়ে ভালো অপ্টিমাইজেশন এর গেম গুলো যেমন Far Cry 6,  এই ধরনের গেমে ২কে রেজুলেশনেও ভালো গেমিং এক্সপেরিয়েন্স পাওয়া সম্ভব এই এভারগ্রিন জিপিইউ টি থেকে।।

আরো একটি বিষয়, , সব গেম যে একদম আল্ট্রা ম্যাক্সড আউট সেটিংসেই দেখতে সুন্দর লাগে, আল্ট্রা তেই খেলতে হবে ব্যাপারটা মোটেও তা নয়, বরং বেশিরভাগ ক্ষেত্রে আল্ট্রা থেকে ভেরি হাই বা হাই এর সাথে ভেরি হাই এর গ্রাফিকাল ডিফারেন্স রিয়েল লাইফে নোটিস করা খুবই টাফ, আমরা আমাদের টেস্টে এই জিপিইউটির ম্যাক্সিমাম এবিলিটি ,একে ম্যাক্স স্ট্রেস দেওয়ার জন্যই ম্যাক্স সেটিংসে টেস্ট করেছি ।

যারা গেম খেলবেন এই জিপিইউ দিয়ে তাছাড়া এমনি রেগুলার গেমার যারা আছেন তাদের জন্য ও বলা যে , যেসব গেম অতিরিক্ত ডিমান্ডিং বা আন অপ্টিমাইজড, সেসব ক্ষেত্রে ম্যাক্সড সেটিংস এর থেকে সেটিংস গুলো কিছুটা টুইক করে নিতে বলেন, বিশেষ করে পপুলার টাইটেলগুলোর মধ্যে কমবেশি সবগুলোরই অপ্টিমাইজেশন গাইড পাওয়া যায় যেখানে কোয়ালিটি খুব বেশি কম্পেন্সেট না করে ম্যাক্সিমাম পারফর্মেন্স পাওয়ার গাইডলাইন দেওয়া থাকে, অর্থাৎ কোন সেটিংস গুলোতে ভিজুয়াল ও ভালো থাকে প্লাস এফপিএস ও বেশি পাওয়া যায় সেগুলো এসব ভিডিওতে পাওয়া যায়। এই গাইড গুলো ফলো করতে পারেন।

আমাদের এখানে টেস্ট করা অনেক গেমেই আল্ট্রার পরিবর্তে হাই এবং ভেরি হাই মিক্স করে খেললে ৬০এফপিএস এচিভ করা সম্ভব।

Temperature এন্ড পাওয়ার 

আমাদের টেস্টিং সেশনে ৫৮০ এর টেম্পারেচার ছিল আনএক্সপেক্টেডলি কম, ম্যাক্সিমাম টেম্পারেচার পেয়েছি ৬৬ ডিগ্রী সেলসিয়াস। অন্যদিকে পাওয়ার ড্র ছিল এক্সপেক্টেশনের তুলনায় অনেকটাই বেশি, এভারেজে ১৯০ ওয়াটের আশেপাশে কনজিইউম করছিল এটা।

আমাদের টেস্টিং এর সময় ক্লক স্পিড এভারেজে 1.23 থেকে 1.28 Ghz এর মধ্যে ঘোরাফেরা করছিল।

Competition

১০ থেকে ১৫  হাজার টাকায় দেশের বাজারে এনভিডিয়ার জিটি ১০৩০ ২জিবি , জিটিএক্স  এএমডির আর এক্স ৫৫০ ৪জিবি ও ইন্টেলের আর্ক এ৩৮০ ৬ জিবি, এই ৩টি গ্রাফিক্স কার্ড মোটামুটি এভেইলেবল রয়েছে। এর মধ্যে আর্ক ৬ জিবি দিয়ে মোটামুটি গেম খেলা যায়, ৫৫০ ৪ জিবি দিয়েও লো সেটিংসে কোনো রকম গেম খেলা গেলেও জিটি ১০৩০ দিয়ে গেম আদৌ খেলা একেবারেই সম্ভব না।। সেক্ষেত্রে আরএক্স ৫৮০ ৮ জিবি ভির‍্যাম অফার করছে, এর সাথে এর পারফর্মেন্স ও এই জিপিইউ গুলোর তুলনায় অনেক গুন বেটার। ই স্পোর্টস গেম গুলো হাই তে খুবই ভালোভাবে খেলা যাবে, aaa গেম গুলোও হাই সেটিংসে প্লেয়েবল্ল এফপিএসে  খেলা সম্ভব, কিছু ক্ষেত্রে FSR চালু করে 1440p গেমিং ও করতে পারবেন…

সেই তুলনায়  রিটেইল মার্কেটের পাশাপাশি সেকেন্ড হ্যান্ড মার্কেটেও যেসব অপশন রয়েছে সেগুলোতে পারফর্মেন্স ও যেমন ইস্যু, ভির‍্যাম একটা ফ্যাক্ট, তার থেকে বড় কথা ওয়ারেন্টি ও জিপিইউ কন্ডিশন এর কথা চিন্তা করলে খুব একটা ভালো অপশনস অবশিষ্ট থাকে না। মাইনড জিপিইউ কিংবা ৫/৬ বছর এর ইউজড জিপিইউ গুলো এখন বাজার দখল করে বসে আছে যার বাচা মরার কোনো গ্যারান্টি ওয়ারেন্টি নেই, এবং এসব জিপিইইউ গুলো একাধিক বার রিপেয়ার্ড, খুলাখুলি করা হয়েছে এরকম কথাও শোনা যায়, এই বিষয়টি অনেক ক্ষেত্রে সত্যিও বটে।

Lower budget GPU discussion

সত্যি কথা বলতে লো বাজেট সেগমেন্টে এনভিডিয়া হোক বা এএমডি হোক বা ইন্টেল, সলিড কোনো লেটেস্ট জেন, নিউ জিপিইউ কেওই অফার করতে পারেনি, অন্য কথায় ইচ্ছা করেই লো বাজেট সেগমেন্ট কে ডেড বা এমপ্টি বানিয়ে রেখেছে ব্রান্ড গুলি।।

জিটিএক্স ১৬৬০, ১০৬০,  আর এক্স ৫৭০ কিংবা ৫৮০ এর মত গ্রাফিক্স কার্ড গুলোর থেকে কম প্রাইসে ২০/৩০/৪০% বেটার পারফর্মেন্স দেবে এরকম জিপিইইউ বের করার চেষ্টা, ইচ্ছা ব্রান্ডগুলো করেছে বলে মনে হয়নি, অথবা অন্যভাবে বললে এই ধরনের কাজ করার সাহস ব্রান্ড গুলো করছে না কারণ ১৬৬০,১০৬০ ,৫৭০ এর মত কার্ড গুলো কি লেভেলের ভ্যালু কিং ছিল, ভ্যালু ফর মানি ছিল, ফিউচার প্রুফ ছিল তার আন্দাজ পাওয়া যায় ইউজার রিভিউ, সেকেন্ড হ্যান্ড মার্কেটে চাহিদা দেখে, এখনো কার্ডগুলোর সলিড পারফর্মেন্স দেখে।

বরং ১৬৩০, ৬৫০০এক্সটি, ৬৪০০ এর মত যেসব সো কল্ড নিউ বাজেট জিপিইউ তারা লঞ্চ করেছে, সেগুলোকে গারবেজ বললেও কম বলা হবে।।

হয়তো তাদের ভয় যে ১০০-১৫০ ডলারেই যদি ভালো পারফর্মেন্স ওয়ালা জিপিইউ দিয়ে দি, তাহলে পকেট থেকে তো কেওই ৩০০-৪০০-৫০০ ডলার খসাবে না, ট্রাশ জিপিইউ গুলোর সেল কমে যাবে।

Conclusion

বাজেট যদি হয় ১৩,১৪ বা ১৫ হাজার টাকা, রিটেইল মার্কেটে এখন পেলাদিন ৫৮০ ৮ জিবির থেকে ভালো অপশন আর একটাও নেই,। ৫০-৬০ হাজার টাকার মধ্যে , টাইট বাজেটে জিপিইউ সহ বিল্ড যদি করতেই চান গেমিং এর জন্য, তাহলে পেলাদিন ৫৮০ অনেকটা অল্প দামে ভল্ভো ব্যাটারির মত ।। রিটেইল মার্কেটের টেরিবল কিছু জিপিইউ আর শেডি এন্ড রিস্কি সেকেন্ড হ্যান্ড মার্কেটেও ৫৭০,৫৮০ বা ১০৬০ এর মত জিপিইউ এর বিপরীতে ফুল ৩ বছরের ওয়ারেন্টি সহ ব্রান্ড নিউ জিপিইউ সব দিক দিয়েই বেটার অপশন…

Share This Article

Search