২০১৭ vs ২০২১ঃ জিপিইউ shortage এর একাল সেকাল

বর্তমানে বিশ্বজুড়ে চলছে বিভিন্ন কারণবশত গ্রাফিক্স কার্ড এর আকাল। কোথাও গ্রাফিক্স কার্ড পাওয়া যাচ্ছে না,যেগুলো রয়েছে সেগুলো বিক্রি হচ্ছে চড়া দামে, দেশ বিদেশে অনলাইন অফলাইন মার্কেটে সেকেন্ড হ্যান্ড পুরাতন কার্ডগুলো ও বিক্রি হচ্ছে অতিরিক্ত দামে। পুরাতন  Tech enthusiast, PC Builder রা জানেন বা হয়তো মনে আছে যে ২০১৭-১৮ জুড়েও এরকম একই ধরণের crisis ছিল জিপিইউ মার্কেটে। আজ বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত, পরিসংখ্যান দিয়ে ২০১৭ ও ২০২১ এর দুটি পরিস্থিতির তুলনা করার চেষ্টা করবো ও বোঝার চেষ্টা করবো যে কোন সময়টিতে বেশি খারাপ ছিল GPU Industry এর অবস্থা।

 

Reasons behind this situation: 

বেশ কিছু কারণ রয়েছে আজকের এই অবস্থার পিছনে। সবগুলো একত্রে কাজ করে আজকের এই ভয়াবহ সমস্যা সৃষ্টি করেছে। শুধুই যে গ্রাফিক্স কার্ড এর সংকট তা কিন্ত না, এবারের পরিস্থিতি খানিকটা ব্যতিক্রম কারণ এবার বিশ্বজুড়ে semiconductor devices এর কাচামালেরই সংকট দেখা দিয়েছে।

  • Demand vs resource: করোনাভাইরাস এর কারণে বিশ্বজুড়ে লকডাউন ও quarantine ,প্রতিষ্ঠান বন্ধ, অফিস আদালত সব physically attendance বন্ধ হওয়ায় এই সমস্ত কাজগুলো সব ঘরে বসে ভার্চুয়ালি করতে হয়েছে গত এক বছর সবাইকে। অফিস,কোর্ট,school ,college বা varsity এর ক্লাস, প্রেজেন্টেশন, পরীক্ষা, বেচাকেনা, যোগাযোগ,ব্যাংকিং ব্যবস্থা, data center, business, insurence সহ সবকিছুই চলেছে অনলাইনে। work from home, stay home ইত্যাদি স্লোগানগুলোর সাথে আমরা সবাই ই পরিচিত হয়েছি।। এজন্যই প্রয়োজন হয়েছে প্রচুর পরিমাণ ডিভাইস এর । মোবাইল,ট্যাব, ল্যাপটপ,  pre built Brand পিসি (এর সাথে কাস্টম পিসি বিল্ডিং এর হিউজ মার্কেট ও consumers তো আছেই) সবগুলোরই বিক্রি, চাহিদা বেড়েছে পাল্লা দিয়ে। আর এজন্যই প্রচুর পরিমাণ GPU এর ও দরকার হয়েছে।  প্রতিটি ডিভাইসেই প্রয়োজন হয় GPU এর, আর GPU যেমনই হোক, যে প্লাটফর্ম বা ফর্ম ফ্যাক্টর এর ই হোক না কেন, এর জন্য কিছু বেসিক raw matarials বা কাচামাল রয়েছে যা সবক্ষেত্রেই কমন।  মুলত এই কাচামাল এর চাহিদা এতই বেশি হয়েছে এবার যে বিশ্বের বড় বড় semiconductor materials তৈরীর প্রতিষ্ঠান যেমন TSMC সহ অন্যন্য প্রতিষ্ঠানগুলো তা পুরণ করতে ব্যর্থ হয়েছে। (silicon যেটি কি না সবথেকে বেশি ব্যবহ্বত, এটা ছাড়াও অন্যন্য যেসব উপকরণ রয়েছে কমবেশি সেগুলো ও উৎপাদন এর থেকে চাহিদা বেশি হয়ে গিয়েছে)। যার ফলস্বরুপ বাজারে GPU সহ অন্যন্য অনেক কম্পোনেন্ট এরই স্টক নেই। ফলে দাম ও বেশি।
  • বেশি ডিভাইসের প্রয়োজন এর অর্থ হলো বেশি DRAM Module, Display,Storage,Chips এর ও প্রয়োজন। কয়েকবছর আগেও  আগে র‍্যাম, ডিসপ্লে মুলত ল্যাপটপ ও ডেস্কটপ এর মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল (বোঝাতে চাচ্ছি মুল মার্কেট এর পরিধি)। বর্তমানে সেই পরিস্থিতি একেবারেই বদলে গিয়েছে, পিসি বা ল্যাপটপ ইন্ডাস্ট্রির সমান বা অনেকক্ষেত্রে বেশি গুরুত্ব ও আর্থিক লেনদেন বা মার্কেটের পরিধি লাভ করছে স্মার্টফোন/ট্যাব/নোটবুক ইত্যাদি mobile device এর ইন্ডাস্ট্রি। বিপুল পরিমাণ DRAM Module, GPU, Chips,display,Storage  সেজন্য নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলোকে সাপ্লাই দেওয়া লাগছে এই দিকটাতেও। যেই চাহিদাতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে ২০২০ সালের করোনা ভাইরাস এর প্রকোপ ও এর ফলে মানুষের ঘরে কাজ করার মাধ্যমে ডিভাইসের আলাদা প্রয়োজনীয়তা বা অপরিহার্যতা। (আমরা এর ফলে ইতিমধ্যেই দেখেছি র‍্যাম এর দাম বৃদ্ধি পেতে ইঙ্গিত পেয়েছি দাম বাড়তে পারে Monitor এর ও, কারণ সবক্ষেত্রেই এক, অতিরিক্ত চাহিদা ও wider industry , too many users ) 
  • সাথে গত বছর লঞ্চ হয়েছে Sony ও Microsoft এর দুটি next-gen Console। Raw Materials এর চাহিদাতে নাম লিখিয়েছে এগুলো সহ আরো বেশ কিছু কনসোল যেমন Aya Neo, Switch, Wii, KFConsole ইত্যাদি।
  • উপরের পরিস্থিতিকে আমরা এবার GPU মার্কেট এর সাথে রিলেট করার চেষ্টা ও করতে পারি। আগে AMD বা ইন্টেলের বা nvidia এর কাচামাল এর  প্রয়োজনীয়তা যত সহজে যত দ্রুত ,একচেটিয়াভাবে ও যত effective ভাবে মেটাতে পারতো TSMC বা এ ধরণের কোম্পানি গুলো, এখন তা এমনিতেই সম্ভব হয়ে উঠছে না কারণ তাদের কাস্টোমার এখন শুধুই পিসি, ল্যাপটপ এর GPU,CPU নির্মাতারাই নয়, বরং সাথে যুক্ত হয়েছে স্মার্টফোন,ট্যাব,কনসোল এর বিশাল কয়েকটি ইন্ডাস্ট্রি। যদিও এই ইন্ডাস্ট্রিগুলোর চাহিদা TSMC,Intel একা মেটায় না, স্মার্টফোন ট্যাব/কনসোল এর জন্য Qualcomm, Broadcom ,Micron, Texas Instrument Limited ইত্যাদি আরো বেশ কিছু কোম্পানি রয়েছে। কিন্ত এই বিপুল পরিমাণ competitors, buyers এর কারণে প্রত্যেক ব্রান্ডেরই।

  • জিপিইউ এর সংকট এর কারণ হিসেবে উপরের বিষয়গুলো কাজ করেছে,তাতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে বা পরিস্থিতিকে আরো জটিল করে তুলেছে মাইনার রা। GPU ইন্ডাস্ট্রিতে এই অবস্থার জন্য একটা বড় দায় তাদের। কিছু crytocurrency এর মুল্য বেশ উপরের দিকে চলে যাওয়ায় ও বর্তমানে খরচ এর বিপরীতে লাভের পরিমাণটা বেশি থাকায় বিশ্ব জুড়ে ছোট বড় মাইনিং ফার্ম এর পাশাপাশি অনেকেই ব্যক্তিগতভাবে এই কাজ করেছেন। এজন্য ফার্মগুলো বা মাইনাররা প্রচুর পরিমাণে GPU কিনেছে, ইন্টারনেটে এরকম ছবি প্রচুর রয়েছে যে মাইনিং ফার্মে শত শত জিপিইউ ব্যবহ্বত হচ্ছে। এজন্যই GPU এর ঘাটতি দেখা দিয়েছে।
  • শুধু যে জিপিইউ দরকার হয় তা কিন্ত নয়, অসংখ্য পিসি ও জড়িত থাকে এই কাজে, যা আরেকটু বেশি করে অবদান রাখছে এই কম্পোনেন্ট সংকটে।

এই “ইন্ডাস্ট্রির/জগতের” পরিস্থিতি সম্পর্কে নিচের তথ্যগুলো ধারণা পেতে সহায়তা করবেঃ

দেশের বাজার তখনঃ 

দেশের বাজারে জিপিইউ এর মুল্যের tendency সম্পর্কে আমরা সবাই ভালোমত অবগত আছি। MSRP অর্থাৎ Globally যে দামে লঞ্চ হয় GPU গুলো। বিভিন্ন যৌক্তিক অযৌক্তিক কারণ, সীমাবদ্ধতার জন্য তার থেকে বেশ কিছুটা বাড়তি দামে আমাদের দেশে পাওয়া যায় Graphics Card গুলো। বিভিন্ন সময়ে সেই দাম উঠানামা করে থাকে। চলুন দেখে নেওয়া যাক ২০১৭-১৮ এর দিকে আমাদের দেশের বাজারে GPU গুলোর দাম কেমন ছিল, কতটা বেশি ছিল।

GTX 1060, RX 570, RX 580 price in bd back in 2017/2018s:

RX 570

RX 570 নরমাল প্রাইস ছিল ওই সময়ে ২৩ হাজারের আশেপাশে, তবে মাইনিং এর জন্য সৃষ্ট সংকটের কারণে তা ৩০-৩২ হাজার এর রেঞ্জে বিক্রয় হতো ২০১৭,১৮ সালের দিকে। এমনকি দাম কিছুটা কমে যখন 26 হাজারে নেমেছিল XFX এর মডেলটি (যেটি আমি কিনেছিলাম ২৬ হাজারে)  ২০১৮ এর মাঝামাঝি, তখনো অন্যন্য ভার্সনগুলো বিক্রি হচ্ছিল 30 হাজারের দিকেই।

মোটামুটি ২০১৯ এর দিকে দাম পড়তে শুরু করেছিল RX 570 এর , পর্যায়ক্রমে ২২ হাজার, ২১ /১৮ হাজার এভাবে একসময় ১২ হাজারেও নেমে এসেছিল মডেলভেদে এই ভ্যালু ফর মানি জিপিইউটি।

GTX 1050 Ti: 

GTX 1050 Ti তখন ১৭-১৮ হাজারের আশেপাশে বিক্রি হতো।

RX 580:

RX 580 এর ব্যাপারে এবার কথা বলা যাক, এই কার্ডটি তৎকালীন Budget King GTX 1060 এর বিপরীতে বাজারে এসেছিল AMD এর পক্ষ থেকে। crisis situation এ ৪০ হাজার+ দামে বিক্রি হচ্ছিল। এখনো কিছু সাইটে Asus এর RX 580 এর একটি মডেল  আপনি ৩৫ হাজারে দেখতে পেতে পারেন।

GTX 1060:

GTX 1060 হলো এনভিডিয়ার ইতিহাসের অন্যতম best seller জিপিইউ, স্টিমের জরিপেও সবথেকে বেশি ইউজার ছিল এটির। যাই হোক, ২০১৭,১৮ এর দিককার এই হটকেক RX 580 এর মতই ৪০ হাজারের আশেপাশে, চড়া দামে কিনতে হতো।

GTX 1070

এই কার্ডটির দাম তখন ৫০ হাজার+ ছিল , কিছু zotac ও leadtek এর দুই একটি মডেল একটু কমে পাওয়া যেত।

উপরে  যে তথ্যগুলো দেখতে পেলেন, এই সময় সেগুলো বের করা সহজ কিছু ছিল না, এক্ষেত্রে বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানাচ্ছি Tech Enthusiast সামির সাদি ভাইকে। যিনি উপরের বেশ কিছু গুরুত্বপুর্ণ তথ্য আমাকে দিয়ে সহায়তা করেছেন।

দেশের বাজার এখনঃ 

দেশের বাজারে বাইরের অন্যন্য দেশগুলোর মতই দুইটি সমস্যা বিদ্যমান। প্রথমত স্টক, বাজারে গ্রাফিক্স কার্ড নেই বললেই চলে, যেকোনো মডেলই খুবই কম পরিমাণে দৃশ্যমান।অনলাইনে দেখা গেলেও কিনতে গেলে দেখা যাচ্ছে নেই, স্টক এর অবস্থা ও সবসময়ই অনিশ্চিত, কোনো একসময়ে in stock থাকলেও কিছুক্ষণ পর তা out of stock হয়ে যাচ্ছে। মোটকথা বিশ্বজুড়ে যে সংকট, তার প্রভাব ও ছাপ আমাদের দেশের বাজারেও স্পষ্ট। যথারীতি অনলাইন ও অফলাইনে রয়েছে নানান রকমের গুঞ্জন যে একশ্রেণীর বিক্রেতারা স্টক করে রেখেছেন ও কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে রেখেছেন।

তবে এসব অতিক্রম করে যদি জিপিইউ পাওয়ার সুযোগ কেও পেয়েও যান, বলা বাহুল্য,সেখানেও হতাশ হওয়ার সুযোগ রয়েছে, কেননা আমাদের সবাই ই কমবেশি ‘No Single’/’with full pc’ টার্মগুলোর সাথে পরিচিত। অর্থাৎ জিপিইউ কিনতে হলে আপনাকে সম্পুর্ণ পিসি বিল্ড করতেই হবে অন্যথায় জিপিইউ সেল করা হবে না।অবশ্যই এর জন্য কাস্টোমারদের বড় একটি অংশ জিপিইউ কিনতে পারছেন না কারণ তাদের পক্ষে এখন নতুন বিল্ড করা সম্ভব নয়/পরিকল্পনা নেই বা আর্থিক সক্ষমতা এই মুহুর্তে নেই।

Graphics Card price in Bangladesh: 

GTX 1050 ti price: 

GTX 1050 Ti গুলো বর্তমানে ২০ হাজারের আশেপাশে বিক্রয় হচ্ছে। বেশ কিছু মডেল আমরা দেখেছি shop গুলোতে ২৫-২৬ হাজারেও লিস্টেড রয়েছে। (একটি স্বনামধন্য শপে মেসেজ করে জানা গিয়েছে তাদের কাছে 1050 Ti রয়েছে ২৪ হাজার টাকা দামের)  যেগুলোর দাম কখনোই ১৪ হাজার এর উপরে উঠেনি গত কয়েক বছরে।

GTX 1650 Price:

1650 Super অপেক্ষা সবসময়ই অনেকটাই কম জনপ্রিয় ছিল এই কার্ডটি। যদিও অধিক পুরাতন GTX 1050 Ti এর successor এটি। যাই হোক, বর্তমানে GTX 1650 কে কিনতে হলে ২০-২৫ হাজারের আশেপাশেই খরচ করতে হবে।

GTX 1650 Super Price in BD:

একসময়ের hotcake এখন সোনার হরিণ অনেকদিন ধরেই। স্টক নেই বললেই চলে। তবে রিসেন্ট রিপোর্ট অনুসারে এটি ২৩-২৪ হাজারে বিক্রি হয়েছে। যার সাধারণ দাম ১৬-১৮ হাজারের আশেপাশেই। upcoming state এ দেখা যাচ্ছে যে মডেলগুলোর, সেগুলোর দাম লেখা ২৫-২৬ হাজার।

(*** এই লেখাটি ঠিক পাবলিশের আগ মুহুর্তে আমাদের দেশের স্বনামধন্য একটি শপে Asus Tuf Gaming 1650 Super কার্ডটিকে ৪৪ হাজারে লিস্টেড দেখা যায়)***

GTX 1660 Price in BD:

বেশ কিছু শপে GTX 1660 এর কয়েকটি মডেলকে লিস্টেড দেখা যাচ্ছে 28-32 হাজার এর রেঞ্জে।

GTX 1660 Super/1660 Ti price: 

GTX 1660 Super বা Ti এর স্টকের অবস্থা ও যথারীতি জঘন্য। আর দাম ও আকাশছোঁয়া। 1660 Super এর দাম  সাধারণত ২৪/২৫ থেকে ২৭/২৮ এর মধ্যেই উঠানামা করতো ব্রান্ড ও মডেল ভেদে, যা এখন ৩৮ হাজার থেকে ৪৫/৪৬-৪৮ হাজার পর্যন্ত গিয়ে ঠেকেছে, তবে তাও পাওয়া যাবে কি না সে নিশ্চয়তা নেই। upcoming অবস্থায় যেগুলো রয়েছে সেগুলোর দাম ও ৩৭-৩৮ হাজার এ লিস্টেড।

RTX 2060 Price in Bangladesh: 

RTX 2060 গুলো ৪৫ হাজারের আশেপাশে (এমনকি ৫৪ হাজারেও দেখা গিয়েছে) শপগুলোর সাইটে লিস্টেড দেখা গিয়েছে, যদিও বাস্তবে প্রাইস কত এবং আদৌ স্টকে আছে কি না তা নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে না। RTX 2060 সাধারণত ৩৫-৪০ হাজারের মধ্যেই পাওয়ার যেত।

RTX 30 Series Price in Bangladesh:

RTX 3060 Price in Bangladesh:

RTX 3060 এর যা MSRP ছিল অর্থাৎ যে দামে এটি রিলিজ হয়েছিল (329$), তাতে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এর দাম আমরা 33-35 হাজারের মধ্যেই দেখতে পেতাম। তবে প্রথম থেকেই অস্বাভাবিক বেশি দামে বাজারে ঢুকেছিল কার্ডটি। ৪৬-৫০ হাজারের আশেপাশেই Zotac সহ বেশ কিছু ব্রান্ড এর RTX 3060 এর বিভিন্ন মডেল ঢুকেছিল। বলার অপেক্ষা রাখে না স্টক এর অবস্থা সুবিধাজনক ছিল না, পরিস্থিতি দিন দিন খারাপের দিকেই এগিয়েছে , RTX 3060 এর দাম ও বেড়েছে পাল্লা দিয়ে। ৬০ হাজার ৬৫ হাজার রেঞ্জে দাম ঘোরাফেরা করছিল বেশ কিছুদিন, তবে সম্প্রতি এই দাম ৭০ থেকে ৮৫ হাজার এর রেঞ্জে গিয়ে ঠেকেছে (এবং হয়তো এর থেকে বেশি দাম ও আপনি দেখে থাকতে পারেন এই আর্টিকেলটি পোস্ট হওয়ার পর)।

RTX 3070 price in BD:

RTX 3070 এর দাম বর্তমানে ১ লাখ ৫ হাজার থেকে ১ লাখ ৩০ হাজার এর মধ্যে রয়েছে ব্রান্ড ও মডেল ভেদে। কিছু মডেল ৮০-৯০ হাজার রেঞ্জেও পাওয়া যাচ্ছে।

 

এক নজরে MSRP vs expected price vs current price: 

AMD Cards: 

প্রথমত AMD এর কার্ড নিয়ে আমাদের দেশে চাহিদা ও  আগ্রহ বরাবরের মতই কম। তার থেকেও বড় কথা অপেক্ষাকৃত নতুন Gen এর 6000 সিরিজ এর কার্ড বাংলাদেশে ঢুকেনি বললেই চলে, এগুলোর availability  ও দামের অবস্থা 30 সিরিজের কার্ডগুলোর মতই বা তার থেকেও খারাপ।  পাশাপাশি 15-45 হাজার রেঞ্জের আগের Gen এর বিভিন্ন মডেলগুলোও আউট অফ স্টক অনেকদিন ধরেই। সেজন্য এগুলো সম্পর্কে সেরকমভাবে আলোচনা করা হয়নি।

 

লোকাল সেকেন্ড হ্যান্ড মার্কেট এর বর্তমান অবস্থাঃ 

এবার একটু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের Marketplace এবং বেচাকেনার গ্রুপগুলোর দিকে তাকানো যাক।। স্বাভাবিকভাবেই এই অস্থিতিশীল পরিস্থিতির প্রভাব পড়েছে এই অংশেও। একেবারে পুরাতন old model এর used কার্ড বা অপেক্ষাকৃত নতুন বাজারে আসা অল্পদিন ব্যবহার করা কার্ড, দাম হাকানো হচ্ছে আকাশছোঁয়া।প্রতিদিনই অসংখ্য গ্রুপে অসংখ্য প্রোডাক্ট listed হয়, তার মধ্য থেকে আমরা বেশ কিছু listing সংগ্রহ করেছি।  দেখে নিন কিছু নমুনা, প্রাইভেসি রক্ষার্থে সেলারের নাম,প্রোফাইল পিকচার, specific address ,গ্রুপের নাম সব হাইড করা হলো।

Gallery:( sweep left or right to change pictures) 

ই-কমার্স সাইটগুলোর কি অবস্থা???? 

যেহেতু আমরা রিটেইল শপগুলোর পাশাপাশি সেকেন্ড হ্যান্ড মার্কেট ও দেখে ফেললাম, তাহলে একই সাথে একটু দেশের জনপ্রিয় কিছু e-commerce site গুলোর দিকেও তাকানো যাক।

ইন্টারন্যাশনাল মার্কেট তখনঃ 

অনেকেই জানেন যে cryptocurrency mining এর কারণে ২০১৭-১৮ সাল জুড়ে এখনকার মতই তীব্র স্টক ও মুল্যবৃদ্ধির সমস্যা হয়েছিল গ্রাফিক্স কার্ড ইন্ডাস্ট্রিতে। এটি শুরু হয় ২০১৭ এর মাঝামাঝি, সেই সময়ে GTX 1060,1070,1050 Ti, RX 570,580 ইত্যাদি কার্ড বাজারে বিভিন্ন বাজেটে জনপ্রিয় ছিল। ২০১৭ সালের মাঝামাঝি শুরু হয়ে এই সংকট অব্যাহত ছিল ২০১৮ সালের মাঝামাঝি পর্যন্ত। গ্রাফিক্স কার্ড এর দাম আকাশচুম্বী হয়েছিল সেটা তো ঠিক, তবে চলুন দেখে নেওয়া যাক দাম কি পর্যায়ে ছিল যাতে আমরা বর্তমান পরিস্থিতির সাথে তুলনা করতে পারি।

সাথে সে সময়ে (mid 2017) newegg এ RX 570 আউট অফ স্টক থাকলেও Amazon এ তা পাওয়া যাচ্ছিল ৪৫০-৬৫০ ডলারের রেঞ্জে।  বেশ কিছু ওয়েবসাইটের তথ্য অনুসারে দাম বৃদ্ধির কবলে বেশি পড়েছিল মিডরেঞ্জ/লো এন্ড এর কার্ডগুলো, সেই তুলনায় ফ্লাগশিপ লেভেলের কার্ডগুলোর দাম সেরকম বৃদ্ধি পেয়েছিল না। GTX 1060 এর দাম ৮০০ ডলার স্পর্শ করেছিল তবে GTX 1080 Ti ৭০০ ডলারে লঞ্চ হয়ে ১২০০ ডলার এর আশেপাশে চলে গিয়েছিল দাম।

উপরের স্ক্রিনশটটি একটি আর্টিকেল থেকে নেওয়া যেটি পাবলিশ হয়েছিল ২০১৮ সালের এপ্রিলে। এখানে দাম সম্পর্কে কিছুটা ধারণা আমরা পাচ্ছি বটে, কিন্ত উপরে যা আগেই বলেছি, অর্থাৎ এর থেকে বেশি দামেও listed হয়েছিল GPU গুলো।

যাই হোক, আর্টিকেলগুলো ঘেটে যা ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছে তা হচ্ছে 2018 এর জুন-জুলাই এর দিকে বাজার আবার স্বাভাবিক হতে শুরু করেছিল, কার্ডগুলোর দাম নিচের দিকে আসতে শুরু করেছিল। গিগাবাইট সহ বেশ কিছু ব্রান্ড এর RX 570 এমাজনে ২০০-৩০০ ডলারের রেঞ্জে চলে এসেছিল বলে জানা যায়। একই সময়ে GTX 1080 Ti, GTX 1060 এর বাজার ও মোটামুটি স্বাভাবিক এর পর্যায়ে চলে এসেছিল।

২০১৮ সালের এপ্রিল মাসের একটি আর্টিকেল থেকে নিচের স্ক্রিণশট দুটি দেওয়া হলোঃ

যারা বেশি জানতে ভালোবাসেন, পড়তে ভালোবাসেন তাদের জন্য লিংক নিচে দিয়ে দেওয়া হলো। সময় স্বল্পতা ও বেশ কিছু সীমাবদ্ধতার কারণে খুব বেশি তথ্য উপাত্ত খুজে বের করা ও যোগ করার সুযোগ হলো না।

pcworld , digitaltrends1,digitaltrends2,pcgamesn, pcworld2,rockpapershotgun

ইন্টারন্যাশনাল মার্কেট এখনঃ 

এবার একটু দেখে নেওয়া যাক ইন্টারন্যাশনাল মার্কেট, অর্থাৎ Amazon, Newegg এর অবস্থা কি।

Nvidia’s GTX 1050,1650,1050 Ti Price In Amazon

চলুন  Amazon ও Newegg  থেকে দেখে নেওয়া যাক বর্তমান পরিস্থিতির একটু highlights:

৩০০-৫০০ ডলার এর মধ্যে দেখা যাচ্ছে GTX 1050 Ti গুলোকে। সেখানে GTX 1650 এর বিভিন্ন মডেল এর দাম ঘোরাফেরা করছে ৫০০-৭০০ ডলার এর মধ্যে।

GTX 1650 Super এর দাম ৫৫০ ডলার থেকে ৭৫০ ডলার এর মধ্যে।

 

 

 

GTX 1660,1660 Super/Ti price in Amazon:

নিচের গ্যালারি থেকে দেখে নিন amazon এ GTX 1660/1660 Super/ti এর বিভিন্ন মডেল কিরকম প্রাইসে বিক্রি হচ্ছে।

RTX 2060/2060 Super/ and other 20 series cards on amazon:

 

RTX 30 Series GPU in Amazon: 

NewEgg: GTX 1050 Ti, 1650/1650 Super on NewEgg

নিচের স্ক্রিনশট গুলো Newegg এর। মোটামুটি দাম এখানেও চড়া, GTX 1650 Super এখানে ৫৫০ ডলার থেকে শুরু করে ১০০০ ডলার পর্যন্ত ও লিস্টেড দেখা যাচ্ছে। 1050 Ti গুলোকে কন্ডিশন/সেলার/মডেলএর ভিন্নতা অনুসারে ২৫০ থেকে ৫০০ ডলার এর রেঞ্জে দেখা যাচ্ছে। 1650 এর দাম বিভিন্ন মডেল ও কন্ডিশন ভেদে ৪০০-৬৫০ ডলারের মধ্যে রয়েছে।

GTX 1660,1660 Super/Ti on NewEgg

GTX 1660,1660 Super এর বিভিন্ন মডেল কন্ডিশন, সেলার, মডেল ভেদে ৬০০ ডলার থেকে ৯০০ ডলারের মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে।

RTX 2060/2080/2080 Super on NewEgg

একনজরে MSRP vs Current price(international market)

 

AMD GPU price in Amazon,Newegg:

AMD এর কার্ডগুলো কি দামে বিক্রয় হচ্ছে তা সম্পর্কে  নিচের স্ক্রিনশটগুলো থেকে কিছুটা ধারনা নিতে পারবেন।

RX 570,RX 580(newegg) 

RX 5500 XT, RX 5600/5700XT (on Newegg) 

RX 6700 XT,6800XT, 6900XT Price

 

পরিশিষ্টঃ পরিস্থিতি জটিল কখন বেশি ছিল? 

আমাদের আর্টিকেলটিকে আমরা বিভিন্ন ভাগে ভাগ করেছিলাম পাঠকের সুবিধার্থে, বর্তমানে দেশের বাজার, ২০১৭/১৮ এর সংকটময় মুহুর্তে দেশের বাজার, বর্তমানের আন্তর্জাতিক বাজার ,২০১৭/১৮ এর সংকটময় মুহুর্তের আন্তর্জাতিক বাজারে জিপিইউ এর দাম কেমন ছিল আর বর্তমানে কেমন তা তুলে ধরেছি প্রতিটি সেকশনে। পাঠক নিজেই তুলনা করতে পারবেন, তবে আমাদের সবকিছু বিবেচনায় যেটি মনে হয়েছে সেটি হচ্ছে আন্তর্জাতিক বাজারে  ২০১৭/১৮ সালের দিকের দাম যখন অনেক বেশি ছিল, এখনকার তুলনায় সেই বৃদ্ধি কমই মনে হয়েছে।মিডরেঞ্জ হোক বা flagship,semi-flagship, সব বাজেটেই এই বর্তমানে GPU এর দাম অনেক অনেক বেশি চড়া। আর স্টকের কথা যদি বলি, তখন worst case scenario  তেও গ্রাফিক্স কার্ড এর স্টক এখনকার তুলনায় বেশি ছিল।

আর বাইরের দেশের অবস্থা বিবেচনায় দেশের বাজারের অবস্থা সেই সময়ে যা ছিল , বিশেষ করে Stock এর কথা যদি বলি, সিঙ্গেল বিক্রির ব্যাপারটিও মাথায় রেখে, তা এখনকার তুলনায় ভালো ছিল। মানুষ বেশি দাম দিয়ে হলেও সেই সময়ে অপেক্ষাকৃত সহজে GPU কিনতে পেরেছে বর্তমান প্রেক্ষাপটের তুলনায়।সিঙ্গেল জিপিইউ কিনতে পারার সৌভাগ্য হয়েছিল অনেকেরই।  আমি নিজেও XFX Radeon RX 570 8GB XXX Edition কিনেছিলাম ২৬ হাজার দিয়ে (২০১৮ এর জুলাই এ, তার কয়েক মাসের মধ্যেই যদিও পরিস্থিতি মোটামুটি স্বাভাবিক হয়ে গিয়েছিল আগেই বলেছি)।

দাম ও বর্তমানে যেমন আকাশছোঁয়া,স্টক এর অবস্থা ও আরো খারাপ, সাথে Single না বিক্রি করার সিদ্ধান্ত এর কারণে এ কথা বলাই যায় যে দেশের GPU মার্কেট এখন ইতিহাসের সবথেকে বাজে সময় অতিক্রম করছে।

Share This Article

Search