কিছুদিন আগে হঠাত ফোনে একটা কল আসে, এক ভদ্রলোক আমাদের দিয়ে একটা পিসি বানাতে চান। বরাবরের মতই তাকে জানালাম যে আমরা আসলে কোন ধরনের কম্প\ইউটার ব্যবসার সাথে সম্পর্কিত নই, কমার্শিয়ালি আমরা কোন পিসি বিল্ড করি না।
এরপরে উনি পরামর্শ চাইলেন যে যে হাজার পঞ্চাশেক টাকায় অফিশিয়াল কাজ আর অবসরে টুকটাক গেম খেলার জন্য কি কি কম্পোনেন্ট নিলে ভালো হবে। হঠাত মনে হল অনেক দিন আমরা কোণ বাজেট বিল্ড গাইড দিতে পারছি না।
তাই একই সাথে ওনার পিসি টি আমরা বানিয়ে দেই এবং আপনাদের জন্য প্রস্তুত করি পঞ্চাশ হাজার টাকার গেমিং পিসি বিল্ড গাইড।
কিছু দিন আমরা একটা পোল দিয়েছিলাম, কত বাজেটের গেমিং পিসি বিল্ড গাইড চান। সেখানে সবচেয়ে বেশি ভোট পেয়েছিল ৪০ হাজার টাকার পিসি, অর্থাত হাজার পঞ্চাশেক টাকার মধ্যে মনিটর সহ আরকি। তবে আমরা অনেক হিসাব নিকাশ করে দেখেছি, একটু ভালো ভাবে গেমিং করতে ৫০ হাজারে টাকা বাজেট থাকা উচিত এতে একটা ডিসক্রিট গ্রাফিক্স কার্ড নেয়া যায়। একোটা ডীসেন্ট গ্রাফিক্স কার্ড থাকলে ইস্পোর্টস সহ ভালো গেম গুলো মোটামুটী স্টেইংসে খেলতে পারবেন ভালোভাবে খেলা যায়।
পঞ্চাশ হাজার টাকার এন্ট্রি লেভেল ইস্পোর্টস গেমিং পিসি নিয়ে আরো ব্যাখা থাকছে শেষের দিকে।
আসল প্রসেসর বনাম নকল প্রসেসর
প্রসেসর হিসেবে আমরা আজ ব্যবহার করব রাইজেন ৩ ৩১০০। এবং হ্যা ইহা একটি চাইনিজ প্রসেসর।
প্রসেসর টা হাতে পাওয়ার পর পিসি হেল্পলাইন গ্রুপে নকল প্রসেসর খুঁজে পেলাম বলে একটা পোস্ট দেয়ায়, অনেকেই হাহা রিএক্ট দেয়। দেওয়াই স্বাভাবিক, কারন প্রসেসর নকল হয় না। এটা নকল ওটা কপি বলে প্রচারের কারনে অনেকের মধ্যে একটা ধারনা হয়ে গিয়েছে যে কম্পিউটার প্রডাক্ট সবই মনে হয় নকল। প্রসেসরের ফ্যাব্রিকেশন প্রসেস অনেক কমপ্লিকেটেড, হাইটেক এবং এক্সপেন্সিভ হওয়ায় কঞ্জিউমার গ্রেড পিসি প্রসেসর ইন্টেল, এএমডির মত বড় কোম্পানিরা বানিয়ে থাকে। তবে বক্স বিভিন্ন দেশে বানানো হতে পারে, হতে পারে বিভিন্ন দেশকে টার্গেট করে বানানো।
প্রসেসর গুল চাইনিজ মার্কেট কে টার্গেট করে বানানো, যেহেত্য প্যাকেটে ম্যান্ডারিন লেখা আছে। এখন বাংলাদেশে এএমডি ইম্পোর্ট করে ইউসিসি। ইউসিসির বাইরেও আরো অনেক ইম্পোর্টার আছে। বাকিদের প্রডাক্ট নকল এমন কথা যদি কেউ বলে তাহলে তারা ডাহা মিথ্যা কথা বলছে। হয়ত নিজেদের কোন স্বার্থেই বলছে। অফিসিয়ালি ইম্পোর্টেড প্রডাক্ট কেনা ভালো কারন বেশি ট্রাস্টেড, রিলাই করা যায়। কিন্তু এটাও মাথায় রাখতে হবে যে, ইন্টারন্যাশনাল ওয়ারেন্টি, লোকাল ওয়ারেন্টি বলতেও কিছু ব্যাপার আছে। কম্পইউটার মার্কেটে হাজার হাজার ব্র্যান্ড আছে যেগুলা বাংলাদেশে অফিসিয়ালি আসে না। তারপরো বিভিন্ন দোকানে পাওয়া যায় এবং আমরা কিনি। আবার অফিসিয়াল ইম্পোর্টার চেঞ্জ হয়। যেমন করসেয়ার এর ইম্পোর্টার ৪/৫ বছর আগেও ছিল কম্পিউটার সোর্স আর এখন স্মার্ট টেকনোলজিস। তাই এই ব্যাপার গুলো নিয়ে বেশি মাথা ব্রথার কারন দেখি না। যার কাছ থেকে নিচ্ছেন, তারা যদি ট্রাস্টেড হয় তাহলে নেয়া যেতে পারে।
Ryzen 3 3100
এখন কথা হচ্ছে এই প্রসেসর টা কেন নেয়া হল, এই প্রাইস রেঞ্জের কম্পিটিশন তিনটা প্রসেসর হচ্ছে রাইজেন ৩১০০, ইন্টেল আইথ্রি ১০১০০ আর রাইজেন ৩৩০০এক্স রাইজেন ৩১০০ এর দাম হচ্ছে ১০২০০ টাকা আর ইন্টেল ১০১০০ এর দাম ১০৬০০ টাকা আর রাইজেন ৩৩০০ এক্স এর দাম 13500 Taka এই তিনটা প্রসেসর এর মধ্যে ৩৩০০এক্স মোটামুটী সব বেঞ্চমার্কে গেমিং এবং প্রডাক্টিভিটিতে ১০১০০ কে বিট করে আবার গেমিং ৫/১০% পিছিয়ে থাকলেও ৩১০০ প্রডাক্টিভ সফটওয়্যার গুলোতে ৫% এর মত বেটার পারফর্ম করে। এখন ইণ্টেল এর ১০১০০ এর সাথে যদি আপনি একটা কম দামে H410 বা b460 মাদারবোর্ড নেন তাহলে আপনি আপনার র্যামের ফুল প্টেনশিয়াল ব্যবহার করতে পারবেন না, ২৬৬৬ মেগাহার্জ এর বোর্ড গুলোর লিমিট। আর ৩০০০,৩২০০ মেগাহার্জ বাস স্পীডের র্যাম এখন খুবই এভেলেবেল। তাই ২৬৬৬ মেগাহার্জের র্যাম ব্যবহার করলে ১০১০০ এর পার্ফরমেন্স কিছুটা কমে যাবে, আবার র্যাম ওভারক্লক করতে হলে z490 মাদারবোর্ড ব্যবহার করলে সেই খরচ তো অনেক বেরেই গেল। এখন আবার বলতে পারেন, মাত্র ২৫০০ টাকা বাড়িয়ে ৩৩০০এক্স কেন নিচ্ছি না। কারন আমরা একটা বাজেট বিল্ড করছি, এখানে ৫০০ টাকা বাচানো গেলেও বাচাবো। ধরে নিতে পারেন ২৫০০ টাকা এখানে বাচিয়ে ১০% পার্ফরমেন্স স্যাক্রীফাইস করলাম। এটা একটা টাইট বাজেট বিল্ড, যাদের বাজেট ফ্লেক্সিবল তারা চাইলে ৩৩০০এক্স কেন আরো বেটার প্রসেসর বেছে নিতে পারেন। এখানে একটা কথা বলে রাখি, আমাদের কোন কম্পিউটার ক্রয় বিক্র্য স্নগক্রান্ত ব্যবসা বা দোকান নেই। তাই কি কিনলেন সেটা আপনার ব্যাপার। আমরাও আপনাদের মত সাধারন ইউজার, তাই সীমিত জানাশোনার মধ্যে জাস্ট একটা গাইড দেয়ার চেস্টা করছি যাতে অল্প কিছু মানুশ হলেও সাহায্য পান।
MSI A320m Pro Max Motherboard
মাদারবোর্ড হিসেবে আমরা ব্যবহার করেছি MSI a320m pro, এটার দাম ৫৭০০ টাকা। এই বোর্ড টা a320 চিপ্সেটের। রাইজেন ৩০০০ সিরিজের জন্য এই প্রসেসর গুলোতে সাপোর্ট দেইয়া আছে। এগুলোর দাম বেশ কম, একদম এন্ট্রি লেভেল বলতে পারেন, তাই ফিচার ও অনেক লিমিটেড। এইখানে আমরা একটা বি৪৫০ মাদারবোর্ড নিতে পারতাম। সেক্ষেত্রে হয়ত সামনে প্রসেসরটা আপগ্রেড করে রাইজেন ৫ ৩৬০০ নেয়া যেত। ৩৬০০ একটা অল্রাইন্ডার প্রসেসর, যাস্ট একটু গরম হয় আরকি। তবে একটা আফটার মার্কেট কুলার সহ ৩৬০০ একদম ১ লাখ টাকা পর্যন্ত পার্ফেক্ট প্রসেসর। সুতরাং যাদের সামনে হাতে টাকা আসার সম্ভাবনা আছে, তারা বি৪৫০ বোর্ড নিয়ে রাখতে পারেন। ৩৬০০ এ আপগ্রেড করলে দারুন এডিটিং করতে পারবেন আর গেমিং তো চল্বেই। কিন্তু যাদের বাজেট সীমিত, আমরা a320 তেই থাকছি। AMD ফ্যানদের দুর্গ বলতে পারেন এই একটা পয়েন্টে, আনলাইক ইন্টেল amd এর এন্ট্রি লেভেল মাদারবোর্ড গুলোতেও র্যাম বা মেমোরি ওসি করা যায়, আরামসে ৩২০০ মেগাহার্জ পর্যন্ত র্যাম চালাতে পারবেন।
Transcend 820S 120 M.2 SSD
বুট ড্রাইভ হিসেবে, সোজা বাংলায় উইন্ডোজ বা সিস্টেম রাখার জন্য আমরা একটা ট্রান্সসেন্ড ৮২০এস ১২০ জিবি m.2 এসএসডি ব্যবহার করছি। এটার দাম দুইহাজার টাকা। আমাদের বিল্ড গাইড গুলতে আমরা কখনোই হার্ড ড্রাইভ এড করি না। শুধু একটা এসএসডি দিইয়ে থাকি সিস্টেম এর জন্য, কারন ইউজার টু ইউজার স্টোরেজ এর চাহিদা কম বেশ হতে পারে। তাই আপনার যদি আগে থেকে কোন হার্ড্ড্রাইভ না থাকে তাহলে, 1 Tb হার্ড ড্রাইভের জন্য ৩৭০০ টাকা আর ২ টিবির জন্য সাড়ে পাঁচ হাজার টাকা আলাদা রাখবেন। অথবা পরে কিনে নিলেও চলবে, স্টোরেজ এমন জিনিস না যে যেটা নাহলে পিসি চলবে না বা পার্ফরমেন্স কম পাবেন।
Corsair Vengeance LPX 2X8GB DDR4 3200Mhz Memory
র্যাম হিসেবে আমরা ব্যবহার করেছি জাতীয় র্যাম হিসেবে পরিচিত করসেয়ারভেঞ্জেন্স এল্পিএক্স ৮ জিবি ৩২০০ মেগা হার্জের দুইটা স্টিক। অর্থাৎ টোটাল ১৬ জিবি। এক একটা কিট ৩৩০০ টাকা করে, দুইটা ৬৬০০
এগুলোতে কোন আরিজিবি লাইট নেই, করসেয়ার ভেঞ্জেন্স আরজিবি প্রো সিরিজের ৩২০০ বাসের ৮ জিবি একেকটা স্টিক পড়বে ৪ হাজার টাকা করে। এছাড়াও বাজারে আরো অনেক কোম্পানির র্যাম পাওয়া যায়,
জি স্কিল, এডাটা, টিম, থার্মাল্টেক টাফ সিরিজ। যে কোম্পানিই নিন কেন সমস্যা নাই, শুধু দাম টা যেন কাছাকাছি থাকে।
Coolermaster Masterbox Q300L Mini Tower Case
কেস হিসেবে আমরা ব্যবহার করেছি coolermaster q300l mini টাওয়ার কেস। আমাদের পুরো বিল্ডে যদি কোথাও দরকারের থেকে বাড়তি খরচ করে থাকি সেটা এই জায়গায়। কেসটার দাম ৪০০০ টাকা, এটা যদিও এখন খুব একটা পাওয়া যায় না কারন এটার নতুন ভার্সন Q500l চলে এসেছে, দামও একি রকম। আসলে ৫০০০০ হাজার টাকার পিসিতে ৪ হাজার টাকা কেসে অনেকেই খরচ করতে চান না। কারন ২/৩ হাজার টাকায় যথেষ্ট মানানসই কেস আপনারা পাবেন যেমন Deep cool matrexx 30 2400 Taka, antec vsk10 3000 taka, goldenfield OMG 3000 Taka. এর মধ্যে ডিপ কুল টার এয়ারফ্লো চমতকার, সিগ্মাটেক ওমজির ওএমজি লেখাটাও মেশ আবার ভিএস্কে টেন ও দেখতে খুব সুন্দর। যেকোন টা আপনারা নিতে পারেন
এগুলো সব কয়টাই MATX আর বেশ ছোট এবং কম্প্যাক্ট। পছন্দ আপনার। আমরা কুলার মাস্টার বক্স q300l নিয়েছি কারন আমরা যার জন্য বিল্ড টা করেছি তার এক্সপেক্টেশন ছিল বিল্ড মোটামুটি পার্ফরমেন্স এর সাথে দেখতে খুব চমতকার হতে হবে। তাই এই বাজেটে এটা একটা প্রিমিয়াম কেস বলতে পারেন, সামনে উপরে নিচে মেশ থাকার কারনে এয়ার ফ্লো বেস্ট। অনেকেই কমপ্লেন করেন যে আমরা দামি বিল্ডে বেশি ফোকাস দেই। আসলে পারসোনাল কম্পিউড়টার খানা অনেকেরই দূর্বলতার একটা জায়গা। যেটা আপনার ক্যারিয়ার বা দিনের বড় একটা অংশ জুড়ে থাকবে সেটা একটু সুন্দর হোক গোছানো হোক অনেকেই এক্সপেক্ট করেন। স্কুলে থাকতে যেমন আমরা পড়ার টেবিল টা সুন্দর করে ঘোছাতাম, ক্যালেন্ডারের উলটা পিঠের সাদা সাইড দিইয়ে বইতে মলাট দিতাম সুন্দর গোছানো পরিবেশ আপনার কম্পিউটারে আপনাকে আরো বেশি সময় কাটাতে আগ্রহী করবে। আর এতে যে অনেক অনেক টাকা দরকার হবে তানা, ছোট লোগো বা স্টিকার, সামান্য একটা প্রিন্ট, অথবা ১/২ হাজার টাকার পেইন্ট জব পুরো পিসিটাকে একটা অন্য লেভেলে নিয়ে গেছে। আপনারা যারা কম্পিউটার বানাবেন বা বানাচ্ছেন তাদের প্রতি আমরা অনুরোধ থাকবে একটু সময় নিয়ে, পরিক্লপনা করে গুছিয়ে বানান, সুন্দর করে বানান। সামনের গেম খেলুন আর নাই খেলুন, সামনের দশ বছরে কম্পিউটার না জেনে আর কোন চাকরি বা ব্যবসা করার উপায় থাকবে না, তা এই লক ডাউনে অনেকেই বুঝে গেছেন।
Antec VP450P Plus 80 Plus Power Supply
পাওয়ার সাপ্লাই আমরা খুজছিলাম ৩০০০ হাজারে আশে পাশে কিছু। কিন্তু পাওয়ার সাপ্লাই এর একটা আকাল চলছে গত কয়েক মাস। হারিকেন জালিয়েও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। পুরো পিসি না নিলে আলাদা বিক্রিও কেউ করতে চায় না। ৪০০ ওয়াটের বেশ কিছু পাওয়ার সাপ্লাই ৩০০০ এর আশে পাশেই পাওয়া যায়, কিন্তু আমরা পেলাম এন্টেক ভিপি৪৫০পি প্লাস এটার দাম ৩৭০০ টাকা। অনেকে হয়ত কেসের সাথের পাওয়ার সাপ্লাই বা ৫০০ টাকার পাওয়ার সাপ্লাই দিইয়ে কাজ সারতে চান কাজটা না করার পরামর্শ থাকবে, কারন নিম্ন মানের পাওয়ার সাপ্লাই মানে গিট্টূ ছাড়া লুঙ্গি পড়ার মত, ঝড় বাতাসে ঊরে গেলে সাথে মান ইজ্জত ও নিয়ে যেতে পারে। সস্তা একটা পাওয়ার সাপ্লাই অনেক সময় নিজে নস্ট হাওয়ার সাথে আপনার সারে ৫ হাজারের
মাদারবোর্ড অথবা ১৮ হাজারের গ্রাফিক্স কার্ড খানা নিয়ে যেতে পারে। আর মহা গুরুত্বপূর্ন সব ডাটা সমেত হার্ড ডিক্স নষ্ট করা কমদামি সব পাওয়ার স্পাপ্লাই এর স্পেশাল এবিলীটি বলতে পারেন। তাই আর যেখানেই চিপ আউট করেন, এখানে করবেন না।
বিল্ডে আমরা সোন্দ্ররয বরধনের জন্য কেসের সামে দুটি ১২০ মিলি আরজিবি ফ্যান ব্যবহার করছি। যেটা একদমই অপশনাল তাই এটার দাম টোটাল বাজেটে ধরা হয়নি। কেসের সাথে আসা, রিয়ার এক্সস্ট ফ্যানটাও খুলে আরেকটা রগব ফ্যান লাগিয়েছি, আমাদের ফ্যান গুলো আইগো আরমাগেড্ডোন যা বাংলাদেশে খুব একটা পাওয়া যায় না। তবে অপশনাল ফ্যান যদি ইচ্ছা তাহলে ৬০০/৭০০ টাকা করে একেকটা আরিজিবি ফ্যান কিনতে পারেন।
MSI Geforce GTX 1650 Super XS OC Graphics Card
সব শেষে আমাদের বিল্ডের মেইন স্টার এনভিডিয়া জিটিএক্স ১৬৫০ সুপার ৪ জিবি । আমরা ব্যবহার করছি MSI এর ভেন্টাস এক্সেস ওসি এডিশন যেটার দাম ১৮ হাজার ৫০০ টাকা, অর্থাৎ মেইন কম্পোনেন্ট। যেহেতু আমাদের মেইন টার্গেট গেমিং তাই ভাল একটা গ্রাফিক্স কার্ড জরুরি। এর থেকে একটু কম দামে শুধু ১৬৫০ নেয়া যেত যেটা ১৫ হাজারের কম, যদিও আমার কাছে এটা কোন কাজের মনে হয় না। আবার একটু দাম বাড়িয়ে ১৬৬০ বা ১৬৬০ সুপার নেয়া যেত দাম, শুধু ১৬৬০ গুল ২০-২২ হাজারের মধ্যে আর সুপার গুলো
২৪/২৫ এর মত। বিভিন্ন ব্রান্ডের বিভিন্ন এডিশন ভেদে দাম কমবেশি হতে পারে। আপনাদের যেটা ভালো লাগে সেটাই নিতে পারেন। এই রেঞ্জে আসলে খুব বেশি তফাত হয় না কার্ডগুলোতে। আমাদের ভেন্টাস এক্সেস ১৬৫০ সুপার ফ্যাকট্রি ওভার ক্লক করা। মানে বেস কল্ক স্পিড থেকে একটু বাড়তি স্পিডে চলবে। ১৮৫০০ টাকায় এই ১৬৫০ সুপার আমাদের বিল্ডের জন্য একদম পার্ফেক্ট। গেমিং এ কেমন পার্ফরমেন্স পাওয়া যাবে এটা দিইয়ে সেটা নাহয় বিল্ড শেষ হবার পরেই দেখে নেব।
আমাদের নন মডুলার পাওয়ার সাপ্লাই এর সাথে ২৪ পিন, ৮ পিন জিপি পাওয়ার কানেক্ট গুল এটাচ করা, এর সাথে আমরা সাদা রঙ্গের এক্সটেনশন কেবল লাগিয়ে নিয়েছি। এটাও পুরো পুরী অপশনাল। আমাদের গুল দেশের বাইরে থেকে আনা, তবে আপনারা ২০০০ থেকে ২৫০০ টাকায় কম্পিউটার মার্কেট গুলোতে খুজলে পেয়ে যেতে পারেন। তবে এই ধরণের বাজেট বিল্ডে এক্সটেনশন ক্যাবল বিলাসিতা। সর্বোচ্চ একটা আড়জীবী স্ট্রিপ লাগাতে পারেন। তবে টাকা আপনার স্বিদ্দান্তও আপনার।
GTA V Benchmark
বেঞ্চমার্ক সেকশন শুরু করছি কিছু ক্লাসিক গেম দিইয়ে। ২০১৩ সালে রিলিজ দেয়া জিটিএ ফাইভ গেমটি এখনো অনেকেই খেলে থাকেন, যদিও গেমটা একটা সিপিউ বাউন্ড গেম, তারপরও প্রায় ৬০/৭০ পার্সেন্ট সিপিউ ইউসেজে ১৬৫০ সুপার ৯৫% থেকে ১০০% পাওর্ফর্ক্ম করছে। অর্থাৎ কোন বটোলনেক নেই। ভেরি হাই গ্রাফিক্স সেটিংস এ আমাদের আজকের বিল্ড টায় এভারেজ পেয়েছি ৭২ এফপিএস আর গতবছর শেষ দিকে রাইজেন ৩৪০০ জি দিইয়ে করা ৩৫ হাজার টাকার বিল্ডে পেয়েছিলাম গড়ে ৪৯ এফপিএস।
Witcher 3 Benchmark
এরপরে সিডী প্রজেক্ট রেড স্টিডুওর উইচার থ্রি। এই গেমটা খেলেননি যিনি তার গেমিং লাইফ কিছুটা বৃথা বলা চলে, যাই হোক আজকের বিল্ডে ১০৮০পিতে আমরা গরে ৭১ এফপিএস আর ৩৫ হাজার টাকার ৩৪০০জি বিল্ডে পেয়েছিলাম গড়ে ৩২ এফপিএস।
Metro Exodus Benchmark
এবার বেশ ভাড়ি একটা গেম টেস্ট করা যাক, যেটার গ্রাফিক্স খুবই খুবই চমতকার, মেট্রো এক্সুডাসে সেটিং হাই রেখে টেস্ট করেছি, যদিও উপরে আরো কয়েকটা গ্রাফিক্স সেটিংস আছে, সাথে আরটীএক্স ছিল অফ, গড়ে পেয়েছি ৬৮ এফপিএস আর ৩৪০০জিতে
২৩ এফপিএস।
Fortnite Benchmark
ভিডিওর শুরুতে বলছিলাম যে এন্টি লেভেল ইস্পোর্টস রিগ, তাই কিছু কম্পিটিটিভ গেম টেস্ট না করলেই নয়। প্রথমে যেটা পরীক্কা করে দেখেছি, সেটা হচ্ছে ফর্টনাইট, গড়ে ওটো লো টেক্সচারে ১৪২ এফপিএস আর ৩৪০০জি তে ৫৯ এফপিএস।
PUBG Benchmark
এরপরে ১০৮০পি পাব্জিতে টেক্সচার আল্ট্রা রেখে বাকি সব লোতে, গড়ে ১০২ এফপিএস আর ৩৪০০ জিতে ৪১ এফপিএস পেয়েছি।
Valorant Benchmark
সবশেষে এই যুগের ক্যান্সার ভ্যালোরান্ট টেস্ট। হাই সেটিংসে গড়ে পেয়েছি ১৫৫ এফপিএস আর ৩৪০০ জিতে ৮১।
অর্থাৎ অধিকাংশ পপুলার ইস্পোর্টস টাইটেল গুলতে ১০০+ এফপিএস পাওয়া যাচ্ছে, আর ৩৪০০জি এর ইন্টেগ্রেটেড ভেগা ১১ এর জাওয়গায় একটা ডিসক্রিট ১৬৫০ সুপার থাকার পার্ফরমেন্স ২০/৪০% বেশি পাওয়া যাচ্ছে গেম ভেদে। অফিসিয়াল কাজ কর্ম, ব্রাজিং বা মিডিয়া কনজিউমিং এ কোণ তফাৎ দেখবেন না। চাইলে এমেচার লেভেলের ১০৮০ পি এডিটীং ও করতে পারবেন টুকটাক। তবে সিরিয়াসলি এডীটীং করতে চাইলে বি ৪৫০ মাদারবোর্ড আর রাইজেন ৫ ৩৬০০ নেওয়াই বেটার। যারা কোন ভাবেই বাজেট ৪০ উপর বাড়াতে
পারছেন না, তাদের জন্য আমাদের ৩৫ হাজার টাকার বিল্ডটা এখনো পার্ফেক্ট। আর যারা বাজেট কিছুটা বাড়াতে পারবেন তাদের জন্য এটা।
কোথা থেকে কিনবেন?
স্টারটেক, টেকল্যান্ড, ইউসিসি সহ সব পরিচিত দোকানেই প্রোডাক্ট গুলো পেয়ে যাওয়ার কথা। দামও কাছাকাছি থাকবে বলে আশা করা যায়। মাল্টীপ্ল্যান সেন্টার এবং আইডিবি তে নিশ্চিত পাবেন বলা যায়। তারপরও মার্কেটে যাওয়ার আগে ফোন করে স্টক কনফার্ম হয়ে যাওয়ার অনুরোধ রইলো, ধন্যবাদ।