একটা পারফেক্ট হরর জনরা এর গেমস আপনার কাছে কি অর্থ বহন করে? রহস্যময় স্টোরিলাইন, প্রোটাগনিস্ট যে কিনা আপনাকেই তুলে ধরবে পুরো গেমে, হাড় হিম করা সাউন্ড ট্রেক, মানসিক চাপ তৈরি করবে এমন পরিবেশ ইত্যাদি ইত্যাদি। এসব শর্ত মেনে হরর জনরা এর অনেক গেমস রয়েছে, যেমনঃ ব্লেয়ার উইচ, এ্যামনেশিয়া কিংবা এ্যালিয়েনঃ আইসোলেশন। তবে আজকে আলোচনা করবো, আউটলাস্টঃট্রায়ালস (Outlast:Trials) নিয়ে।
আউটলাস্ট টাইটেলটি অন্যসব গেমস থেকে আলাদাভাবে একটা জায়গা তৈরি করে নিয়েছে ভিডিওগেমস প্রেমী মানুষদের মনে।
পর পর দুটি টাইটেল রিলিজের পর, এখন সময় এসেছে নতুন একটি আউটলাস্ট টাইটেল এর।
২০১৩ সালে রিলিজ পায় আউটলাস্ট। সারভাইভাল হরর জনরার গেমটি গেমারদের প্রতিপদে বুঝিয়ে দেয়, পরিবেশে সে আসলে কতটা অসহায়। গেমারকে বেশিরভাগ সময়ই দৌড়ে এবং লুকিয়ে থাকতে হবে, কারণ সরাসরি হোস্টাইল NPC এর মুখোমুখি হওয়া একটি বাজে অপশন।
গেমারকে অন্ধকার পরিবেশ এ ব্যবহার করতে হবে, তার কাছে থাকা ক্যামেরার নাইটভিশন ফিড। এই নাইটভিশন ফিডের জন্য প্রয়োজন হবে ব্যাটারি, যা ঘুরে ঘুরে খুজে বের করতে হবে গেমারকে। এই ব্যাপারটা আসলে গেমটিতে সারভাইভাল এলিমেন্ট যোগ করে।
আউটলাস্ট-১ এ, গেমার প্রতিনিধিত্ব করবেন ফ্রিল্যান্সার সাংবাদিক Miles upshur হিসেবে। মাইলস একদিন একটি নামবিহীন ই-মেল রিসিভ করেন। যাতে বলা ছিল, মাউন্ট ম্যাসিভ এ্যাসাইলামে কিছু অমানুষিক এক্সপেরিমেন্ট করা হচ্ছে। আর এই প্রাইভেট এ্যাসাইলাম এর মালিক হল, মারকফ কর্পোরেশন। এখন আপনার কাজ, পুরো এ্যাসাইলামটাকে এক্সপ্লোর করা। কিন্তু মাইলস যখন এ্যাসাইলাম এ পৌছায়, ঘটে গেছে বড়সড় একটা দূর্ঘটনা। সে দূর্ঘটনা, পুরো এ্যাসাইলাম এক্সপ্লোরেশন এ কোন ভূমিকা রেখেছিল কিনা কিংবা মাইলস এ্যাসাইলাম এর রিপোর্ট করতে পেরেছিল কিনা…একে ঘিরে আবর্তিত আউটলাস্ট-১ এর কাহিনী।
আউটলাস্ট-১ এর পথ ধরেই, ২০১৭ সালে রিলিজ পায় আউটলাস্ট-২। এখানে গেমার প্রতিনিধিত্ব করবেন ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিস্ট Blake Langermann এর। মারকফ কর্পোরেশন আবার এখানে ফিরে এসেছে, এবার তাদের এক্সপেরিমেন্ট তৈরি করেছে এক কাল্ট। স্ত্রী কে সাথে নিয়ে, এ্যারিজোনার মরুভূমিতে একটি মৃত্যু রহস্যের কিনারা করার জন্য ঘোরাঘুরি করছিল তারা। হেলিকপ্টার দূর্ঘটনার পর, তারা ধরা পড়ে সেই কাল্ট এর সদস্যদের হাতে। এই ঘটনাবলির উপর ভিত্তি করেই আউটলাস্ট-২ এর কাহিনী।
আউটলাস্ট-১ এর মতই, ফাউন্ড ফুটেজ কারেক্টারিস্টিকস ব্যবহার করে তৈরি হয়েছে আউটলাস্ট-২। কিছু স্ক্রিপ্টেড সিন ছাড়া, গেমার এখানে হোস্টাইল npc এর সাথে মারামারি করতে পারেন না।
তবে, আউটলাস্ট-২ তে গেমার ব্যবহার করতে পারবেন একটি অত্যাধুনিক ক্যামরেকর্ডার, যা দিয়ে তিনি ভাল ভিউ পাওয়া সহ, সেন্সেটিভ মাইক্রোফোন ব্যবহার করে দূর থেকে আসা পায়ের শব্দ শনাক্ত করতে পারবেন। এছাড়া যোগ করা হয়েছিল ইনভেন্টরি সিস্টেম, যা গেমারকে জানিয়ে দেবে, কয়টি ফুটেজ রেকর্ড করা হয়েছে।
সব জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে, আসতে চলেছে আউটলাস্টঃ ট্রায়ালস। এতদিন পর্যন্ত, আউটলাস্ট গেমটি ছিল সিঙ্গেল প্লেয়ার। কিন্তু এই প্রথমবার, ডেভেলপার রেড ব্যারেলস, মাল্টিপ্লেয়ার ব্যাপারটা নিয়ে এক্সপেরিমেন্ট করছে আউটলাস্ট টাইটেলে।
আউটলাস্টঃট্রায়ালস (Outlast:Trials) এর কাহিনী আবর্তিত হচ্ছে মারকফ কর্পোরেশনের আরেকটি এক্সপেরিমেন্ট কে কেন্দ্র করে। এবার, গেমার ফিরে যাচ্ছেন, Cold War বা ঠান্ডা যুদ্ধের সময়কালে। মারকফ কর্পোরেশন এক্সপেরিমেন্ট চালাচ্ছে মানব গিনিপিগদের উপর। তাদের উদ্দেশ্য, যাতে ব্রেইন ওয়াশ এবং মাইন্ড কনট্রোলের নতুন উপায় খুঁজে পাওয়া যায়।
প্রথমেই বলেছি, রেড ব্যারেলস মাল্টিপ্লেয়ার ব্যাপারটা নিয়ে এক্সপেরিমেন্ট করছে। এর অংশ হিসেবে, আউটলাস্টঃ ট্রায়ালস খেলা যাবে ৪ প্লেয়ার কো-অপ মোডে। অথবা, পুরো মিশনটা গেমার একাই খেলতে পারবেন।
অন্যসব আউটলাস্ট টাইটেলগুলোতে আমরা দেখেছি, গেমার একজন ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিস্ট এর ভূমিকায় থাকেন। এবার এর টাইটেলটি সম্পূর্ণ আলাদা, এই কারণে যে, গেমার এখন একজন টেস্ট সাবজেক্ট (বা প্রিজনার বললে খুব একটা ভুল হবে না)। প্রতিবার গেমারকে ইস্যু করা হবে ‘ট্রায়াল’। ট্রায়াল আসলে এক সেট চ্যালেঞ্জ, যা গেমারকে পূরণ করতে হবে।
একই সাথে, আউটলাস্ট এর ঐতিহ্য মেনে, হোস্টাইল মনস্টার NPC থাকছেই!
আউটলাস্ট ট্রায়ালস এ, গেমার এবার ব্যবহার করতে পারবেন নাইটভিশন গগলস। ব্যাটারিচালিত এই নাইটভিশন, প্রত্যেকবার রিচার্জ করে নিতে পারবেন। ইনভেন্টরি স্পেসও পরিবর্তন করা হয়েছে, ৩ আইটেম ইনভেন্টরি আউটলাস্ট ট্রায়ালস এ যোগ করা হয়েছে।
ফলে, ইনভেন্টরি ম্যানেজমেন্ট খুব ভালোভাবে ডিপেন্ড করবে গেমারের উপর, একই সাথে গেমে কি কি ঘটবে সেটাও ঠিক করে দেবে।
গেমস এ নতুন ভাবে নিয়ে আসা হয়েছে বিভিন্ন মড এবং পার্ক। এগুলো ব্যবহার করে, হোস্টাইল NPC এর মোকাবেলা করা যাবে। একই সাথে কাজ করা যাবে ইন্টেল গ্যাদারার হিসেবে।
প্রত্যেক ট্রায়ালের শেষে, কিংবা গেমে মারা গেলে, গেমার রি-স্পন হবেন একটি হাব এরিয়াতে। আউটলাস্ট ট্রায়ালস এর মজার ব্যাপার হল, এখানে গেমার প্রত্যেক ট্রায়াল এর শেষে পাওয়া লুট দিয়ে নিজেকে কাস্টমাইজ করতে পারবেন। এমনকি, প্লেয়ায় এর নিজস্ব সেলও রয়েছে এই গেমটিতে।
আউটলাস্ট ট্রায়ালস এর কথা ২০১৭ সালে ঘোষণা দেওয়া হয়, ২০১৯ সালে রেডব্যারেলস প্রথম এটাকে টিজ করে।
বর্তমানে, গেমটি আর্লি এ্যাক্সেস স্টেট এ রয়েছে। গেম স্টোর স্টিমে, আর্লি এ্যাক্সেস রিলিজ পাবে এই বছরের মে ১৯ এ।
দাম কেমন পড়বে, স্টোরি টেলিং কেমন হবে, সেটা জানতে অপেক্ষা করতে হবে সে সময় পর্যন্ত।
Outlast: Trials System requirements
Developer and Publisher: Red Barrels