Huawei Band 6 In depth Bangla Review

বর্তমানে ২০২২ সালে স্মার্ট ডিভাইসগুলো এতই বহুল ব্যবহৃত যে এখন রাস্তাঘাট বা ঘর যেখানেই বলুন না কেন ডিভাইস ছাড়া আমাদের মুহূর্ত কাটানো হইয়ে ওঠে মাঝেমধ্যে ঝামেলার। বর্তমানে হাতে পরিধানযোগ্য ঘড়ি অনেকটাই জনপ্রিয়তা পেয়েছে। ২০১৪-১৫ এর দিকে এগুলো তেমন জনপ্রিয় না হলেও আধুনিকতার ছোয়ায় এখনকার ফিটনেস ব্যান্ড গুলো ও হয়ে উঠেছে বৈশিষ্ট্যপূর্ণ ও আকর্ষণীয়। মি ব্যান্ড গুলো প্রথমে অনেক জনপ্রিয়তা অর্জন করলেও বর্তমানে বাজেট ফিটনেস ঘড়ির তালিকায় হুয়াওয়ে কোম্পানির নাম এসেছে। আজ কথা বলবো ২০২১ সালে বের হওয়া নতুন হুয়াওয়ে ব্যান্ড ৬ এ। সাথে থাকছি আমি নেজাদ।

বডি বিল্ড

বাইরের প্লাস্টিক বডি টি দেখলে যে কারোরই মনে হতে পারে এটি মেটালের, এটির মসৃণ ও দক্ষ ফিনিশিং এর কারণে মনে হওয়াটাই স্বাভাবিক। এছাড়া স্ট্র্যাপ টি সিলিকন স্ট্র্যাপ যা বেশ কয়েকটি কালারে এভেইলেবল রয়েছে। তাছাড়া মেইন বডি টিও কিছু কালারে এভেইলবল রয়েছে।

গ্রাফাইট ব্ল্যাক, ফরেস্ট গ্রিন, অ্যামবার সানরাইজ, সাকুরা পিঙ্ক এই চারটি কালারে পাওয়া যাবে ব্যান্ড টি তবে মেইন বডি টি শুধু গ্রাফাইট ব্ল্যাক এবং অ্যামবার সানরাইজ কালারেই পাওয়া যাবে। তাছাড়া এটির সিলিকন স্ট্র্যাপে পরিমাণমতো হোল দেয়া হয়েছে, তাই এটি যে কারো হাতে ফিট করবে। মেইন বডি টির ওজন ২৫ গ্রাম বলা হয়েছে হুয়াওয়ের ওয়েবসাইটে।

ডিসপ্লে

ডিসপ্লে হিসাবে থাকছে ১.৪৭ ইঞ্চি বেজেলহীন স্ক্রিন যার রেজুলেশ্যন ১৯৪x৩৬৮ এবং ২৮২ পিপিআই। মি ব্যান্ড এর সাথে তুলনা করলে এটির স্ক্রিন অনেক বড়, যা বেশি পরিমাণ ডাটা দেখতে সাহায্য করে।

এটির টাচ রিসপন্স ও আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে। রয়েছে রাত হলে অটোমেটিক ব্রাইটনেস কম হয়ে যাওয়ার সুবিধা। এটির আরেকটি বিষয় যেটি চোখে পড়ার মতো তা হলো এটির বাটন, এই ব্যান্ড এর আরেকটি ছোট ভাই ভার্শন অনর ব্যান্ড ৬ এও একই বাটন রয়েছে, দুটো ব্যান্ড দেখতে একই হওয়ায় আলাদা করার উপায় হলো অনর ব্যান্ড ৬ এর বাটনে একটি লাল দাগ রয়েছে যেটি হুয়াওয়ে ভার্শন এ নেই। এটির আরেকটি সুবিধা হলো আপনার হাত পিচ্ছিল অবস্থায় থাকলে অনেক সময় ডিসপ্লে কাজ নাও করতে পারে, তখন ওয়ার্কআউট শেষ করার কাজে দেবে বাটনটি, সুইমিং ওয়ার্কআউট এর ক্ষেত্রে এটিকে চেপে ধরে শেষ করতে হয়, অন্য ক্ষেত্রে এটি চেপে ওয়ার্কআউট টি পজ বা বিরতি দেয়া যায়।

সেন্সর

সেন্সর হিসাবে থাকছে ৬ এ্যাক্সিস আইএমইউ সেন্সর যেটি একসাথে এক্সেলেরোমিটার, যায়রোস্কোপ সেন্সর এর কাজ করতে পারে। তাছাড়া রয়েছে অপটিক্যাল হার্ট রেট সেন্সর, পিপিজি হার্ট রেট সেন্সর এবং একটি এস পি ও টু সেন্সর। যা ব্যান্ডের পিছন দিতে খুবই ডিউরেবল ট্র্যান্সপ্যারেন্ট শীট দিয়ে এটাচ করা হয়েছে। তাছাড়া হাতে পরিধান করা মাত্রই এটি কাজ করতে শুরু করে, পাইনি কোনো ডিলে বা ভুল তথ্য।
স্ট্রেস মনিটর এর ক্ষেত্রে অ্যাপ এ কিছু প্রশ্নের উত্তর দিয়ে ক্যালিব্রেট করার পর অটোমেটিক এটি স্ট্রেস মনিটর করে। তাছড়া ২৪ ঘন্টা হার্ট রেট মনিটরিং, রক্তে অক্সিজেন বা এস পি ও টু মনিটরিং প্রায়ই একুরেট ছিল। যদিও সকল তথ্য একুরেট নাও হতে পারে হাতে ট্যাটু বা একেক জনের হাতের কারণে, তাছাড়া কোম্পানি বলেই দিয়েছে এটি কোনো মেডিক্যাল ডিভাইস না হওয়ায় এটি ১০০% রেজাল্ট দিতে না পারলেও ৮০% রেজাল্ট দিতে পারে। তা ছাড়া আমি ১ ঘন্টার বেশি বেঞ্চে বা টেবিলে বা চেয়ারে বসে থাকলে এটি উঠে নড়াচড়া করার জন্য আমাকে ভাইব্রেশন দিয়েছে, কোনো স্পিকার না থাকলেও এটির ভাইব্রেশন ছিলো খুবই ভালো এবং রেসপন্সিভ।

অপারেটিং সিস্টেম এবং বৈশিষ্ট্য

হুয়াওয়ে ব্যান্ড ৬ “লাইট ও এস” যা ব্যবহার করা হয়েছে হুয়াওয়ে র দামি সকল পরিধানকারী বস্তুতে। তবে এটির সীমাবদ্ধতা হচ্ছে আপনি হুয়াওয়ে অনুমোদন ব্যতীত অন্য কোনো তৃতীয় পক্ষের সফটওয়্যার ব্যবহার করে এটিকে ম্যানেজ করতে পারবেন না। বলা হয় “লাইট ও এস” নিজশসো সাধারণ ও সহজ ইউজার ইন্টারফেস এর জন্য ভালো।

বৈশিষ্ট্য

হুয়াওয়ে ক্লেইম করেছে তাদের এই ব্যান্ড টিতে ৯৬ টি ওয়ার্কআউট মোড রয়েছে যা সত্যিই আমাকে অবাক করেছে। আমি প্রায় দেড় মাস কমন ওয়ার্কআউট গুলো ব্যবহার করেছি তার মধ্যে ছিলো আউটডোর রানিং, আউটডোর ওয়াক, ট্রেডমিল। তাছাড়া আরো অনেক প্রকারের ড্যান্স, ব্যায়াম উইজেট মেন্যু তে রয়েছে যা ইচ্ছা মত ফেভরেট লিস্টে রাখা যায়। তাছাড়া ওয়ার্কআউট  গুলোর রেকর্ড ও দেখা যায় তাছাড়া হুয়াওয়ে হেলথ অ্যাপ দিয়েও এগুলো দেখা যায় এবং মজার ব্যাপার হলো এতে আপনি টার্গেট পূরণ করলে মেডেল নিয়ে শো ডাউন করতে পারবেন, ওয়ার্কআউট এর জন্য বিখ্যাত গারমিন এর ব্যান্ড গুলোর সাথে তুলনা করলে এটির একুরেসি ও আমার কাছে ভালো লেগেছে, কমন ফিউচার গুলো ট্রাই করেছিলাম আমার বন্ধুর গারমিন ফররানার ২৩৫ যার রেজাল্ট ছিল প্রায় একই। তবে গারমিন এর মত আপনি এটায় বিল্ট ইন জিপিএস পাবেন না তবে নতুন কার্যকরী ফিউচার যেমন স্ট্রেস টেস্ট, এসপিও ২ পাবেন যা আপনি গারমিন ফররানার ২৩৫ এ পাবেন না। এটি কয়েক ধরণের ওয়ার্কআউট অটোমেটিক ডিটেক্ট করতে পারে। তাছাড়া থাকছে স্লিপ মনিটরিং উইথ হুয়াওয়ে ট্রু স্লিপ, যা আপনাকে কয়েক ধরণের স্লিপ মুভমেন্ট সাজেস্ট করবে ঘুমের জন্য বাট ঘুমন্ত অবস্থায় এটি একটু বেশি পাওয়ার কনজিউম করে


তাছাড়া পাবেন ব্রিথিং এক্সারসাইজ, মিউজিক কন্ট্রোলার, নটিফিকেশন ভিউয়ার, ওয়েদার, স্টপওয়াচ, টাইমার, অ্যালার্ম, ফোনে রিং দেয়া বা ফাইন্ড ফোন যেইটাই বলি না কেন। তাছাড়া রয়েছে ফ্ল্যাশলাইট তবে এটি তেমন কাজের নয় হালকা অন্ধকারে, এটি চালু করলে ডিসপ্লে ফুল ব্রাইটনেস নিয়ে সাদা হয়ে যায় যা অন্ধকারে ভালোই আলো বিচ্ছুরিত করে যা আপনাকে ইমারজেন্সি সময়ে সাহায্য করবে। তাছাড়া রয়েছে কল আসলে ডিকলাইন করার সুযোগ।

ফটো ক্রেডিটঃ ফিউচার

ব্যাটারি ব্যাকআপ

হুয়াওয়ে ক্লেইম করেছে তাদের এই ব্যান্ড সিংগেল চার্জ এ টানা ১৪ দিন চলবে আর যদি একটু বেশী ভারী ইউজ করেন তবে ১০ দিন চলবে। এতে ব্যবহার করা হয়েছে ১৮০ এম্পিয়ার এর লিথিয়াম ব্যাটারি। আমি এটি হেভি ইউজে ১০ দিনের মতনই ব্যাকয়াপ পেয়েছিলা, যদিও ৭ দিনই আমাদের জন্য অনেক এনাফ তবে এতো হাই ক্যাপাসিটি ব্যাকআপ এই ব্যান্ড টি কে চয়েজের তালিকায় রাখতে আপনাকে বাধ্য করবে। তাছাড়া এটিতে রয়েছে ম্যাগনেটিক চারজিং এর ব্যবস্থা যা ফাস্ট চার্জ করতে পারে, হুয়াওয়ে ক্লেইম করেছে মাত্র ৫ মিনিট চার্জ করে আপনি এটিকে টানা ৩ দিন ব্যবহার করতে পারবেন যা সত্যিই অবাক করা সুবিধা।

প্রাইস

বাংলাদেশে হুয়াওয়ে ব্যান্ড ৬ এভেইলেবল রয়েছে বেশ কয়েক প্রতিষ্ঠানের কাছে, আমি গ্যাজেট এন্ড গিয়ার থেকে এটি ৪৯৯৯ টাকায় কিনেছিলাম তবে এটির দাম আরো কিছুটা কম হওয়া উচিত ছিলো আমি মনে করি, আশা করা যায় সামনে এটির দাম আরো কমবে। তবে এর থেকে কিছু কম ফিউচার চাইলে হনর ব্যান্ড ৬ ইউজ করতে পারেন যা এর থেকে প্রায় ১ হাজার টাকা কমে এভেইলেবল রয়েছে ৩৩০০ টাকায় পেয়ে যাবেন অনার ব্যান্ড ৬।

সুবিধা

স্লিক এবং স্লিম ডিজাইনে স্মুথ ফিনিশিং হিসাবে দেখতে ভালো লাগে। তাছাড়া এই দামে স্ট্রেস টেস্ট, স্লিপ সাজেশন, এসপিও ২ মনিটরিং উন্নত কোয়ালিটির সেন্সর দিয়ে বিল্ড অন্য ব্যান্ড থেকে একে আলাদা করেছে। তাছাড়া আরো কিছু ফিউচার রয়েছে। এছাড়া এতে পাওয়া যাবে ১০০+ ওয়াচ ফেস যা মনকাড়তে সক্ষম হয়েছে আমার। তাছাড়া নিজের ইচ্ছামত গ্যালারি থেকে ছবি সিঙ্ক করেও সেট করা যায় ওয়ালপেপার, তাছাড়া বেশ কিছু ওয়াচ  ফেস এ রয়েছে শর্টকার্ট কাস্টমাইজ করার সুবিধা। এছাড়া দিনের বেলাতেও এটির ব্রাইটনেস ছিল খুবই উজ্জ্বল, এই দামে এমোলেড ডিসপ্লে খুবই  ইউনিক একটি ফিউচার। বেশ কয়েকটি কালার থাকায় চয়েজেও সমস্যা হয়নি

অসুবিধা

সব  কিছুর যেমন সুবিধা রয়েছে তেমনি রয়েছে অসুবিধাও। এই ব্যান্ড টিকে মাঝেমধ্যে ফোন এর সাথে পেয়ারিং এ ডিলে ইস্যু ফেস করতে হয়েছে আমাকে তবে সেটি বেশি পরিমাণে নয়। তাছাড়া অনেক ইউজার বলছেন যে  তারা নটিফিকেশন ডিলে প্রবলেম পেয়েছেন তবে আমি মিসড কল এর নটিফিকেশন গুলো ব্যান্ড এ ঠিকমতই দেখতে পেয়েছি। তাছাড়া এটির আরেকটি ইস্যু হতে পারে সুন্দর বাটন টি, ওয়ার্কআউট এন্ড করতে প্রেস করতে হয় বাটনটিকে, অনেকসময় দৌড়ানোর সময় এটি বাটন ক্লিক করে শেষ করা কিছুটা এনোয়িং হতে পারে, তবে হোল্ড টু রেইজ ছিল খুবই রেসপন্সিভ। তাছাড়া অসাবধানতায় হাত থেকে পড়ে গ্লাস এর এর কিছুটা কোণা ভেঙ্গে গিয়েছিল আমার, যদিও সেটা বেশি নোটিসেবল না তবুও সাবধানতার সাথে ব্যবহার করলে এমনটি হতো না আশা করছি।

সামগ্রিক অভিজ্ঞতা

এই দামে হুয়াওয়ে ব্যান্ড ৬ এর ফিউচার গুলো আমাকে অবাক করেছে এবং রিভিউ দেখার সাথে সাথে আমি এটিকে কিনে নেই, এখনও পাই নি মেজর কোনো ইস্যু, তবে ফিউচার হিসেবে বাজেট ফ্রেন্ডলি হিসেবে সব কিছুর পারফেকশন একসাথে আশা করা যায় না, সব কিছুরই কিছু ড্র ব্যাক রয়েছে। রিভিউটির ভুল ত্রুটি ক্ষমার চোখে দেখবেন, ধন্যবাদ।

Share This Article

Search
kampungbet kampungbet kampungbet toto slot link gacor kampungbet kampungbet kampungbet toto slot kampungbet link slot kampungbet kampungbet kampungbet situs toto situs togel situs slot rtp slot situs judi bola situs slot gacor link slot resmi slot gacor hari ini
toto togel monperatoto situs toto toto togel slot resmi toto togel bandar togel togel online bandar togel slot 4d toto slot toto slot