কম্পিউটার প্রসেসর এর বিভিন্ন স্পেসিফিকেশনস,টার্মস এর ব্যাখা জেনে নিন (পর্ব-২)

প্রথম পর্বে আমরা প্রসেসরের জেনারেশন,প্রসেস সাইজ, আর্কিটেকচার, কোর,থ্রেড,ক্লক স্পিড,টিডিপি ও ক্যাশ মেমোরি নিয়ে আলোচনা করেছি। আজ দ্বিতীয় পর্বে থাকছে PCIe,Locked,Unlocked,Overclocking,প্রসেসর এর নামকরণ,নামের শেষে বিভিন্ন অক্ষরের অর্থ,বিভিন্ন মডেলের ব্যাখা ইত্যাদি বিষয়ে।

প্রথম পর্বের লিংক

PCIe

PCIe হচ্ছে মুলত একটা ইন্টারফেস যা হাই স্পিড ইনপুট আউটপুট ডিভাইস কানেক্ট করার ক্ষেত্রে ব্যবহার হয়ে থাকে। PCIe এর পুর্ণ রুপ হচ্ছে peripheral component interconnect express । এই PCIe ইন্টারফেস ব্যবহার করা ডিভাইসগুলোর উদাহরণ হচ্ছেঃ গ্রাফিক্স কার্ড,সাউন্ড কার্ড,নেটওয়ার্ক ইন্টারফেস কার্ড,ক্যাপচার কার্ড, NVMe এসএসডি ইত্যাদি।

পিসিতে প্রসেসর এর সাথে সবগুলো ডিভাইস এরই কানেকশন/Link থাকতে হয়, এই পিসিআই ই ডিভাইস গুলোও এর ব্যতিক্রম নয়। আমরা মাদারবোর্ড গুলোতে এজন্য বেশ অনেকগুলো PCIe স্লট দেখতে পাই। একটি PCIe ডিভাইস এর স্পিড নির্ভর করে মুলত

  • এটা কোন জেনারেশনের ইন্টারফেস সাপোর্টেড,
  • কোন জেনারেশন এর PCIe Interface স্লটে কানেক্ট করা হয়েছে
  • ও এর সাপোর্ট কৃত লেন সংখ্যা
  • একই সাথে মাদারবোর্ডে এর জন্য বরাদ্দকৃত লেন সংখ্যা।

জেনারেশন অনুযায়ী অপারেটিং স্পিড বৃদ্ধি পায় ডিভাইস গুলোর। একই লেন এ তখন অনেক বেশি স্পিডে অপারেট করতে পারে/ডাটা আদান প্রদান করতে পারে ডিভাইস গুলো।একই সাথে, একই জেনারেশন এ লেন সংখ্যা বৃদ্ধি পেলেও স্পিড বৃদ্ধি পায়। PCIe x1,x2,x4,x8,x16 এগুলো হচ্ছে লেন সংখ্যা। PCIe 3×16 বলতে বোঝায় যে ডিভাইসটি PCIe Gen3 ইন্টারফেস সাপোর্টেড ও সর্বোচ্চ ১৬ লেন জুড়ে অপারেট করতে পারে। অর্থাৎ মাদারবোর্ডে কানেক্ট করলে এটি সর্বোচ্চ ১৬টি লেন ব্যবহার করবে।লেন বৃদ্ধি পাওয়া মানে একই সাথে বেশি ডাটা যাতায়াত করতে পারে।

PCIe3x8 দ্বারা বোঝায় এটি 3rd Gen PCIe ডিভাইস এবং সর্বোচ্চ ৮টি লেন সাপোর্ট করে। আমরা উপরের দুটি স্পেকস GPU গুলোতে দেখে থাকি, PCIe 3×4, PCIe4x4 দেখে থাকি NVMe এসএসডির ক্ষেত্রে।জেনারেশন ও লেন অনুযায়ী PCIe ডিভাইসগুলো কত স্পিডে রান করতে পারে তার একটি লিস্ট উইকিপিডিয়াতে রয়েছে। এই লিস্টটি আমি নিচে দিয়ে দিচ্ছি। এখান থেকে আমাদের ডিভাইসগুলো কত স্পিডে রান করতে পারে (ডাটা আদান প্রদান করতে পারে) তার ধারণা পেতে পারি আমরা।

এখন আসা যাক প্রসেসর এর সাথে PCIe Term,PCIe Devices এর কি সম্পর্ক।

র‍্যাম,ওয়াইফাই স্টান্ডার্ড,ব্লুটুথ এর মত PCIe এর জেনারেশন ও প্রসেসর দ্বারা সরাসরি সাপোর্টেড হতে হয়। কারণ এই ডিভাইসগুলো স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে না, যেহেতু এগুলো কম্পিউটারের অংশ, তাই প্রসেসর এর সাথেই এদের Link থাকতে হয়। একটি PCIe xGen সাপোর্টেড ডিভাইস কে চালাতে হলে সেই পিসিআই ই স্টান্ডার্ড আগে প্রসেসর দ্বারা সাপোর্টেড হতে হবে। এজন্য আমরা প্রসেসর এর স্পেসিফিকেশন এ PCIe Express জেনারেশন সাপোর্ট হিসেবে 3,4 দেখতে পাই।PCIe3 মানে 3rd Gen পিসিআই ই সাপোর্ট করে, PCIe4 লেখা থাকলে  4th Gen।

একই সাথে বরাদ্দ থাকে কিছু লেনস। যেমন ২৫টা লেন। দেখা যায় যে এর মধ্যে ৫টি লেন PCIe NVMe স্টোরেজ এর জন্য দেওয়া। বাকি গুলো গ্রাফিক্স কার্ড বা অন্যান্য স্লটের জন্য,অর্থাত বাকি ২০ টি লেন Graphics card এক্সেস করতে পারবে।

 

এখন আসা যাক সাপোর্ট করা না করার ব্যাপারটি নিয়ে। ধরি আমাদের প্রসেসরটি PCIe3 ইন্টারফেস সাপোর্টেড। এর জন্য পর্যাপ্ত লেন রয়েছে (২০টি ধরি, গ্রাফিক্স কার্ডগুলো ১৬ লেন ই এখন পর্যন্ত ব্যবহার করে আসছে,সচরাচর এর বেশি পাওয়া যায় না)। এখন যেহেতু আমাদের প্রসেসর PCIe4 এর গ্রাফিক্স কার্ড বা ডিভাইস সাপোর্ট করে না, এজন্য এই ডিভাইস এর ফুল স্পিড /ফুল পটেনশিয়াল আমরা পাব না।অন্য কথায়, এই ডিভাইসটি PCIe4 এর ফুল স্পিডে রান করবে না, PCIe স্লট গুলো ব্যাকওয়ার্ড কম্পাটিবল, অর্থাৎ  4th gen এ 3rd gen এর ডিভাইস চলে, আবার 3rd Gen এ 4th gen এর ডিভাইস চলে। এক্ষেত্রে এই প্রসেসরে গ্রাফিক্স কার্ডটি PCIe3 এর x16 লেনে যে স্পিড,সেই স্পিডে চলবে। PCIe4 এর স্পিড সে পাবে না।

সুতরাং এরকম প্রসেসরে আমরা যদি RTX 3060 বা 30 Series এর অন্যান্য GPU যদি কানেক্ট করি,তাহলে আমরা সামান্য কম এফপিএস পাব। (এটা গেম থেকে গেম পরিবর্তিত হয় ও রেজুলুশন ভেদেও পার্থক্য কম বেশি হয়)।

আবার এই প্রসেসরে যদি আমরা PCIe Gen4 এসএসডি চালাতে চাই, সেখানেও সম্পুর্ণ স্পিড পাব না।

তবে, উপরের কেসটি যদি উলটা হয়, অর্থাৎ PCIe4 সাপোর্ট করা প্রসেসরে PCIe3 এর ডিভাইস যদি কানেক্ট করি। তা অবশ্য তার সর্বোচ্চ স্পিডেই চলবে,অর্থাত PCIe3 এর স্পিডে।

locked/unlocked,Overclock:

পুর্বে আমরা যে ক্লক স্পিড সম্পর্কে আলোচনা করেছি। সেখানে একটি সর্বোচ্চ স্পিড বা বুস্ট ক্লক ছিল। ভোল্টেজ টুইক করে সেই স্পিড আরো কিছুটা বাড়িয়ে প্রসেসর এর পারফর্মেন্স আরো বৃদ্ধি করার  প্রক্রিয়াকেই বলা হয় Overclockng বা ওভারক্লক করা। আর যেহেতু এখানে প্রসেসর এর স্বাভাবিক বুস্ট ক্লক কে আরো বৃদ্ধি করা হচ্ছে, এজন্য এই প্রসেসে প্রসেসরটি স্বাভাবিক এর তুলনায় অনেক বেশি গরম হয়। এক্ষেত্রে, ওভারক্লকিং এর জন্য স্বাভাবিক এর তুলনায় ভালো মানের কুলিং সলুশন এর দরকার হয় একে ঠান্ডা রাখার জন্য ও স্টেবল রাখার জন্য।

ওভারক্লক করলে পারফর্মেন্স এর পাশাপাশি পাওয়ার কনসাম্পশন ও আরো বৃদ্ধি পায়।

আর যেহেতু এখানে প্রসেসরকে বেশি পাওয়ার সরবরাহ করার প্রয়োজন হয়, এজন্য ওভারক্লক করার জন্য মাদারবোর্ড এর VRM কোয়ালিটি ভালো হতে হয় যাতে এগুলো খুবই রেগুলার পর্যাপ্ত পাওয়ার সরবরাহ করতে পারে কোনো রকমের থার্মাল থ্রটলিং ছাড়া।এখানে ভোল্টেজ এর সাথে সাথে আস্তে আস্তে ক্লক স্পিড বাড়াতে হয়।

এক কথায় যে প্রসেসে ম্যানুফ্যাকচারার এর পরামর্শকৃত সর্বোচ্চ স্পিডের থেকেও বেশি স্পিডে প্রসেসরকে চালানো হয় তাকে ওভারক্লকিং বলে।

Locked Processor কাকে বলে?

যে প্রসেসর এর ক্লক মাল্টিপ্লায়ার লক করা, অর্থাৎ যেটির ক্লক স্পিড ম্যানুয়ালি ওভারক্লক করে সহজেই বাড়ানো যায় না তাকে লকড প্রসেসর বলে। ইন্টেলের মতে, যেই প্রসেসর এর ক্লক সেটিংস “Custom Tuning” করা যায় না তাকে লকড প্রসেসর বলে। এই ধরনের প্রসেসরগুলো মুলত ওভারক্লকিং সাপোর্ট করে না ও ইউজার যাতে এগুলোকে ওভারক্লক না করতে পারে ,সেজন্যই এগুলোকে লক করে দেওয়া হয়।

অন্যদিকে, যে প্রসেসর এর ক্লক মাল্টিপ্লায়ার আনলক করা থাকে ও সেটি এডজাস্ট করে খুব সহজেই সেটা (প্রপার মাদারবোর্ড,চিপসেটে কানেক্ট করে) ওভারক্লক করে স্পিড আরো বাড়িয়ে নেওয়া যায় তাকে আনলকড প্রসেসর বলে। ইন্টেলের মতে, যেই প্রসেসর এর ক্লক সেটিংস “Custom tuning:” করা যায় তাকে আনলকড প্রসেসর বলে।

ভালো মানের মাদারবোর্ড,কুলিং সলুশন থাকা সাপেক্ষে ও পর্যাপ্ত Stable, Uninterrupted Power delivery নিশ্চিত হওয়া সাপেক্ষে এসব প্রসেসর এর বুস্ট ক্লক স্পিড অনেক দূর পর্যন্ত বাড়িয়ে নেওয়া যায়।

ইন্টেলের যে সমস্ত প্রসেসর এর নামের শেষে K থাকে, সেগুলো আনলকড প্রসেসর। অর্থাৎ ইন্টেলের নামের শেষে K সম্বলিত প্রসেসর গুলো আনলকড প্রসেসর। AMD এর ক্ষেত্রে অবশ্য প্রায় সবগুলো Ryzen প্রসেসরই Unlocked। রাইজেন প্রসেসরগুলো Unlocked কি না তা সরাসরি লেখা থাকে অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে সংশ্লিষ্ট প্রসেসর এর স্পেসিফিকেশনে ।

সকেট,চিপসেট (socket, chipsets)

মাদারবোর্ডের যে সকেটটি প্রসেসরের সাথে কানেক্ট করার জন্য বা প্রসেসর ইন্সটল করার জন্য মাদারবোর্ডে লাগানো থাকে তাকে সিপিইউ সকেট বলে। সাধারণত সকেটে পিন থাকে যা প্রসেসর এর সাথে যুক্ত হয়, তবে Ryzen এর AM4 প্লাটফর্মে পিন প্রসেসরের সাথেই থাকে, মাদারবোর্ডের সকেটে থাকে না।

এই সকেট সোল্ডার করা থাকে না,ফলে সহজেই রিপ্লেস করা যায়। প্রতিটি সিরিজ বা জেনারেশন এর প্রসেসর যে সকেটের সাথে কম্প্যাটিবল ,তার একটি নাম থাকে, যেমন LGA1151,LGA 1700,LGA 2066,AM4,AM5। সহজ কথায় মাদারবোর্ডের প্রসেসর লাগানোর স্লট কেই সকেট বলা হয়ে থাকে।

আরেকটি গুরুত্বপুর্ণ বিষয় সম্পর্কে আমাদের জানা উচিত, সেটা হচ্ছে চিপসেট। চিপসেট জিনিসটা কি? চিপসেট হচ্ছে একটা মাদারবোর্ডে উপস্থিত কতগুলো চিপ বা আইসির সমষ্টি যা একত্রে প্রসেসর এর সাথে মাদারবোর্ড এ কানেক্ট হওয়া সকল ডিভাইস এর Communication নিশ্চিত করে,অর্থাৎ যার মাধ্যমে প্রসেসর এর সাথে মাদারবোর্ড এর অন্যান্য স্লটে উপস্থিত বিভিন্ন ধরনের PCIe Device,Peripherals,Memory,Storage যুক্ত হয় তাকেই চিপসেট বলে।

একটা সময়ে চিপসেট দুটি ভাগে বিভক্ত ছিল ,সাউথব্রিজ ও নর্থ ব্রিজ। নর্থব্রিজে PCIe,Memory,Processor যুক্ত থাকতো, সাউথব্রিজে লো স্পিড কম্পোনেন্ট যেমন অডিও জ্যাক,ইথারনেট,ইউএসবি,হার্ড ড্রাইভ এগুলো সংযুক্ত থাকতো। আধুনিকযুগে  নর্থব্রিজ এর কাজ প্রসেসর নিজেই করে নেয়, শুধুমাত্র সাউথব্রিজ স্টাইল চিপে বাকি সবগুলো একত্রিত করা হয়।

চিপসেট তৈরী করে AMD,Intel ।এগুলো নিজেদের মাদারবোর্ডে সংযুক্ত করে Subvendor বা AIB পার্টনার গুলো , যেমন ASUS,GIGABYTE,BIOSTAR,MSI,NZXT,SOYO,Colorful ইত্যাদি।

আমরা মাদারবোর্ডের মডেল হিসেবে যে B450,B550,B460,B560,X470,X570,Z490,Z590 ইত্যাদি দেখি এগুলো মুলত চিপসেট এর নাম। একই জেনারেশনে বা প্লাটফর্মে AMD বা Intel বিভিন্ন লেভেল বা ক্যাটাগরির বিভিন্ন বাজেটের চিপসেট তৈরী/ডিজাইন করে থাকে। যেমন H510,410,610, A520,A320 চিপসেট গুলো এন্ট্রি লেভেলের হয়ে থাকে। B450,550,460,560 ইত্যাদি চিপসেটগুলো মোটামুটি মিডরেঞ্জ বা মিড বাজেট এর মাদারবোর্ডগুলোর জন্য হয়ে থাকে (যদিও এগুলোর ও ফ্লাগশিপ লেভেলের মাদারবোর্ড তৈরী করে AIB Partner গুলো)।

আবার সবথেকে এডভান্স চিপসেট লাইনআপ হিসেবে আমরা X570,X470,Z490,Z590 ,অর্থাৎ 70,90 লাইনআপগুলোর উদাহরণ দিতে পারি। অর্থাৎ, মোটামুটি মেইনস্ট্রিম/এন্ট্রি লেভেল,বাজেট ও এনথুসিয়াস্ট গ্রেড, এই ৩ ক্যাটাগরির চিপসেট প্রস্তুত করা হয় প্রতি জেনারেশনে।

কতগুলো র‍্যাম স্লট থাকবে, কত জিবি র‍্যাম সাপোর্ট করবে,কতগুলো ইউএসবি পোর্ট থাকবে,কতগুলো M.2 Slot থাকবে, একাধিক গ্রাফিক্স কার্ড ব্যবহার করা যাবে কি না, ওভারক্লকিং করা যাবে কি না, কতগুলো PCIe Lanes রয়েছে সেগুলো চিপসেট দ্বারাই নির্ধারিত হয়। এগুলো মাদারবোর্ড ব্রান্ডগুলো বৃদ্ধি করতে পারে না বা উন্নত করতে পারে না। সুতরাং একটি মাদারবোর্ডে তার যে চিপসেট রয়েছে, সেই চিপসেট সাপোর্ট করা ফিচারগুলোই কেবল সেই মাদারবোর্ডে ব্রান্ড গুলো যুক্ত করে থাকে।

নামের শেষের বিভিন্ন suffix এর ব্যাখা, K,G,X,F,H,T,HX,U দিয়ে কি বোঝায়,APU,CPU এর ব্যাখাঃ

প্রসেসর এর নামের সাথে আমরা বিভিন্ন অক্ষর দেখতে পাই যেমন G,X,F,H,T,HX ইত্যাদি। এগুলো কিন্ত এমনি এমনি দেওয়া হয় না, বরং প্রত্যেকটিরই একটি গুরুত্বপুর্ণ অর্থ থাকে যা অন্যান্য মডেল,ভ্যারিয়েন্ট বা ভার্সন থেকে সেটাকে আলাদা করে ও একটি স্বতন্ত্র পরিচয় দান করে।চলুন এক এক করে দেখি।

নামের শেষে G,F:

এটা AMD প্রসেসর গুলোর ক্ষেত্রে দেখা যায় প্রায়ই। মনে রাখতে হবে, Ryzen 1000 থেকে 5000 সিরিজ পর্যন্ত AMD সবগুলো প্রসেসর এ Internal Graphics বা Integrated Graphics দিত না। যে সমস্ত প্রসেসর এর সাথে ইন্টারনাল গ্রাফিক্স থাকে সেগুলোর নাম এর শেষে G দ্বারা পৃথক করা হয় ও সেগুলোকে processors With AMD Radeon Graphics নামের একটি লাইনআপে রাখা হয় যেগুলোকে অনেক সময় APU বা Accelerated Processing Unit বলা হয়ে থাকে। যেমন Ryzen 3 3200G,2200G, Ryzen 5 2400G, Ryzen 5 3400G, Ryzen 7 5700G,4700G ইত্যাদি।

AMD এর 1000-5000 সিরিজের যে প্রসেসরগুলোর নামের শেষে G  থাকে না সেগুলোতে কোনো internal GPU ইউনিট থাকে না ,সেগুলো দিয়ে বিল্ড করা সিস্টেমে অবশ্যই ডিসপ্লে আউটপুট পাওয়ার জন্য,স্ক্রিনে কিছু দেখার জন্য ,চালু করার জন্য আলাদা গ্রাফিক্স কার্ডের প্রয়োজন হয়। যেমন Ryzen 5 3600,3700x,3900x,5600x,5800x,1600,1800x ইত্যাদি।

এ তো গেলো AMD এর কথা, Intel এর ক্ষেত্রে আবার যেসব প্রসেসরের সাথে কোনো iGPU বা ইন্টারনাল গ্রাফিক্স নাই,অবশ্যই ডেডিকেটেড গ্রাফিক্স কার্ড লাগানো লাগবে,সে সমস্ত প্রসেসরের নামকরণ আলাদা ভাবে করা হয়। এক্ষেত্রে ,ইন্টেল এসব প্রসেসরের নামের শেষে F অক্ষরটি যুক্ত করে। অর্থাৎ যেসব প্রসেসরের নামের শেষে আমরা F দেখতে পাবো,সেগুলোর ক্ষেত্রে বুঝতে হবে যে অবশ্যই আমাদের আলাদা গ্রাফিক্স কার্ড অবশ্যই লাগবে এই প্রসেসর এর পিসি চালানোর ক্ষেত্রে। যেমন 10100f.11400f,10400f,9400f,12400f,12600kf,11600kf ইত্যাদি।

নামের শেষে X,K

আমরা উপরে ওভারক্লকিং এর ব্যাপারে,আনলকড/লকড প্রসেসর এর ব্যাপারে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। ইন্টেলের যে সমস্ত প্রসেসর আনলকড,অর্থাত ওভারক্লক করা যায়,সেগুলোকে ইন্টেল নামের শেষে K দ্বারা হাইলাইট করে থাকে।যেমন 10600k,11600k,11700k,12900k,9900k,12600k ইত্যাদি।

আর AMD এর ক্ষেত্রে সমসংখ্যক কোর থ্রেড,প্রায় একই স্পেসিফিকেশনের একটি প্রসেসরেরই একটু Enhanced,powerful/extended ভার্সনকে আলাদা করা হয় নামের শেষের X দিয়ে।

এগুলোর ক্ষেত্রে দেখা যায় (Non-x এর সাপেক্ষে),

  • কোর থ্রেড সংখ্যা একই থাকে্‌,
  • লেভেল থ্রি ক্যাশ এর পরিমাণ একই থাকে,
  • Supported PCIe Gen ও একই থাকে,
  • কিছু ক্ষেত্রে TDP একই থাকে,অথবা বেশি থাকে
  • বেস ক্লক স্পিড ও বুস্ট ক্লক স্পিড ২০০-৪০০ মেগাহার্জ পর্যন্ত বেশি থাকে।

নামের শেষে H, U

AMD ও Intel এর U সিরিজের প্রসেসর গুলো মুলত ল্যাপটপ এর জন্য ও OEM এর জন্য। এগুলোকে ব্যাটারি সেভ করে বেশি সময় ব্যাকআপ দেওয়ার জন্য মুলত তৈরী করা হয়ে থাকে। অর্থাৎ পাওয়ার সেভিং,পাওয়ার এফিশিয়েন্ট প্রসেসর গুলো মুলত U সিরিজ বা লাইনআপে থাকে। যেমন Ryzen 5 5500U,5600U,3500U,  i7-10610U, i7-10710U, i5-1245U, i5-1240U, i5-1235U ইত্যাদি। এগুলোর পারফর্মেন্স খুব বেশি ভালো হয় না কারণ এগুলো ডিজাইন ই করা হয়ে থাকে রেগুলার টাস্ক যেমন অফিস ওয়ার্ক,ব্রাউজিং,কনটেন্ট ওয়াচিং,কোডিং এসব এর জন্য।ভারি ভারি কাজ যেমন গ্রাফিক্স ডিজাইন,ভিডিও এডিটিং,গেমিং এর জন্য এগুলো মোটেও মানানসই না।কম পাওয়ার ইউজ করার জন্য এগুলোর টিডিপি ও কম হয়ে থাকে।

একইভাবে, H সিরিজের প্রসেসর ও ল্যাপটপগুলোতে দেখা যায় , নামের শেষে H যেমন Ryzen™ 5 4600H, Ryzen™ 7 4800H, Ryzen 5 6600H, Ryzen 7 6800H, AMD Ryzen™ 5 5600H, Ryzen™ 7 5800H কিংবা ইন্টেলের i7-12700H, i7-12800H, i5-12500H, i5-11400H ইত্যাদি। এগুলোর ক্লক স্পিড,টিডিপি বেশি হয়ে থাকে ও এগুলোকে হাই পারফর্মেন্স লাইনআপ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। হেইভি ওয়ার্কলোড যেমন ভিডিও এডিটিং,গ্রাফিক্স ডিজাইন,গেমিং এর জন্য এগুলো মানানসই। এগুলো বেশি পাওয়ার ব্যবহার করে ,ফলে ব্যাটারি ব্যাকআপ U সিরিজের মত বেশি ভালো নয়।

নামের শেষে HX,T,P

ইন্টেলের ল্যাপটপ প্রসেসর লাইনআপে H আর U সিরিজের মাঝামাঝি যে সিরিজটি থাকে সেটা হচ্ছে P। এটা Thin And Light ল্যাপটপগুলোতে ব্যবহার করা হয় । P সিরিজ মুলত Thin and light performance Lineup যেটার TDP H,U সিরিজের মাঝামাঝি থাকে।

ইন্টেলের T সিরিজ বা T লাইনআপ ও রয়েছে যেটা মুলত ডেস্কটপের প্রসেসর গুলোর পাওয়ার সেভিং বা পাওয়ার এফিশিয়েন্ট লাইনআপ হিসেবে রিলিজ করা হয়। এগুলোর TDP থাকে কম, Clock Speed ও কম থাকে অনেক সময়।

H বা হাই পারফর্মেন্স প্রসেসরগুলোরই আরো পাওয়ারফুল সংস্করণ হচ্ছে HX। এগুলোতে ক্লক স্পিড আরো বেশি দেওয়া হয়ে থাকে ।কিছু ক্ষেত্রে ক্যাশ মেমোরি,কোর থ্রেড ও আরো কিছুটা বেশি থাকতে পারে। পাওয়ার কনসাম্পশন ও অবধারিত ভাবে বেশি হয়।

নিচের টেবিল ও ছবি থেকে আরো কিছু তথ্য আপনারা জানতে পারেনঃ

Suffix Meaning
G1-G7 Graphics level (processors with new integrated graphics technology only)
E Embedded
F Requires discrete graphics
G Includes discrete graphics on package
H High performance optimized for mobile
HK High performance optimized for mobile, unlocked
HQ High performance optimized for mobile, quad core
K Unlocked
S Special edition
T Power-optimized lifestyle
U Mobile power efficient
Y Mobile extremely low power
X/XE Unlocked, High End
B Ball Grid Array (BGA)

 

প্রসেসর এর  ব্রান্ড,মডেল,বিভিন্ন জেনারেশন, সিরিজ,ফ্যামিলির ব্যাখা,understanding names of Processor(Processor Naming: Ryzen 3,5,7, Core i5,i5,i7)

লেখার এ পর্যায়ে আমরা সরাসরি কিছু প্রসেসর এর জেনারেশন,ফ্যামিলি,ভ্যারিয়েন্ট  নিয়ে বিস্তারিত ব্যাখা সহ আলোচনা করবো ও তারপর কয়েকটি উদাহরণ দেখবো।

প্রথমে ইন্টেলের Core, Pentium, Celeron ইত্যাদি শব্দগুলোর একটু ব্যাখা করা যেতে পারে। প্রতিটি জেনারেশনেই ইন্টেল বিভিন্ন কোয়ালিটি চিপ দিয়ে প্রসেসর তৈরী করে থাকে যেগুলোর শক্তি,পারফর্মেন্স,সক্ষমতাও ভিন্ন ভিন্ন হয়। এগুলোর ভিত্তিতে সেগুলোর স্পেসিফিকেশন ও হয়ে থাকে ভিন্ন ভিন্ন। মোটা দাগে সাধারণ ক্রেতাদের জন্য ইন্টেল এই প্রসেসরগুলোকে ৩টি প্রধান ভাগে ভাগ করে থাকে যেগুলোকে আমরা Intel® Core™, Intel® Pentium®, and Intel® Celeron® নামে চিনি।  ইন্টেল নিজেদের ভাষায় “Brand” এগুলোকে । খেয়াল করে দেখুন এখানে ট্রেডমার্ক চিহ্ন বা ব্রান্ডিং এর চিহ্ন রয়েছে।

Celeron আর Pentium সিরিজ বা ফ্যামিলি মুলত কম পাওয়ারফুল, লো এন্ড বা এন্ট্রি লেভেলের প্রসেসরগুলো নিয়ে সাজানো হয়। এগুলোর কোর থ্রেডের সংখ্যা,ক্লক স্পিড,টিডিপি,ক্যাশ মেমোরি সবকিছুই Core ফ্যামিলির প্রসেসরগুলোর থেকে কম থাকে। ফিচার ও থাকে একদমই বেসিক। যদিও এই Pentium,Celeron প্রসেসরগুলোর মধ্যেও রয়েছে পার্থক্য, এগুলোর ও রয়েছে স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট ,এই বৈশিষ্ট্য গুলো ধরে রেখেই প্রসেসরগুলোকে সেলেরন,পেন্টিয়াম ফ্যামিলিতে পৃথক করে ইন্টেল।এই প্রসেসরগুলোর দাম ও হয়ে থাকে অনেক কম। সেলেরন থেকে পেন্টিয়াম প্রসেসরগুলো কিছুটা বেশি ভালো হয়ে থাকে ও স্পেসিফিকেশন ও কিছুটা ভালো হয়ে থাকে এগুলোর।

অর্থাৎ আমরা যেটাকে ফ্যামিলি বা ক্যাটাগরি বলছি ,সেই Core/Pentium বা Celeron এক একটা ব্রান্ড।

ইন্টেল তাদের মেইনস্ট্রিম প্রসেসরগুলোকে যে ফ্যামিলিতে অন্তর্ভুক্ত করে সেটা হচ্ছে Core। এই Core Brand কে পারফর্মেন্স ও স্পেসিফিকেশন অনুসারে আরো কয়েকটি সাবক্যাটাগরিতে ভাগ করা হয় যেগুলোকে Brand Modifier বলে। এই ক্যাটাগরি কে আমরা i3,i5,i7 ও i9 নামে চিনি।

কোর ব্রান্ডের প্রতিটি জেনারেশনের প্রসেসরগুলোর মধ্যে সবথেকে দুর্বল পারফর্মেন্স ও স্পেসিফিকেশন নিয়ে আসে যে প্রসেসরগুলো,সেগুলোকে i3 ব্রান্ড মডিফায়ার বা সাবক্যাটাগরিতে রাখা হয়।

বর্তমানে 12th gen পর্যন্ত i3 এর সর্বোচ্চ কোর সংখ্যা ছিল ৪টি ও তার সাথে দেওয়া হতো সর্বোচ্চ ৮টি থ্রেড। হাইব্রিড আর্কিটেকচারের মত বিষয়গুলো i3 এর প্রসেসরগুলোতে থাকে না। এগুলোর Level 3 cache,TDP. Boost clock সবকিছুই থাকে কম কম।এগুলোর দাম ও ১০০ডলারের আশেপাশে রাখা হয়।

160/170 ডলার থেকে শুরু করে ২৫০-২৭০ডলার এর রেঞ্জে যে প্রসেসরগুলো থাকে ,সেগুলোর স্পেসিফিকেশন যেমন i3 থেকে অনেকটাই ভালো হয়, পারফর্মেন্সেও থাকে বিশাল পার্থক্য। এই i5 সাবক্যাটাগরিতে ৩/৪টি মডেল এর প্রসেসর থাকে যেগুলোর মধ্যেও আবার স্পেসিফিকেশন এর পার্থক্য থাকে।। সেই সাথে এগুলোর পারফর্মেন্স ও হয় ভিন্ন ভিন্ন। বলা বাহুল্য,এগুলোর দাম ও হয়ে থাকে ভিন্ন ভিন্ন।

I5 10400/f,11400,11500,12400,12500,12600,12600k ইত্যাদি হচ্ছে কিছু i5 প্রসেসর এর উদাহরণ।

13th gen আসার আগ পর্যন্ত i5 সাবব্রান্ডে সর্বোচ্চ ১০ কোর ও ১৬ থ্রেডের প্রসেসর দেখা গিয়েছে (12600k)। xx600k কে সবসময়ই i5 সাবব্রান্ডের সবথেকে দামি ও সবথেকে পাওয়ারফুল প্রসেসর হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ক্যাশ মেমোরি,বুস্ট ক্লক সবকিছুই i3 থেকে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বেশি থাকে এগুলোতে।

একই ভাবে এরকম আরো দুটি সাবক্যাটাগরিতে i5 এর থেকেও পাওয়ারফুল্, উৎকৃষ্ট প্রসেসরগুলোকে রাখা হয়। যেগুলোকে i7, i9 বলা হয়। এগুলোর দাম ৩০০ ডলার থেকে ৬০০-৭০০ ডলার পর্যন্ত ও হয়ে থাকে।

৮,১০,১২,১৬,২০বা তার থেকেও বেশি কোর থাকে এসব প্রসেসরে, হাইব্রিড আর্কিটেকচার এর ব্যবহার করা হয়, টিডিপি,ক্যাশ মেমোরি সবকিছুই থাকে i5 প্রসেসরগুলোর থেকে বেশি।

দেখা যায় যে একটি জেনারেশনের core i3 আগের জেনারেশনের i5 এর কোনো একটি মডেল এর সমান বা তার থেকে বেশি ভালো পারফর্মেন্স দিচ্ছে। একইভাবে দেখা যায় কোনো একটি i5 প্রসেসর আগের জেনারেশন এর i7 এর কাছাকাছি /সমান বা তার থেকেও ভালো পারফর্ম করছে বা তার ও আগের জেনারেশনের core i9 প্রসেসর এর থেকেও ভালো পারফর্ম করছে। এটাই প্রকৃতপক্ষে এই নতুন জেনারেশনটির সাফল্য।

এবার কয়েকটি প্রসেসর মডেল বা নাম নিয়ে আলোচনা করা যাক এর কোন অংশ কি বোঝাচ্ছে।

যেমন Core i5 10600kf ।

এখানে i5 দিয়ে ব্রান্ড মডিফায়ার বা সাবক্যাটাগরি/Tier বোঝানো হচ্ছে। 10, অর্থাৎ প্রথম দুটি সংখ্যা দ্বারা জেনারেশন এর দিকে ইংগিত করা হচ্ছে। অর্থাৎ এটি একটি 10th generation এর প্রসেসর। 600 দ্বারা SKU বোঝানো হচ্ছে। SKU এর অর্থ হচ্ছে Stock-Keeping Unit. তবে এটাকে আমরা একটা ইউনিক ,নির্দিষ্ট প্রডাক্ট হিসেবে ধরতে পারি বা মডেল হিসেবে বিবেচনা করতে পারি। নাম্বার বৃদ্ধির সাথে সাথে পারফর্মেন্স,স্পেসিফিকেশন,দাম বেশি হবে এটা ধরে নিলে মোটামুটি সম্পুর্ণ বিষয়টা বুঝতে সুবিধা হয়।

অর্থাৎ

একই জেনারেশনে একই ব্রান্ড মডিফায়ার বা ক্যাটাগরিতে যে নাম্বারগুলো দ্বারা প্রসেসরগুলোকে শ্রেণীকরণ করা হয় সেটাই SKU।শেষের দুটি অক্ষর, k,f দ্বারা বোঝানো হচ্ছে এটি  একটি আনলকড প্রসেসর ও এর সাথে internal Graphics নেই। core i5 10400,10400f,10500,10600,10600k,10600kf দ্বারা আমরা এবার সহজেই কি বোঝানো হচ্ছে তা বুঝতে পারবো।পাঠকের এবার বুঝে যাওয়ার কথা যে এগুলো ইন্টেলের 10 th generation এর i5 এর কয়েকটি প্রসেসর এর মডেল । এগুলোর কোনটা থেকে কোনটা ভালো ,কোনটা বেশি দামী সেটাও বুঝতে পারছেন।

অতএব আমরা বলতে পারি, প্রথম/প্রথম দুটি  সংখ্যা দ্বারা জেনারেশন , পরের গুলো SKU বা লেভেল, শেষের অক্ষরগুলো দ্বারা বিশেষ বৈশিষ্ট (ওভারক্লকিং/গ্রাফিক্স/পাওয়ার ,পারফর্মেন্স লেভেল) এর দিকে ইঙ্গিত করা হয়।

আরো দুই একটা উদাহরণ দেখা যাক,

i5-1235U। কোর আই ফাইভের 12th generation এর একটি প্রসেসর এটি, U দেখে বোঝা যাচ্ছে যে Laptop বা নোটবুকের একটি পাওয়ার সেভিং/পাওয়ার এফিশিয়েন্ট প্রসেসর এটা। 35 দ্বারা এই 12th gen mobile lineup এর পারফর্মেন্স টিয়ার ইঙ্গিত করা হচ্ছে যাকে SKU ও বলা হয়ে থাকে ।

i5-12450H। এটি যে একটি 12th generation এর i5 প্রসেসর তা তো বোঝাই যাচ্ছে।। 450 দ্বারা SKU বোঝানো হচ্ছে (এর উপরে নিচে আরো 12th gen i5 প্রসেসর থাকতে পারে ,যেমন 400,500) ও H দ্বারা এটি যে একটি হাই পারফর্মেন্স প্রসেসর তার দিকে ইংগিত করা হচ্ছে।

AMD:

AMD ও i3,i5,i7,i9 এর মত 3,7,5,9 নামের ৪টি ক্যাটাগরিতে তাদের প্রসেসরগুলোকে ভাগ করে থাকে। INTEL Core এর মত AMD এর ও Ryzen নামের একটি ফ্যামিলি বা ক্যাটাগরি রয়েছে। তবে Ryzen 7 এর পারফর্মেন্স যে সবসময়ই Core i7 এর সমান হবে এমন কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। একই কথা Ryzen 9,Ryzen 5 বা Ryzen 3 এর ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।

ইন্টেলের মত এই সাবক্যাটাগরিও স্পেকস,পারফর্মেন্স এর ভিত্তিতে করা হয় ও দাম ও একই ভাবে ভিন্ন ভিন্ন হয়।

AMD এর ক্ষেত্রে দুই একটি উদাহরণঃ

Ryzen 5 3600: এখানে এটি একটি রাইজেন ৫ প্রসেসর তা তো বোঝাই যাচ্ছে। 3600 , এখানে প্রথম সংখ্যা হচ্ছে জেনারেশন, পরের ৩টি সংখ্যা SKU. অর্থাৎ এটা 3000 সিরিজের একটি প্রসেসর। Ryzen 7 5800X, এটি একটি রাইজেন ৭ প্রসেসর, 800 দ্বারা পারফর্মেন্স/স্পেকস এর SKU বোঝানো হচ্ছে, X মানে Enhanced।  SKU এর ব্যাপারটি ভালোমত বুঝতে পারবেন এই মডেল গুলো দেখলে; Ryzen 9 3950x,3900x, 5950x,5900x,7950x,7900x।।

5600G দ্বারা ৫০০০ সিরিজের একটি APU বা integrated graphics যুক্ত প্রসেসর বোঝানো হচ্ছে।

Ryzen 5 5500U, 5600U দ্বারা 5000 সিরিজের একটি পাওয়ার এফিশিয়েন্ট Laptop প্রসেসর বোঝানো হচ্ছে। একইভাবে Ryzen™ 5 5600H দ্বারা হাই পারফর্মেন্স প্রসেসর এর দিকে ইংগিত করা হচ্ছে। Ryzen™ 9 5900HS দ্বারা H থেকে কম পাওয়ারফুল ও কম হিট উতপাদন করে, U থেকে বেশি পাওয়ারফুল ও বেশি হিট উৎপাদন করে এরকম প্রসেসর বোঝানো হচ্ছে যার TDP ও H থেকে কম হয়ে থাকে।

Single core performance, Multicore Performanceঃ রিভিউ কিভাবে দেখবেন,প্রসেসর কিভাবে পছন্দ করবেন:

সবগুলো এপ্লিকেশন/সফটওয়্যারই যে আমাদের প্রসেসরের সবগুলো কোর কে ব্যবহার করে বা সবগুলো কোরের উপর ব্যপকভাবে নির্ভর করে সেরকমটি নয়। এরকম অনেক ধরনের সফটওয়্যার রয়েছে যেগুলো একটি কোরের বুস্ট স্পিডের উপরই বেশি নির্ভর করে ও একটি কোর এর উপরেই চলে।এগুলোর ক্ষেত্রে একাধিক কোর বা কোরের সংখ্যা বাড়ালে পারফর্মেন্স বৃদ্ধি পাবে এ কথা সত্য নাও হতে পারে। বরং এসব ক্ষেত্রে দেখা যায় অন্যান্য কোরের সম্পুর্ণ শক্তি এই এপ্লিকেশন গুলো ব্যবহার করে না, করার দরকার ও হয় না।

এজন্যই আমরা বেঞ্চমার্ক এ single core,multi core result/performance দেখে থাকি। যখন সবগুলো কোর বাদ দিয়ে শুধু একটি কোর দিয়ে টেস্ট করা হয়,তাতে যে স্কোর হয় সেটাই Single core পারফর্মেন্স। আর সবগুলো কোর একসাথে টেস্ট করে যে স্কোর হয় তাকে Multicore score বলে।

অবশ্যই একটি জেনারেশন এর Core i5 আগের জেনারেশন এর Core i5 থেকে ফাস্ট হবেই, Ryzen 5 এর ক্ষেত্রেও তাই। কিন্ত এটির দাম আগের জেনারেশন থেকে কতটুকু কমলো বা বাড়লো, কি কি ফিচার অতিরিক্ত আছে; দ্বিতীয়ত, এটি কি আগের জেনারেশন এর core i7 থেকে ফাস্ট কি না, নাকি সমান সমান ,নাকি স্লো? সেটা নিশ্চিত হতেই মুলত আমাদের রিভিইউ,বেঞ্চমার্ক গুলো দেখতে হয়।

তবে রিভিউ দেখার আগেও আপনাকে কিছু তথ্য জানতে হবে,নিশ্চিত হতে হবে কিছু বিষয়। আপনি যে কাজে পিসি বিল্ড করবেন, আরো নির্দিষ্ট করে বললে যে বিশেষ সফটওয়্যার গুলো আপনি চালাবেন, যেমন Photoshop/Premiere Pro/After Effects, Blender/Davinci Resolve/,Autocad,Solidworks,7 Zip compression-decompression,Code Compilation on Chromium নাকি গেমিং, নাকি উভয়ই, এবং এই সফটওয়্যার/সফটওয়্যারগুলো কি সিঙ্গেল কোর সেন্সিটিভ নাকি মাল্টিকোর ডিপেন্ডেন্ট?? ক্যাশ মেমোরির উপর কতটুকু নির্ভরশীল ?

কারণ একটি প্রসেসর এর কোর থ্রেড অনেক বেশি থাকতে পারে, তার মাল্টিকোর স্কোর ও অনেক বেশি হতে পারে কিন্ত সিংগেল থ্রেডে সেটা দুর্বল ও হতে পারে। আবার উল্টোটাও হওয়া অসম্ভব নয়। রিভিউ দেখার ক্ষেত্রে সেজন্য্ আপনার ব্যবহার করা সফটওয়্যারে স্কোর বা একই ধরনের সফটওয়্যারে কিরকম স্কোর তা দেখতে হবে। গড় স্কোর বিবেচনা করা বা অন্য সফটওয়্যারের স্কোর দেখে সিদ্ধান্ত নিলে সমস্যা হতে পারে। কারণ দেখা গেলো আপনি মাল্টিকোর স্কোর দেখলেন, কিন্ত আপনার সফটওয়্যারটি সিঙ্গেল কোর নির্ভর।

রিভিউ দেখার জন্য Tomshardware,Techpowerup,Kitguru ইত্যাদি ওয়েবসাইট এর আর্টিকেল ও  Hardware Unboxed, Gamers Nexus, Tech Yes city, Hardware Canucks, Jarrod’s Tech,Linus Tech Tips,ETA Prime ইত্যাদি চ্যানেলের ভিডিও দেখতে পারেন।

পারফর্মেন্স এর সাথে সাথে সেগুলো কত পাওয়ার কনজিউম করে,কত স্পিডের মেমোরি সাপোর্ট করে,টেম্পারেচার কেমন প্রসেসর এর, মাদারবোর্ড এর দাম কেমন ইত্যাদি বিষয় দেখতে হবে।

প্রসেসর কি নকল হয়???

প্রসেসর তৈরী করা অত্যন্ত জটিল একটি বিষয়। এজন্য প্রসেসর নকল হয় না। আমরা Tray হিসেবে যেসব প্রসেসর দেখি সেগুলো কম খরচে আনার জন্য,ট্যাক্স ফাঁকি দেওয়ার জন্য ট্রে হিসেবে আনা হয়ে থাকে। সেগুলো হতে পারে বিভিন্ন OEM/Brand PC থেকে খুলে নেওয়া। খুব জোর এগুলো ব্যবহ্বত হতে পারে, তবে নকল হওয়া/স্পেকস/কোয়ালিটি/পারফর্মেন্স/স্থায়ীত্ব ভিন্ন হওয়ার সুযোগ নেই।

প্রথম পর্বের লিংক

Share This Article

Search