কেসের হালহকিকত
কম্পিউটার কেসিং কালো হয় ফর্সা হয়, থুক্কু, কম্পিউটার কেসিং ছোট হয়, বড় হয়, চেপ্টা হয় গোল হয়, সস্তা হয়, দামিও হয়। আজকে আমরা কথা বলব একটি তীব্র আবেদনময়ী কেসিং বা চেসিস নিয়ে। জি হ্যা, আজকের ভিডিওতে আমরা নাড়াচাড়া করব একটি অত্যন্ত আলোচিত কম্পিউটার কেসিং। কেসিংটি আন্তর্জাতিক বাজারে আসা মাত্রই হইচই পড়ে যায়। মাঝারি থেকে হেভি ওয়েট মোটামুটি সকল টেক চ্যানেলেই এই কেসিং নিয়ে রিভিউ এবং বিল্ড করা হয়েছে। বাঘা বোয়ালদের এসব কান্ডকারখানা দেখে এই চুনোপুটি চ্যানেলেরও খায়েস জাগে এই কেসটি একটু নেড়েচেড়ে দেখার। পরিকল্পনা মাফিক খোজ শুরু হয় থাইল্যান্ড এবং মালয়েশিয়ার নামকরা কম্পিউটার শপ গুলোতে।
গুগলে কিছুক্ষন খোচাখুচি করার পর হঠাত টাস্কিত হয়ে আবিষ্কার করি, ফ্লোরা লিমিটেড এর ওয়েবসাইটে জিনিস্টি এভেইলেবল দেখাচ্ছে। ভাবলাম সাইটটি হয়তো আপগ্রেড হচ্ছে তাই এই ছবি দিয়ে রেখেছে। ফোন দিয়ে যা শুনলাম তাতে পকেটে এবং কপোট্রনে একই সাথে তীব্র টান অনুভব করলাম। ফ্লোরা নাকি কুগার এর পুরো বংশ নিয়ে এসেছে। তার পরের কাহিনি সহজ, সরেজমিনে তদন্ত করতে গেলাম, কুগার চৈদ্দগুস্টি দেখলাম এবং আসার সময় ওনারা জোর করে কেসটি ধরিয়ে দিলেন। যদিও হেটার রা বলবেন ২৫ হাজার টাকা নিয়ে তারপরই দিয়েছে, তবে হেটারদের কথা মাথায় নিলে তো দুনিয়া চলবে না, কেস্টির প্রতি শুরু থেকেই আমাদের বিন্দুমাত্র আগ্রহ ছিল না। কিন্তু আপনাদের কথা চিন্তা করে ঢেকিটা নিয়ে আসা হল, সেট ফ্রেম আর টাইম এরেঞ্জ করতে করতে কয়েক সপ্তাহ পেরিয়ে গেল, শেষ পর্যন্ত একটা ভিডিও রেডি করা গেল। ভিডিওতে আমাদের সাথে থাকছে সুক্ষ স্কিল সম্পন্ন চিকন ছেলে রাকিব এবং তার এন্ডলেস লেমনেস।
আনবক্সিং
কুগার কনকুয়্যার কেসিংটি দুই পাশে গ্লাস প্যানেল থাকায় বেস মোটাসোটা ককশিট দিয়ে বেশ সেফ ভাবে প্যাক করা ছিল। বিভিন্ন প্রকার ন্যাকামি শেষ করে রাকিব ভিতরে হাত দেয়। কেসটির সাপোর্ট বিম বের করার মাঝে ম্যানুয়ালটি খুব মনযোগ দিয়ে পড়ার ভাব নেয়, এই মনোযোগ ক্লাসে থাকলে হয়ত তাকে আজ পিসি বিলডার এ কাজ করতে হত না। এরপরে কুগার এর প্রডাক্ট ক্যাটালগটি ছুড়ে ফেলে সে একে একে পাচটি লৌহ দণ্ড বা সাপোর্ট বিম বের করে নিয়ে আসে।
কেসটির সাথে লাঠি চকলেট কালারের তিনটি কুলিং ফ্যান দেয়া আছে, এর মধ্যে প্রথমটি বক্সের উপরের কর্নারে রাখা আছে। আরেক লেয়ার ককশিট সরালে একে একে বের হয়ে পরবে পিএসইউ ব্রাকেট, তিনটি ফ্যান গ্রিল, কিছু নাটবল্টু, কেসের দুটি ঠ্যাং, বাকি দুটি কুলিং ফ্যান এবং ড্রাইভ ব্রাকেট। মেইন ফ্রেমটির মাঝামাঝি জায়গায় সাইড গ্লাস প্যানেল দুটি ভালভাবে র্যাপ করা ছিল। কাচ একটু কাল হলেও রাকিব কিছুক্ষন নিবীড় পরীক্ষা করে দেখে নিশ্চিত হয় যে এর ভেতর থেকে মোটামুটি সবই দেখা যায়। সাইড প্যনেল দুটি বের করার পরে বাকি থাকে শুধু মাত্র মেইন ফ্রেমটি, কুগার ফ্রেমটিকে বেশ বুলেট প্রুফ করে প্যাক করেছে, যাত ট্রান্সপোর্টেশনে এক দমই ঝাকি না খায়।
এসেম্বলি
আমাদের আনবক্সিং এখানেই শেষ হয়ে যায়, অন্যান্য কেসিং এর মত কুগার কনকুয়্যার আনবক্সিং এর সাথেই ব্যাবহার করার সুযোগ নেই, একে এসেম্বল করে নিতে হয়। ছোট ছোট অনেক হাবিজাবি থাকলেও এসেম্বল করতে অতটা বেগ পেতে হয়নি। রাকিব প্রহত্মেই দুটো সাপোর্ট বিম দিয়ে মেইন ফ্রেমে লেগ দুটো লাগিয়ে নেয়। কেসটির একপাশ সম্পুর্ন খোলা, তাই সাইড প্যানেল না লাগালে কেসটি ফ্রেমের ব্যাক সাইডের উপরে দাড়িয়ে থাকে, তারমানে যারা একটু অলস প্রকৃতির তারা চাইলেও খোলা অবস্থায় কেসটি রাখতে পারবেন না।
এর পড়ে রাকিব কেসটির টপ শিল্ড টি খুলে ফ্যান ১২০ মিমি ফ্যান তিনটি লাগিয়ে ফেলে। এখানে আপনার চাইলে ৩৬০ মিমি. র্যাড বসাতে পারবেন। এছাড়া সামনে ফ্রন্ট প্যানেলেও দুটো ফ্যান লাগানোর জায়গা দেয়া আছে। এপর্যায়ে রাকিব পিএসইঊ মাউন্ট লাগাতে গিয়ে আবার শুয়ে পড়ে। উল্লেখ্য পিএসঈউ লাগানোর জায়গা এই কেসে সামনের দিকে, এবং মাদারবোর্ডট একটু কাত করে লাগাতে হবে বলে পিএসইউ এর ক্যাবল গুলো একটু বড় হতে হবে। সাধারন পিএসএউ এর ক্যাবল গুলোতে এক্সটেনশন ব্যাবহার করতে হবে। তবে কালার এসথেটিক ম্যাচ করলে স্লিভড ক্যাবল বিল্ড টিকে দারুন একটি লুক এনে দিতে সক্ষম। অতপর ড্রাইভ মাউন্টটি না লাগিয়ে এবং গ্লাস প্যানেল পিছনের টা সামনে লাগিয়ে এসেম্বলীং শেষ করতে সফল হয় রাকিব।
মতামত
কুগার কনকুয়্যার দেখতে আর পাচটা কেস থেকে একদমই আলাদা। একটা ট্রান্সফ্ররমার লুক আছে এর মধ্যে। ওপেন এয়ার কেস হওয়ার কারনে এর এয়ার এবং ডাস্ট ফ্লো দুটোই খুব ভাল হবার কথা। প্রাইসি এর কেসটির বিল্ড কোয়ালিটি একদমই প্রিমিয়াম, মেইন ফেমটি হাই কোয়ালিটি এলুমিনিয়াম দিয়ে তৈরি আর সাইড প্যানেলের কাচ গুলো ৫ মিমি পুরু। খুব উচ্চাভিলাসি ডিজাইন হবার কারনে বেশ কিছু জায়গায় কাজ করা কিছুটা কমপ্লিকেটেড হবে বিল্ড এর সময়, সে হিসেবে হয়ত এর পরের ভার্সনটি আরো ইঊজার ফ্রেন্ডলি হবে। তো এই ছিল আমাদের কুগার কনকুয়্যার আনবক্সিং এবং এসেম্বলি।
কোথায় পাবেন?
কুগার কনকুয়্যার পাওয়া যাবে ফ্লোরা লিমিটেড এর শাখাগুলোতে। তবে স্টক কম থাকার কারনে আগে থেকে ফোনে যোগাযোগ করে যাওয়াই ভাল হবে, নাহলে খালি হাতে দিরে আসতে হতে পারে। অথবা অর্ডার করতে পারেন তাদের ওয়েবসাইট থেকে। নিচে ওয়েবসাইটের লিঙ্ক দিয়ে আজকের লেখা এখানেই শেষ করছি। খোদাহাফেজ।