গেমার ,enthusiast ,শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে সরকারী কর্মকর্তা, ব্যবসা, শিল্প প্রতিষ্ঠান বা ইউটিউবার, ভিডিও এডিটর/ফটোগ্রাফার বিভিন্ন ধরনের কাজের ভিত্তিতে বিভিন্ন পেশার মানুষের কম্পিউটার প্রয়োজন হয়। অনেকে রেডিমেড পিসি না কিনে গত এক দশক যাবত কাস্টম পিসি বিল্ড করে নেওয়ার দিকেই ঝুকছেন। তবে এই কাস্টম পিসি বিল্ডিং এর ক্ষেত্রে বিভিন্ন বিষয়ে ধারনা কম থাকার কারণে , ভুল ধারণা থাকার কারণে হয়তো তার প্রয়োজন অনুযায়ী ও বাজেট অনুযায়ী সেরা পিসিটি বানাতে সক্ষম হচ্ছেন না; আবার অনেকে সামান্য কিছু ভুলের জন্য দীর্ঘ পরিকল্পনার পরেও সেরা বিল্ডটি করে উঠতে পারছেন না। আজ আলোচনা হবে সেসব নিয়েই।
Table of Contents:
- প্রসেসর এর Core I এর ফাদঃ যত I তত ফাস্ট,তত ভালো, Ryzen/AMD বেশিদিন টেকে না/বেশি গরম।
- পুরাতন প্রোডাক্ট/Discontinued Products এবং একগুচ্ছ বিড়ম্বনা।
- Low Budget products:বাজেট-কম্পোনেন্ট অসামঞ্জস্যতা।
- গ্রাফিক্স কার্ড, যত জিবি তত ভালো?
- র্যাম বেশি তো পিসি ফাস্ট?
- ‘Gaming’ এবং RGB/LED লাইটের ফাঁদ।
- Gaming/RGB SSD,Gaming/RGB Power Supply, Gaming/RGB Casing এর সত্যতা।
- পাওয়ার সাপ্লাইঃ বেশি ক্যাপাসিটি=বেশি খরচ?
- পাওয়ার সাপ্লাই যেমন তেমন একটা হলেই হয়।
- কিছু প্রস্তুতি ও সতর্কতা, গাইডলাইন।
প্রসেসর ও আই থ্রি , আই ফাইভ এর ফাদঃ যত আই তত ফাস্ট?
এইটা আমাদের দেশের বেশিরভাগ মানুষেরই কমন একটি ধারনা যে core “i” যত তার মাধ্যমে প্রসেসরটি কতটা ভালো , কত পাওয়ারফুল তা নির্ণয় করা। কোর আই ফাইভ মানে মোটামুটি এবং কোর আই সেভেন মানেই সবচেয়ে শক্তিশালী পিসি মোটামুটি এটাই সাধারণ মানুষ মনে করে। এর ফায়দা অনেক অসাধু দোকানদার ও নেয় ,তারা শুধু কোর আই ফাইভ/সেভেন বা থ্রি বলে প্রসেসর সেল করে, সেটা কোন জেনারেশন, তার কোর থ্রেড কত ক্লক স্পিড কত সেগুলো নিয়ে কোনো কথা না বলে শুধুই কোর আই ফাইভ/সেভেন বলে দেয় এবং জ্ঞানের অভাব,অসচেতনতা,অসতর্কতার জন্য ক্রেতারা প্রতারিত হন। রেডি কোটেশনের ক্ষেত্রেও এই একই ঘটনা ঘটে থাকে।
ধরিয়ে দেওয়া হয় খুবই পুরাতন প্রসেসর যেমন 2/3/4gen এর core i5/i7/i3 যেগুলোর কোর থ্রেড কাউন্ট,আর্কিটেকচার অন্যন্য সবকিছুই অনেক কম কম এবং কোর আই সেভেন হলেও তা এখন খুবই স্লো কাজ করবে। এজন্য আপনার ভারি ভারি কাজ এর ক্ষেত্রে মোটেও যথেষ্ট হবে না, গেমিং একেবারেই করতে পারবেন না, হিটিং সমস্যা ও থাকতে পারে। মনে রাখবেন পুরাতন জেনারেশনের core i5/i7 এর প্রসেসরগুলো এখনকার সর্বশেষ core i3 প্রসেসর থেকেও স্লো।
কোর আই এর পরের যে সংখ্যা তা শুধুই একটি জেনারেশনে ৩টি লেভেলের প্রসেসর ইংগিত করে। ৩,৫,৭ কিন্ত কখনোই কোর এবং থ্রেডের সংখ্যা নয়। একই জেনারেশনের ৩টি প্রসেসর এর মধ্যে এন্ট্রি লেভেল(কম দাম), মিডিয়াম(মধ্যম দাম) এবং হাই বাজেট/ফ্লাগশিপ গুলোর নামকরণ করা হয় এভাবে। অবশ্যই একই জেনারেশনের ক্ষেত্রে সংখ্যার ব্যাপারটি সবসময়ই সত্য, i3<i5<i7 নিঃসন্দেহে।
শুধুই যে দোকানে, তা কিন্ত নয়, বিক্রয়, এখানেই এর মত ওয়েবসাইটেও আপনারা বিজ্ঞাপন দেখে থাকেন, সেখানেও প্রসেসর এর সম্পর্কে তথ্য বলতে শুধুই এই Intel Core ix লেখা থাকে। অনেক পুরাতন প্রসেসর বিভিন্ন ভাবে বিজ্ঞাপন দেওয়া ও ভুল তথ্যের মাধ্যমে চালিয়ে দেওয়ার প্রবণতা উক্ত সাইটগুলোতে অনেক বেশি দেখা যায়।
Ryzen/AMD এর প্রসেসর গরম হয়/দ্রুত নষ্ট হয়/বেশিদিন টেকে নাঃ
আরো একটি প্রচলিত ধারণা যে AMD এর Ryzen প্রসেসর গরম হয় অতিরিক্ত বিষয়টি সম্পুর্ণ ঠিক নয় কেননা সমগ্র বিশ্বজুড়ে গত ৩ বছরে প্রচুর পরিমাণে রাইজেন প্রসেসর বিক্রি ও ব্যবহ্বত হয়ে আসছে এবং প্রতিনিয়ত তা বাড়ছে।। এরকম কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি যে রাইজেন প্রসেসর অতিরিক্ত পরিমাণে গরম হয় অথবা কিছুদিন পর পারফর্মেন্স ড্রপ করে বা নষ্ট হয় বা স্লো হয়।।
একান্তই ম্যানুফেকচারিং ফল্ট হলে সেই প্রসেসরের হিটিং ইস্যু /হুট করে নষ্ট হয়ে যাওয়ার সমস্যা হতে পারে। মনে রাখবেন একটি নিরাপদ তাপমাত্রা,সাধারণ তাপমাত্রার উপরে গেলেই কেবল তা হিটিং বলে গন্য হবে। এর জন্য অনেক সময়ই আপনার কুলিং সিস্টেম দায়ী হতে পারে, কেসিংটির এয়ারফ্লো কেমন, কয়টি ফ্যান লাগানো আছে ইত্যাদি । থার্মালপেস্ট ঠিকমত না লাগালে, নিম্নমানের থার্মালপেস্ট লাগালে বা একেবারেই না লাগালে অথবা যদি থার্মালপেস্ট শুকিয়ে যায় সেক্ষেত্রে সহজেই খুব দ্রুতই তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেতে পারে এবং বিপদসীমার উপরে যেতে পারে।
হিটিং ইস্যু কেন হয়, কিভাবে সমাধান করা যায় এগুলো নিয়ে বিস্তারিত জানতে পারবেন এই আর্টিকেল থেকেঃ
হিটিং ইস্যুঃ কিছু কারণ ও সমাধান
কি করবেনঃ
কেনার সময় অবশ্যই ফুল ডিটেইলস জেনে নিবেন। বক্স দেখে নিবেন, কোন জেনারেশনের প্রসেসর, কত কোর থ্রেড, এগুলো অবশ্যই জেনে নিবেন। এবং আমাদের সবথেকে বড় সমস্যা হলো আমরা পুর্ব প্রস্ততি এবং প্রোডাক্ট কিনতে যাওয়ার আগে তা নিয়ে নুন্যতম ধারণা ও রাখি না । সম্পুর্ণ রুপে অন্ধকারে থাকি অনেকক্ষেত্রেই এবং এর কারণেই প্রতারিত হতে হয় বা বাজে প্রোডাক্ট চলে আসে।
পুরাতন প্রোডাক্ট / Discontinued প্রোডাক্ট এবং একগুচ্ছ বিড়ম্বনাঃ
আর উপরে উল্লেখিত পুরাতন প্রোডাক্টগুলোর ক্ষেত্রে শুধুই পারফর্মেন্স নয়, After Sales Service এও বড় রকমের সমস্যায় পড়তে হতে পারে আপনাকে।এরকম অনেক প্রোডাক্ট রয়েছে যেগুলো ব্রান্ড ম্যানুফেকচার করা এবং সার্ভিসিং করা বহু আগেই বন্ধ করে দিয়েছে এগুলো আপনি বাজারে আনাচে কানাচে পড়ে থাকা দোকান থেকে কেনার কয়েক মাস বা বছর পর যদি নষ্ট হয় বা কোনো সমস্যা হয় তখন ওয়ারেন্টিতে দিলেও ওয়ারেন্টি পাবেন না। এরকম ও দেখা যায় যে এই প্রোডাক্টের রিপ্লেসমেন্ট নিয়ে আসা/ওয়ারেন্টি প্রোভাইড করা/ডিস্ট্রিবিউশন সংশ্লিষ্ট শপ বহু আগেই বন্ধ করে দিয়েছে।
মেরামতের ক্ষেত্রেও অনেক সময় unique spare parts এর প্রয়োজন হয় কিন্ত দেখা যায় সেগুলো ও বাজারে পাওয়া যায় না পুরাতন হওয়ার কারণে।সুতরাং এদিকে যেমন রিপ্লেসমেন্ট/ ওয়ারেন্টি পেতেও সমস্যা তেমনি মেরামতের ক্ষেত্রেও বিড়ম্বনা। আর বেশিরভাগ ক্ষেত্রে শহর বা গ্রামের ছোট দোকানগুলো রিপ্লেসমেন্ট বা সার্ভিসিং, উভয় ক্ষেত্রেই কেন্দ্রীয় বা ঢাকার বড় বড় অফিশিয়াল ইম্পোর্টার এর উপরেই সম্পুর্ণরুপে নির্ভর করে থাকে।
সেক্ষেত্রে যদি দেখা যায় সংশ্লিষ্ট ইম্পোর্টার এর কাছেই রিপ্লেসমেন্ট নেই বা স্পেয়ার পার্টস নেই এবং স্বয়ং ব্রান্ড ও বাজারজাত করা বন্ধ করেছে পুরাতন হওয়ার কারণে তখন আপনার জন্য কোনো সমাধানই আর থাকবে না।পুরাতন প্রোডাক্ট যেমন 2nd gen/3rd gen এর প্রসেসর, মাদারবোর্ড এর ক্ষেত্রে যদিও বা দোকানদার আপনাকে রিপ্লেসমেন্ট যোগাড় করে দিতে পারে দেখা যাবে যে সেটিও পুরাতন বা সেকেন্ড হ্যান্ড।
Low budget Products: বাজেট এর সাথে প্রোডাক্টের অসামঞ্জস্যতা
কিছু প্রোডাক্ট এর মডেল রয়েছে যেমন প্রসেসর,গ্রাফিক্স কার্ড যেগুলো এক্সট্রিম লো বাজেটের জন্যই, ২৫-৪০ হাজার টাকার বিল্ড যারা করেন, যাদের বাজেট অনেক টাইট এবং টুকটাক কাজের জন্যই বিল্ড করেন তাদের জন্য এই প্রোডাক্টগুলো। যেমন Ryzen 5,3 3400g,2400g,3200g,2200g এগুলোর সাথে ইন্টারনাল গ্রাফিক্স ইউনিট রয়েছে এবং এগুলো তারাই নিবেন তারা একদম লো বাজেটে এন্ট্রি লেভেল গেমিং, এডিটিং এর সাথে টুকটাক সাধারণ কাজ যারা করতে চান। এক্ষেত্রে এক্সট্রা গ্রাফিক্স কার্ড নেওয়ার দরকার নেই বা সেরকম বাজেট ও থাকে না ক্রেতার এবং নিতে চাইলে আদৌ এই প্রসেসরগুলো সেক্ষেত্রে নেয়ার যুক্তি ও থাকে না।
ইন্টেলের ক্ষেত্রেও এরকম প্রোডাক্টগুলো হলো Core i3 10100/f,9100/f,8100/f । যারা এক্সট্রিম লো বাজেট অর্থাৎ ২৫-৩০ এর মধ্যে পিসি নিতে চান তারাই নিবেন।
আবার 9100f,10100f কিংবা রাইজেনের এরকম ৮/৯ হাজার টাকা দামের গ্রাফিক্স ছাড়া প্রসেসর এর জন্য কিছু লো বাজেট গ্রাফিক্স কার্ড ও রয়েছে যেমন GT 1030,1050ti RX 560 ইত্যাদি যা পারফেক্ট হয় বাজেট এবং প্রসেসরগুলোর সাথে।
কিন্ত দেখা যায় অনেকসময় এই প্রোডাক্টগুলো দিয়ে ক্রেতা জ্ঞানের অভাবে, দোকানদারের কথায় ৫০,৬০ হাজার এমনকি ৭০ হাজারের বিল্ড ও করে ফেলছেন। যা মোটেও যুক্তিসঙ্গত নয়। অনেকে তো 3400G,2400G এর সাথেও ১৫-১৭ হাজার টাকার গ্রাফিক্স কার্ড নিয়ে ফেলেন। মনে রাখবেন উপরে উল্লেখিত সকল প্রসেসর এবং গ্রাফিক্স কার্ড কেবল ২৫-৪০ সর্বোচ্চ ৪২ হাজারের আশেপাশের বিল্ডের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য এবং সম্পুর্ণরুপে আপনার উদ্দেশ্য এবং বাজেট এর সাথে যায় ।
কিন্ত যখনই বাজেট ৫০+ হবে , ৫৫,৬০,৬৫/৭০ হাজার হবে আপনি অনায়াসে ১২/১৩ হাজার টাকার বেশ কিছু শক্তিশালী প্রসেসর রয়েছে ইন্টেল এবং AMD উভয় এরই, সেগুলো নিতে পারবেন এবং ১৫ থেকে শুরু করে ২০/২২ হাজার টাকার বাজেটের AMD এবং NVIDIA এর গ্রাফিক্স কার্ড ও রয়েছে যেগুলো ওই প্রসেসরগুলোর সাথে সুন্দরভাবে বটলনেক ছাড়াই চলবে, বিল্ডটাও Value for Money এবং অনেক Balanced হবে এবং সর্বোচ্চ পারফর্মেন্স পাবেন সেগুলো নিতে পারবেন।আরো একটি অসামঞ্জস্যতা দেখা যায় সেটি হচ্ছে বাজেট লো হওয়া সত্বেও প্রসেসর,গ্রাফিক্স কার্ড জ্ঞানের অভাবে ও ভুল সাজেশনের কারণে ক্রেতা অনেক কমদামী নিয়ে ফেলছেন কিন্ত সাথে ১০/১৫ হাজার টাকার মাদারবোর্ড নিয়ে ফেলছেন যা সম্পুর্ণ অযৌক্তিক ও ভুল সিদ্ধান্ত।
অসামঞ্জস্যতাঃ
প্রসেসর এর তুলনায় গ্রাফিক্স কার্ড অনেক বেশি দুর্বল হওয়া বা গ্রাফিক্স কার্ডের তুলনায় প্রসেসর অনেক বেশি দুর্বল হওয়ায় আপনার বিল্ডে ভালো পারফর্মেন্স আসে না। বটলনেক কি ,কেন হয়,কিভাবে হয়, কিভাবে সমাধান করা যায় এই নিয়ে বিস্তারিত পড়লে আরো পরিষ্কার হবেনঃ
বটলনেক এর আদ্যপান্তঃ Bottleneck and its solution
গ্রাফিক্স কার্ডঃ যত জিবি তত ভালো????
গ্রাফিক্স কার্ড এর ক্ষেত্রে সবথেকে ভুল ধারনা এইটা। গ্রাফিক্স মেমোরির গুরুত্ব অবশ্যই আছে, কিন্ত গ্রাফিক্স কার্ড কতটা ভালো, কতটা শক্তিশালী তা শুধুই “জিবি” দিয়ে নির্ধারিত হয়না। প্রসেসরের মতই এর মধ্যে অনেক কম্পোনেন্ট আছে, স্পিড আছে সেগুলোর, core রয়েছে , অভ্যন্তরীণ সব ফ্যাক্টর রয়েছে যেগুলোর উপর নির্ভর করে পারফর্মেন্স। দুটি কার্ডের মধ্যে কোনটি বেশি ভালো, সেক্ষেত্রে মেমোরির ক্যাপাসিটি তুলনায় অনেক পরেই আসে। প্রসেসর কোন আর্কিটেকচারের, তার কোর ক্লক, বুস্ট ক্লক মেমোরি ক্লক,Cuda Cores/ স্ট্রিম প্রসেসর এর সংখ্যা, মেমোরি বাস, ইত্যাদির গুরুত্ব অনেক।
মফস্বলের দোকানের কোটেশনে বা বিভিন্ন বেচাকেনার সাইটে বিজ্ঞাপন দেওয়া থাকেঃ graphics 2gb gaming hd বা এরকম কিছু।এমনকি ব্রান্ডের নাম ও থাকে না। সেটা দেখেই অনেকে প্রেমে পড়ে যান ভেবে বসেন প্রোডাক্টটা ভালো এবং কিছু বাছবিচার না করে নিয়ে নেন। মফস্বলের দোকানের ক্ষেত্রেও এমন হয় যে গ্রাফিক্স মানেই জিবি তে হিসাব করা হয় এবং হাইলাইট করা হয় জিবির ব্যাপারটা।
র্যাম বেশি তো পিসি ফাস্টঃ
জ্বি না, র্যাম একফোটাও আপনার পিসিকে ফাস্ট করে না। র্যাম মুলত একটি জায়গা যেখানে কোনো চলমান প্রসেস বা এপ্লিকেশনের রিয়েল টাইম ডাটা প্রসেসিং এর কাজ হয়। অর্থাৎ কাজ করার জায়গা এটি, যত বেশি স্পেস তত বেশি কাজ করা যাবে(প্রসেসর ও অন্যন্য কম্পোনেন্ট এর ক্ষমতা অনুসারে)। অর্থাৎ বেশি র্যাম পিসিকে ফাস্ট করে না বরং একসাথে অনেকগুলো এপ্লিকেশন চালানোর সুযোগ করে দেয়।
অর্থাৎ x>y হলে y জিবি র্যাম এর পিসিতে(একই সফটওয়্যারগত পরিবেশে) ১০ টি এপ্লিকেশন চালানো গেলে x জিবি র্যামের পিসিতে ১০ এর বেশি এপ্লিকেশন চালানো যেতে পারে। আপনাকে ধারণা নেওয়ার চেষ্টা করতে হবে যে উদ্দেশ্যে আপনি বিল্ড করছেন বা যেসব কাজ করবেন তাতে কত জিবি র্যাম প্রয়োজন হতে পারে। তার অতিরিক্ত নেওয়া অনেক ক্ষেত্রেই অপচয় ব্যতীত কিছু নয়।
কত জিবি র্যাম ,গ্রাফিক্স কার্ড লাগবে তার জন্য আমাদের একটি আর্টিকেল রয়েছে বিস্তারিত, দেখে নিতে পারেন।
গেমিং এর জন্য কত জিবি র্যাম এবং গ্রাফিক্স কার্ড যথেষ্ট
“Gaming” শব্দটির ফাঁদঃ সত্য জানুনঃ
যেকোনো প্রোডাক্টের সাথে হালকা পাতলা লাইট(RGB/LED Backlight) থাকলেই তার নামের সাথে Gaming শব্দটি যোগ করা এবং তা যেকোনো মিডিয়া, যেকোনো প্রচারমাধ্যমে প্রোডাক্টটির প্রচারণার সময় বিশেষভাবে হাইলাইট করা। প্রথমত, Gaming শব্দটি ৯০% ক্ষেত্রেই প্রোডাক্টের কোয়ালিটি সম্পর্কে তথ্য দেয় না, গেমিং শব্দ থাকলেই সেটি শুধুই যে গেম খেলার জন্য বিশেষভাবে প্রস্তুতকৃত একটি প্রোডাক্ট বিষয়টি এমন ও নয়, RGB/LED থাকার সাথেও কোয়ালিটি এবং পারফর্মেন্স এর একেবারেই সম্পর্ক নেই। লাইট থাকলেই সেটা প্রমাণ হয়না যে প্রোডাক্টটির বিল্ড কোয়ালিটি, Internal Materials অনেক ভালো অনেক উন্নত এবং পারফর্মেন্স অনেক ভালো পাওয়া যাবে।একই কথা GAMING শব্দটির ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য, এই শব্দ লাগানো থাকলেই গেমিং এ বিশেষভাবে আপনাকে অতিরিক্ত সুবিধা দিবে প্রোডাক্টটি বা তার ভেতরের components অনেক বেশি উন্নতমানের হবে,বেশিদিন টিকবে এমনটি ভাবার কোনো কারণ নেই।।
হ্যা এ কথা অবশ্যই সত্য যে ,ডিজাইনগুলো এমনভাবে করা হয়, লাইট,ডেকোরেশন এমনভাবে করা হয় যাতে বেশিরভাগ মানুষেরই প্রাথমিকভাবে দেখতে অনেক ভালো লাগে, RGB, Backlight থাকলে তা রাতের বেলায় দেখতে অনেক সুন্দর লাগে, সম্পুর্ণ বিল্ডের সৌন্দর্যই এক ধাপ বাড়িয়ে দেয় কম্পোনেন্ট এর লাইটিং।কিন্ত পারফর্মেন্স এর সাথে এর সম্পর্ক নেই এবং Gaming নাম ওয়ালা প্রোডাক্ট মাত্রই যে ভালো এবং Gaming নাম ছাড়া প্রোডাক্ট থেকে গুণে, মানে উত্তম এমন ধারণা আমাদের দেশে ভালোভাবেই প্রচলিত এবং এটি সত্য নয়।
এরকম উদাহরণ হাজার হাজার রয়েছে যে Non RGB/ Light ছাড়া প্রোডাক্টের এর বিল্ড কোয়ালিটি অনেক সলিড, Materials অনেক উন্নত মানের, ডিজাইন সুন্দর এবং ভেতরের components এর কোয়ালিটি ও অনেক ভালো এবং একই সাথে তা টিকেছেও অনেক দিন কোনো সমস্যা ছাড়াই এবং একই সঙ্গে খুবই নিম্নমানের বিল্ড কোয়ালিটির, নিম্নমানের কাচামাল দ্বারা প্রস্তুতকৃত লাইট ওয়ালা তথাকথিত “gaming” কম্পোনেন্ট দ্রুতই নষ্ট হয়ে যাওয়া, কিছুদিন পরেই কোনো না কোন অংশ অকেজো হয়ে যাওয়া, পুড়ে যাওয়া, অল্প দিনেই ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে যাওয়া/ ভেঙে যাওয়ার উদাহরণ ও ভুরি ভুরি রয়েছে।
এরকম অনেক non gaming প্রোডাক্ট রয়েছে যার বিল্ড কোয়ালিটি,কাচামাল এর কোয়ালিটি,ডিজাইন , পারফর্মেন্স , আয়ু(durability) সবকিছুই কথিত RGB/Gaming প্রোডাক্টের তুলনায় ভালো।লাইটযুক্ত, নামের সাথে Gaming শব্দ লাগানো এরকম প্রচুর কিবোর্ড মাউস রয়েছে যেগুলো স্বনামধন্য কোনো ব্রান্ডের ও নয় এবং তাদের বিল্ড কোয়ালিটি, durability অনেক নিম্নমানের, কিছুদিন পরেই নানান সমস্যার সৃষ্টি হয়।
আজকাল এরকম অনেক কম্পোনেন্ট রয়েছে যার সাথে আদৌ গেমিং পারফর্মেন্স এর কোনোই সম্পর্ক নাই কিন্ত নামের সাথে গেমিং লাগানো, এবং লাইট লাগানো। যেমন পাওয়ার সাপ্লাই ও SSD । মনে রাখবেন একটা বাড়তি লাইট আপনাকে একটা বাড়তি এফপিএস বা ক্লক স্পীড দেবে না।
Gaming/ RGB Power Supply?
কম্পিউটার কম্পোনেন্ট গুলোর মধ্যে পাওয়ার সাপ্লাই এর গুরুত্ব কত বেশি এবং এটি কত বেশি Sensitive একটি অংশ কম্পিউটারের, তা বিস্তারিত লেখা রয়েছে নিচের অংশে। কিন্ত আজকাল দেখা যাচ্ছে কোয়ালিটি, ভেতরের অবস্থা যেমনই হোক না কেন এর নামের সাথেও জুড়ে দেওয়া হয়েছে, হচ্ছে RGB/Gaming। ফলে ক্রেতা আকৃষ্ট হচ্ছেন, এগুলোর কোয়ালিটি সম্পর্কে আদৌ না জেনেই কিনে ফেলছেন, ঝুকিতে ফেলছেন আপনার দামী পিসিটিকে। তবে এই পাওয়ার সাপ্লাই যদি হয় স্বনামধন্য ব্রান্ডের, সেক্ষেত্রে ঝুকি থাকছে না বললেই চলে। আপনার বিল্ডকে আরো সুন্দর করতে নিয়ে নিতেই পারেন।
Gaming/ RGB SSD?
দ্বিতীয়ত আসা যাক এসএসডির ব্যাপারে, এসএসডি আদৌ গেমিং পারফর্মেন্স এ প্রভাব ফেলে না, এটি পিসির সফটওয়্যার লোডিং টাইম, Windows Boot Time এবং গেম এর (কিছু ক্ষেত্রে) লোডিং টাইম কমিয়ে আনে, পিসি ওভারল ফাস্ট কাজ করে, কপি, কাট, পেস্ট অর্থাৎ ডাটা মুভমেন্ট করা যায় দ্রুত। (এগুলো নির্ভর করে এর মধ্যে থাকা Nand Chip, Memory Controller, DRAM, Cache, Channel সহ ইত্যাদি elements এর উপর, এই elements গুলো যত উন্নত হবে, যত ভালো মানের হবে যত উন্নত প্রযুক্তির হবে তত ভালো পারফর্মেন্স, durability পাওয়া যাবে। আর প্রকারভেদের উপর ভিত্তি করেও স্পিড বিভিন্ন রকমের হয়ে থাকে)। এসএসডি এর বেসিক থেকে এডভান্স লেভেলের সকল তথ্য সম্পর্কে জানতে আমাদের ভিডিও ও আর্টিকেল পড়ে নিতে পারেনঃ
কিন্ত আদৌ দেখা যায় গেমিং পারফর্মেন্স এর সাথে সরাসরি মিল নেই এসএসডির কিন্ত Gaming নাম দিয়ে সাথে RGB লাগিয়ে হাইলাইট করা হয় এবং প্রচার করা হয় ,ক্রেতা আকৃষ্ট হয়ে কিছু খোজ না করেই কিনে নেন। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এই এসএসডিগুলোর কোয়ালিটি মানসম্মত হয় না, আয়ু ফুরিয়ে যায়, দ্রুত স্পিড নেমে যায়, নানান সমস্যা দেখা যায়। যদিও ব্যাতিক্রমও আছে, তারপরও সবকিছু গেমিং বলে চালিয়ে দেয়া ইজ নট আ গুড প্র্যাকটিস।
Gaming/ RGB Casing?
তৃতীয়ত আরেকটি কম্পোনেন্ট এর কথা আলোচনা করে উদাহরণ এর অংশ শেষ করবো, সেটি হচ্ছে কেসিং।।Gaming নাম এবং RGB/Backlight এর উপস্থিতি, মহামারী আকার ধারণ করেছে এই নির্দিষ্ট কম্পোনেন্টটির ক্ষেত্রে। ৯০% মানুষ Look বা বাইরের চেহারা পছন্দ করে থাকেন এবং বিল্ড কোয়ালিটি, এয়ারফ্লো ,কতটি ফ্যান আছে, ভেতরে জায়গা কিরকম, কতগুলো ফ্যান লাগানোর জায়গা আছে ইত্যাদি বিষয় একদমই দেখেন না।
এর সুযোগ নিয়ে সস্তায় প্রচুর চাইনিজ ব্রান্ড রয়েছে যারা লাইট ওয়ালা ফ্যান বা কেসিং এ RGB লাগিয়ে Gaming নাম দিয়ে বাজারে ছাড়ে এবং দেখা যায় সেগুলোর ভেতরের অবস্থা খুব একটা ভালো না, পর্যাপ্ত এয়ারফ্লো এর ব্যবস্থা নেই, জায়গা কম, বিল্ড ম্যাটেরিয়ালস সুবিধার না, ফ্যান লাগানোর ব্যবস্থা নেই, যা আছে তাও নিম্নমানের। ভেতরের Thermal Performance এর ক্ষেত্রে যা প্রচন্ড রকমের Negative effect ফেলে থাকে। এবং বলা বাহুল্য, গেমিং পারফর্মেন্স এ আদৌ ভুমিকা নেই Casing এর, রয়েছে আপনার পিসির Components গুলোর thermal health এর ক্ষেত্রে। এবং এই সমস্ত RGB/Gaming ট্যাগ এর ভিড়ে তা কতটুক নিশ্চিত হচ্ছে তা নিয়ে সন্দেহ থেকেই যায়।
ম্যানুফেকচারার রা নিজেরাও RGB/Gaming প্রোডাক্ট বানাচ্ছে, হাইলাইট করছে, মিডিয়াতে প্রচার করছে। কিন্ত সেগুলো যদি হয় স্বনামধন্য ব্রান্ড এর, সেক্ষেত্রে সমস্যা হয় না বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই। কিন্ত সমস্যা হচ্ছে জনপ্রিয় ও নির্ভরযোগ্য ব্রান্ডের পাশাপাশি নাম জানা না জানা চাইনিজ ব্রান্ডের অভাব নেই যাদের এরকম পাওয়ার সাপ্লাই, এসএসডি বা কেসিং রয়েছে Gaming/RGB এর নামে । এই সমস্ত প্রোডাক্ট ধরিয়ে দেওয়া হয় শহর, মফস্বলের ক্রেতাদেরকে ভুল বুঝিয়ে, অনেক ভালো, বেশিদিন টিকবে, দেখতে অনেক সুন্দর, সেরা প্রোডাক্ট, অল্প টাকায় সব পেয়ে যাচ্ছেন ইত্যাদি প্রতিশ্রুতির মাধ্যমে।
কি করবেনঃ
প্রথমত Gaming শব্দটি সবসময়ই যে mean করে যে প্রোডাক্টটি দিয়ে গেমিং ভালো হবে/ শুধু গেমিংই হবে/অন্য কাজ করা যাবে না ভালো হবে না এরকম কিছু নয়।
দ্বিতীয়ত , এতক্ষণের আলোচনায় আশা করা যায় আপনারা বুঝতে পেরেছেন অনেক কিছু। প্রোডাক্ট সম্পর্কে বেশি বেশি খোজ নেওয়া, রিভিউ দেখা, রিসার্চ এগুলোই করতে বলতে পারি এবং এগুলোই করা উচিত। ভুল ধারণা গুলো এখান থেকে শুধরে নিয়ে পরবর্তীতে প্রোডাক্ট নেওয়ার সময় সংশ্লিষ্ট প্রোডাক্টের গুরুত্বপুর্ণ বিষয়গুলোর প্রতিই লক্ষ রাখবেন। আলোর ঝলকানি বা Gaming শব্দের দিকে নয়।
***উপরের ব্যবহ্বত ছবিগুলো বাজে আরজিবি বা কথিত গেমিং প্রোডাক্ট এর উদাহরণ হিসেবে ব্যবহার করা হয়নি।সেগুলো প্রত্যেকেই নিজ নিজ ক্যাটাগরিতে অন্যতম সেরা প্রোডাক্ট***
পাওয়ার সাপ্লাইঃ যত বেশি পাওয়ার ,তত বেশি বিদ্যুৎ খরচ?
আরো একটি ধারণা সমাজে প্রচলিত আছে যে বেশি পাওয়ার ক্যাপাসিটির পাওয়ার সাপ্লাই পিসিতে লাগালে তা অনেক বেশি বিদ্যুৎ খরচ করে। আসলে প্রকৃতপক্ষে বিষয়টি এরকম নয়। Power Supply পাওয়ার Push করে না, Components প্রয়োজন অনুসারে পাওয়ার Draw করে বা পাওয়ার নেয়। অর্থাৎ আপনার কম্পোনেন্ট এর যতটুক প্রয়োজন ততটুক পাওয়ার ই ব্যবহ্বত হবে। পাওয়ার সাপ্লাই এর ফুল ক্যাপাসিটির সম্পুর্ণটাই সাপ্লাই হয় না কখনোই।
একই সাথে বলা যায় বেশি ক্যাপাসিটির পাওয়ার সাপ্লাই কম্পিউটার কম্পোনেন্ট এর ক্ষতি করতে পারে এরকম ও অনেকে মনে করেন, কিন্ত উপরেই উল্লেখ করেছি যে অতিরিক্ত পাওয়ার গিয়ে কম্পোনেন্ট এর ক্ষতি হওয়ার কোনোই সম্ভাবনা নেই কারণ PSU পাওয়ার Push করে না বা নিজে থেকে কম্পোনেন্ট এর দিকে পাঠায় না, বরং কম্পোনেন্টস চাহিদা অনুসারে পাওয়ার নেয় বা Draw করে। সুতরাং যতটুক পাওয়ার লাগবে তাই সাপ্লাই হবে বা drawn হবে পাওয়ার সাপ্লাই থেকে। বরং বেশি ওয়াটের পাওয়ার সাপ্লাই কিনলে পরবর্তীতে আপনি পিসিতে আপগ্রেড করতে গেলে অর্থাৎ আরো শক্তিশালী গ্রাফিক্স কার্ড/ প্রসেসর লাগাতে চাইলে নতুন করে পাওয়ার সাপ্লাই কেনা নাও লাগতে পারে। অর্থাৎ খরচ কমতে পারে।
যেমন তেমন পাওয়ার সাপ্লাই ব্যবহারঃ
পিসি বিল্ডিং এ এই বিষয়টিতে এখনো পর্যাপ্ত জ্ঞানের অভাব থাকায় অনেকেই যেমন তেমন যেকোনো পাওয়ার সাপ্লাই বা কেসিং এর সাথে দেওয়া চাইনিজ পাওয়ার সাপ্লাই ব্যবহার করে থাকেন। অনেকেই জানেন না যে কম্পিউটারের সবথেকে সংবেদনশীল বা sensitive পার্ট হলো এটি। voltage/ current এর পর্যাপ্ত আসা যাওয়া/ পরিমাণের তুলনায় কম বেশি হওয়া/ অনিয়মিত হওয়া আপনার কম্পোনেন্টস গুলোর স্বাস্থের জন্য অনেক বেশি গুরুত্বপুর্ণ।
কমদামী বা কেসিং এর সাথে আসা পাওয়ার সাপ্লাইগুলোর ভেতরের পার্টসগুলো থাকে অনেক নিম্নমানের, সেগুলোর বোর্ড, capacitors, regulators, circuits, resistance এমনকি cable বা তার গুলো ও থাকে অনেক নিম্নমানের। পাওয়ার সাপ্লাই এর গায়ে যে রিডিং লেখা থাকে, অর্থাৎ volt, current এর মানগুলো, সর্বোচ্চ ক্ষমতার মানগুলো, এগুলো ও যা লেখা থাকে সেগুলো ও সঠিক থাকে না, প্রকৃতপক্ষে তত ওয়াট এর আউটপুট দিতে পারে না পাওয়ার সাপ্লাই গুলো।
এজন্য এই সমস্ত পাওয়ার সাপ্লাই এ পিসি চালালে মাদারবোর্ড, হার্ডড্রাইভ, প্রসেসর বা গ্রাফিক্স কার্ডের মত কম্পোনেন্ট গুলো ক্ষতি হতে পারে, অনেকক্ষেত্রে বন্ধ হয়ে যাওয়া বারবার, রিস্টার্ট নেওয়া, চালু হতে না চাওয়া, গেম চালালে বা ভারী কাজ করতে গেলেই বন্ধ হওয়া বা রিস্টার্ট নেওয়া ইত্যাদি সমস্যা অহরহ হয়ে থাকে এই ধরণের পাওয়ার সাপ্লাই ব্যবহার করলে।
সেক্ষেত্রে কি করবেন, ৩/৪ হাজার এর মধ্যে আপনি বিভিন্ন স্বনামধন্য ব্রান্ডের পাওয়ার সাপ্লাই পেয়ে যাবেন যেগুলোর Internal Component গুলো অনেক ভালো, Cable quality, Efficiency এগুলো ও অনেক ভালো। এবং ক্যাপাসিটি অনুসারে এই ৩/৪ হাজারের আশেপাশের দামের পাওয়ার সাপ্লাইগুলো আপনার ৩০ থেকে ৬০ হাজার এমনকি ৭০ হাজার টাকার বিল্ডের জন্য ও Suitable এবং যথেষ্ট হতে পারে। আপনার কম্পোনেন্টসগুলো থাকবে সুরক্ষিত। সাথে অবশ্যই থাকবে ৩ থেকে ৫ বছরের ওয়ারেন্টি।
কি করবেনঃ কিছু প্রস্তুতি ও সতর্কতা –
- প্রথমত আপনাকে আপনার পিসি বিল্ডিং এর উদ্দেশ্য এবং টোটাল বাজেট নিশ্চিত করতে হবে।
- যেহেতু বর্তমান যুগ প্রযুক্তি ও ইন্টারনেটের যুগ, সেজন্য সহজেই আপনি এটার সঠিক এবং সর্বোচ্চ ব্যবহার করে ঘরে বসেই বিল্ডের সমস্ত কম্পোনেন্ট এর উপর বেসিক ধারনা লাভ করতে পারেন, দাম,ভ্যারিয়েন্ট সম্পর্কে জানতে পারেন।
- সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে রয়েছে প্রচুর গ্রুপ, টেক চ্যানেল। এগুলো আপনাকে সাহায্য করবে। অবশ্যই চেষ্টা করবেন নির্দিষ্ট একটি চ্যানেল গ্রুপ বা ব্যক্তি নয়, বরং একাধিক স্থান থেকে তথ্য জানার । আমাদের পিসি বিল্ডার বাংলাদেশের রয়েছে এরকম দুটি গ্রুপ, ১। পিসি হেল্পলাইন গ্রুপ ৬০ হাজারের ও বেশি মেম্বার এখানে আপনাকে সাহায্য করার জন্য প্রস্তুত, পিসি সম্পর্কিত যে কোনো সমস্যা, সফটওয়্যার সম্পর্কিত, হার্ডওয়্যার সম্পর্কিত, বিভিন্ন ধরণের সাজেশন, বায়িং গাইড, কম্পোনেন্ট কেনার সময় সাজেশন এর জন্য পোস্ট দিতে পারেন, দেখতে পাবেন হাজার হাজার সাধারণ মানুষের পোস্ট, শিখতে পারবেন অনেক কিছু, নিজের পোস্টেও পাবেন পর্যাপ্ত সাহায্য।
- আর দ্বিতীয় গ্রুপ PC Builders of Bangladesh , এখানে আপনি নিজের বিল্ড এর ছবি,প্রোডাক্টের ছবি দিতে পারেন, Setup show off, components show off, নিজের বিল্ড এর সাথে তুলনা ,রেটিং,ডিসকাশন, নিজের পিসির রিভিউ, গ্রাফিক্স কার্ড প্রসেসর বা অন্য কম্পোনেন্ট এর রিভিউ,রেটিং, প্রোডাক্ট এর Temperature এর Analysis সহ যেকোনো প্রোডাক্ট নতুন বাজারে আসলে সেটি নিয়ে ডিসকাশন, মার্কেট এর অবস্থা নিয়ে আলোচনা ইত্যাদি করতে পারবেন।
- আমাদের ইউটিউব চ্যানেল এবং ওয়েবসাইট এও নিয়মিত বিরতিতে বিভিন্ন বাজেটের পিসি বিল্ড গাইড পাবলিশ হয়ে থাকে।।সেখান থেকেও পেয়ে যাবেন ধারণা। সাবস্ক্রাইব করুন পিসি বিল্ডার বাংলাদেশ এর ইউটিউব চ্যানেল, নিচের বিল্ডগাইড গুলোর মত আরো অনেক বাজেটের এডিটিং/গেমিং পিসির বিল্ড গাইড নিয়মিতই পেয়ে যাবেন।
https://www.youtube.com/watch?v=YbceElvT740
- টেক চ্যানেল/ পিসি রিলেটেড চ্যানেল/ পিসি বিল্ডিং চ্যানেল গুলোতে বায়িং গাইড বিল্ড গাইড পাবেন সেগুলো আপনাকে সাহায্য করবে অনেক। আপনাকে নিজ দায়িত্বে শত শত চ্যানেল / আর্টিকেল থেকে বেছে নিতে হবে সতর্কতার সাথে সঠিক সাজেশন। তেমনি কখনোই কেবলমাত্র একজন ব্যক্তি/ চ্যানেলের উপর বা শুধুমাত্র একটি ভিডিও দেখেই চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলাটাও ক্ষতিকর হতে পারে।
- অনেক সময় পরিকল্পনা থাকা সত্বেও বাজারে গিয়ে কম্পোনেন্টস না পেয়ে দোকানীর সাজেশন বা ফাদে পড়ে সেই বাজে কম্পোনেন্টস দিয়েই পিসি বিল্ড করে ফেলেন অনেকে, এ ক্ষেত্রে অবশ্যই আপনি যে বিল্ডটি করছেন, প্রতিটি কম্পোনেন্ট এর জন্য যে মডেল সিলেক্ট করেছেন তার একই বাজেটে, অন্তত একটি এবং সর্বোচ্চ ৪/৫টি ব্যাকআপ বা second choice হিসেবে আরো কিছু মডেল সিলেক্ট করে রাখবেন যাতে আপনি একটি না পেয়ে আরেকটি নিতে পারেন।।
- আরো একটি ভুল করেন অনেকেই যে বিল্ড এর সময় তাড়াহুড়ো করে ফেলেন। কম্পোনেন্ট না পেলে আপনি কিছুদিন সময় নিন, আরো কয়েক দোকান ঘুরে দেখুন তারপর ডিসিশন নিন। কম্পোনেন্ট না পেলে ফিরে গিয়ে আরো কিছুদিন দুই একদিন অপেক্ষা করতে পারেন।
- যত সম্ভব একটি কম্পোনেন্ট এর জন্য এভেলেবল ব্রান্ড এর সংখ্যা,ব্রান্ডের নাম,অরিজিন জেনে নিন ও মনে রাখুন। এরকম হতেই পারে যে অনেকক্ষেত্রেই দোকানদার আপনাকে শুধুই দুই একটি ব্রান্ড এর পন্য দেখাচ্ছে এবং সেগুলোই কিনতে উৎসাহিত করছে, বাকি ব্রান্ডের প্রোডাক্ট দেখাতে অনীহা প্রকাশ করছে ।এতে করে আপনি ক্ষতির মুখে পড়তে পারেন যদি নিজে সচেতন না হন। দোকানদার আপনাকে অন্য ব্রান্ডের প্রোডাক্ট বিক্রি করতে, দেখাতে না চাওয়ার বেশ কিছু কারণ রয়েছে, প্রথমত সে ঐ বিশেষ ব্রান্ডের ডিলার বা কমিশন এর সুবিধা পেয়ে আসছে সেজন্য সে কোনো ব্রান্ড বাদ দিয়ে ঐ বিশেষ ব্রান্ডই দেখাবে, হাইলাইট করবে, কিনতে উৎসাহিত করবে; দ্বিতীয়ত তার কাছে ঐ প্রোডাক্ট অনেকদিন যাবতই অবিক্রিত পড়ে আছে সেজন্য সে সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে সেটি বিক্রয় করার। এজন্য এরকম ঘটনা দেখা যায় যে কর্মরত সেলসম্যান অনেক মানসম্মত পন্য দেখাতে অনুৎসাহ দেখায় এবং অপেক্ষাকৃত বাজে কোয়ালিটি হওয়া সত্বেও বিশেষ ব্রান্ডের প্রোডাক্টই আপনাকে নিতে প্ররোচিত করে ।এগুলো থেকে বাচতে সাবধানতা আপনাকেই অবলম্বন করতে হবে, সচেতনও আপনাকেই হতে হবে। এরজন্য বেশি বেশি research এর বিকল্প নেই।
- সাহায্য পেতে গিয়েও আপনি প্রতারিত হতে পারেন, অনেক গ্রুপ বা পেজের কমেন্ট বক্সে আপনাকে ইনবক্সে বা ব্যক্তিগত মেসেজে ডাকতে পারে , এইটি হতে পারে ভয়ানক ফাদ, সে তার ব্যক্তিগত সেকেন্ড হ্যান্ড পন্য আপনাকে বেচার উদ্দেশ্যে মেসেজ করতে পারে প্ররোচিত করতে পারে, পারে তার পরিচিত বা নিজের দোকান থেকে আপনাকে প্রোডাক্ট কিনতে বাধ্য করতে। এতে করে আপনি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন।
উপসংহারঃ
আশা করছি উপরের আলোচনায় আপনাদের অনেক ভুল ধারণা শুধরে দিতে পেরেছি এবং একই সাথে সঠিক গাইডলাইন ও দিতে পেরেছি।প্রত্যাশা থাকবে এখান থেকে প্রাপ্ত জ্ঞান নিজে পিসি বিল্ডিং এর সময় প্রয়োগ করবেন তেমনি বন্ধু বান্ধব আত্মীয়কেও সাহায্য করবেন নিজের প্রাপ্ত জ্ঞান দ্বারা যাতে তারা ভুল সিদ্ধান্ত না নেয় এবং কষ্টের টাকায় সেরা বিল্ডটিই করতে পারে। তাহলেই আমাদের পরিশ্রম স্বার্থক।
ধন্যবাদ,পিসি বিল্ডার বাংলাদেশের সাথেই থাকুন। আসসালামু আলাইকুম।