গ্রাফিক্স কার্ড দিয়ে যেহেতু এই মুহুর্তে বাজেট বিল্ড গুলো করার কোন উপায় নাই, তাই গত সপ্তাহে আমরা রাইজেন ৫ ৫৬০০জি একটা বাজেট বিল্ড গাইড করেছিলাম ৪৫ হাজার টাকার। এর মধ্যে গত ৫ জানুয়ারী ইন্টেল i5 12400 বাজারে প্রবেশ করে।কয়েকদিনের মধ্যে আবার ও একই বাজেটের আরেকটি বিল্ড নিয়ে চলে আসলাম আবার ও। ৪৫ হাজার টাকার আজকের এই বিল্ডটিতে আমরা ব্যবহার করেছি ইন্টেলের সদ্য লঞ্চ হওয়া কোর আই ফাইভ ১২৪০০ প্রসেসরটি। সফটওয়্যার ও গেমিং বেঞ্চমার্ক এর পাশাপাশি আলোচনা করা হয়েছে মাদারবোর্ড সিলেকশন ও মেমোরি সাপোর্ট এর বিষয়েও।
Sponsors and build resources:
আমাদের আজকের ভিডীওটি স্পন্সর করেছে ডকটাইম। বিল্ডের কম্পোনেন্ট গুলো প্রভাইড করেছে , দেশের সবচেয়ে পপুলার কম্পিউটার মার্কেট মাল্টিপ্ল্যান সেন্টারের ১৩থ ফ্লোরে স্টারটেক রিগ হাউস ব্রাঞ্চ, ধন্যবাদ তাদেরকে। এই পিসিটা এক্সক্লুসিভলি সেখানে এভেলেবল থাকবে। যিনি আগে যাবেন তিনিই হয়তো পারচেজ করতে পারবেন।এনিওয়ে ১২ জেন আই৫ ১২৪০০ দিয়ে 50 হাজার টাকার মধ্যে কিভাবে একটা বিল্ড কমপ্লিট করা যায়, ৫৬০০জি এর এগেন্সটে সেটা কেমন পার্ফরম করবে এই নিয়ে বিস্তারিত কথা হবে ভিডিওতে।
প্রসেসর
ইন্টেল ১২জেন কোর i5 12400 বাজারে পাওয়া যাচ্ছে এখন ২১৫০০ টাকায়, অনেকেই প্রিপারেশন। নিচ্ছেন এটা দিয়ে বিল্ড করার । সমস্যা হচ্ছে ১২৪০০ দিয়ে অধিকাংশ বিল্ড যেগুলো হবে সেগুল বাজেট বিল্ড, কিন্ত নতুন এই প্রসেসরের জন্য সেভাবে কোন বাজেট মাদারবোর্ড বাজারে দেখা যাচ্ছে না।AMD বিল্ড গুলোতে একটা সুবিধা যে পুরানো বোর্ডে নতুন প্রসেসর ব্যবহার করা যায় শুধু মাত্র বায়োস টা আপডেট করে নিলেই, যদিও AMD ও সামনে নতুন সকেট ব্যবহার করায় এই সুবিধা আর পাওয়া যাবে না। ইন্টেল এর ক্ষেত্রে প্রায় প্রতি জেনারেশনই নতুন বোর্ড। 10th and 11th gen এর LGA 1200 সকেট এর বদলে এবার ১২ জেন এ ব্যববহার হচ্ছে LGA 1700 সকেট।
মাদারবোর্ড
সবার আগে b660, h610, h670 বোর্ড এর কয়েকটা মডেল বাংলাদেশে আসে এসুস এর। রিকোয়েস্ট করে আমরা ম্যানেজ করেছি, দুইটা মডেল Prime h610m-Aআর TUF Gaming B660M-E। এর আগে H510,H410 বোর্ড গুলা ৬ হাজার টাকার কাছাকাছিতে পাওয়া যেত আর b460, b660 বোর্ড গুলা ১০/১৫ হাজারের দিকে।বাংলাদেশে h610m-a এর দাম ১১,১০০ টাকা। আর টাফ b660m-e এর দাম ১৬,১০০ টাকা। বাজেট বিল্ডারদের কথা মাথায় রেখে আমাদের বেছে নিতে হচ্ছে, Prime h610m-a, যেটার দাম ১১,১০০ টাকা। আমাদের ১২৪০০ এর জন্য যেটা এনাফ। এখন অনেকে জিজ্ঞেস করতে পারেন, এই বোর্ড তো এন্ট্রি লেভেল আরো ভালো কিছু কেন দেয়া হল না। আসলে মিনিমাম যেটা দরকার, বাজেট বিল্ড গুলোতে সেটাই ব্যবহার করা হয়। আপনার বাড়তি টাকা থাকলে বি৬৬০ বোর্ড নিতে পারেন। সেক্ষেত্রে মেমোরি অভারক্লকিং, বেশি পোর্টস অনেক এক্সট্রা ফিচার আছে, যাদের দরকার একটু মিলিয়ে দেখে ডিসিশন নেবেন। স্পেশালি যারা ১২৬০০ দিয়ে বিল্ড করতে চাচ্ছেন তাদের জন্য বি৬৬০ বোর্ড গুলা বেশি সুইটেবল হতে পারে।
5600G vs 12400:pros and cons
প্রশ্ন উঠতে পারে কেন 5600G নেওয়া হলো না , কেনই বা 12400 ই বেছে নেওয়া হলো।। প্রথমত প্রধান কারণ হিসেবে যেটির কথা বলা যায় সেটি হচ্ছে ১২৪০০ এর raw performance..যারা একটু আধটু খোঁজ রাখেন তাদের বিষয়টি অজানা থাকার কথা নয় যে এই ছয় কোর বারো থ্রেডের প্রসেসরটি অবিশ্বাস্য রকমের পারফরম্যান্স শো করেছে বেঞ্চমার্ক গুলোতে।।বেশিরভাগ এডিটিং,রেন্ডারিং,প্রোডাক্টিভিটি সফটওয়্যার এবং গেমিং এ এর বেঞ্চমার্ক টেস্টিংয়ে ইন্টেল ও এএমডির বিগত বছর গুলোর মিড রেঞ্জ এর পাশাপাশি অনেকগুলো ফ্ল্যাগশিপ প্রসেসরকে পেছনে ফেলেছে ,কিছু ক্ষেত্রে বা সমান সমান পারফর্ম করেছে Core i5 12400. মাত্র 192 ডলারে ফ্ল্যাগশিপ লেভেল পারফরম্যান্স কে ইগনোর করে 5600g চয়েস করাটা আসলে কঠিনই বলতে হবে।।। সাথে 5600g এর সাথে ১২৪০০ এর কয়েক হাজার টাকার প্রাইস গ্যাপ তো আছেই।।কম দামে পাওয়ারফুল ,ভ্যালু ফর মানি প্যায়েজটি তাই ইজি পিকিং ছিল আমাদের জন্য। আরেকটি মেজর কারণ হচ্ছে লেটেস্ট টেকনোলজি এর সাপোর্ট।। এখন না হলেও কয়েক বছরের মধ্যে মেইনস্ট্রিম পিসি মার্কেটে ram এর জায়গাটা ঠিকই দখল করবে DDR5.। ডিডিআর ফাইভের সাপোর্ট তাই একটা মেজর এডভান্টেজ বলা যায় 12400 এর জন্য।ইউজার যখন সুবিধা তাই ram আপগ্রেড করে নেওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন এই প্লাটফর্মে একই কথা বলতে হয় PCIe 5 সাপোর্ট এর বেলায় ও।
এবার আসা যাক ড্রব্যাকস এর ব্যাপারে। স্বাভাবিক ভাবেই সব পারচেসেই কোনো না কোনো দিকে ছাড় দিতেই হয়, প্রসেসর চয়েস করার ব্যাপারটিও এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম নয়। 12400 এর প্রসেসিং পাওয়ার অনেকটা বিস্ট লেভেল এর হলেও ইন্টেলের চিরাচরিত দুর্বলতা অর্থাৎ iGPU নিয়ে এখানেও কমবেশি ভুগতে হবে। UHD 750 না দিয়ে 730 ইন্টেল কেন ব্যবহার করলো তা আমাদের জানা নেই।বলা বাহুল্য ,এই প্রসেসরেও জিপিইউ বেজড ওয়ার্কলোড বা গেমিং এ AAA গেম গুলোতে ভালোই লো ফ্রেমরেট ও স্টাটারিং এ ভুগতে হবে।অপরদিকে জিপিইউ ছাড়া বেটার গেমিং বরাবরই 5600g বা এএমডির অন্যান্য g সিরিজ প্রসেসরগুলো অফার করে আসছে সুনামের সাথে। হয়তো এই একটি ক্ষেত্রেই হেড টু হেডে 12400 একটু পিছিয়ে থাকবে 5600g থেকে।। এছাড়াও, এবসলুট cons না হলেও 12400 বিল্ড এর ছোট্ট ড্র ব্যাক হিসেবে মাদারবোর্ড এর উচ্চমূল্যের কথা বলা যেত, কিন্ত খোদ ৫৬০০জি নিজেই হাজার চারেক টাকা বেশি প্রাইসট্যাগ নিয়ে বসে আছে,তাই এই যুক্তিও খাটানো যাচ্ছে না।
র্যাম সাপোর্ট ও আজকের বিল্ডের র্যামঃ
আমরা ব্যবহার করছি h610 চিলসেটের একটি এন্ট্রি লেভেলের ddr4 মাদারবোর্ড।।তবে গত জেনারেশনগুলোর,বিশেষ্ করে 10th জেনের ram সাপোর্ট এর কাহিনী নিয়ে যারা বিরক্ত ছিলেন তাদের জন্য চিন্তার কারণ নেই।। মাদারবোর্ড ,প্রসেসর উভয়ই অন দা গো ৩২০০মেগাহার্জ সাপোর্ট করে তাই র্যাম স্পিড নিয়ে ভোগান্তিতে পড়তে হবে না এবার, ddr4 ram 3200 মেগাহার্জ স্পিড এ চালাতে পারবেন জটিলতা ছাড়াই।আর ভবিষ্যতে মাদার্বোর্ড আপগ্রেড করলে ডিডিআর ফাইভের স্বাদ নেওয়ার সুযোগ তো থাকছেই।যাই হোক আজকের বিল্ডে ram হিসেবে আমরা ইউজ করছি Corsair Vengeance LPX 8GB 3200 MHZ এর দুটি কিট যার প্রতিটির দাম ৩২৫০ টাকা।
স্টোরেজঃ
এক এক জনের কাজের ভিন্নতার ভিত্তিতে স্টোরেজের রিকোয়ারমেন্ট ও প্রিফারেন্স ও ভিন্ন হয় তাই আমরা অন্যান্য বিল্ডের মত এখানেও কোনো স্টোরেজ এড করছি না শুধু একটি সিস্টেম ড্রাইভ ছাড়া। ১২৮ জিবি ক্যাপাসিটির eam MP33 M.2 PCIe SSD এর দাম ২৮০০ টাকা।
Value TOP VT-G651 ATX CASE
টাইট বাজেটে মোটামুটি সাইজের ও বিল্ড কোয়ালিটির সাথে দু চারটা আরজিবি ফ্যান, ২৫০০-৩০০০ এ এসব ফিচার এর কারণে বেশ ভালোই জনপ্রিয়তা পেয়েছে ভ্যালু টপের কেসগুলো। আমাদের আগের বিল্ডের মত এবারেও আমরা বেছে নিয়েছি এই ব্রান্ডের কেস। রয়েছে চারটি ফিক্সড রেইনবো আরজিবি ফ্যান। দাম ৩২০০ টাকা।
পাওয়ার সাপ্লাইঃ
সিস্টেমে PSU হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে ANTEC CSK 450W পাওয়ার সাপ্লাইটি।যার দাম ৩৬৫০ টাকা।
পারফর্মেন্সঃ
চারটি গেম টেস্ট করা হয়েছিল, ফলাফল প্রতাশার তুলনায় অনেক জঘন্য ছিল।
সিদ্ধান্তঃ
গেমিংয়ে 5600G অনেকটাই এগিয়ে। যারা গেমিং ফোকাসড বিল্ড করতে চান তারা 5600g, যারা ওভারল প্রোডাক্টিভিটির জন্য বিল্ড করতে চান তারা 12400 নিতে পারেন।