প্রফেশনাল গেমিং আসলে কি?
“Video Game” এ যেন এক নেশার নাম। দুনিয়াতে যে পরিমানে লোকজন বিভিন্ন তামাক দ্রব্যযুক্ত জিনিসপাতিতে আসক্ত তার থেকে বেশি না হলেও ভিডিও গেম আসক্ত লোকের সংখ্যা নেহাতই কম নয়। পুরনো দিনের সেই Pong কিংবা Pac-Man অথবা Mustafa কে পিছনে ফেলে উন্নতির এক নতুন মাত্রায় পৌছে গিয়েছে গেমিং ইন্ডাস্ট্রি । আজকাল আর কেউ বন্ধুর বাসায় যেয়ে একজন আর একজনকে চ্যালেঞ্জ করে না যে আয় পারলে আমাকে হারা, বর্তমানে তা মাল্টিপ্লেয়ার এর পর্যায়ে চলে গিয়েছে, ঘরে বসেই আপনি দুনিয়ার আর এক প্রান্তের বন্ধুর সাথে খেলতে পারবেন, এখন হয় টুর্নামেন্টও। আপনি কখনো ভেবেছেন স্টেডিয়াম এর ভিতর লাখো লোক চিয়ার করছে একজন গেমার এর জন্য? যে কিনা অপনেন্টের এক প্লেয়ার কে 360 ডিগ্রি স্নাইপিং করে স্ক্রিনের সামনে বসিয়ে রাখল? এ ঘটনা এখন দুধ ভাত হয়ে গিয়েছে। অনেকেই হয়ত শুনে থাকবেন USA তে Dota 2 চ্যাম্পিয়নশিপ এ টোটাল প্রাইজ মানি ছিল প্রায় ২ কোটি ৮০ লাখ মার্কিন ডলার, এবং উইনিং টিম এই অংকের অর্ধেকের সমান টাকা তাদের বাসায় নিয়ে যায়! কি দারুণ না? হয়ত আপনার মনে প্রশ্ন জাগবে ওরা পারলে আপনি কেন পারবেন না? ওরাও ২ হাত দিয়ে খেলে আপনিও ২ হাত দিয়ে খেলেন।তাহলে কেন আপনি নয়? মসাই এর জন্যই হাজির আমি। আজ আমি আপনাদের বলব কিভাবে আপনিও পারবেন প্রফেশনাল গেমিং ক্যারিয়ার তৈরি করতে।
বাংলাদেশে প্রফেশনাল গেমিং এর পরিস্থিতিঃ
বর্তমানে গেমিং জগতে জনপ্রিয়তার শীর্ষে রয়েছে,
- Dota 2
- League Of Legends
- CS:GO
- Rainbow Six Siege
- Fifa etc.
সাধারণত দুনিয়াব্যাপি ঘুরে ফিরে এই সকল গেমসগুলোরই টুর্নামেন্ট হয়ে থাকে। কিন্তু প্রফেশনাল গেমার আপনি ততদিন না যতদিন আপনি তা থেকে টাকা আয় করছেন। গেম সবাই খেলে, সবাই প্রো হতে পারে কিন্তু প্রফেশনাল সবাই না। তার জন্য আপনার করতে হবে ইনকাম গেমস এর মাধ্যমে। ইউটিউব এ গেমিং ভিডিও আপলোড করে টাকা আয় করা কিন্তু এর ভিতর পরে না। টাকা আয় করার প্রথম উপায় হল টুর্নামেন্ট/চ্যাম্পিয়নশিপ জেতা। বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে এটা বলা আসলেও ভুল। কারণ আমাদের দেশে বড় ধরনের কোন টুর্নামেন্ট হয়না, যার অর্থ দিয়ে আপনি আপনার পরিবার চালাতে পারবেন। বাইরের অনেক দেশেই এগুলো হয়ে থাকে কিন্তু অতিমাত্রায় প্রো না হলে সেখানে কোয়ালিফাই করাও সম্ভব না। আরো বিভিন্ন ভাবে টাকা ইনকাম করা যায়, যেমন স্পন্সর এর মাধ্যমে। কিন্তু তার জন্যও অনেক লাইন ঘাট প্রয়োজন। বিভিন্ন আইটেম সেল করেও টাকা পাওয়া যায় কিন্তু তা নেহাতই কম।
এখন সত্যিই যদি আপনি প্রোফেশনাল গেমিং ক্যারিয়ার শুরু করতে চান, তার জন্য প্রয়োজন ডেডিকেশন।একটা সময় আসবে যখন হয়ত আপনি আপনার পড়াশুনা কিংবা ফ্যামিলিকেও সময় দিতে পারবেন না।
“Big apple pie” Gresty এর মতে,
It takes a lot of your life up,but when you’re in a one-versus-one situation and you know what play to make, you realize all the practice has paid off
তিনি আরো এড করেন “ঘুম” বস্তুটির দেখা তারা খুব কমই পায় তাদের গেমিং ক্যারিয়ারে। এই সুখের জিনিসটাকেও ছাড়তে হবে।হায়রে কি প্যারা! তাই না? Well everything needs dedication.
এখন চলুন জেনে নেয়া যাক কিভাবে কি শুরু করবেনঃ
১| আপনাকে গেম চয়েস করে নিতে হবে।আপনি সব গেম এ প্রো হতে পারবেন না। আপনি আপনার মন মত গেম চয়েস করেন।আপনার স্পোর্টস ভালো লাগলে ফিফা। ট্যাকটিকাল গেম হলে ডোটা, শুটিং পছন্দ হলে সিক্স সিজ কিংবা csgo.
২| “Never lose Hope” মোটিভেটেড থাকার ট্রাই করেন। আজকে হয়নি, কাল হবে। কাল হয়নি ১ বছর পরে হবে। কিন্তু হবেই। না হয়ে যাবে কই?
The International 2017 now has the LARGEST Prize Pool in the history of esports. OH YEAHHHH!! #TI7 pic.twitter.com/2e1Ndc8QRS
— Wykrhm Reddy (@wykrhm) July 12, 2017
৩| প্র্যাকটিস, এটা না করে আপনি কোথাও যেতে পারবেন না। Practice makes a man perfect. আপনাকে সারাদিন শুধু গেম খেলেই প্রাকটিস করতে হবে তা নয়। আপনি অন্যান্য টিম এর টাকটিকস ফলো করতে পারেন। বিভিন্ন প্রো প্লেয়ারদের গেমপ্লে দেখতে পারেন। ফ্রেন্ডস/ টিম মেট দের সাথে খেলে নতুন টাকটিকস বানাতে পারেন। কোন ম্যাচ হারলে মন খারাপ করবেন না কারন আপনি প্রাকটিস করছেন। Tyler “Teepee” Polchow, Team compLexity (now Evil Geniuses), which won the Call of Duty World Championship in 2014 বলেছেন তিনি তার টিমমেটস দের সাথে দৈনিক ৮/৯ ঘন্টা প্রাকটিস করতেন। দিন শেষে যখন আপনি ইনকাম করবেন আপনার প্রিয় কাজের মাধ্যমে, তার খুশি ভাষায় প্রকাশ করার মতন না।

আরো অনেক কাজ বাকি রয়েছে এখনো। এখানেই হাপিয়ে গেলে চলবে?
৪| আপনাকে আপনার গিয়ার আপ করতে হবে। আপনি সেই মান্ধাতার আমলের পিসি নিয়ে কম্পিটিটিভ গেমিং করতে পারবেন না। আপনার ভালো মাউস প্রয়োজন, ভালো কি-বোর্ড প্রয়োজন, হেডসেট প্রয়োজন।তার পাশাপাশি রয়েছে একটি ভালো কনফিগ এর পিসি।
৫| আপনার ভিতর যতই ট্যালেন্ট থাকুক না কেন,আপনি যতই One man army হন না কেন, আপনার জয়েন করতে হবে কমিউনিটি এবং দরকার হবে একটি টিম এর। আপনাকে সেই গেমিং কমিউনিটির রুলস এর ব্যাপারে জানতে হবে। সবার সাথে মিশতে হবে। আপনি যদি আসলেই ভালো হয়ে থাকেন। ভালো কোন একটা টিমই আপনাকে খুজে নিবে। আপনার খোজার প্রয়োজন হবেনা। স্পন্সর এর ক্ষেত্রেও কথাটি একদম সত্য।
Once you develop your skills and start kicking the competition to the curb, sponsors begin to take notice. Winning a major tournament or ranking highly in multiple online competitions can land you a spot competing in paying tournaments where you do battle with the highest-ranking players in the gaming world.
যখন উপরের সব কাজ করা শেষ। আপনার ক্যারিয়ার শুরু।কংগ্রাচুলেশনস ব্রাদার। এখন আপনাকে টুর্নামেন্ট এ পার্টিসিপেট করতে হবে। ঘন ঘন খেলবেন। তাতেই আপনার স্কিল ডেভলপ হবে এবং আপনি নতুন নতুন ট্যাকটিকস এর ব্যাপারে জানতে পারবেন। বুঝতেই পাড়ছেন এখানেও কাজ কম নয়। মনে রাখবেন গেমিং করা এবং গেম খেলে টাকা আয় করে জীবন চালানো এক না।
তাই দেরি না করে এখনই শুরু করে দিন বলা তো যায় না, কার ভাগ্যে কি আছে? যাই হোক সামনে আসছে ফাইনাল ফ্যান্টাসির নতুন পার্ট, গেমটির সিস্টেম রিকোয়ারমেন্ট দেখে নিতে পারেন এখানে।
অগ্রিম শুভকামনা রইল আপনাদের প্রতি।
Gretsy said. “The dedication and the time put into playing is more than a 9-to-5 job with overtime.”