হুয়াওয়ে মেট ১০ প্রো হ্যান্ডস অন রিভিউ | First Impressions

Huawei Mate 10 pro Back view

বাক্সটি দেখলেই মনে হবে সত্যি দামি কিছু পেতে যাচ্ছেন আপনি। ব্ল্যাক কভারের উপর মাঝখানে লেখা হুয়াওয়ে মেট টেন প্রো আর নিচে তাদের ডুয়াল ক্যামেরা পার্টনার লেইকার লোগো। কভারটি খুললেই বামদিকে দেখতে পাবেন হুয়াওয়ের লোগো আর তার পাশে লেখা হুয়াওয়ে ডিজাইন আর বামে পেয়ে যাবেন বহুল প্রতীক্ষিত ফোনটি। ফোনের নিচে বামদিকে ফোন কভার ও সিম রিমুভাল টুল এবং ডান দিকে রয়েছে কুইক চারজার, ইউ এস বি টাইপ সি টু নরমাল ইউএসবি কেবল ও একসাথে রয়েছে ইউ এস বি টাইপ সি হেডফোন ও ইউ এস বি টাইপ সি টু ৩.৫ মিমি. হেডফোন জ্যাক। আস্তে আস্তে প্রায় সব ফ্ল্যাগশিপ ফোনগুলো হেডফোন জ্যাক ছেড়ে দিচ্ছে যার ট্রেন্ডে হুয়াওয়ে এই ফোনের মাধ্যমে ঢুকল। আর সবশেষে সবার নিচে পাবেন ম্যানুয়াল গাইড।

Huawei Mate 10 Pro Unboxing

ডিসপ্লে

ফোনটি হাতে নিলেই অন্যান্য যে কোন ফোনের মত প্রথমেই আপনার নজরে আসবে এর অসাধারণ এমোলেড ডিসপ্লেটি। ৬ ইঞ্চির ফুল ভিউ ডিসপ্লে বডির সাথে প্রায় ৮১% রেশিওতে আছে এবং এতে বেজেললেস ডিসপ্লে ব্যাবহার করা হয় নি। এর ডিসপ্লে রেশিও দেয়া আছে ১৮ঃ৯ আর রেজোল্যুশন ২১৬০ বাই ১০৮০। ফ্ল্যাগশিপ ফোন হিসেবে আমরা আশা করেছিলাম এটলিস্ট ১৪৪০পি রেজোল্যুশন দেখতে কিন্তু সেটা আর পাওয়া হয় নি। এছাড়া এর কন্ট্রেস্ট রেশিও হচ্ছে ৭০ হাজার বাই এক আর পিক্সেল ডেন্সিটি ৪০২ পিপিআই। আপনি যদি এই সেটকে প্রথম্বাররের মত ফ্ল্যাগশিপ ফোন হিসেবে ব্যাবহার করে থাকেন তাহলে ভিডিও করা, ভিডিও দেখা বা গেম খেলা নিয়ে আপনারা সন্তুষ্ট থাকতে পারেন কিন্তু যদি আপনি অলরেডি পিক্সেল টু, গেলাক্সি এস এইট+ বা আইফোন টেনের মত ফ্ল্যাগশিপ ফোন ব্যাবহার করে থাকেন তাহলে কালার ও  কন্ট্রাস্টে বেশ ভাল ধরনেরই পার্থক্য ধরতে পারবেন।

Huawei Mate 10 pro screen

বিল্ড কোয়ালিটি

এবার আসা যাক ফোনের বডির দিকে। ফোনের নিচে রয়েছে ইউ এস বি সি পোর্ট ও ডাউনওয়ার্ড ফায়ারিং স্পিকার, ডানে রয়েছে পাওয়ার ও ভলিউম আপ-ডাউন বাটন, বামে রয়েছে ডুয়াল মাইক্রো সিম সাপোর্টেড ট্রে যা সিম রিমুভাল টুল দিয়ে খোলা যায় এবং উপরে পাবেন ইনফ্রারেড ব্লাস্টার। এছাড়াও ফ্রন্টে উপরে রয়েছে ৮ মেগাপিক্সেলের ফ্রন্ট ক্যামেরা ও ইয়ার স্পিকার আর পিছনে ডুয়াল ক্যামেরা, ফিঙ্গারপ্রিন্ট স্ক্যানার, ফ্ল্যাশ লাইট এবং লেজার ফোকাস সিস্টেম।

এর দৈর্ঘ্য প্রায় ১৫৪.২ মিমি., প্রস্থ ৭৪.৫ মিমি. আর পুরুত্ত ৭.৯ মিমি. এর ওজন হচ্ছে প্রায় ১৭৮ গ্রাম।

ফোনের ডিসপ্লে এবং ব্যাক উভয় দিকেই ব্যাবহার করা হয়েছে এডাভন্সড টেকনোলজি দিয়ে তৈরি স্পেশাল গ্লাস যা হুয়াওয়ে ক্লেইম করছে ৭০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস না হওয়া পর্যন্ত তা বেন্ট হবে না। তবে কথায় বলে না, গ্লাস তো গ্লাসই। আর কিছু ক্ষেত্রে সফট কাপড় দিয়ে ফিঙ্গারপ্রিন্ট মোছার কাজ তো আছেই।

Huawei Mate 10 Pro Body

ফিচার

এবার আসা যাক ফোনের ফিচারের দিকে। শুরুতেই এর আনলকিং সিস্টেম। ফিঙ্গারপ্রিন্ট আনলকিং সারপ্রাইজিংলি অনেকটাই ফাস্ট। ফিঙ্গারপ্রিন্ট স্ক্যানারে আঙ্গুল দেয়ার সাথে সাথেই স্ক্রিন চলে আসে। এর পাশাপাশি বেসিক আনলকিং ফিচার তো পাবেনই।

ফোনের মধ্যে দেয়া আছে ৬ জিবি র‍্যাম এবং ১২৮ জিবি রম যার মধ্যে আপনি প্রায় ১১০ জিবির কাছাকাছি পাবেন। তবে এই ফোনের মধ্যে আলাদা করে এস ডি কার্ড সাপোর্ট দেয়া হয় নি যা মেট টেন প্রো এর জন্য একটি নেগেটিভ সাইড।

ফোনের মধ্যে দেয়া আছে পুরো ৪০০০ মিলি এম্প আওয়ারের ব্যাটারি। অর্থাৎ আপনি যদি একেবারে হেভি ইউজার হয়ে থাকেন তাহলেও আপনাকে ব্যাটারি লাইফ নিয়ে তেমন চিন্তা করতে হবে না।

আউট অফ দা বক্স আপনি এতে পাবেন এন্ড্রয়েড ৮.০ এর মডিফাইড ভার্শন EMUI 8.0 ওএস। হুয়াওয়ের নিজস্ব সুপার ফাস্ট অক্টাকোর প্রসেসর কিরিন ৯৭০ ও ৬ জিবি রেমের কারণে এটির ইনিশিয়াল ব্যাবহারে কোন ল্যাগ লক্ষ্য করাই যায় নি। তবে ফুল টাইম ব্যাবহারে কি রেজাল্ট পাওয়া যাবে সেটা এখন পর্যন্ত নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না।

ক্যামেরা এবং আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স

সবশেষে আসা যাক এর ক্যামেরা এবং আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স নিয়ে। মনে করছেন কানে ভুল শুনেছেন? ফোনের মধ্যে আবার এ আই? এ কিভাবে সম্ভব? হুয়াওয়ে তাদের এই ফ্লেগশিপের মধ্যে ফোনের ইতিহাসে সর্বপ্রথমবারের মত নিয়ে এল এ আই টেকনোলজি। মাত্র হাতে পাওয়ার কারণে ডেইলি ব্যাবহারে হয়ত এই এ আই কি কাজে দেবে সেটা হয়ত আমরা এখন বলতে পারব না কিন্তু ক্যামেরা ব্যাবহারের সময় এই আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের যথেষ্ট ভূমিকা লক্ষ্য করা গেছে।

ছবি তোলার সময় খেয়াল করলে দেখতে পারবেন অবস্থা বিশেষে ডান দিকে নিচের একটি লোগো চেঞ্জ হচ্ছে। এই লোগোটি ইন্ডিকেট করে আপনি কিসের ছবি তুলছেন, কি ধরণের লাইট কন্ডিশনে ছবি তুলছেন। ফোনের মধ্যে থাকা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স অবস্থা অনুযায়ী ছবির কালার ও কন্ট্রাস্ট সেট করে নেয়।

Huawei Mate 10 pro Back view

মেট টেন প্রো এর মধ্যে আপনারা পাবেন ২০ মেগাপিক্সেলের মেইন মনোক্রম ক্যামেরা আর এর নিচেই ব্যাবহার করা হয়েছে ১২ মেগাপিক্সেলের সেকেন্ডারি আর জি বি ক্যামেরা। কাগজে কলমে ফোনটির ক্যামেরা বেস্ট হলেও এটির পিকচার ও কালার একুরেসির ডাউন কোয়ালিটি কিছুটা চোখে পরার মতই। কিন্তু এর এ আই এর কারণে আপনাকে আলাদা করে ছবিতে ফিল্টার বসাতে হবে না। এটি নিজে থেকেই এক একটি ছবিকে মাস্টারপিসে পরিণত করার ক্ষমতা রাখে।

এছাড়াও ফোনে ভিডিও করা যাবে ৭২০ ও ১০৮০ পি রেজোল্যুশনে ৬০ এফ পি এসে এবং 4K রেজোল্যুশনে ৩০ এফ পি এসে। যেহেতু মেমোরি আপনারা ১১০ জিবির বেশি তেমন পাচ্ছেন না তাই আমরা রেকমেন্ড করব ভিডিও রেকর্ডিং রেজোল্যুশন ১০৮০ পি তেই রাখতে।

সবশেষে বলা যায়, ইনিশিয়াল ব্যাবহারে হুয়াওয়ের মেইট টেন প্রো ফোনটি ফ্ল্যাগশিপ হিসেবে মার্কেটে থাকার উপযুক্তই বটে তবে ফোনের মধ্যে বেটার ক্যামেরা একুরেসি, ডিসপ্লে রেজোল্যুশন এবং এস ডি কার্ড সাপোর্ট থাকলে হয়ত ফুল ট্রু ফ্ল্যাগশিপ হিসেবেই এর উপাধি দিতে পারতাম। এই ৩ টি জিনিস ছাড়া বাকি সব কিছুতেই এই ফোন ম্যাক্সিমাম পারফর্মেন্স দিচ্ছে! আশা করি আপনারা সবাই ভাল থাকবেন আর সঙ্গে থাকবেন পিসিবি বিডির সাথেই।

Share This Article

Search
kampungbet kampungbet kampungbet toto slot link gacor kampungbet kampungbet kampungbet toto slot kampungbet link slot kampungbet kampungbet kampungbet situs toto situs togel situs slot rtp slot situs judi bola situs slot gacor link slot resmi slot gacor hari ini
toto togel monperatoto situs toto toto togel slot resmi toto togel bandar togel togel online bandar togel slot 4d toto slot toto slot