Silicon Chip Shortage Detailed : ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে স্মার্টফোন ইন্ডাস্ট্রিও

বর্তমানে পৃথিবী তার ইতিহাসের অন্যতম সিলিকন চিপ সংকটের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। কিছুদিন আগ পর্যন্ত শুধুমাত্র অটোমোবাইল ইন্ডাস্ট্রিতে সীমাবদ্ধ থাকলে এখন একে একে অনেকগুলো ইন্ডাস্ট্রি এই ক্ষতি সম্মুখিন হচ্ছে বা হতে যাচ্ছে। তার মধ্যে নতুন খবর অনুযায়ী স্মার্টফোন ইন্ডাস্ট্রিতেও “Chip Shortage” এর ব্যাপক প্রভাব পরতে যাচ্ছে। কারণসহ বিস্তারিত আলোচনা করা হল এই আর্টিকেলে-

সিলিকন চিপ দিয়েই আসলে সব ধরনের ডিভাইস পরিচালিত হয়। এক কথা বলে ডিভাইসে ব্রেইন বলা চলে। চিপ হচ্ছে এমন একটি জিনিস যেটি শুধুমাত্র ফোন,কম্পিউটার বা এই রিলেটেড জিনিসপত্রে ব্যবহার করা হয় এমন না। বর্তমানে খুব কম ডিভাইস স্মার্ট ডিভাইস সেটা যত ছোট বা বড় হোক না কেন পাওয়া যাবে যেগুলোতে সিলিকন চিপ ব্যবহার করা হয় না। একটি স্ট্যাটাটিক্স দিলে বিষয়টি আরো পরিষ্কার হবে। বর্তমানে সারা পৃথিবীতে জুড়ে প্রতি বছরে ১ ট্রিলিয়ন চিপ তৈরি করা হয়। যার মানে হচ্ছে পৃথিবীর প্রতি মানুষ মাথাপিছু ১০০০+ চিপ পাবে যদি সমানভাগে ভাগ করা দেওয়া হয়।

 

কেন এই “Chip Shortage” ?

এক কথায় উত্তর দিলে সেটা হচ্ছে কভিড-১৯। কভিড-১৯ এর কারণে দুইভাবে চিপ ইন্ডাস্ট্রি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। বিষয়টা ব্যাখা করলে এইভাবে দাঁড়ায় সেটা হচ্ছে।

লকডাউনের একদম শুরুতে সবাই ভেবেছিল আরো একটি অর্থনৈতিক বিপর্যয় হতে যাচ্ছে। অনেক কোম্পানি পেন্ডেমিকের কারণে তাঁদের প্রোডাকশন স্লো করে দেয়। যেহেতু প্রোডাকশন স্লো হয়ে গেলে অনেক চিপের দরকার হবে না তাই TSMC, SMIC, Powerchip, Samsung এর মত ফাউন্ডারিগুলোর কাছে দেওয়া অনেক অর্ডার বাতিল বা স্থগিত করে দেয়। ফলে এইসব চিপ নির্মাতা কোম্পানিগুলোতেও প্রোডাকশন অনেকটা স্লো হয়ে যায়।

এবার মুদ্রার অন্যপাশে তাকালে অর্থাৎ প্রথমে যখন সারাবিশ্বে একযোগে লকডাউন শুরু হওয়ার কিছুদিন পর থেকেই ওয়ার্ক ফ্রম হোমে নামক নতুন টার্ম এর সাথে আম জনতাকে অভ্যস্থ হতে শুরু হয়। ফ্রিল্যান্সাররা ছাড়া খুব কম মানুষ এই টার্ম এর সাথে জড়িত ছিল। এই ওয়ার্ক ফ্রম হোমের কারনে যাদের ল্যাপটপ,পিসি,ফোন ও আরো এক্সেসরিজ ছিল না তাঁদের নতুন করে কিনতে হয় বা অনেকের আপগ্রেড করতে হয়। যার কারণে মার্কেটে এসেব ডিমান্ড হুহু করে বাড়তে থাকে। শুধু আম জনতার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকেনি। অতিরিক্ত ইউজারদের চাপ সামলানোর জন্য ডাটা সেন্টার, 5G, ক্লাউড অবকাঠামোগুলোকে আপগ্রেড করতে হয়েছে। এইসব কিছুতেই সিলিকন চিপের ব্যবহার একদম অতিরিক্ত। আবার অন্যদিকে যতটা অর্থনৈতিক বিপর্যয় ও লকডাউন দীর্ঘায়িত হবে ভাবা হয়েছিল তা হয়নি। ডিমান্ড কমার বদলে উল্টো বাড়ার ফলে কোম্পানিগুলো যখন আবার একসাথে চিপ নির্মাতা কোম্পানিগুলোর কাছে চিপ অর্ডার করতে থাকে তখন একটি বটলনেক সৃষ্টি হয়ে যায়। কারণ চিপ নির্মাতারা অর্ডার বাতিল হয়ে যাওয়া কারনে স্লো হয়ে যাওয়া প্রোডাকশন লাইন আপ বা স্পিড আগের জায়গায় নিতে সময় প্রয়োজন। তাই চিপ ডেলিভারি আগের চেয়ে কিছুটা স্লো হয়ে যায়। ফলে GM, Tesla, Microsoft, Sony, Qualcomm এর মত কোম্পানিগুলো চিপ খরায় ভুগতে শুরু করে। আবার অন্যদিকে সম্ভাব্য এই ঘটনাকে আগে থেকে অনুমান করে অনেক কোম্পানি চিপ স্টকপাইল করে ফেলে যার ফলে তীব্রতর হয়ে উঠে চিপ শর্টেজ। এদিকে TrendForce জানিয়েছে মোটামুটি সব ফাউন্ডারিগুলো বর্তমানে একদম লোডেড অবস্থায় রয়েছে এবং তাঁদের রেভেনিউ এই বছরের প্রথম কোয়ার্টারেই ২০% বেশি হতে পারে।

স্মার্টফোন ইন্ডাস্ট্রিতেও কি এর আঁচ লাগতে যাচ্ছে?

কিছুদিন আগে অটোমোবাইল ইন্ডাস্ট্রির ম্যানুফেকচাররা চিপ শর্টেজ নিয়ে কমপ্লেন করা শুরু করে। General Motors তো ইতিমধ্যে জানিয়েও দিয়েছে যে, এই চিপ শর্টেজের কারণে তাঁদের ২ বিলিয়ন ডলার লস গুনতে হবে। বলে রাখা বল, একটি কার বানাতে ১০০টির বেশি সিলিকনের চিপের ব্যবহার করা হয়। Sony ও তাঁদের লেটেস্ট PlayStation 5 এর জন্য যথেষ্ট চিপ পাচ্ছে অন্যদিকে nvidia’র 30xx সিরিজের কার্ড শুরু থেকেই খুবই কম মার্কেটে এভাইলেবল ছিল। তখনও স্মার্টফোন ইন্ডাস্ট্রি এর আওতা মুক্ত ছিল। কিন্তু গত দুয়েক সপ্তাহ জুড়ে কয়েকটি স্মার্টফোন ম্যানুফেকচারার কনফার্ম করে তাঁরা Qualcomm এর কাছ থেকে চাহিদা মাফিক চিপসেট পাচ্ছে না। Xiaomi ও Realme এটিকে মেজর ইস্যু হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। এমনকি Qualcomm থেকে মোবাইল চিপ ও আরো অন্যান্য রিলেটেড চিপসেট ডেলিভারি পেতে ৩০ সপ্তাহেরও বেশি সময় লেগে যাচ্ছে। Xiaomi’র প্রেসিডেন্ট Lu Weibing জানিয়েছে,

“the chips are out of stock this year, it’s a huge shortage. I will not dare to promise that there will be no shortage of mobile phones this year.” 

অন্যদিকে  Realme’র একজন স্পোকসপার্সন  জানিয়েছে,

“Qualcomm’s main chips and small materials are out of stock, including power supply and radiofrequency devices”.

এই ব্যাপারে Qualcomm তাঁদের পক্ষ থেকে চিপ শর্টেজ কনফার্ম করে বলে

“The shortage in the semiconductor industry is across the board,” 

AnandTech এর আর্টিকেলে জানা যায়, বর্তমানে সাপ্লাইয়ের চেয়ে ডিমান্ড 30% বেশি। ডিমান্ড ও সাপ্লাই সমান হতে এই বছর এর শেষ কোয়ার্টার পর্যন্ত লেগে যেতে পারে বলে মন্তব্য করেছে অনেক এনালিস্টরা। আবার অন্যদিকে OPPO জানিয়েছে তাঁদের বর্তমান ইনভেনটরি দিয়ে সহজেই প্রোডাকশন চালিয়ে যেতে পারবে। চিপ সংকটের কালেও কিন্তু স্মার্টফোন কোম্পানিগুলো পিছিয়ে নেই তাঁদের নতুন ফ্ল্যাগশিপ থেকে মিডরেঞ্জ সিরিজ এনাউন্স করতে। ইনফ্যাক্ট গত দুইমাসে না হলে ডজনখানেকের উপর ফোন বের হয়েছে একদম লেটেস্ট চিপসেটগুলো দিয়ে। তাহলে চিপ শর্টেজের বিষয়ে এর উচ্চবাক্য কেন? এর উত্তর হচ্ছে হতে পারে আগের স্টকপাইল করা চিপ দিয়েই এইসব ফোন এনাউন্স ও প্রথমদিকের ইউনিটগুলো বাজারে আসছে। সামনের দিনগুলোতে হয়ত বাজারে পর্যাপ্ত পরিমান ফোন সাপ্লাই নাও হতে পারে। বেসিক ইকোনোমিক্স অনুযায়ী সাপ্লাই কম থাকা মানে দাম বেশি হওয়া। এইখানে আরো একটি বিষয় উল্লেখ না করলেই নয়। যেহেতু বেশি অর্ডারের কারণে রাতদিন চিপ বানাতে হচ্ছে তাই তাঁদের মেইনটেইনেন্স ও অন্যান্য বিষয়ে যথেষ্ট মনোযোগী না হলে আপকামিং চিপগুলো তাড়াতাড়ি “wear out” হয়ে যেতে পারে বলে আশংকা করেছে বিশেষজ্ঞরা।

Share This Article

Search
kampungbet kampungbet kampungbet toto slot link gacor kampungbet kampungbet kampungbet toto slot kampungbet link slot kampungbet kampungbet kampungbet situs toto situs togel situs slot rtp slot situs judi bola situs slot gacor link slot resmi slot gacor hari ini
toto togel monperatoto situs toto toto togel slot resmi toto togel bandar togel togel online bandar togel slot 4d toto slot toto slot